সের্গেই প্যারাজনভ
আর্মেনীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা / From Wikipedia, the free encyclopedia
সের্গেই প্যারাজনভ (আর্মেনীয়: Սերգեյ Փարաջանով; রুশ: Серге́й Ио́сифович Параджа́нов; জর্জীয়: სერგო ფარაჯანოვი; ইউক্রেনীয়: Сергій Йо́сипович Параджа́нов; কখনো কখনো প্যারাঝনভ বা প্যারাজানভ লেখা হয়; ৯ জানুয়ারি ১৯২৪ – ২০ জুলাই ১৯৯০) একজন আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত সোভিয়েত চলচ্চিত্র পরিচালক ও শিল্পী ছিলেন যিনি ইউক্রেনীয়, জর্জীয় ও আর্মেনীয় চলচ্চিত্রে অবদান রাখার মাধ্যমে সোভিয়েত চলচ্চিত্রাঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন।[1] তিনি চলচ্চিত্রে তার নিজস্ব ধারা সৃষ্টি করেছিলেন যা ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতান্ত্রিক ধারার (সোভিয়েত ইউনিয়নের একমাত্র অনুমোদিত শিল্পধারা) বাইরে। এরসাথে তার বিতর্কিত জীবনযাপন ও ব্যবহারের দরুন সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে বারবার তাকে নির্যাতিত ও কারান্তরীণ হতে হয়েছিল। তার চলচ্চিত্রও হয়েছিল দমনের শিকার।
সের্গেই প্যারাজনভ | |
---|---|
জন্ম | সার্কিস হোভসেপি প্যারাজানিয়ান্টস (১৯২৪-০১-০৯)৯ জানুয়ারি ১৯২৪ তিবিলিসি, জর্জিয়া |
মৃত্যু | ২০ জুলাই ১৯৯০(1990-07-20) (বয়স ৬৬) ইয়েরেভান, আর্মেনিয়া |
সমাধি | কমিটাস গোরস্তান, ইয়েরেভান |
পেশা | চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, নির্মাণ পরিকল্পক |
কর্মজীবন | ১৯৫১–১৯৯০ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম |
|
দাম্পত্য সঙ্গী | নিগ্যার কেরিমোভা (১৯৫০–১৯৫১) সভেতলানা তসচেবাটিউক (১৯৫৬–১৯৬২) |
সন্তান | সুরেন প্যারাজনভ (১৯৫৮–) |
ওয়েবসাইট | www.parajanov.com |
১৯৫৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করলেও ১৯৬৫ সালের পূর্বে তার নির্মিত সকল চলচ্চিত্রকে "আবর্জনা" বলে অভিহিত করেছিলেন তিনি। ভুলে যাওয়া পূর্বপুরুষদের ছায়া (বাইরের অধিকাংশ দেশে বুনো আগুনের ঘোড়া নামে মুক্তি পায়) মুক্তি পাবার পর তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কিছুটা পরিচিতি লাভ করেন ও প্রশাসনের আক্রমণের শিকার হন। প্রায় কোনো আলোচনা ছাড়াই ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তার সব প্রকল্প এবং পরিকল্পনা স্থানীয় (কিয়েভ ও ইয়েরেভান) এবং রাষ্ট্রীয় (গোস্কিনো) ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ, বাতিল বা বন্ধ করে দেয় সোভিয়েত চলচ্চিত্র প্রশাসন। ১৯৭৩ সালে তিনি ধর্ষণ, সমকামিতা ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে গ্রেফতার হবার পর এই 'অবস্থা'র অবসান ঘটে। সোভিয়েত শিল্পীরা তার মুক্তি প্রদানের আবেদন জানালেই ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত তিনি কারান্তরীণ ছিলেন। এমনকি মুক্তিলাভের পর (১৯৮২ সালে তিনি তৃতীয় ও শেষবারের মত গ্রেফতার হন) তিনি সোভিয়েত চলচ্চিত্রাঙ্গনের পার্সোনা নন গ্রাটা ছিলেন। আশির দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই অবস্থা চলতে থাকে। এরপর রাজনৈতিক পরিবেশ শিথিল হতে থাকে যার দরুন তিনি পুনরায় চলচ্চিত্র পরিচালনা শুরু করেন। তারপরও প্রভাবশালী জর্জীয় অভিনেতা ডোডো আবাশিজে ও তার অন্যান্য বন্ধুরা তার শেষ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেতে কাজ করেছিলেন। তিবিলিস শ্রমিক ক্যাম্প ও কারাগারে যথাক্রমে চার বছর ও নয় মাস থাকার দরুন তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। প্রায় বিশ বছরের দমন পীড়ন সহ্য করা পর ১৯৯০ সালে মৃত্যু ঘটে তার। তার চলচ্চিত্রগুলো বিভিন্ন বিদেশি চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছে। ১৯৮৮ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, "সবাই জানে যে আমার তিনটা মাতৃভূমি। আমি জন্মেছি জর্জিয়ায়, কাজ করেছি ইউক্রেনে এবং আমি মরব আর্মেনিয়ায়।"[2] সের্গেই প্যারাজনভকে ইয়েরেভানের কমিটাস গোরস্তানে সমাহিত করা হয়।[3]
মার ডেল প্লাটা চলচ্চিত্র উৎসব, ইস্তানবুল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, নিকা পুরস্কার, রোটেরডাম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসভ, সিটগেস - কাতালান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, সাউ পাউলো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবসহ বিভিন্ন আসরে পুরস্কার জিতেছে প্যারাজনভের চলচ্চিত্র।