Loading AI tools
ক্রোয়েশীয় ফুটবলার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
লুকা মদরিচ (ক্রোয়েশীয়: Luka Modrić, ক্রোয়েশীয় উচ্চারণ: [lûːka mǒːdritɕ];[4][5] জন্ম: ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮৫) হলেন একজন ক্রোয়েশীয় পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে স্পেনের পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর লা লিগার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এবং ক্রোয়েশিয়া জাতীয় দলের হয়ে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন;[6][7] এছাড়াও তিনি বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।[8] তিনি মূলত কেন্দ্রীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে আক্রমণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন।[9]
ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | লুকা মদরিচ[1][2] | ||
জন্ম | [3] | ৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮৫||
জন্ম স্থান | জাদার, ক্রোয়েশিয়া, যুগোস্লাভিয়া | ||
উচ্চতা | ১.৭২ মিটার (৫ ফুট ৭+১⁄২ ইঞ্চি) | ||
মাঠে অবস্থান | মধ্যমাঠের খেলোয়াড় | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | রিয়াল মাদ্রিদ | ||
জার্সি নম্বর | ১০ | ||
যুব পর্যায় | |||
১৯৯৬–২০০১ | জাদার | ||
২০০২–২০০৩ | দিনামো জাগরেব | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
২০০৩–২০০৮ | দিনামো জাগরেব | ৯৪ | (২৬) |
২০০৩–২০০৪ | → জ্রিনিস্কি মোস্তার (ধার) | ২২ | (৮) |
২০০৪–২০০৫ | → ইন্টার জাপ্রেশিচ (ধার) | ১৮ | (৪) |
২০০৮–২০১২ | টটেনহ্যাম হটস্পার | ১২৭ | (১৩) |
২০১২– | রিয়াল মাদ্রিদ | ২৯৬ | (২৩) |
জাতীয় দল‡ | |||
২০০১ | ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৫ | ২ | (০) |
২০০১ | ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৭ | ২ | (০) |
২০০৩ | ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৮ | ৭ | (০) |
২০০৩–২০০৪ | ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ | ১১ | (১) |
২০০৪–২০০৫ | ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-২১ | ১৫ | (২) |
২০০৬– | ক্রোয়েশিয়া | ১৫০ | (২১) |
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ২২:৩০, ২০ আগস্ট ২০২২ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। ‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১৯:৪৫, ১৩ জুন ২০২২ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সঠিক। |
১৯৯৬–৯৭ মৌসুমে, ক্রোয়েশীয় ফুটবল ক্লাব জাদারের যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে মদরিচ ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছেন এবং পরবর্তীকালে দিনামো জাগরেব যুব দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছেন। ২০০৩–০৪ মৌসুমে, ক্রোয়েশীয় ক্লাব দিনামো জাগরেবের মূল দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছেন, তবে একই মৌসুমে তিনি ধারে জ্রিনিস্কি মোস্তারে যোগদান করেছেন। পরবর্তী মৌসুমে ইন্টার জাপ্রেশিচে হয়ে ১ মৌসুমের জন্য ধারে খেলে দিনামো জাগরেবে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি ৪ মৌসুম অতিবাহিত করেছেন; দিনামো জাগরেবের হয়ে তিনি ৯৪ ম্যাচে ২৬টি গোল করেছেন। অতঃপর ২০০৮–০৯ মৌসুমে তিনি টটেনহ্যাম হটস্পারের ইতিহাসে তৎকালীন সর্বাধিক স্থানান্তর ফি ১৬.৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ইংরেজ ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পারে যোগদান করেছেন, যেখানে তিনি ৪ মৌসুমে সকল প্রতিযোগিতায় ১৫৯ ম্যাচে ১৭টি গোল করেছেন। ২০১২–১৩ মৌসুমে, তিনি প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে টটেনহ্যাম হটস্পার হতে স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে যোগদান করেছেন।
২০০১ সালে, মদরিচ ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৫ দলের হয়ে ক্রোয়েশিয়ার বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। প্রায় ৪ বছর যাবত ক্রোয়েশিয়ার বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর, তিনি ২০০৬ সালে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন; ক্রোয়েশিয়ার জার্সি গায়ে তিনি এপর্যন্ত ১৪২ ম্যাচে ১৮টি গোল করেছেন, এর মাধ্যমে তিনি ক্রোয়েশিয়ার হয়ে সর্বাধিক ম্যাচে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন। তিনি ক্রোয়েশিয়ার "দ্বিতীয় সোনালী প্রজন্ম"-এর নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ৩টি ফিফা বিশ্বকাপ (২০০৬, ২০১৮ এবং ২০১৮) এবং ৪টি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে (২০০৮, ২০১২, ২০১৬ এবং ২০২০) অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৮ সালে জ্লাৎকো দালিচের অধীনে ফিফা বিশ্বকাপের রানার-আপ হয়েছেন।
ব্যক্তিগতভাবে, মদরিচ বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ২০১৮ বালোঁ দর, ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল এবং ২০০৭ হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত রেকর্ড ৯ বার বর্ষসেরা ক্রোয়েশীয় ফুটবল খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয় অন্যতম।[10][11] দলগতভাবে, মদরিচ এপর্যন্ত ২২টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ৬টি দিনামো জাগরেবের হয়ে এবং ১৬টি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে জয়লাভ করেছেন।
লুকা মদরিচ ১৯৮৫ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর তারিখে যুগোস্লাভিয়া সমাজতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্রের ক্রোয়েশিয়া সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের জাদারে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং জাদার শহরের উত্তরে ভেলেবিট পর্বতের দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত জাতোন ওব্রোভাচকি গ্রামে তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন।[12][13][14][15] তার বাবার নাম স্ত্রিপে মদরিচ এবং তার মায়ের নাম রাদোইকা দোপুদ, তারা উভয়ই নিটওয়্যার কারখানায় কর্মরত ছিলেন।[16][17][18] তিনি তার বাবা-মায়ের বড় সন্তান। মদরিচ তার জীবনের প্রথমাংশ মদরিচি জনপদের উপরের রাস্তায় অবস্থিত তার পিতামহের (যার নামানুসারে তার নাম রাখা হয়েছিল) পাথরের বাড়িতে বসবাস করতেন।[19][20] মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি ছাগলের রাখাল হিসেবে কাজ করেছেন।[21][22][23]
১৯৯১ সালে তার শৈশবে ক্রোয়েশিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে সংগঠিত হয়েছিল, যখন যুদ্ধ বেড়ে গিয়েছিল তখন তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।[13] মদরিচের পিতামহ লুকাকে সার্ব বিদ্রোহীরা মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল, যিনি ১৯৯১ সালের ডিসেম্বর মাসে এসএও ক্রাজিনার পুলিশের সদস্য ছিলেন।[13][15][24][25] বাড়ি ছেড়ে পরিবারের সাথে পালিয়ে যাওয়ার পরে তাদের বাড়িটি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল।[26]
মদরিচ শরণার্থী হিসেবে সাত বছর হোটেল কোলভারেতে তার পরিবারের সাথে বসবাস করেছেন; পরবর্তীকালে তিনি জাদারেরহোটেল ইজে স্থানান্তরিত হয়েছেন।[13][27][28] তার বাবা ক্রোয়েশীয় সেনাবাহিনীতে এরোমেকানিক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।[13] যুদ্ধ চলাকালীন শহরে হাজার হাজার বোমা পড়ে থাকতো, সে সময় ফুটবলই যুদ্ধের নির্মমতা থেকে বাঁচার একটি উপায় ছিল।[15] তিনি এটিকে তার পরিবারের জন্য কঠিন সময় এবং এমন কিছু বলে মনে করেন যা তাকে একজন ব্যক্তি হিসেবে গঠন করেছিল।[29][30][31] তিনি আরও বলেছেন যে, তিনি যুদ্ধ সম্পর্কিত বেশিরভাগ বিষয়ে অজ্ঞাত ছিলেন, কারণ তিনি অন্য অনেক সন্তানের সাথে বন্ধুত্ব করেছিলেন এবং তাদের বাবা-মা তাদের শৈশবকে প্রভাবিত করতে দেননি।[17]
যুদ্ধ চলাকালীন কঠিন পরিস্থিতিতে, মদরিচ ফুটবল খেলতে শুরু করেছিলেন। তিনি অধিকাংশ সময়ে হোটেল পার্কিং লটে ফুটবল অনুশীলন করতেন।[15] ১৯৯২ সালে তিনি একই সাথে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ক্রীড়া একাডেমিতে ভর্তি হয়েছিলেন।[13][17][27] কিশোর বয়সে তিনি জভোনিমির বোবান ও ফ্রাঞ্চেস্কো তত্তির ফুটবল খেলায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন।[32]
মদরিচ ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৫, ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৭, ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৮, ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-১৯ এবং ক্রোয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[33] ক্রোয়েশিয়ার বয়সভিত্তিক দলের হয়ে তিনি প্রায় ৪ বছরে ৩৭ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ৩টি গোল করেছেন।
২০০৬ সালের ১লা মার্চ তারিখে, মাত্র ২০ বছর ৫ মাস ২০ দিন বয়সে, উভয় পায়ে ফুটবল খেলায় পারদর্শী মদরিচ আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে অভিষেক করেছেন।[34] তিনি উক্ত ম্যাচের মূল একাদশে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, তবে ০০তম মিনিটে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় ইভান লেকোর বদলি খেলোয়াড় হিসেবে তিনি মাঠ ত্যাগ করেন; ম্যাচে তিনি ১৪ নম্বর জার্সি পরিধান করে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন।[35] ম্যাচটি ক্রোয়েশিয়া ৩–২ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।[36] ক্রোয়েশিয়ার হয়ে অভিষেকের বছরে মদরিচ সর্বমোট ১২ ম্যাচে ২টি গোল করেছেন। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের ৫ মাস ১৫ দিন পর, ক্রোয়েশিয়ার জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি করেন; ১৬ই আগস্ট তারিখে, ইতালির বিরুদ্ধে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোলটি করেন।[37][38][39] ২০১৬ সালের ২৬শে মার্চ তারিখে, তিনি হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে প্রথমবারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন, ম্যাচটি ১–১ গোলে ড্র হয়েছিল।[40][41][42]
মদরিচ জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য জলাৎকো ক্রানিয়চারের অধীনে ঘোষিত ক্রোয়েশিয়া দলে স্থান পাওয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান।[43] ২০০৬ সালের ১৮ই জুন তারিখে, তিনি জাপানের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ফিফা বিশ্বকাপে অভিষেক করেছেন।[44][45][46] উক্ত বিশ্বকাপে তিনি ২ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন।[47] অতঃপর মদরিচ ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য প্রকাশিত ক্রোয়েশিয়ার ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দলে অন্তর্ভুক্ত হন,[48][49] যেখানে তিনি ক্রোয়েশিয়ার হয়ে উপলব্ধ প্রতিটি মিনিট খেলেছেন।[50]
পরবর্তীকালে, তিনি জ্লাৎকো দালিচের অধীনে ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার চূড়ান্ত দলে স্থান পান, উক্ত বিশ্বকাপে তিনি ক্রোয়েশিয়ার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ক্রোয়েশিয়া গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনা, আইসল্যান্ড ও নাইজেরিয়ার সাথে গ্রুপ ডি-এ প্রতিযোগিতা করেছে। ১৬ই জুন তারিখে, ক্রোয়েশিয়ার হয়ে নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের ৭১তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে তিনি ফিফা বিশ্বকাপে তার প্রথম গোলটি করেছেন,[51][52][53] এবং তিনি নিজে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন।[54] পরের ম্যাচে তিনি আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ২৫ গজ দূর থেকে একটি গোল করেছিলেন। আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে তার করা গোলটি ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচিত হয়;[55] উক্ত ম্যাচে তার দল ৩–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল, যেখানে তিনি ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয়লাভ করেছিলেন। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে তার ভালো খেলার জন্য ফোরফোরটু,[56] দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ,[57] এবং ইএসপিএন[58] তাকে ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে অভিহিত করেছে। ১৬ দলের পর্বে ডেনমার্কের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি বাক্সের ভেতরে আন্তে রেবিচকে ফাউল করার জন্য ক্রোয়েশিয়া পেনাল্টি পেয়েছিল, তবে মদরিচের দুর্বল শট ডেনমার্কের গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মাইকেল প্রতিহত করেছিলেন।[59] অতঃপর মদরিচ পেনাল্টি শুট-আউটে গোল করতে সমর্থ হয়েছিলেন, যা ক্রোয়েশিয়াকে ট্রাইব্রেকারে ৩–২ গোলে জয়লাভ করতে সাহায্য করেছিল।[60] ৭ই জুলাই কোয়ার্টার-ফাইনালে রাশিয়ার বিপক্ষে তার করা কর্নার কিক থেকে দোমাগোয় ভিদা গোল করেছিলেন, অতিরিক্ত সময়ে ২–২ গোলে সমতায় থাকার পর তিনি পেনাল্টি শুট-আউটে গোল করেছিলেন এবং তৃতীয়বারের মতো উক্ত আসরে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার জয়লাভ করেছিলেন।[61] ১১ই জুলাই সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে গোল করে তার দল তাদের বিশ্বকাপের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠেছিল।[62][63] ফাইনাল খেলার দুই দিন পূর্বে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় মদরিচ যে কোন খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি মাইল দৌড়েছেন এবং গোলের সুযোগ তৈরি করা খেলোয়াড়দের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন; এছাড়া তিনি প্রতি ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ড্রিবল করার পাশাপাশি প্রতিপক্ষ দলের অর্ধেকের চেয়েও বেশি পাস দিয়েছেন।[64] ১৫ই জুলাই ফ্রান্সের সাথে ক্রোয়েশিয়া ৪–২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে,[65] তবে ৭ ম্যাচে ২ গোল করে আসরের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মদরিচ গোল্ডেন বল পুরস্কার লাভ করেছেন।[66][67] মদরিচ তার খেলোয়াড়ি জীবনে এপর্যন্ত ৩টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে তিনি ১২টি ম্যাচে ২টি গোল করেছেন।
২০১১ সালের ৭ই অক্টোবর তারিখে গ্রিসের আতিকির গেওর্গিওস কারাইস্কাকিস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত গ্রিসের বিরুদ্ধে ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তিনি ক্রোয়েশিয়ার জার্সি গায়ে তার ৫০তম ম্যাচ খেলেছেন, ম্যাচটিতে ক্রোয়েশিয়া ২–০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল, যেখানে তিনি পূর্ণ ৯০ মিনিট খেলেছেন;[68][69][70] অন্যদিকে, ২০১৭ সালের ৬ই অক্টোবর তারিখে মদরিচ তার খেলোয়াড়ি জীবনে ১০০তম ম্যাচটি খেলেছেন, ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্রোয়েশিয়ার রিয়েকায় অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচটি ১–১ গোলে ড্র হয়েছিল।[71][72][73]
২০১০ সালের মে মাসে, ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবে চার বছর যাবত সম্পর্কে আবদ্ধ থাকার পর একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবং ১ বছর পর গির্জায় ভানিয়া বসনিচের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।[74][75] তাদের উভয়ের ইভানো (জন্ম: ৬ জুন ২০১০)[76][77] নামে একটি পুত্রসন্তান এবং এমা (জন্ম: ২৫ এপ্রিল ২০১৩)[77][78] ও সোফিয়া (জন্ম: ২ অক্টোবর ২০১৭) নামে দুইটি কন্যাসন্তান রয়েছে।[79] মদরিচ সাধারণত ফুটবলের বাইরে মধ্যবিত্তের মতো জীবনযাপন করেন।[80][81] তার মাতৃভাষা ক্রোয়েশীয় ছাড়াও তিনি ইংরেজি এবং স্পেনীয় ভাষায় কথা বলতে পারেন।[82][83][84][85] তিনি হলেন একজন রোমান ক্যাথলিক।[86][87]
মদরিচ অস্ট্রেলীয় ফুটবলার মার্ক ভিডুকার চাচাতো ভাই এবং মাতেও কোভাচিচের ছেলে ইভানের ধর্মপিতা।[88][89] ২০১৯ সালের শেষের দিকে, মদরিচ তার আত্মজীবনী মোয়া ইগ্রা (আমার খেলা) প্রকাশ করেছেন, যা ক্রোয়েশিয়ার বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক রবার্ট মাতেওনি যৌথভাবে লিখেছেন।[90][91]
দল | সাল | ম্যাচ | গোল |
---|---|---|---|
ক্রোয়েশিয়া | ২০০৬ | ১২ | ২ |
২০০৭ | ১০ | ১ | |
২০০৮ | ১১ | ৩ | |
২০০৯ | ৩ | ১ | |
২০১০ | ৮ | ০ | |
২০১১ | ৯ | ১ | |
২০১২ | ৯ | ০ | |
২০১৩ | ১০ | ০ | |
২০১৪ | ১১ | ২ | |
২০১৫ | ৪ | ০ | |
২০১৬ | ৮ | ১ | |
২০১৭ | ৮ | ১ | |
২০১৮ | ১৫ | ২ | |
২০১৯ | ৯ | ২ | |
২০২০ | ৬ | ০ | |
২০২১ | ৯ | ২ | |
সর্বমোট | ১৪২ | ১৮ |
দিনামো জাগরেব
রিয়াল মাদ্রিদ
ক্রোয়েশিয়া
আন্তর্জাতিক
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.