Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
লাবসাঁত (ফরাসি: L'Absinthe; বাংলা ভাবানুবাদ "সোমরস") ফরাসি চিত্রকর এদ্গার দ্যগার আঁকা একটি তৈলচিত্র। ১৮৭৫ থেকে ১৮৭৬ সালের মধ্যে তিনি ছবিটি আঁকেন বলে ধারণা করা হয়।[1]। ছবিটির আসল শিরোনাম দঁজাঁ কাফে (অর্থাৎ "কফিঘরের ভেতরে")।[2] বর্তমানে ছবিটি এই আদি নামেও সমধিক পরিচিত।[3] ১৮৯৩ সালে ছবিটি যখন লন্ডনে প্রদর্শিত হয়, তখন এর নাম পরিবর্তন করে লাবসাঁত রাখা হয়, যে নামে চিত্রটি এখন বহুল পরিচিত। এটা প্যারিসের বিখ্যাত ম্যুজে দর্সে (Musée d'Orsay অর্সে জাদুঘর) জাদুঘরের স্থায়ী সংগ্রহে সংরক্ষিত রয়েছে।
লাবসাঁত | |
---|---|
শিল্পী | এদ্গার দ্যগা |
বছর | ১৮৭৫–৭৬ |
উপাদান | তৈল চিত্র |
আয়তন | ৯২ সেঃমিঃ × ৬৮ সেঃমিঃ (৩৬.২ ইঞ্চি × ২৬.৮ ইঞ্চি) |
অবস্থান | ম্যুজে দর্সে (অর্সে জাদুঘর), প্যারিস |
১৮৭৫-৭৬ সালে অঙ্কিত ছবিটিতে এক নারী এবং এক পুরুষকে[1] পাশাপাশি বসে গেলাসে করে সোমরস পান করতে দেখা যায়। ৯২ × ৬৮.৫ সেঃমিঃ ক্যানভাসে অঙ্কিত তৈলচিত্রটিতে আপাত দৃষ্টিতে তাদেরকে দেখে অলস এবং একাকী বলে মনে হয়।[3] ছবিতে টুপি পরিহিত ধূমপানরত লোকটি ক্যানভাসের ডান প্রান্তের দিকের দিকে তাকিয়ে থাকতে, আর আকর্ষণীয় পোশাক এবং টুপি পরিহিত নারীটিকে শূন্যদৃষ্টিতে মেঝের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের সামনে টেবিলের উপর সবুজ তরল পানীয় ভরা একটি গ্লাস। ছবিটিতে ধূসর, বাদামী এবং কালো রঙের প্রাধান্য পেয়েছে: কফি টেবিলের ধূসর মর্মর পাথর, সংবাদপত্র, ধোঁয়াটে পর্দা এবং মুখ; বাদামী কেদারা এবং পোশাক; আর পুরুষটির স্যুট এবং ছায়ায় কালো রঙ।
ছবিটির নারী চরিত্রের মডেল হয়েছিলেন অভিনেত্রী এলেন অঁদ্রে। তিনি এই ছবিটির পাশাপাশি এদুয়ার মানে-র শে লে পের লাত্যুই ও লা প্রর্যুন ছবিগুলিতেও প্রতিমার কাজ করেন। আর পুরুষটি হচ্ছেন মার্সেলাঁ দেবুতাঁ[3] , পেশায় তিনি চিত্রশিল্পী এবং খোদাইকারক[4]। যে কফিঘরে তাঁরা বসেছিলেন সেটি হল প্যারিসের কাফে দ্য লা নুভেল-আতেন।[5]
দ্যগা তার এই ছবিতে চরিত্রগুলোর বিচ্ছিন্নতার উপর জোর দিয়েছেনঃ পুরুষটির হাত এবং ধূমপানের পাইপটি একটি অংশ নেই, সামনের টেবিলের উপর আড়াআড়ি ভাবা রাখা সংবাদপত্র। যার মধ্যে দিয়ে ছবিটি দর্শকের সামনে সমতল ভাবের সৃষ্টি করেছে, যা একটি বাস্তব হলমার্ক। ধারণা করা হয় ফটোগ্রাফির বিকাশের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এইভাবে ছবিটি অঙ্কন করেছেন দ্যগা।
১৮৭৬ সালে তার প্রথম প্রদর্শনীতেই ছবিটি সমালোচকদের সমালোচনার শিকার হয়, অভিহিত হয় কুৎসিত এবং ন্যক্কারজনক হিসেবে।[5] এরপর ছবিটি সংগ্রহস্থলে রেখে দেয়া হয়। ১৮৯২ সালে ছবিটি আবার প্রদর্শিত হলে আবারো উপহাসের শিকার হয়।[5] ১৮৯৩ সালে ইংল্যান্ডের গ্র্যাফটন গ্যালারিতে ছবিটি লাবসাঁত শিরোনামে আবার প্রদর্শিত হয়[5], এবং আরও বড় বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ছবির মানুষ এবং অ্যাবসিন্থ ইংরেজি সমালোচকদের কাছে অত্যন্ত আপত্তিকর এবং নিকৃষ্ট বলে মনে হয়েছিল[6]। লন্ডনে প্রদর্শনীতে স্যার উইলিয়াম ব্লেক রিচমন্ড এবং ওয়াল্টার ক্রেনের মতো ভিক্টোরীয়দের কাছে চিত্রকর্মটি নৈতিকতার উপর আঘাত বলে মনে হয়েছিল। প্রতিক্রিয়াটি অবশ্য সমসাময়িক ছিল। অনেক ইংরেজ সমালোচক ছবিটিকে অ্যাবাসিন্থ এবং ফরাসিদের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা হিসাবে দেখেছেন। ছবির নারী সম্পর্কে জর্জ মুরের মন্তব্য ছিল: "কি অসভ্য!" তিনি আরও বলেন, "গল্পটি সুন্দর নয়, কিন্তু একটি শিক্ষা।" যদিও, তিনি তার বই মডার্ন পেইন্টিং (আধুনিক চিত্রকর্ম) এ. মুর এই চিত্রকর্মের মধ্যে দিয়ে যে নৈতিক শিক্ষা প্রদানের যে চেষ্টা করা হয়েছে সেই মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, "ছবিটি কেবল মাত্র একটি শিল্পকর্ম, এর সাথে মদ বা সমাজ এর কোন সম্পর্কে নেই।"[7]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.