রেকর্ড (ছোটগল্প)
From Wikipedia, the free encyclopedia
রেকর্ড (ছোটগল্প) নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত একটা ভিন্ন স্বাদের, ভিন্ন মাত্রার ছোটগল্প। এ'গল্পে গল্পকার অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিরোধের ব্যঞ্জনাকে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন। এ গল্পটিকে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম শ্রেণির রচনা বলা না গেলেও গল্পে গল্পকথক ও তাঁর পত্নীর রেকর্ডের অজ্ঞাত অথচ পরিচিত বলে মনে হওয়া সুরের রহস্য উন্মোচনের কাহিনি পাঠককে রুদ্ধশ্বাস চিত্তে অপেক্ষমাণ রেখেছে। কল্লোল পরবর্তী যুগের অত্যন্ত শক্তিশালী এই গল্পকার ছোটগল্পকে যে দৃষ্টিতে দেখেছেন তা এইভাবে ব্যক্ত করেছেন-
" ছোটগল্প গড়ে উঠেছে দুটি জিনিসের মিশ্রণে। লেখকের নিজস্ব একটি জগৎ-জীবন মানববোধ আছেই - profound হোক আর না-ই হোক , তা-ই হল তাঁর দর্শন। আর জীবন থেকে নিজস্ব-প্রবণতা অনুযায়ী যেসব উপকরণ তিনি আহরণ করে নিচ্ছেন, তারা সেই দর্শনের দ্বারা বিরঞ্জিত হয়ে, শিল্প হয়ে উঠেছে। তাই একালের ভালো গল্প কেবল কৌতূহল-সৃষ্টির জন্যে ঘটনা নির্মাণ করছে না, কোনো বিশেষ বক্তব্য প্রচারের জন্য গল্পকে বাহন করছে না (বক্তব্য তো লেখকের জীবন-দৃষ্টি থেকে স্বয়ং প্রকটিত হবে), আসলে তার একটিমাত্রই প্রবণতাঃ তা বস্তুনির্ভর হয়েও বাস্তবাতীত, তা দুরাচারী, তা প্রতীকী।"[1]
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/bn/9/9e/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%A3_%E0%A6%97%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC_-_%E0%A6%B0%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%B2%E0%A7%80.jpg)
আসলে তিনি ছোটগল্পের প্রতীকধর্মীতার উপর জোর দিতে চেয়েছেন। বাইরের উপকরণকে গ্রহণ করে স্বতন্ত্র ভাবে তার জন্মান্তর ঘটানোর মধ্য দিয়ে ছোটোগল্পের সৃষ্টি। এখানে রচয়িতার মনোভূমিরই প্রাধান্য। পক্ষান্তরে কখনও গল্পের বস্তুভূমিও লেখককে আকর্ষণ করতে পারে সেক্ষেত্রে তাকে প্রাধান্য দিতে দেখা গেছে গল্পকার একটা গল্প মিশিয়ে দিয়েছেন তার সঙ্গে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম প্রকরণের উদাহরণ হিসাবে মোপাসাঁর 'ল্য ওরলা' এবং দ্বিতীয় প্রকরণের উদাহরণ হিসাবে ভিক্তর য়ুগোর 'লে ত্রাভাইয়ের দ্য লা মেয়ার' (যারা সমুদ্রে কাজ করে) গল্পদুটির উল্লেখ করেছেন। বাংলা গল্পে প্রথম প্রকরণের উদাহরণ হলো- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'শ্মশানঘাট' এবং দ্বিতীয় প্রকরণের উদাহরণ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কালচিতি'। তাই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তঃ
" ঘটনা, চরিত্র, বিষয়- অবলম্বন যা-ই হোক, তাঁকে একটি নিজস্ব জীবন-বোধিতে, একটি দর্শনে, একটি স্বগত-ভাবলোকে পৌঁছে দেওয়াই ছোটগল্পের কাজ।"[1]