Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জ নেপালের হিমালয় অঞ্চলের একটি জাতীয় উদ্যান। এটি ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। নেপালের মুগ এবং জুমলা জেলাজুড়ে বিস্তৃত এই উদ্যানটির আকার ১০৬ বর্গকিলোমিটার। রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জ নেপালের জাতীয় উদ্যানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট। এই উদ্যানের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ রারা হ্রদ, যা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ২,৯৯০ মিটার (৯,৮১০ ফিট) উচুতে অবস্থিত।[১] হুমলা-জুমলা অঞ্চলের স্বতন্ত্রমন্ডিত উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে উদ্যানটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জ | |
---|---|
আইইউসিএন বিষয়শ্রেণী II (জাতীয় উদ্যান) | |
অবস্থান | নেপাল |
নিকটবর্তী শহর | জুমলা |
স্থানাঙ্ক | ২৯°৩০′৪০″ উত্তর ৮২°০৩′০২″ পূর্ব |
আয়তন | ১০৬ কিমি২ (৪১ মা২) |
স্থাপিত | ১৯৭৬ |
কর্তৃপক্ষ | জাতীয় উদ্যান ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বন ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় |
রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জের উচ্চতার তারতম্য ২,৮০০ থেকে ৪,০৩৯ মিটারের মধ্যে। রারা হ্রদের দক্ষিণে অবস্থিত চুচেমারা শৃঙ্গ এই উদ্যানের সর্বোচ্চ স্থান। উদ্যানের উত্তরে, রুমা কান্দ ও মালিকা কান্দ-এর মাঝামাঝি অবস্থিত আলপাইন স্বাদু জলের রারা হ্রদ নেপালের সর্ববৃহৎ হ্রদ। হ্রদটি ১০.৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এবং এর সর্বোচ্চ গভীরতা ১৬৭ মিটার। রারা হ্রদের আকার উপবৃত্তাকার। পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত হ্রদটি দৈর্ঘ্যে ৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ৩ কিলোমিটার। হ্রদের পানি নিজার নদ হয়ে অবশেষে মুগু-কর্নালি নদীতে পতিত হয়।
নেপালের জাতীয় উদ্যান ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তর রারা জাতীয় উদ্যানের সংরক্ষণ করে। নেপাল সেনা বাহিনী এই সংরক্ষণ কাজে সহায়তা করে থাকে।
গ্রীষ্মকালে রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জের আবহাওয়া স্বস্তিদায়ক থাকে। তবে উচ্চতাজনিত কারণে শীতকালে তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। এই উদ্যান ভ্রমণের ভাল সময় সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, এপ্রিল এবং মে। শীতকালে তাপমাত্রা শূণ্য ডিগ্রীর নিচে নেমে যায় এবং উচু স্থানগুলো বরফাবৃত থাকায় চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে। জুন থেকে অগাস্ট বর্ষাকাল। বর্ষাকালে বৃষ্টিপাতে কারণে উদ্যান ভ্রমণ কষ্টকর হয়।
রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জে েক হাজার সত্তর প্রজাতির উদ্ভিদ সনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রোডোডেনড্রন, ফির, বাদামী ওকে ইত্যাদি পাওয়া যায় সাব-আলপাইন অঞ্চলে। ৩,২০০ মিটারের নিচে মূলত ব্লু-পাইন, রোডোডেনড্রন, হিমালায়ান স্প্রুস, কাল জুনিপার ও হিমালায়ান সাইপ্রেস দেখা যায়। ৩,২০০ মিটারের উপরে মূলত সরলবর্গীয় বনের বিস্তার। এখানে পাইন, ফির ও স্প্রুস বেশি দেখা যায়।
রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জে ৫১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৪১ প্রজাতির পাখি, দুই প্রজাতির সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী এবং ৩ প্রজাতির মাছ চিহ্ণিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে লাল পান্ডা, তুষার চিতা, এশিয়ান কালো ভাল্লুক, ভারতীয় চিতা, মেঘলা চিতা, শিয়াল, হিমালয়ান থর, হলুদগলা মার্টিন, রামকুত্তা, পাতি ভোঁদড়, ধূসর লাঙ্গুর ও লাল বান্দর।[২][৩]
রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জে পর্যটকদের জন্যে থাকার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। তাই এখানে সম্ভাবনা থাকলেও পর্যটন বেশি বিকশিত হয়নি। উদ্যানে আসতে হলে কাঠমান্ডু থেকে নেপালগুঞ্জ হয়ে এরপরে জুমলা বা কোল্টিতে আসতে হয়। সেখান থেকে তিনদিনের হাঁটাপথে উদ্যানের অফিসে আসা যায়। বিকল্প উপায়ে পর্যটকরা নেপালগুঞ্জ থেকে সুরখেতে আসতে পারে। এজন্য দশদিনের হাঁটাপথ পাড়ি দিতে হয়। রারা হ্রদ দেখতে প্রতি বছর অনধিক ২০০ পর্যটক আসে।[৪] অভিজ্ঞ ট্রেকাররা উদ্যানের বিভিন্ন পথে ঘুরতে পারে। হিমালয় অঞ্চলের অনন্য উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল দেখার জন্যে রারা রাষ্ট্রীয় নিকুঞ্জ আকর্ষণীয় স্থান। উদ্যান এলাকার মধ্যে কোন স্থায়ী বসতি নেই। তবে আগে এখানে রারা ও চাপরু নামে দুইটি গ্রাম ছিল, যা পরে বাঁকে জেলায় স্থানান্তর করা হয়। কৃষিকাজ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষিকাজেরদরুন উদ্যানের পরিবেশ নষ্ট হবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.