রাখাইন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ২০১২
২০১২ সালে সংঘটিত রাখাইন এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে একটি সংঘাত / From Wikipedia, the free encyclopedia
রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত ২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হচ্ছে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা ও রাখাইনদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের ঘটনাপ্রবাহ। দাঙ্গাটির সূত্রপাত হয় জাতিগত কোন্দলকে কেন্দ্র করে এবং উভয় পক্ষই এতে জড়িত হয়ে পরে।[5] অক্টোবর মাসে এটি সকল নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধের দাঙ্গা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।[6] দাঙ্গার তাৎক্ষণিক কারণ জানা যায় এক রাখাইন তরুণীকে কয়েকজন মুসলিম কর্তৃক ধর্ষণ ও হত্যার এবং এর ফলে রাখাইন বৌদ্ধদের দ্বারা ১০জন মুসলিম রোহিঙ্গাকে আহত করা প্রধান কারণ। দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে, মিয়ানমার সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দাঙ্গা কবলিত এলাকায় কারফিউ জারি করে এবং সৈন্য মোতায়েন করে। ১০জুন রাখাইনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় এবং সামরিক বাহিনীকে ঐ অঞ্চলের প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।[7][8] চলমান দাঙ্গায় অনেকেই নিহত হয়। ২২শে আগস্ট সরকারিভাবে ৮৮ জনের নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করা হয় – রোহিঙ্গা ৫৬ এবং ৬০ রাখাইন। আনুমানিক ৯০,০০০ লোক বাস্তুচ্যূত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।[9] প্রায় ২,৫২৮টি বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয় যাদের বেশিরভাগই ছিল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর।[10] দাঙ্গায় বার্মিজ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বে্র অভিযোগ পাওয়া যায়। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এক তরফাভাবে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক গণ গ্রেফতার এবং ধরপাকড়ের অভিযোগ উঠেছে।[11]
রাখাইন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা - ২০১২ | |
---|---|
স্থান | রাখাইন রাজ্য, মিয়ানমার |
তারিখ | ০৮ জুন, ২০১২ (ইউ.টি.সি+০৬:৩০) |
হামলার ধরন | ধর্মীয় |
নিহত | জুন: ৮৮[1][2][3] অক্টোবর: কমপক্ষে ৮০[4] ১০০,০০০ বাস্তুচ্যূত[4] |
সরকারের প্রাথমিক পদক্ষেপে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন,[12][13]অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং অন্যান্য মানবাধিকার সংস্হাগুলো প্রশংসা করলেও মূলত মিয়ানমার সরকারের কয়েক দশকের পরিকল্পিত বৈষম্যের কারণে রোহিঙ্গারা গণগ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে যায়।[12] মিয়ানমারের রাষ্ট্রপ্রধান থেইন সেইনের রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের বাইরে পাঠানোর প্রস্তাব জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার এবং কিছু মানবাধিকার সংস্হা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে।[14] কিছু সাহায্য প্রদানকারী সংস্হা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প থেকে বিচ্ছিন্ন করে, অবমাননাকর আচরণ করে এবং মানবিক সাহায্য প্রদানকারী সংস্হার কর্মীদের গ্রেফতার করে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সংকট সৃষ্টির জন্য মিয়ানমার সরকারকে দায়ী করেছেন।[15]
অক্টোবরে মাসে দাঙ্গা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এতে কমপক্ষে ৮০জন নিহত হয়, বাস্তুচ্যূত হয় প্রায় ২০,০০০ মানুষ এবং হাজার হাজার ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ে যায়।