Loading AI tools
ভারতীয় বিপ্লবী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
যতীন্দ্র নাথ দাস (২৭ অক্টোবর, ১৯০৪ - ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯২৯) ছিলেন একজন ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং বিপ্লবী ভগৎ সিংয়ের সহকর্মী। আত্মত্যাগী, সাহসী মানুষটি লাহোর ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ১৯২৯ সালের ১৪ জুন গ্রেপ্তার হন। জেলবন্দীদের অধিকারের দাবিতে ওই বছরই ১৩ জুলাই অনশন শুরু করেন তিনি। ৬৩ দিন অনশনের পর ১৩ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৪ বছর বয়সে জেলেই মৃত্যু হয় তার।[1][2] স্বাধীনতার পর তার সম্মানে কলকাতা মেট্রোর হাজরা অঞ্চলের মেট্রো স্টেশনটির নামকরণ করা হয় যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশন।
যতীন্দ্র নাথ দাস | |
---|---|
জন্ম | যতীন্দ্র নাথ দাস ২৭ অক্টোবর ১৯০৪ |
মৃত্যু | ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯২৯ ২৪) | (বয়স
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পরিচিতির কারণ | ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা |
যতীন্দ্রনাথ দাসের জন্ম কলকাতায়। তার পিতার নাম বঙ্কিমবিহারী দাস এবং মাতার নাম সুহাসিনী দেবী। ১৯২০ সালে ভবানীপুর মিত্র ইন্সটিটিউশন থেকে ম্যাট্রিক পাস করে কংগ্রেসের সদস্য হয়ে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯২৮-২৯ সনে বঙ্গবাসী কলেজের ছাত্র ছিলেন।
১৯২৯ সালের ১৪ জুন যতীন দাসকে তার কলকাতার বাড়ি থেকে লাহোর পুলিশের নির্দেশে গ্রেপ্তার করা হয়। মূলত ঐ সময় ইস্যু ছিল লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার বিচারাধীন বলে এই গ্রেপ্তার। পরবর্তী সময়ে এরা জেলের ভেতর রাজনৈতিক বন্দিদের মর্যাদার দাবীতে এবং মানবিক সুযোগ সুবিধার আন্দোলনে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। তারা ১৩ জুলাই থেকে ভগৎসিং ও বটুকেশ্বর দত্তের সমর্থনে অনশন সংগ্রাম আরম্ভ করে। যতীন দাস ছাড়া আর কারো অনশন আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ছিল না। ভাবাবেগে চালিত হয়ে অনশন সংগ্রামে যোগ দিতে নিষেধ করেছিল অন্য সাথীদের। সে বলল, রিভলবার পিস্তল নিয়ে লড়াই করাই চেয়ে অনেক বেশি কঠোর এক অনশন সংগ্রামে আমরা নামছি। অনশন সংগ্রামীকে তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে হয়।
যতীন দাস আরো বলেন, সে নিজে অনশন আরম্ভ করলে যতদিন না সরকার দাবী মেনে না নেয়, ততদিন অনশন চালিয়ে যাবে। সবাইকে বলে তাড়াহুড়ো করে কোন কিছু না করাই ভাল। যতীন দাসের হুশিয়ারি সত্ত্বেও পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঐতিহাসিক লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার অনশন শুরু হয়। ওদিকে মামলার কাজও চলছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
১৯২৩ সনে বিপ্লবী শচীন্দ্রনাথ সান্যাল কলকাতার ভবানিপুরে ঘাঁটি করলে তিনি এই দলে যোগ দেন। পরে দক্ষিণেশ্বরের বিপ্লবী দলের সংগেও তার যোগাযোগ হয়। ১৯২৪ সালে দক্ষিণ কলকাতায় "তরুণ সমিতি" প্রতিষ্ঠা করেন এবং এই সময় গ্রেপ্তার হয়ে ঢাকা জেলে প্রেরিত হন। জেল কর্তৃপক্ষের আচরণের প্রতিবাদে ২৩ দিন অনশন করেন। ১৯২৯ সালের ১৪ জুন লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি হিসেবে লাহোর সেন্ট্রাল জেলে প্রেরিত হন। এখানে রাজবন্দিদের উপর জেল কর্তৃপক্ষের দুর্ব্যবহারের জন্য অনশন শুরু করেন। এই সময় তাকে বহুবার জোর করে খাওয়াবার চেষ্টা করা হয়। ৬৩ দিন অনশনের পর তিনি মারা যান। এইভাবে মৃত্যুবরণ করার ফলে রাজবন্দিদের উপর অত্যাচার প্রশমিত হয়েছিলো। এই বীর শহিদের মৃতদেহ কলকাতায় আনা হলে দুই লক্ষ লোকের এক বিরাট মিছিল নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে শোকযাত্রায় কেওড়াতলা শ্মশানঘাট পর্যন্ত অনুগমন করে।[3][4]।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
অনশন চলাকালীন শান্তিনিকেতনে তপতী নাটকের মহড়া চলছিল, এই ঘটনায় মর্মাহত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাটকের মহড়া বন্ধ রাখেন এবং সেই রাতেই রচনা করেন 'সর্ব খর্ব তারে দহে তব ক্রোধ দাহ' গানটি , যেটি পরে 'তপতী' নাটকে অন্তর্ভুক্ত হয়।[5]
ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে অনশন করে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের কয়েকজন হচ্ছেন যতীন্দ্রনাথ দাস, মহাবীর সিং, মোহিতমোহন মৈত্র, মোহনকিশোর নমোদাস, মহেন্দ্রলাল বিশ্বাস, হরেন্দ্র মুন্সী, অনিলকুমার দাস, মণীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, পণ্ডিতরাম রক্ষাসহ আরো অনেকে।[4][6]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.