Loading AI tools
ইরানের রাজনীতিবিদ। উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মোহাম্মদ মোসাদ্দেক (ফার্সি: مُحَمَد مُصَدِق; আইপিএ: [mohæmˈmæd(-e) mosædˈdeɣ] (; জন্ম: ১৬ জুন, ১৮৮২ - ৫ মার্চ, ১৯৬৭) তেহরানে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত )ইরানি রাজনীতিবিদ ছিলেন। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ মেয়াদে গণতান্ত্রিক পন্থায় ইরানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন।[1][2][3] কিন্তু সিআইএ ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা দলের চক্রান্তে সৃষ্ট অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।[4][5]
মোহাম্মদ মোসাদ্দেক | |
---|---|
ইরানের ৬০তম ও ৬২তম প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২১ জুলাই ১৯৫২ – ১৯ আগস্ট ১৯৫৩ | |
সার্বভৌম শাসক | মোহাম্মদ রেজা পাহলভী |
ডেপুটি | আহমেদ জিরাকজাদেহ |
পূর্বসূরী | আহমেদ কাভাম |
উত্তরসূরী | ফাজুল্লাহ জাহেদি |
কাজের মেয়াদ ২৮ এপ্রিল ১৯৫১ – ১৬ জুলাই ১৯৫২ | |
সার্বভৌম শাসক | মোহাম্মদ রেজা পাহলভী |
ডেপুটি | হুসাইন ফাতেমি |
পূর্বসূরী | হুসাইন আলা |
উত্তরসূরী | আহমেদ কাভাম |
ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেতা | |
কাজের মেয়াদ ১ জানুয়ারি ১৯৪৯ – ৫ মার্চ ১৯৬৭ | |
ডেপুটি | করিম সানজাবি |
পূর্বসূরী | দল প্রতিষ্ঠিত |
উত্তরসূরী | করিম সানজাবি |
ইরানের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১ মে ১৯২০ – ১৯ আগস্ট ১৯৫৩ | |
সংসদীয় এলাকা | তেহরান |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | তেহরান, পারস্য | ১৬ জুন ১৮৮২
মৃত্যু | ৫ মার্চ ১৯৬৭ ৮৪) (বয়স আহমেদাবাদ-ই মোসাদ্দেক, ইরান |
রাজনৈতিক দল | ন্যাশনাল ফ্রন্ট |
দাম্পত্য সঙ্গী | জিয়া উস-সালতান (১৯০১–১৯৬৫) |
সন্তান | ৫ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | সায়েন্সেস পো ইউনিভার্সিটি অব নিউশাটিল |
ধর্ম | ইসলাম |
স্বাক্ষর |
লেখক, প্রশাসক, আইনজীবী ও প্রথিতযশা সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। ক্ষমতায় থাকাকালে সামাজিক ও রাজনৈতিক পুণর্গঠনে তার সরকার অগ্রসর হয়। তন্মধ্যে, সামাজিক নিরাপত্তা, ভাড়া নিয়ন্ত্রণ, ভূমি পুণর্গঠন অন্যতম।[6] ১৯১৩ সাল থেকে অ্যাংলো-পার্সিয়ান অয়েল কোম্পানি (এপিওসি/এআইওসি) কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত ইরানি তৈল শিল্পকে জাতীয়করণে উদ্যোগী হন।[7]
তেহরানে উচ্চ পদস্থ ও প্রথিতযশা পরিবারে তার জন্ম। বাবা মির্জা হিদায়েতুল্লাহ আশতিয়ানি কাজার রাজত্বে অর্থমন্ত্রী হন। মা শাহজাদী মালিকা তাজ খানম পুণর্গঠনবাদী কাজার প্রিন্স আব্বাস মির্জার নাতনি ছিলেন।[8][9][10] ১৮৯২ আসলে হিদায়েতুল্লাহ মারা গেলে তার চাচা খোরাশান প্রদেশের ট্যাক্স সংগ্রহকারী হিসেবে মনোনীত হন ও নাসের আল-দীন কর্তৃক মোসাদ্দেক-উস-সালতানেহ পদবী লাভ করেন।[11] এ পদবী বিলুপ্তির পূর্ব-পর্যন্ত মোসাদ্দেকও নিজেকে একই পদবীতে পরিচিতি ঘটান।[12]
১৯০৯ সালে আইন বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য ফ্রান্সের প্যারিসে যান। শারীরিক অসুস্থতার কারণে দুই বছর পর দেশে ফিরে আসেন। পাঁচ মাস পর সুইজারল্যান্ডের নিউচাতেল বিশ্ববিদ্যালয় ডক্টরেট অব ল বিষয়ে পড়াশোনা করেন।[13] জুন, ১৯১৩ সালে প্রথম ইরানি হিসেবে ইউরোপের কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।[14] রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশের পূর্বে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে তেহরান স্কুল অব পলিটিক্যাল সায়েন্সে অধ্যাপনা করেন।[15]
১৯০৫-০৭ সময়কালে সংঘটিত ইরানি সাংবিধানিক বিপ্লবের মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে তার। ২৪ বছর বয়সে নব প্রবর্তিত পারস্য সংসদ ইরানের মজলিসে ইসফাহান এলাকা থেকে নির্বাচিত হন। ১৯১৯ সালে অ্যাংলো-পারস্য চুক্তির প্রতিবাদ করেন ও সুইজারল্যান্ডে চলে যান। পরের বছর নব-নির্বাচিত ইরানি প্রধানমন্ত্রী হাসান পিরনিয়া’র আমন্ত্রণে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯২১ সালে আহমদ কাভাম সরকারের নিয়ন্ত্রণে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এরপর জুন, ১৯২৩ সালে মশির-এদ-দৌল্লা সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন। তারপর তিনি আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর হন। ১৯২৩ সালে তিনি পুনরায় মজলিসের সদস্য হন। ১২ ডিসেম্বর, ১৯২৫ তারিখে তরুণ শাহ আহমদ শাহ কাজারের পরিবর্তে রেজা শাহকে পারস্যের সম্রাট ঘোষণা করা হয় ও পাহলভী রাজবংশের সূচনা ঘটে।[16] কিন্তু নতুন সরকারের সাথে তিনি দ্বি-মত পোষণ করেন ও রাজনীতি থেকে অবসর নেন।[17][18]
১৯৪১ সালে ব্রিটিশ বাহিনী কর্তৃক রেজা শাহ পাহলভীকে জোরপূর্বক ক্ষমতাচ্যুত করা হয় ও তার পুত্র মোহাম্মদ রেজা পাহলভীকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৯৪৪ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। এসময় তিনি জেবহে মেলি দলের প্রধান ছিলেন। দেশে গণতন্ত্র আনয়ণ, ইরানি রাজনীতিতে বিদেশীদের হস্তক্ষেপ থেকে দূরে রাখা ও অ্যাংলো-পারস্য তৈল কোম্পানিকে রাষ্ট্রায়ত্তের জন্য আন্দোলন করছিলেন। ১৯৪৭ সালে নির্বাচনী পুণর্গঠন সংক্রান্ত বিল মজলিসে অনুমোদনলাভে ব্যর্থ হলে তিনি পুনরায় অবসরের ঘোষণা দেন।[19]
২৮ এপ্রিল, ১৯৫১ তারিখে ইরানি সংসদ মজলিসে ৭৯-১২ ভোটে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়। শাহ মোসাদ্দেকের জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক শক্তি সম্পর্কে সজাগ ছিলেন। নতুন সরকার সামাজিক পুণর্গঠনের অংশ হিসেবে অসুস্থ ও আঘাতপ্রাপ্ত কর্মীদের অর্থ সহায়তা, কৃষকদেরকে জোরপূর্বক জমি চাষ থেকে অব্যাহতিসহ বেকারদের সহায়তা করে।
১ মে মোসাদ্দেক এআইওসিকে জাতীয়করণ করে ও ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাতিল করে। পরের মাসেই পাঁচ মজলিস সদস্যকে খুজিস্তানে জাতীয়করণের বিষয়ে প্রেরণ করে।[20][21] চুক্তি বাতিলের ফলে ব্রিটিশ সরকার পারস্য উপসাগরে নৌবাহিনী মোতায়েন করে ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করে।[20]
অনেক ইরানিদের মতে মোসাদ্দেক প্রাচীন ধারার গণতন্ত্রকে সম্মুখে নিয়ে আসেন ও বিদেশীদের প্রভাববিস্তার থেকে ইরানের ইতিহাসকে আধুনিকতার দিকে নিয়ে যান। কিন্তু, ১৯ আগস্ট, ১৯৫৩ তারিখে এমআই৬ এর অনুরোধক্রমে সিআইএ কর্তৃক সংঘটিত অভ্যুত্থানে তার সরকারের পতন ঘটে। ইরানি জেনারেল ফজলোল্লাহ জাহেদি তার স্থলাভিষিক্ত হন।[22] পাশ্চাত্যের দেশসমূহ এ অভ্যুত্থানকে অপারেশন অ্যাজাক্স[23] নামে পরিচিতি ঘটানো হলেও ইরানের বর্ষপঞ্জীর তারিখ অনুযায়ী এটি ২৮ মর্দাদ ১৩৩২ অভ্যুত্থান হিসেবে পরিচিত।[24]
অভ্যুত্থানের পর তিনি তিন বছর কারাভোগ করেন। এরপর আমৃত্যু তাকে গৃহে অন্তরীণ রাখা হয়। ৫ মার্চ, ১৯৬৭ তারিখে আহমদাবাদ-ই মোসাদ্দেকে অবস্থিত নিজ বাসগৃহে তার দেহাবসান ঘটে।[25][26][27][28] রাজনৈতিক অসন্তোষ থেকে দূরে থাকতে তার দেহ নিজ বাড়ীতে সমাধিস্থ করা হয়।
১৯০১ সালে জাহরা খানম নাম্নী নাসের আল-দীন শাহের নাতনির সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ দম্পতির পাঁচ সন্তান ছিল।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.