![cover image](https://wikiwandv2-19431.kxcdn.com/_next/image?url=https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/43/HeroinWorld-bn.svg/langbn-640px-HeroinWorld-bn.svg.png&w=640&q=50)
মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন
From Wikipedia, the free encyclopedia
মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন ঐতিহাসিকভাবে দেশটির স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের একটি প্রধান অংশ। মিয়ানমার আফগানিস্তানের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ। এখানে বিশ্বের প্রায় ২৫% আফিম তৈরী হয়। এটি সোনালী ত্রিভুজ নামক অঞ্চলের অংশ। ঔপনিবেশিক শাসনামলে আফিম শিল্প একটি একচেটিয়া কারবার ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ও বিদ্রোহী যোদ্ধারা বেআইনিভাবে এই আফিম উৎপাদনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে,[1] যা মূলত হেরোইন শিল্পোৎপাদনের কাঁচামাল সরবরাহে ব্যবহার করা হয়। তবে সাম্প্রতিককালে ২০১৫ সালের পর থেকে বছর গড়ানোর সাথে সাথে মিয়ানমারে আফিম পপি চাষে ভাটা পড়েছে। জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ বিষয়ক কার্যালয়ের সর্বশেষ উপাত্ত অনুযায়ী ২০২০ সালে মিয়ানমারে প্রায় ৪০৫ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদিত হয়, যা ছিল ২০১৩ সালে উৎপাদিক আনুমানিক ৮৭০ মেট্রিক টনের অর্ধেকেরও কম। একই সময় আফিম চাষের জমির আয়তন ২০১৯ সালের ৩৩,১০০ হেক্টর থেকে ১১% কমে ২০২০-এ ২৯,৫০০ হেক্টরে দাঁড়ায়।[2]
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/4/43/HeroinWorld-bn.svg/640px-HeroinWorld-bn.svg.png)
মিয়ানমারে আফিম উৎপাদন প্রধানত দেশটি শান ও কাচিন রাজ্যে কেন্দ্রীভূত। দারিদ্র্যের কারণে কৃষকেরা আফিম চাষে আকৃষ্ট হয়, কারণ চালের চেয়ে আফিম বেচে কেজিপ্রতি প্রায় ১৭ গুণ বেশি টাকা উপার্জন করা যায়। যদিও মিয়ানমারে ইদানিং কৃত্রিমভাবে মাদকদ্রব্য উৎপাদনের প্রবণতা বেড়েছে, বিশেষ করে সোনালী ত্রিভুজ অঞ্চলে মেথাঅ্যামফিটামিন উৎপাদন বেড়েছে, তা সত্ত্বেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে হেরোইনের ব্যবসায় নিয়োজিত সুসংগঠিত অপরাধী চক্রগুলি এখনও তাদের ব্যবসা থেকে তাৎপর্যপূর্ণ পরিমাণে মুনাফা অর্জন করে থাকে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মিয়ানমারে দেশের অভ্যন্তরে বছরে ৬ টন হেরোইন সেবন করা হয়, যার মূল্য আনুমানিক ১৫ থেকে ২১ কোটি মার্কিন ডলার। এর পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে প্রতিবেশী দেশগুলিতে প্রতি বছর ৫০ কোটি থেকে ১৬০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের হেরোইন পাচার করা হয়। মিয়ানমার পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির জন্য (এমনকি অস্ট্রেলিয়ার জন্যও) আফিম ও হেরোইনের প্রধান যোগানদার, যা সেসব দেশে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিজনিত সমস্যার সৃষ্টি করে চলেছে। সর্বশেষ প্রাক্কলন অনুযায়ী অঞ্চলটিতে ৩০ লক্ষ হেরোইন সেবক আছে যারা প্রতি বছর ১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার সমমূল্যের মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে।[3]
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে সাম্প্রতিককালে আফিম উৎপাদনের কারণে মিয়ানমারে ধনী-গরিবের বৈষম্য বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে চলেছে, এবং এর ফলে গণতন্ত্রকে বলি দিয়ে অপরাধী চক্রগুলি দিনদিন শক্তিশালী হচ্ছে।