Loading AI tools
গৌতম মেনন পরিচালিত ২০০১ সালের চলচ্চিত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মিন্নালে (তামিল: மின்னலே, অনুবাদ 'বজ্র') হচ্ছে ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি প্রণয়ধর্মী তামিল চলচ্চিত্র যেটি রচনা ও পরিচালনা করেন গৌতম মেনন।[1][2] এই চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় ভূমিকায় ছিলেন আর. মাধবন, আব্বাস এবং রীমা সেন।[3] এই চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তামিল চলচ্চিত্র শিল্পে নবাগত সঙ্গীতকার হরিষ জয়রাজ, তার সুর করা গানগুলো তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। মিন্নালে চলচ্চিত্রকে ২০০১ সালের ভালোবাসা দিবসের উপহার হিসেবে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যদিও এটি মুক্তি পায় ভালোবাসা দিবসের ৪ দিন পর (১৮ ফেব্রুয়ারি)।[4][5][6] এই চলচ্চিত্রটির হিন্দি সংস্করণের নাম হচ্ছে র্যাহনা হে তেরে দিল মেঁ যেটি ঐ একই বছরেরই ১৯ অক্টোবর মুক্তি পায় এবং সেখানে রীমা সেনের জায়গায় দিয়া মির্জা অভিনয় করেন আর আব্বাসের জায়গায় অভিনয় করেন সাইফ আলি খান।[7]
মিন্নালে | |
---|---|
পরিচালক | গৌতম মেনন |
প্রযোজক | সুনন্দা মুরালী মনোহর |
রচয়িতা | নাগরজন (সংলাপ) |
কাহিনিকার | গৌতম মেনন বিপুল শাহ |
শ্রেষ্ঠাংশে | আর. মাধবন আব্বাস রীমা সেন নাগেশ বিবেক |
সুরকার | হরিষ জয়রাজ |
চিত্রগ্রাহক | আর. ডি. রাজাশেখর |
সম্পাদক | সুরেশ উরস |
প্রযোজনা কোম্পানি | সী (আই) টিভি এন্টারটেইনমেন্ট |
মুক্তি | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০০১ |
স্থিতিকাল | ১৭১ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | তামিল |
এই চলচ্চিত্রটি শুরু হয় তামিলনাড়ুর 'উটি'-এর একটি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয়ের দৃশ্যের মাধ্যমে, কথা বলতে শোনা যায় রাজেশকে (মাধবন)। রাজীব স্যামুয়েল (আব্বাস) হচ্ছে এই কলেজের কম্পিউটার প্রকৌশল এর মেধাবী ছাত্র, অপরদিকে রাজেশ হচ্ছে যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের এক বখে যাওয়া খারাপ ছাত্র। রাজীব এবং রাজেশ দুজনেরই কলেজে নিজস্ব গুন্ডাবাহিনী আছে আর এর দ্বারা তারা একে অপরের সাথে বিভিন্ন প্রকার ঝামেলায় জড়ায়। রাজীব এবং রাজেশ দুইজনেই কলেজ থেকে স্নাতক হয়ে পড়ে এবং দুইজন দুইজনার চেহারা ভবিষ্যতে আর দেখতে চায়না বলে স্থির করে। রাজীব বিদেশ চলে যায় আর রাজেশ ভারতেই থেকে যায়। দুই বছর পর দেখা যায় রাজেশ চেন্নাই এর একটি আইটি কোম্পানিতে চাকরি করে যেখানে তাকে ইন-টার্নদের সফটওয়্যার বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করতে হয়। রাজেশ চেন্নাইতে তার দাদা সুব্রমণিয়ম ওরফে সুব্বুনী (নাগেশ) এর সাথে থাকে। একদিন ব্যাঙ্গালোরে রাজেশ তার একটি বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানে যেয়ে রীনা (রীমা সেন) নামের একটি মেয়েকে দেখে এবং তাকে পছন্দ করে ফেলে (এই মেয়েটিকে সে এর আগেও একবার ব্যাঙ্গালোরেরই এক রাস্তায় দেখেছিল), কিন্তু কথা বলার সাহস পায়না, একদিন চেন্নাইতেও (রাজেশের বসবাসের শহর) সে রীনাকে দেখতে পায়, কিন্তু তার সঙ্গে কথা বলতে পারেনা। রাজেশের বন্ধু চকালিঙ্গম (বিবেক) রীনার একটি বান্ধবী বসুকীকে (রাজী আইয়ার) একটি মার্কেটে দেখতে পায় এবং তাকে দেখার সাথে সাথেই রাজেশকে ফোনের মাধ্যমে খবর দেয়। রাজেশ এবং চকালিঙ্গম কৌশলের মাধ্যমে রীনার ফোন নম্বর বসুকীর কাছ থেকে জেনে নেয়। রাজেশ রীনার নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও এটি জেনে হতাশ হয় যে রীনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে রাজীব নামের একটি ছেলের সঙ্গে যে যুক্তরাষ্ট্র থাকে, তবে রীনা তাকে আজ পর্যন্ত দেখেনি শুধু ছোটবেলায় দেখেছে। রাজেশকে তার দাদা সুব্বুনী বুদ্ধি দেয় যে মেয়েটার সঙ্গ পেতে হলে তাকে রাজীব সেজে মেয়েটার বাসায় যেতে হবে, রাজেশ তাই করে এবং রীনা তাকে যুক্তরাষ্ট্রফেরত রাজীবই মনে করে। কয়েকদিন ঘোরাঘুরি আর একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার পর রীনা রাজেশের প্রেমে পড়ে যায়। রাজেশ একদিন সিদ্ধান্ত নেয় যে সে রীনাকে তার আসল পরিচয় বলে দেবে, তবে এর আগেই রাজীব (আব্বাস) যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে আসে এবং রীনার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে, রীনা আসল রাজীবকে দেখে আকাশ থেকে পড়ে যায়। রীনা রাজেশকে ঘৃণা করা শুরু করে। রাজেশ রীনার বাসায় সত্য কথা বলার জন্য আসে তবে রীনা তাকে তিরস্কার করে। রাজেশ জেনে ফেলে যে এই রাজীব আসলে তার কলেজজীবনের বন্ধু রাজীব, সে তাকে রীনার জীবন থেকে সরে যেতে বলে। রাজীব রাজী হয়না, তাদের মধ্যে অনেক গ্যাঞ্জাম হয়। সিনেমার শেষদিকে দেখায় যে রাজীব রীনাকে বিয়ের জন্য চার্চে নিয়ে যায় কিন্তু রীনা অন্যমনস্ক থাকে এবং মনে মনে রাজেশকে বিয়ে করতে চায় তারপর রাজীব রাজেশের বিদেশ চলে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে তার কাছে রীনাকে দিয়ে আসে।
২০০০ সালে গৌতম মেনন ও লালা নামের একটি তামিল চলচ্চিত্র বানানোর কথা ভাবছিলেন, তার চলচ্চিত্র বানানোর চিন্তাটাই 'মিন্নালে' হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে, গৌতম আর. মাধবনকে মুখ্য ভূমিকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, মাধবন তখন তার অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে ছিলেন এবং তার ২০০০ সালের তামিল চলচ্চিত্র আলাইপায়ুদে ব্যাপক সফলতা পেয়েছিলো।[3] গৌতম আরো বলেন যে তার এই চলচ্চিত্রে বানানোর ক্ষেত্রে সবাই ছিলো নতুন মুখ শুধু সুরেশ উরস ছাড়া যিনি ছিলেন তামিল চলচ্চিত্র শিল্পের একজন খ্যাতনামা টেকনিশিয়ান। মেনন একটু দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন যখন মাধবন তাকে তার আলাইপায়ুদের পরিচালক মণি রত্নমকে মিন্নালের কাহিনী শোনাতে বলেন এবং চলচ্চিত্রটি ব্যবসা করতে পারবে কিনা জিজ্ঞেস করতে বলেন, কারণ মাধবন মণিকে তার গুরু মানতেন। মণি রত্নম কাহিনী শুনে সেটাকে খারাপ বলেন যদিও তারপরেও মাধবন মিন্নালেতে অভিনয় করতে রাজি হয়েছিলেন।[8]
১৯৯৯ সালের মিস ওয়ার্ল্ড যুক্তা মুখীকে ২০০০ সালের জুলাই মাসে নায়িকার ভূমিকায় নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিলো কিন্তু সে সময় দিতে না পারায় রীমা সেনকে নেওয়া হয়, এবং রীমার জন্য এটিই প্রথম তামিল চলচ্চিত্র ছিলো।[9] মাধবনের সঙ্গে আব্বাস এর আগেও একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন তবে সেটি ছিলো কন্নড় ভাষার।[10]
চলচ্চিত্রটিকে ২০০১ সালের ভালোবাসা দিবসে মুক্তি দেবার কথা থাকলেও মুক্তি পায় ৪ দিন পর (১৮ ফেব্রুয়ারি) এবং মুক্তির সঙ্গে সঙ্গেই চলচ্চিত্রটি বাণিজ্যিক সফলতায় শীর্ষের দিকে চলে যায়। মাধবন আলাইপায়ুদেতে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পেলেও তার পরের চলচ্চিত্রটা একটুও ব্যবসা করতে পারেনি, এক্ষেত্রে মিন্নালে ছিলো তার কর্মজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কারণ চলচ্চিত্রটি তাকে আবার জনপ্রিয় করে তোলে।[4]
হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রযোজক বসু ভাগ্যননী মিন্নালে দেখে এর হিন্দি পুনর্নির্মাণ বানানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং গৌতমকে পরিচালনা করতে বলেন। হিন্দি চলচ্চিত্রটির নাম দেওয়া হয় র্যাহনা হে তেরে দিল মেঁ এবং এটিতে মাধবন তার রাজেশের মতই মাধব কুমার শাস্ত্রী নামে একটি চরিত্রে অভিনয় করেন এবং আব্বাসের রাজীব স্যামুয়েল হিসেবে সাইফ আলী খান রাজীব সামরাও এবং রীনা জোসেফ চরিত্রটিকে রীনা মালহোত্রা নামে দিয়া মীর্জা পুনরায় ফুটিয়ে তোলেন।[11]
হরিষ জয়রাজ শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার - তামিল জিতেছিলেন এই চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনার জন্য। বম্বে জয়শ্রী 'ভাসীগারা' গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার - তামিল জিতেছিলেন।
গানের তালিকা
নং. | শিরোনাম | গায়ক/গায়িকা | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|
১. | "এ্যাড়েগিয়ে তিয়ে" | হরিষ রাঘবেন্দ্র, টিমি | ০৫ঃ৫৫ |
২. | "ইরু ভিড়ি উনাদে" | দেবন একামবারাম | ০১ঃ৫৩ |
৩. | "ম্যাডি ম্যাডি" | টিমি, কার্তিক | ০১ঃ১৫ |
৪. | "নেঞ্জাই পুপোল" | হরিষ রাঘবেন্দ্র | ০১ঃ০১ |
৫. | "ও মামা মামা" | শঙ্কর মহাদেবন, টিপু | ০৪ঃ৩৭ |
৬. | "পুপোল পুপোল" | কার্তিক, টিপু | ০১ঃ৫৬ |
৭. | "ভাসীগারা" | বম্বে জয়শ্রী | ০৪ঃ৫৯ |
৮. | "ভেনমাদি ভেনমাদিয়ে" | রূপ কুমার রাঠোড়, টিপু | ০৫ঃ২৬ |
৯. | "ইভান ইয়ারো" | উন্নী কৃষ্ণন, হরিণী | ০৫ঃ২৪ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ৩০:২৬ |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.