Loading AI tools
মালি সাম্রাজ্যের রাজা (১৩১২ —১৩৩৭ খ্রিঃ) উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মানসা মূসা (আনুমানিক ১২৮০ থেকে আনুমানিক ১৩৩৭ পর্যন্ত) অথবা মালির প্রথম মূসা ছিলেন ১৪শতকের মালি সম্রাজ্যের একজন মানসা। মানসা শব্দের অর্থ সুলতান, বিজেতা,[2] বা "সম্রাট",[3][4][5][6][7] মানসা ছিলেন মালি সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সান্দিয়াতা কেইতা'র ভাগ্নে। ১৩০৭ সালে তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি প্রথম আফ্রিকান শাসক যিনি ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলেন।[8] মানসা মূসার কাছে এত পরিমাণ স্বর্ণ ছিল যে, তিনি তার রাজ্য থেকে ১০ কিলোমিটার এর একটি পথ স্বর্ণ দিয়ে ঢেকে দিতে পারতেন।
মুসার সিংহাসনে আরোহণের সময়, মালির বিশাল অংশে ঘানা সাম্রাজ্যের প্রাক্তন অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল, যা মালি জয় করেছিল। মালি সাম্রাজ্যের মধ্যে ছিল এমন জমি যা এখন গিনি, সেনেগাল, মৌরিতানিয়া, গাম্বিয়া এবং আধুনিক মালি রাজ্যের অংশ। মুসা তার শাসনামলে "মেলের আমির", "ওয়াঙ্গারার খনির প্রভু", এবং "ঘানাতার বিজয়ী" এর মতো অনেক উপাধি ধারণ করেছিলেন।[9]
মুসা তাদের আশেপাশের জেলাসহ ২৪টি শহর জয় করে।[10] মুসার শাসনামলে, মালি বিশ্বের বৃহত্তম স্বর্ণ উৎপাদক হতে পারে, এবং মুসা কে অন্যতম ধনী ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে।[11] তবে টাইম ম্যাগাজিনের মতো আধুনিক ভাষ্যকাররা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে মুসার সম্পদের পরিমাণ নির্ধারণের কোন সঠিক উপায় নেই।[12]
মুসাকে সাধারণত পশ্চিমা পাণ্ডুলিপি ও সাহিত্যে "মানসা মুসা" বলা হয়। তার নাম "কানকৌ মুসা", "কানকান মুসা", এবং "কাঙ্কু মুসা" হিসাবেও প্রদর্শিত হয়। মুসার জন্য ব্যবহৃত অন্যান্য নামের মধ্যে রয়েছে "মালি-কয় কানকান মুসা", "গঙ্গা মুসা", এবং "মালির সিংহ"।[13][14] তিনি বিজ্ঞান, শিল্পকলা, সাহিত্য ও স্থাপত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং তার শাসনামলে সাম্রাজ্য সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েছিল।[15]
মূসা অধিক পরিচিত ছিলেন তার কথিত হজ্জপালনের জন্য ( ১৩২৪ থেকে ১৩২৫ )। প্রচলিত আছে, তার হজ্জবহরের কাফেলায় রসদপূর্ণ থলে বহনকারী ৬০,০০০ লোক ছিল, সাথে ছিল ৫০০ গোলাম যারা প্রত্যেকে একটি করে সোনার দন্ড বহন করছিল এবং ৮০ থেকে ১০০টি উট ছিল, যেগুলো প্রত্যেকটি প্রায় ১৪০ কেজি সোনার গুঁড়ো বহন করছিলো। তার এই যাত্রাপথে তিনি প্রায় কয়েকশত কোটি টাকা মূল্যের সোনা বিতরণ করেছিলেন। কায়রোতে তিনি এত বেশি স্বর্ণ বিতরণ করেছিলেন যে, বেশ কয়েক বছর ধরে সেখানে স্বর্ণের দাম তুলনামুলকভাবে অনেক কম ছিল।
মানসা মূসা ইসলাম প্রচারেও সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি একজন অনুগত মুসলিম ছিলেন এবং কুর'আনের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে অনেকগুলো বিদ্যালয় নির্মাণ করেন। তিনি উত্তর আফ্রিকার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী প্রেরণ করতেন।[16]
মানসা মূসা তার রাজত্বকালে রাজ্যব্যবস্থা ও রাজকার্যাবলি নতুনভাবে সাজাতে সাহায্য করেছিলেন। তার রাজত্বকালে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেক স্থিতিশীল ছিলো।
মানসা মূসার হজ্জপালনের পর, ইউরোপীয় মানচিত্র-অঙ্কনকারীরা তাদের মানচিত্রগুলোতে মানসা মূসার ছবি আঁকা শুরু করে। মালি সাম্রাজ্যের পতনের পর মানসা মূসার খ্যাতিও কমে যেতে থাকে। এরপর থেকে তাকে আর কখনোই মানচিত্রগুলোতে সম্মানিত রাজা হিসেবে আঁকা হয় নি, বরঞ্চ আরও অসভ্যভাবে দেখানো হয়েছে। তাকে ইউরোপীয় রাজপরিবারের ব্যাঙ্গাত্মক নমুনারুপে আঁকা হত, যা ছিল একজন রাজমুকুট পরিহিত জংলী ব্যক্তি।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.