ভোগবাদ
From Wikipedia, the free encyclopedia
ভোগবাদ হলো এমন একপ্রকারের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনুক্রম যেখানে মানুষকে নিয়ত ক্রমবর্ধমান পণ্য ও সেবা অধিগ্রহণকে উৎসাহিত করা হয়। একে ইংরেজিতে কনজ্যুমারিজম (ইংরেজি: consumerism) বলা হয়। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে, বিশেষ করে ২০ শতকে, ব্যাপক উৎপাদন ঠেলে দিয়েছে অতিউৎপাদনের দিকে, যেখানে ভোক্তার চাহিদাকে পণ্যের সরবরাহ অতিক্রম করে যায়। তাই প্রস্তুতকারকরা বাধ্য হয়ে ক্রেতাদের পরিকল্পনা করে বিলোপমুখী করছে ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন পণ্য ক্রয়ে বাধ্য করছে।[1] ১৮৯৯ সালে থরস্টেইন ভেবলেন ভোগবাদের উপর দ্যা থিওরি অব দ্যা লেইজার ক্লাস (ইংরেজি: The Theory of the Leisure Class) নামে একটি বই প্রকাশ করেন যেখানে তিনি পর্যবেক্ষণ করেন কীভাবে বিংশ শতাব্দীর শুরুতে “অবসর সময়” এর বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং মূল্যবোধের জন্ম নেয় যেগুলো ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করা শুরু করে। [2] তিনি এ বইয়ে অবসর শ্রেণির কার্যক্রম ও ব্যয়কে ষড়যন্ত্রমূলক এবং পরার্থমূলক ভোগ ও অপচয়ের প্রেক্ষিতে দেখানোর চেষ্টা করেন এবং দেখান যে উভয়ই প্রয়োজনীয়তার বদলে সামাজিক মর্যাদার সাথে সম্পর্কিত যা মানুষকে বেশি ব্যয়ে উদ্বুদ্ধ করে।[3]
অর্থনীতিতে ভোগবাদকে অর্থনৈতিক নীতিমালা হিশেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, যেখানে ভোগের উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়। বিমূর্তভাবে ভোক্তাদের মুক্ত নির্বাচনের ক্ষমতাই উৎপাদনকারীদের বলে দিবে কি উৎপাদন করা উচিত এবং কি উচিত না।[4] এক্ষেত্রে ভোগবাদ মানে আর "একটি মানুষ, একটি কণ্ঠ" বুঝায় না, বরং বুঝায় "এক টাকা, একটা কণ্ঠ", যেখানে সমাজে মানুষের অবদানকে ইঙ্গিত করতেও পারে, আবার নাও করতে পারে।