ভগ্নমনস্কতা
মানসিক প্রতিক্রিয়া মানসিক প্রতিক্রিয়াশীলতা এবং চিন্তার প্রক্রিয়া বিচ্ছিন্নতা দ্বারা চিহ্ / From Wikipedia, the free encyclopedia
ভগ্নমনস্কতা একটি মানসিক রোগ। এই রোগের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে চিন্তাধারা এবং অনুভূতির প্রকাশের মধ্যে সঙ্গতি থাকে না৷[13] এর লক্ষণগুলো হলো উদ্ভট চিন্তা, বিভ্রান্তিকর বা অলীক কিছু দেখা, অসঙ্গতিপূর্ণ কথাবার্তা এবং অন্যরা যা শুনতে পায় না এমন কিছু শোনা। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সামাজিক বা কর্মক্ষেত্রে সচারচর অক্ষমতাজনিত অসুবিধার সম্মুখীন হন৷[3][13] ভগ্নমনস্কতার লক্ষণগুলি সাধারণত বয়ঃপ্রাপ্তির সময় দেখা দেয় এবং দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়৷[3][14] ইংরেজিতে রোগটিকে "স্কিটসোফ্রিনিয়া" (Schizophrenia) নামে ডাকা হয়।
ভগ্নমনস্কতা | |
---|---|
একজন ব্যাক্তির অলঙ্কৃত করা কাপড় দেখিয়া ভগ্নমনস্কতায় আক্রান্তের লক্ষণ নির্ণয় | |
উচ্চারণ |
|
বিশেষত্ব | মনোরোগ বিজ্ঞান |
লক্ষণ | হ্যালোসিনেশন (সাধারণত কণ্ঠস্বর শুনতে পাওয়া), প্রতারণা, বিভ্রান্ত চিন্তা[2][3] |
জটিলতা | আত্মহত্যা, হৃদরোগ, জীবনধারার রোগ[4] |
রোগের সূত্রপাত | ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে[3] |
স্থিতিকাল | দীর্ঘকালস্থায়ী[3] |
কারণ | পরিবেশগত এবং জেনেটিক কারণ[5] |
ঝুঁকির কারণ | পারিবারিক ইতিহাস, কিশোর বয়সে গাঁজার ব্যবহার, গর্ভাবস্থায় সমস্যা, শীতের পরে বা প্রারম্ভিক বসন্তে জন্ম, বৃদ্ধ পিতা, জন্ম হওয়া বা শহরে বেড়ে ওঠা[5][6] |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | পর্যবেক্ষিত আচরণ উপর ভিত্তি করে, এবং ব্যক্তির সাথে পরিচিত অন্যদের প্রতিবেদন[7] |
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয় | মাদকের অপব্যবহার, হান্টিংটনস ডিজিজ, মেজাজ ব্যাধি (বাইপোলার ব্যাধি), আত্মসংবৃতি,[8] বোর্ডারলিনে পার্সোনালিটি ডিসর্ডার[9] |
পরিচালনা | পরামর্শ, চাকরির প্রশিক্ষণ[2][5] |
ঔষধ | এন্টিসাইকোটিক[5] |
আরোগ্যসম্ভাবনা | ২০ বছর সংক্ষিপ্ত আয়ু[4][10] |
সংঘটনের হার | ~০.৫%[11] |
মৃতের সংখ্যা | ~১৭,০০০ (২০১৫)[12] |
বংশগতি, শৈশবের পরিবেশ, স্নায়ুজীববিজ্ঞান এবং মানসিক ও সামাজিক প্রক্রিয়াসমূহ এ রোগের গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসাবে প্রতিভাত হয়৷[5] কিছু উত্তেজক মাদক এবং ওষুধ এ রোগের উপসর্গগুলোর আবির্ভাব বা এদের আরও গভীর করে বলে প্রতিয়মান হয়৷ বর্তমানে এ রোগের গবেষণায় স্নায়ুজীববিজ্ঞানের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। যদিও এখনো পর্যন্ত এ রোগের কোনো একক জৈব কারণ শনাক্ত করা যায়নি৷ এই রোগের সম্ভাব্য বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ সমষ্টি এ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে যে, আদৌ এটি একটি একক ব্যাধি না একাধিক পৃথক উপসর্গের সহাবস্থান৷
ইংরেজি "স্কিটসোফ্রিনিয়া" শব্দটির উৎপত্তি গ্রীক শব্দমূল skhizein (σχίζειν, "to split" বা “দুভাগ করা”) এবং phrēn, phren- (φρήν, φρεν-; "mind" বা “মন”) থেকে৷ এমন নামকরণ সত্ত্বেও স্কিটসোফ্রিনিয়া বলতে আদপে “দ্বিখন্ডিত মন” বুঝায় না; যদিও অনেক সময় সাধারণ মানুষ এটিকে ডিসোসিয়েটিভ আইডেনটিটি ডিজর্ডার (যা মাল্টি পারসনালিটি ডিজর্ডার বা স্প্লিট পারসোনালিটি নামেও পরিচিত) এর সাথে গুলিয়ে ফেলে; প্রকৃতপক্ষে এ দুটি ভিন্ন ভিন্ন ব্যাধি৷
সারাবিশ্বের ০.৩–০.৭% মানুষ এ রোগে আক্রান্ত৷[15] ২০১৩ সালে আনুমানিক ২৩.৬ মিলিয়ন চিকিৎসাপ্রার্থী ছিল।[16] আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ ও অতীত কর্মকাণ্ড পর্যালোচনার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়৷ এক্ষেত্রে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, যেমন - দীর্ঘ সময় ধরে বেকারত্ব, দারিদ্র, আবাসনহীনতাকে প্রধান কারণ বলে গণ্য করা হয়।[14][17]