![cover image](https://wikiwandv2-19431.kxcdn.com/_next/image?url=https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/d/d6/Dhulji_Bhi_Patidar.jpg/640px-Dhulji_Bhi_Patidar.jpg&w=640&q=50)
ব্রজবুলি
মৈথিলি ও বাংলার মিশ্রিত রূপ / From Wikipedia, the free encyclopedia
ব্রজবুলি মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় কাব্যভাষা বা উপভাষা। ব্রজবুলি মূলত এক ধরনের কৃত্রিম মিশ্রভাষা। মৈথিলি ও বাংলার মিশ্রিত রূপ হলো ব্রজবুলি ভাষা।[1] হুমায়ুন আজাদ ব্রজবুলি ভাষা সম্পর্কে লিখেছেন, "এ ভাষায় কোন অমধুর শব্দ নেই। কঠিন শব্দ নেই। যে-সকল শব্দ উচ্চারণ করলে শুনতে ভালো লাগে না, তাদের বদলে এখানে সুন্দর করা হয়। এজন্যে ব্রজবুলি খুব মিষ্টি, সুরময়, গীতিময় ভাষা।" মিথিলার কবি বিদ্যাপতি (আনু. ১৩৭৪-১৪৬০) এর উদ্ভাবক। তিনি লিখেছেন,
"যব-গোধূলি সময় বেলি।
ধনি-মন্দির বাহির ভেলি।।
নব জলধর বিজুরি রেহা
দ্বন্দ্ব পসারি গেলি।।"
![Thumb image](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/d/d6/Dhulji_Bhi_Patidar.jpg/640px-Dhulji_Bhi_Patidar.jpg)
'বেলা' হয়েছে 'বেলি', 'বিদ্যুৎ' হয়েছে 'বিজুরি', 'রেখা' হয়েছে 'রেহা'। ফলস্বরূপ শ্রুতিমাধুর্যপূর্ণ ছন্দ তৈরি হয়েছে এখানে। তার পদের ভাব ও ভাষার অনুসরণে বাংলা, উড়িষ্যা ও আসামে পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে ব্রজবুলি ভাষার সৃষ্টি হয়। পদগুলিতে রাধাকৃষ্ণের ব্রজলীলা বর্ণিত হওয়ায় এর নাম হয়েছে ব্রজবুলি, অর্থাৎ ব্রজ অঞ্চলের ভাষা। অবশ্য এই পদগুলি তখন ব্রজধামে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল বলেও একে ব্রজবুলি বলা হতো। এর উৎপত্তি বিদ্যাপতির হাতে হলেও পরিপুষ্টি হয়েছে বাঙালি কবিদের হাতে। উল্লেখ, প্রাচীন ভারতবর্ষের ব্রজভূমি (অধুনা উত্তর প্রদেশ) অঞ্চলে ব্রজভাষা নামের একটি ভাষা রয়েছে। লোক বিশ্বাস যে, দূর অতীতে ব্রজধামে রাধা ও কৃষ্ণ যে ভাষায় তাদের হৃদয়ের আর্তি জানাত, অর্থাৎ প্রেম বিনিময় করত সেটাই মূলত ব্রজবুলি।
"ব্রজবুলি সাহিত্য" এর একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে। "ব্রজবুলি" শব্দের ব্যবহার খ্রিস্টীয় ১৯ শতকের। এই শব্দটির ব্যবহার এতদিন পর্যন্ত পাওয়া গেছে শুধুমাত্র বাঙালি কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের রচনায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. সুকুমার সেন ইংরেজিতে 'ব্রজবুলি' সাহিত্যের ইতিহাস প্রকাশ করেছেন।
ব্রজবুলি ও ব্রজভাষা এক নয়। ব্যাকরণগতভাবে ব্রজবুলি ও ব্রজভাষা উভয়েরই নিজস্ব স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে ভাষাবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি স্বীকার করা হয় যে ব্রজবুলি ব্রজভাষার সাথে সম্পর্কিত। ব্রজবুলি শব্দের ব্যবহার ব্রজবুলির পদগুলোতে বেশি দেখা যায়।