ভারতীয় জনতা পার্টি
ভারতের একটি রাজনৈতিক দল / From Wikipedia, the free encyclopedia
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি হলো ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রধান দুটি দলের অন্যতম (অপর দলটি হলো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস)। ২০১৪ সালের হিসেব অনুসারে, ভারতের সংসদ ও রাজ্য বিধানসভাগুলির প্রতিনিধি সংখ্যার দিক থেকে এটি ভারতের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। প্রাথমিক সদস্যপদের দিক থেকে এটি বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। বিজেপি একটি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দল।[4][8] জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সঙ্গে এই দলের আদর্শগত ও সংগঠনগত নৈকট্য রয়েছে।
ভারতীয় জনতা পার্টি | |
---|---|
সভাপতি | জে পি নাড্ডা |
সংসদীয় সভাপতি | নরেন্দ্র মোদী |
লোকসভায় নেতা | নরেন্দ্র মোদী (প্রধানমন্ত্রী) |
রাজ্যসভায় নেতা | ডা. থাবরচন্দ গহলোত (কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও অধিকারীতা মন্ত্রী) |
প্রতিষ্ঠা | ৬ এপ্রিল ১৯৮০ (৪৪ বছর আগে) (1980-04-06) |
পূর্ববর্তী | ভারতীয় জনসংঘ জনতা পার্টি |
সদর দপ্তর | ১১ অশোক রোড, নতুন দিল্লি – ১১০০০১ |
ছাত্র শাখা | বিজেপির কোন ছাত্র সংগঠন নেই। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের আয়াম অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ ছাত্র সংগঠনে রাষ্ট্রবাদ প্রচার করে। |
যুব শাখা | ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা |
মহিলা শাখা | বিজেপি মহিলা মোর্চা |
শ্রমিক শাখা | ভারতীয় মজদুর সংঘ |
কৃষক শাখা | বিজেপি কিষান মোর্চা |
সদস্যপদ | ১৮ কোটি (২০১৯)[1] |
ভাবাদর্শ | হিন্দুত্ব হিন্দু জাতীয়তাবাদ রক্ষণশীলতা সামাজিক রক্ষণশীলতা একাত্ম মানবতাবাদ ভারতীয় জাতীয়তাবাদ |
রাজনৈতিক অবস্থান | দক্ষিণপন্থী[2][3][4] |
আন্তর্জাতিক অধিভুক্তি | আছে |
আনুষ্ঠানিক রঙ | গেরুয়া |
স্বীকৃতি | জাতীয় দল[5] |
জোট | জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) |
লোকসভায় আসন | ২৪০ / ৫৪৫ [6](বর্তমানে ৫৪২ জন সদস্য + ১ জন অধ্যক্ষ)
|
রাজ্যসভায় আসন | ৯৭ / ২৪৫ [7](বর্তমানে ২৪৪ জন সদস্য)
|
বিধানসভা-এ আসন | ১,৪৮৪ / ৪,১২০
|
বিধান পরিষদ-এ আসন | ১৬৫ / ৪২৬
|
নির্বাচনী প্রতীক | |
পদ্ম | |
দলীয় পতাকা | |
ওয়েবসাইট | |
www | |
ভারতের রাজনীতি রাজনৈতিক দল নির্বাচন |
বিজেপির উৎস ১৯৫১ সালে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনসংঘ দলটি। ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থার পর জনসংঘ একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিশে জনতা পার্টি গঠন করে। ১৯৭৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনতা পার্টি ক্ষমতাসীন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে পরাজিত করে সরকার গঠন করে। ১৯৮০ সালে জনতা পার্টি অবলুপ্ত হলে জনসংঘের প্রাক্তন সদস্যরা বিজেপি গঠন করেন। প্রথম দিকে বিজেপি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছিল। ১৯৮৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিজেপি মাত্র দুটি আসনে জয় লাভ করেছিল। কিন্তু রাম জন্মভূমি আন্দোলনের সময় আবার এই দলের শক্তি বৃদ্ধিপায়। একাধিক রাজ্য নির্বাচনে জয় লাভ এবং জাতীয় স্তরের নির্বাচনে ভাল ফল করার পর অবশেষে ১৯৯৬ সালে বিজেপি সংসদে বৃহত্তম দলে পরিণত হয়। যদিও সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারায় এই দলের সরকার মাত্র ১৩ দিন স্থায়ী হয়েছিল।
ভারতের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৯৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর বিজেপি-নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট বা এনডিএ এক বছরের জন্য অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রধানমন্ত্রীত্বে সরকার গঠন করে। পরবর্তী নির্বাচনে এনডিএ আবার অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বেই সরকার গঠন করেছিল। এই সরকার পূর্ণ সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। এটিই ছিল ভারতের প্রথম পূর্ণ সময়ের অ-কংগ্রেসি সরকার। ২০০৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে এনডিএ অপ্রত্যাশিতভাবে পরাজিত হয়। এরপর দশ বছর বিজেপি ছিল ভারতের প্রধান বিরোধী দল। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে গুজরাতের দীর্ঘকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি পুনরায় বিপুল ভোটে জয়ী হয়। সেই থেকে নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বে এনডিএ সরকার ভারতে ক্ষমতাসীন রয়েছে। ২০১৫ সালের মার্চ মাসের হিসেব অনুসারে, ভারতের ১৩টি রাজ্যে এনডিএ-নেতৃত্বাধীন সরকার রয়েছে।
বিজেপির ঘোষিত আদর্শ হলো ‘একাত্ম মানবতাবাদ’। ১৯৬৫ সালে দীনদয়াল উপাধ্যায় এই মত প্রচার করেছিলেন। বিজেপি সামাজিক রক্ষণশীলতার প্রবক্তা এবং এই দলের বিদেশনীতিও জাতীয়তাবাদী আদর্শ-কেন্দ্রিক। বিজেপির প্রধান রাজনৈতিক ইস্যু হলো জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার বিলোপ, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং রাম মন্দির নির্মাণ এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রবর্তন ও ভারত কে হিন্দু রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করা। যদিও ১৯৯৮-২০০৪ সালের এনডিএ সরকার এই বিতর্কিত ইস্যুগুলি কার্যকর করেনি। বরং বিশ্বায়ন ও সামাজিক কল্যাণের জন্য অর্থনৈতিক বৃদ্ধির স্বার্থে নব্য-উদারপন্থী অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করেছিল।