রূপবিকার (পদার্থবিজ্ঞান)
From Wikipedia, the free encyclopedia
পদার্থবিজ্ঞান ও সন্ততি বলবিজ্ঞান শাস্ত্রে রূপবিকার বা বিরূপণ বলতে কোনও বস্তুর একটি প্রসঙ্গ গঠনবিন্যাস থেকে বর্তমান গঠনবিন্যাসে রূপান্তরকে বোঝায়।[1] গঠনবিন্যাস বলতে কোনও বস্তুটির সমস্ত কণার অবস্থান ধারণকারী সেটকে বোঝায়।
বাহ্যিক ভার,[2] অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকলাপ (যেমন পেশী সংকোচন), বস্তুব্যাপী বলসমূহ (যেমন মাধ্যাকর্ষণ বা তড়িৎ-চৌম্বকীয় বলসমূহ), তাপমাত্রার পরিবর্তন, আর্দ্র আধেয়তে পরিবর্তন বা রাসায়নিক বিক্রিয়া, ইত্যাদি কারণে রূপবিকার বা বিরূপণ ঘটতে পারে।
বিকৃতি হল রূপবিকারের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি ধারণা, যাতে দৃঢ় বস্তুর গতিকে হিসাবের বাইরে রেখে বস্তুর অভ্যন্তরের কণাগুলির আপেক্ষিক সরণের ব্যাপারটি বিবেচ্য। বস্তুর প্রাথমিক বা চূড়ান্ত গঠনবিন্যাসের নিরিখে সংজ্ঞায়িত হয়েছে কি না এবং মেট্রিক টেনসর বা এর দ্বৈত বিবেচনা করা হয় কি না, তার উপর নির্ভর করে বিকৃতি ক্ষেত্রটিকে প্রকাশের জন্য বিভিন্ন সমতুল্য পছন্দ নির্বাচন করা হতে পারে।
একটি অবিচ্ছিন্ন বস্তুতে প্রযুক্ত বলের কারণে বা বস্তুটির তাপমাত্রা ক্ষেত্রের কোনও পরিবর্তনের কারণে একটি পীড়ন ক্ষেত্র থেকে একটি রূপবিকার ক্ষেত্র তৈরি হয়। পীড়ন এবং বিকৃতির মধ্যে সম্পর্ক একটি গঠনমূলক সমীকরণ দ্বারা প্রকাশ করা হয়, যেমন, রৈখিক স্থিতিস্থাপক উপাদানের জন্য হুকের সূত্র ব্যবহার করা হয়। পীড়ন ক্ষেত্র অপসারণের পরে যে রূপবিকারগুলির অস্তিত্ব থাকেনা, সেগুলিকে স্থিতিস্থাপক রূপবিকার বলে। এক্ষেত্রে পদার্থ-পরম্পরা সম্পূর্ণরূপে তার আদি গঠনবিন্যাস পুনরুদ্ধার করে। অন্যদিকে পীড়ন অপসারণের পরেও কিছু অপ্রত্যাবর্তী রূপবিকার অবশিষ্ট থেকে যেতে পারে। এক ধরনের অপ্রত্যাবর্তী রূপবিকার হল অস্থিতিস্থাপক রূপবিকার। যখন কোনও বস্তুর উপরে প্রযুক্ত পীড়ন একটি নির্দিষ্ট সীমাস্থ মান অর্জন করে, যেটি স্থিতিস্থাপক সীমা বা নতি পীড়ন নামে পরিচিত, তখন এরূপ অস্থিতিস্থাপক রূপবিকার ঘটে। এটি মূলত পারমাণবিক স্তরে স্খলন (Slip স্লিপ) বা অবস্থানচ্যুতি (Dislocation) কর্মপদ্ধতির ফলাফল। অপরিবর্তনীয় রূপবিকারের আরেকটি প্রকারভেদ হল সান্দ্র রূপবিকার, যা হল সান্দ্র-স্থিতিস্থাপক রূপবিকারের অপ্রত্যাবর্তী অংশ।