বার্মায় ব্রিটিশ শাসন
From Wikipedia, the free encyclopedia
১৮২৪ থেকে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বার্মায় ব্রিটিশ শাসন কায়েম ছিল৷ ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধের পর থেকে প্রাথমিকভাবে বর্মার কিছু অংশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হলেও ধীরে ধীরে বর্মার দেশীয় রাজ্যগুলি ব্রিটিশ ভারতের প্রদেশগুলির একটি হয়ে ওঠে৷ পরে ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে সম্পূর্ণ বর্মা ব্রিটিশ উপনিবেশভুক্ত হয় এবং ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তা পূর্ণ স্বাধীনতা পায়। ব্রিটিশ শাসনকালে এই অঞ্চলটি "ব্রিটিশ বর্মা" নামে পরিচিত ছিলো। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধে জয়লাভ করে বর্মা রাজ্যক্ষেত্রের একাধিক অঞ্চল যেমন, আরাকান রাজ্য (রাখাইন প্রদেশ) এবং টেনাসেরিম বিভাগ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করে নেয়৷ ১৮৫২ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনী দক্ষিণ বর্মার পেগু বা পেগুইয়োমা এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চল দখল করে এবং সেখানে একটি মুখ্য কমিশনার নিয়োগ করেন৷ ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে " ব্রিটিশ বর্মা"কে "ব্রিটিশ ভারত"-এর অন্তর্ভুক্ত করে একটি অভিন্ন একক হিসাবে শাসন পরিচালনা শুরু হয়৷[1]
ব্রহ্মদেশ বর্মা | |||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৮২৪-১৯৪৮ ১৯৪২-১৯৪৫: নির্বাসিত সরকার | |||||||||||||||||
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ | |||||||||||||||||
অবস্থা | ব্রিটিশ ভারতের প্রদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশ | ||||||||||||||||
রাজধানী | মৌলমেইন (১৮২৬-১৮৫২) ইয়াঙ্গুন (১৮৫৩-১৯৪২) শিমলা (১৯৪২-১৯৪৫) রেঙ্গুন (১৯৪৫-১৯৪৮) | ||||||||||||||||
নির্বাসনে রাজধানী | শিমলা, ব্রিটিশ ভারত (১৯৪২-১৯৪৫) | ||||||||||||||||
প্রচলিত ভাষা | ইংরাজী (সরকারী) বর্মী (আঞ্চলিক) | ||||||||||||||||
ধর্ম | বৌদ্ধধর্ম, খ্রিস্টধর্ম, হিন্দুধর্ম, ইসলাম | ||||||||||||||||
ব্রিটিশ রাজা/রাণী | |||||||||||||||||
• ১৮৬২-১৯০১ | ভিক্টোরিয়া | ||||||||||||||||
• ১৯০১-১৯১০ | সপ্তম এডওয়ার্ড | ||||||||||||||||
• ১৯১০-১৯৩৬ | পঞ্চম জর্জ | ||||||||||||||||
• ১৯৩৬ | অষ্টম এডওয়ার্ড | ||||||||||||||||
• ১৯৩৬-১৯৪৮ | ষষ্ঠ জর্জ | ||||||||||||||||
গভর্নর | |||||||||||||||||
• ১৯২৩-১৯২৭ | স্পেন্সর হারকোর্ট বাটলার (প্রথম) | ||||||||||||||||
• ১৯৪৬-১৯৪৮ | হুবার্ট এলভিন রেন্স (অন্তিম) | ||||||||||||||||
মুখ্য কমিশনার | |||||||||||||||||
• ১৮৬২-১৮৬৭ | আর্থার পারভেজ ফেয়ার (প্রথম) | ||||||||||||||||
• ১৮৯৫-১৮৯৭ | ফ্রেডারিক উইলিয়াম রিচার্ড ফ্রায়ের (অন্তিম) | ||||||||||||||||
আইন-সভা | ব্রিটিশ বর্মা বিধানসভা পরিষদ (লেজিসলেটিভ কাউন্সিল অব বর্মা) (১৮৯৭-১৯৩৬) বর্মা আইন-পরিষদ (লেজিসলেচার অব বর্মা) (১৯৩৬-১৯৪৭) | ||||||||||||||||
• উচ্চকক্ষ | সেনেট | ||||||||||||||||
• নিম্নকক্ষ | দূত নিবাস | ||||||||||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | ঔপনিবেশিক ভারত | ||||||||||||||||
• প্রথম ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ | ৫ই মার্চ ১৮২৪ | ||||||||||||||||
১৮২৪-১৮২৬, ১৮৫২, ১৮৮৫ | |||||||||||||||||
১৯১৮-১৯৪২ | |||||||||||||||||
• ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে পৃৃথকীকরণ | ১৯৩৭ | ||||||||||||||||
• জাপানের অধিগ্রহণ and থাই অধিগ্রহণ | ১৯৪২-১৯৪৫ | ||||||||||||||||
• যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বাধীনতালাভ | ৪ঠা জানুয়ারী ১৯৪৮ | ||||||||||||||||
মুদ্রা | বর্মী রুপি, ভারতীয় টাকা, পাউন্ড স্টার্লিং | ||||||||||||||||
| |||||||||||||||||
বর্তমানে যার অংশ | মিয়ানমার |
১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধ|তৃতীয় ইঙ্গ-বর্মা যুদ্ধে জয়লাভ করে ব্রিটিশ বাহিনী উত্তর বর্মার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের দখল নিলে সমগ্র বর্মাই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ে৷ উত্তর বর্মাকেও "ব্রিটিশ ভারতের" অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং "বর্মা প্রদেশ" নামে একটি বৃৃহৎ প্রদেশ গঠন করা হয়৷ ব্রিটিশ শাসনকালে প্রদেশটির গুরুত্ব বৃৃদ্ধি পেলে এবং সুশাসনের লক্ষ্যে প্রদেশটিতে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে একজন প্রশাসনিক লেফ্টেন্যান্ট নিয়োগ করা হয়৷[1] বর্মা অফিস গঠন করে বর্মাকে "সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইন্ডিয়া অ্যান্ড বর্মা"র অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে বর্মাকে ব্রিটিশ ভারত থেকে পৃৃথক ঘোষণা করা অবধি এই প্রশাসনিক নিয়ম লাগু থাকে৷ পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন একাধিক ব্রিটিশ ঔপনিবেশের সাথে বর্মাতে জাপানের অধিগ্রহণ হলে সেখানে ব্রিটিশ শাসন বিপর্যস্ত হয়৷ পরে তা আবার আবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হলে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা জানুয়ারী বর্মা পূর্ণ স্বাধীনতা পায়৷
বর্মা যেহেতু অধিকাংশ সময়ে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বদলে স্কটিশবাসী তথা স্যার জেমস স্কটের তত্ত্বাবধানে এবং ইরাবতী ফ্লোটিলা কোম্পানির অধীনে শাসিত হতো এবং অন্যান্য স্কটিশ প্রশাসনের প্রভাবই বেশি থাকতো তাই ঐতিহাসিকরা বর্মাকে "স্কটিশ উপনিবেশ" বলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন৷