Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাতু খান (/ˈbɑːtuː
বাতু খান | |
---|---|
খান | |
রাজত্ব | ১২২৭–১২৫৫ |
রাজ্যাভিষেক | ১২২৪/১২২৫ বা ১২২৭ |
পূর্বসূরি | জোচি |
উত্তরসূরি | সারতাক |
জন্ম | ১২০৭ মঙ্গোলিয়া |
মৃত্যু | ১২৫৫ (বয়স ৪৭–৪৮) সারাই বাতু |
সঙ্গী | বোরাকচিন খাতুন |
প্রাসাদ | বোরজিগিন |
রাজবংশ | গোল্ডেন হোর্ড |
পিতা | জোচি |
মাতা | উখা উজিন |
বাতুকে গোল্ডেন হোর্ডের খান নিযুক্ত করা হয়। এটি জোচির উলুস বা কিপচাক খানাত নামেও পরিচিত। জোচির বড় ছেলে ওরদা খানও বাতুকে বাবার উত্তরাধিকারী মেনে নেন। চেঙ্গিস খানের সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে চেঙ্গিস খানের ছোট ভাই তেমুগে বাতুর অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।[১] জোচির এলাকা বাতু ও তার বড় ভাই ওরদার মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। ওরদার হোয়াইট হোর্ড ভলগা নদী ও বালকাশ হ্রদের মধ্যবর্তী এলাকা শাসন করেছে। অন্যদিকে বাতুর হোর্ড ভলগার পশ্চিম দিকের এলাকা শাসন করেছে।
১২২৯ সালে ওগেদাই নিম্ন উরাল নদীর গোত্রগুলিকে জয় করার জন্য কুখদাই ও সুনদাইয়ের নেতৃত্বে তিন তুমান সেনা প্রেরণ করেন। আবু আল গাজি বাহাদুরের মতে বাতু খান উত্তর চীনে জিন রাজবংশের বিরুদ্ধে ওগেদাই খানের সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। এসময় তার ছোট ভাই পশ্চিমে বাশকির, কুমান, বুলগার ও আলানদের সাথে লড়াই করছিলেন। মঙ্গোলরা ভারী লড়াইয়ের পর জুরচেনের শহরগুলি দখল করে এবং বাশকিররা তাদের সাথে মিত্রতা করে। ১২৩০ এর দশকে ওগেদাই খান চীনের শানশির এলাকা বাতু এবং জোচির পরিবারের মধ্যে ভাগ করে দেন।[২]
মঙ্গোল-জিন যুদ্ধের পর মঙ্গোলিয়ায় অনুষ্ঠিত কুরুলতাইয়ে ওগেদাই খান বাতুকে পশ্চিমের জাতিসমূহকে অধীনস্থ করার নির্দেশ দেন। বাতু খান ইতিপূর্বে ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ বিজয়ের দায়িত্বপালন করেছেন। ১২৩৫ সালে তাকে প্রায় ১,৩০,০০০ সৈনিকের বাহিনী প্রদান করে ইউরোপ আক্রমণের দায়িত্ব দেয়া হয়। তার আত্মীয়দের মধ্যে গুয়ুক, বুরি, মংকে খুলগান, খাদান, বাইদার এতে অংশ নেন। সেনাপতিদের মধ্যে ছিলেন সুবুতাই, বোরোলদাই ও মেংগুসার। মূলত সুবুতাই বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা ভলগা অতিক্রম করে ১২৩৬ সালে ভলগা বুলগেরিয়া হামলা করেন। ভলগা বুলগেরিয়ান, কিপচাক ও আলানদের প্রতিরোধ দমন করতে এক বছর সময় লেগেছিল।
১২৩৭ সালের নভেম্বরে বাতু খান ভ্লাদিমির-সুজদাইয়ের দ্বিতীয় ইউরির দরবারে তার দূতদেরকে পাঠিয়ে আনুগত্যের দাবি জানান। ইউরি তাতে অস্বীকৃতি জানানোর পর মঙ্গোলরা রাইয়াজান অবরোধ করে। ছয়দিনের যুদ্ধের পরে মঙ্গোলরা শহর ধ্বংস করে দেয়। এই খবর পাওয়ার পর ইউরির প্রেরিত বাহিনী মঙ্গোলদের কাছে পরাজিত হয়। কোলোমনা ও মস্কো ধ্বংস করার পর মঙ্গোলরা ১২৩৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ভ্লাদিমির-সুজদাইয়ের রাজধানী অবরোধ করে। তিন দিন পর শহর দখল করে তা পুড়িয়ে দেয়া হয়। ইউরি উত্তরদিকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ভলগা অতিক্রম করে তিনি নতুন বাহিনী গঠন করেন। ৪ মার্চ সংঘটিত সিত নদীর যুদ্ধে এই বাহিনী মঙ্গোলদের কাছে পরাজিত হয়। এরপর বাতু খান তার বাহিনীকে বেশ কিছু সেনাদলে বিভক্ত করেন। তারা চৌদ্দটি রাস শহরে হামলা চালায়।
বিজয় উৎসবের সময় বুরি অভিযোগ করেন যে বাতু অন্যায়ভাবে সুবিধা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। গুয়ুকসহ অন্যান্যরা বাতু খানকে নিয়ে উপহাস করে উৎসব থেকে চলে যান। এরপর বাতু তার চাচা ওগেদাইকে তাদের রূঢ় ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ করেন। একথা শুনে ওগেদাই ক্রদ্ধ হন এবং বুরি ও গুয়ুককে তলব করেন। কিছু সূত্র অনুযায়ী বুরিকে এরপর ইউরোপে অভিযানে প্রেরণ করা হয়নি। ওগেদাই তার ছেলে গুয়ুককে কঠোর সমালোচনা করে রুশ স্তেপে ফেরত পাঠান।
বিভিন্ন রাস রাজ্য জয় করার পর ইউরোপের কেন্দ্রভাগে হামলার জন্য বাতু ও সুবুতাই পোল্যান্ড, হাঙ্গেরিসহ অস্ট্রিয়া পর্যন্ত গুপ্তচর প্রেরণ করেন। মঙ্গোলরা তিন দলে ভাগ হয়ে ইউরোপে আক্রমণ করেছিল। একটি দল পোল্যান্ড জয় করে। দ্বিতীয় দলটি কার্পেথিয়ান পর্বতমালা অতিক্রম করে এবং তৃতীয় দল দানিয়ুব অনুসরণ করে চলেছিইল। তারা গ্রীষ্মে হাঙ্গেরিতে ছড়িয়ে পড়ে। তারা অস্ট্রিয়া ও ডালমেশিয়ায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।
মঙ্গোলরা হলি রোমান এম্পায়ারের মুখোমুখি হয়েছিল।[৩] রোমান সম্রাট ফ্রেডেরিক ও পোপ নবম গ্রেগরি মঙ্গোলদের বিরুদ্ধে ক্রুসেডের আহ্বান করলেও তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি। ইউরোপে সাফল্যের কারণে সুবুতাই এসময় খ্যাতি অর্জন করেন।
১২৪১ সালের শেষের দিকে বাতু ও সুবুতাই অস্ট্রিয়া, ইতালি ও জার্মানি হামলার জন্য পরিকল্পনা করছিলেন। এসময় তাদের কাছে ওগেদাই খানের মৃত্যুসংবাদ এসে পৌছায়। ওগেদাই খাঁ ১২৪১ সালের ডিসেম্বরে মারা যান। এরপর নতুন সম্রাট নির্বাচনের জন্য কারাকোরামে আহূত কুরুলতাইয়ে অংশ নেয়ার জন্য বাতুকে কারাকোরামে ডাকা হয়েছিল।
গুয়ুক খান ১২৪৬ সাল নতুন খাগান হন। এরপর বাতু খান সাম্রাজ্যের পশ্চিমাংশের শাসক হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। পরবর্তীতে গুয়ুকের সাথে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরী হয়।
মংকে খানের শাসনামলে বাতু খান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। মুসলিম বিবরণ এবং ইউয়ানের ইতিহাস অনুযায়ী রাজকোষে বাতু খানের স্বাধীন অধিকার ছিল।[৪] চেঙ্গিস খানের নাতিদের মধ্যে তাকে মঙ্গোল আইন পালনে অন্যতম নিবেদিত বিবেচনা করা হয়।[৫]
বাতু খান ১২৫৫ সালে মারা যান। এরপর তার ছেলে সারতাক তার উত্তরাধিকারী হন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.