Loading AI tools
কোন আলোক মাধ্যম আলোকে যে পরিমাণে অভিসারিত বা অপসারিত করে তাকে ঐ মাধ্যমের ফোকাস দূরত্ব বলে উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কোন আলোক মাধ্যম আলোকে যে পরিমাণে অভিসারিত বা অপসারিত করে তাকে ঐ মাধ্যমের ফোকাস দূরত্ব বলে। যখন আলোক মাধ্যমটি হল বাতাস, তখন ফোকাস দূরত্ব হল প্রাথমিক অবস্থায় সমান্তরাল ভাবে থাকা আলোক রশ্মিসমূহ একটি ফোকাস বিন্দুতে আসতে প্রয়োজনীয় দূরত্ব। কোন মাধ্যমের ফোকাস দূরত্ব কম হলে তার আলোক ক্ষমতা বেশি হয়, অর্থাৎ ফোকাস দূরত্ব ও আলোক ক্ষমতার মধ্যে সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক। ফোকাস দূরত্ব যত কম হয়, আলোক রশ্মিসমূহ তত নিখুঁতভাবে ফোকাস বিন্দুতে এসে মিলিত হতে সক্ষম হয়।
বেশিরভাগ ফটোগ্রাফি এবং সকল দূরবীক্ষণ যন্ত্রে, যেখানে লক্ষ্যবস্তু প্রায় অসীম দূরত্বে অবস্থান করে, বেশি ফোকাস দূরত্বের (নিম্নতর আলোক ক্ষমতাসম্পন্ন) আলোক মাধ্যম অপেক্ষাকৃত উচ্চতর বিবর্ধন ঘটায়, বীক্ষণ কোণের মান সেক্ষেত্রে হয় সংকীর্ণতর। বিপরীতভাবে, ফোকাস দূরত্ব কম হলে অথবা আলোক মাধ্যমের আলোক ক্ষমতা বেশি হলে তাতে অপেক্ষাকৃত বড় বীক্ষণ কোণ তৈরি হয়। অন্যদিকে, অণুবীক্ষণ যন্ত্র সমূহে লক্ষ্যবস্তুকে লেন্সের কাছে নিয়ে এসে বিবর্ধন করা হয়, সেখানে লক্ষ্যবস্তুকে অপেক্ষাকৃত কম ফোকাস দূরত্বে (উচ্চতর আলোক ক্ষমতাসম্পন্ন) স্থাপন করে আলোক ক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটানো হয়; এক্ষেত্রে লক্ষ্যবস্তুকে ফোকাসের আরও কাছে নিয়ে আসার ফলে তা অপেক্ষাকৃত বড় দেখায়। ফোকাস দূরত্ব বক্রতার ব্যাসার্ধের অর্ধেক।
যখন একটি গোলীয় দর্পণ কোন বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠনে ব্যবহৃত হয়, লেন্স থেকে লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব u, লেন্স থেকে প্রতিবিম্বের দূরত্ব v, এবং ফোকাস দূরত্ব f এর মধ্যে সম্পর্ক হল
বায়বীয় মাধ্যমে ক্ষীণমধ্য লেন্সের জন্য, ফোকাস দূরত্ব হচ্ছে লেন্সের মাঝখান থেকে প্রধান ফোকাস (অথবা ফোকাস বিন্দু) পর্যন্ত দূরত্ব। অভিসারী লেন্সের (যেমন উত্তল লেন্স) জন্য, ফোকাস দূরত্ব ধনাত্মক, এবং সেটা হল এক গুচ্ছ সমান্তরাল আলোক রশ্মি যে দূরত্বে একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে অভিসারিত হয়। অপসারী লেন্সের (যেমন অবতল লেন্স) জন্য, ফোকাস দূরত্ব ঋণাত্মক, যেখানে ফোকাস দূরত্ব হচ্ছে এক গুচ্ছ সমান্তরাল আলোক রশ্মি লেন্সের মধ্য দিয়ে প্রতিসারিত হওয়ার পর যে বিন্দু থেকে অপসারিত হচ্ছে বলে মনে হয় তার দূরত্ব।
যখন একটি লেন্স কোন বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠনে ব্যবহৃত হয়, লেন্স থেকে লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব u, লেন্স থেকে প্রতিবিম্বের দূরত্ব v, এবং ফোকাস দূরত্ব f এর মধ্যে সম্পর্ক হল
অসীম দূরে থাকা কোন লক্ষ্যবস্তুর প্রতিবিম্ব কোন পর্দায় গঠনের মাধ্যমে, খুব সহজেই একটি ক্ষীণমধ্য লেন্সের ফোকাস দূরত্ব পরিমাপ করা যায়। লেন্সকে সামনে-পেছনে সরিয়ে এমন অবস্থানে রাখতে হবে যাতে পর্দায় সবচেয়ে স্পষ্ট বিম্ব গঠিত হয়। এইক্ষেত্রে 1/u অত্যন্ত নগণ্য, তাই ফোকাস দূরত্ব দাঁড়ায়
স্থূলমধ্য লেন্স (যেসব লেন্সের মধ্যভাগের পুরুত্ব নগণ্য করা যায় না), অথবা কোন আলোক যন্ত্র যাতে একাধিক লেন্স এবং/অথবা দর্পণ (যেমন, একটি ফটোগ্রাফিক লেন্স অথবা দূরবীক্ষণ যন্ত্র) রয়েছে সেসবের জন্য, ফোকাস দূরত্বকে সাধারণত বলা হয় তুল্য লেন্সের ফোকাস দূরত্ব (EFL=effective focal length), যেটা প্রকাশ করতে নিম্নোক্ত রাশিমালা ব্যবহার করা হয়:
অভিনেত্র লেন্সের ফোকাস দূরত্ব (BFL=back focal length অথবা BFD=back focal distance) (S′F′) হল আলোক যন্ত্রের সর্বশেষ আলোক তলের (S2) শীর্ষবিন্দু থেকে পিছনের বা দ্বিতীয় প্রধান ফোকাস বিন্দু (F′) পর্যন্ত দূরত্ব।[1][2]
আলোক যন্ত্রটি যদি বাতাসে থাকে, তুল্য লেন্সের ফোকাস দূরত্ব (f এবং f′) থেকে আমরা আলোক যন্ত্রটির সামনে ও পিছনের ফোকাস তল সমূহের (H এবং H′) থেকে সংশ্লিষ্ট ফোকাস বিন্দু সমূহের (F এবং F′) মধ্যকার দূরত্ব পাই। আলোক যন্ত্রটি যদি বাতাস ব্যতীত অন্য মাধ্যমে থাকে, তখন ফোকাস দূরত্বকে ঐ মাধ্যমের প্রতিসরণাঙ্ক দ্বারা গুণ করলে পাওয়া যাবে (n হল লেন্সের নিজস্ব উপাদানের প্রতিসরণাঙ্ক; n1 হল লেন্সের সামনে থাকা মাধ্যমের প্রতিসরণাঙ্ক; n2 হল লেন্সের পিছনে থাকা মাধ্যমের প্রতিসরণাঙ্ক)। কিছু কিছু লেখকেরা এসকল সামনে/পিছনের ফোকাস দূরত্বকে আলাদাভাবে প্রকাশ করতে distances না ব্যবহার করে lengths শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন, উপরে দ্রষ্টব্য।[1]
সাধারণভাবে, ফোকাস দূরত্ব বা EFL হচ্ছে সেই মান যা কোন আলোক যন্ত্রের আলো ফোকাস করার ক্ষমতা প্রকাশ করে, এবং ঐ মান দ্বারাই ঐ আলোক যন্ত্রের বিবর্ধন ক্ষমতা নির্ণয় করা হয়। অন্যান্য রাশি সমূহ, লক্ষ্যবস্তুর নির্দিষ্ট অবস্থানের জন্য কোথায় প্রতিবিম্ব গঠিত হবে তা নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।
বায়বীয় মাধ্যমে একটি লেন্সের পুরুত্ব d (n1 = n2 = 1), এবং পৃষ্ঠতল সমূহের বক্রতার ব্যাসার্ধ R1 ও R2 হলে, তুল্য লেন্সের ফোকাস দূরত্ব f হচ্ছে:
যেখানে n হল লেন্সের উপাদানের প্রতিসরণাঙ্ক। লেন্সের ক্ষমতা হিসেবে আমরা এই 1/f মানটিকেই বুঝিয়ে থাকি।
সংশ্লিষ্ট সামনের ফোকাস দূরত্ব হচ্ছে:[3]
এবং পিছনের ফোকাস দূরত্ব হচ্ছে:
এখানে যেই চিহ্নের প্রথা ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে R1 এর মান ধনাত্মক হবে যদি লেন্সের প্রথম পৃষ্ঠতলটি উত্তল হয়, এবং সেটি ঋণাত্মক হবে যদি অবতল হয়। R2 এর মান ঋণাত্মক হবে যদি লেন্সের দ্বিতীয় পৃষ্ঠতলটি উত্তল হয়, এবং সেটি ধনাত্মক হবে যদি অবতল হয়। উল্লেখ্য বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন চিহ্নের প্রথা অনুসরণ করেন, তাই কোন্ চিহ্নের প্রথা ব্যবহার করা হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে এসকল সমীকরণের রাশি এবং চিহ্ন সমূহের বিভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়।
বায়বীয় মাধ্যমে একটি গোলীয় দর্পণের ফোকাস দূরত্ব হচ্ছে বক্রতার ব্যাসার্ধের অর্ধেক। ফোকাস দূরত্ব অবতল দর্পণের ক্ষেত্রে ধনাত্মক এবং উত্তল দর্পণের ক্ষেত্রে ঋণাত্মক হবে। আলোক রশ্মি চিত্রে সাধারণত যে চিহ্নের প্রথা ব্যবহার করা হয়, তাতে অবতল দর্পণের বক্রতার ব্যাসার্ধ ঋণাত্মক, তাই
যেখানে হচ্ছে দর্পণের পৃষ্ঠতলের বক্রতার ব্যাসার্ধ।
ক্যামেরার লেন্সের ফোকাস দূরত্ব সাধারণত মিলিমিটার (মিমি) দ্বারা প্রকাশ করা হয়, অবশ্য কিছু পুরাতন লেন্স সেন্টিমিটার (সেমি) বা ইঞ্চি দ্বারাও নির্দেশিত করা হয়েছে।
কোন লেন্সের ফোকাস দূরত্ব (f) এবং দৃষ্টি পথের (FOV=field of view) মধ্যে সম্পর্ক ব্যস্তানুপাতিক। একটি সাধারণ রেক্টিলিনিয়ার লেন্সের জন্য, FOV = 2 arctan (x / (2f)), যেখানে x হচ্ছে ফিল্মের কর্ণ।
যখন ফটোগ্রাফিক লেন্সকে "অসীমে" নির্ধারণ করা হয়, সেটার পিছনের আলোক কেন্দ্র সেন্সর অথবা ফিল্ম থেকে আলাদা হয়ে পরে, ফোকাস তলে, লেন্সের ফোকাস দূরত্ব অনুযায়ী। তখন ক্যামেরা থেকে দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তু সেন্সর অথবা ফিল্মে স্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠন করে, যা ঐ ফোকাস তলেই হয়ে থাকে।
খুব কাছে থাকা লক্ষ্যবস্তুকে স্পষ্ট ফোকাসে পাওয়ার জন্য, পিছনের আলোক কেন্দ্র এবং ফিল্মের মধ্যকার দূরত্ব বাড়িয়ে লেন্সকে এমন অবস্থানে সরাতে হবে, যাতে ফিল্ম ফোকাস তলের উপরে পরে। তখন ফোকাস দূরত্ব (), সামনের আলোক কেন্দ্র থেকে ফটোগ্রাফ করার লক্ষ্যবস্তু পর্যন্ত দূরত্ব (), এবং পিছনের আলোক কেন্দ্র থেকে ফোকাস তল পর্যন্ত দূরত্ব () এর মধ্যকার সম্পর্ক হল:
হ্রাস করা হলে, কে বৃদ্ধি করতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, ধরি একটি সাধারণ লেন্স সহ একটি ৩৫ মিমি ক্যামেরার ফোকাস দূরত্ব । দূরে থাকা লক্ষ্যবস্তুকে () ফোকাসে আনতে, লেন্সের পিছনের আলোক কেন্দ্রকে ফোকাস তল থেকে দূরত্বে অবস্থান করতে হবে। 1 মি দূরে থাকা কোন লক্ষ্যবস্তুকে () ফোকাসে আনতে, লেন্সকে ফোকাস তল থেকে আরো 2.6 মিমি দূরে সরিয়ে দূরত্বে অবস্থান করাতে হবে।
দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুর প্রতিবিম্ব গঠনে বিবর্ধন ক্ষমতা নির্ভর করে লেন্সের ফোকাস দূরত্বের উপর। একটি পিনহোল ক্যামেরা দিয়ে ঐ লেন্স দ্বারা গঠিত দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুর বিম্বের সমান বিম্ব গঠন করা হলে, পিনহোল ক্যামেরার ছিদ্র থেকে বিম্বের তল পর্যন্ত মধ্যবর্তী দূরত্ব ঐ লেন্সের ফোকাস দূরত্বের সমান হবে। রেক্টিলিনিয়ার লেন্স সমূহের জন্য (যেসবে কোন বিম্বের বিকৃতি হয় না), কোন দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুর বিম্ব গঠনের মডেলকে পিনহোল ক্যামেরা মডেল বলে।[4] এই মডেল থেকে প্রাপ্ত সরল জ্যামিতিক মডেল ব্যবহার করেই ফটোগ্রাফাররা কোন ক্যামেরার বীক্ষণ কোণ পরিমাপ করে থাকেন; এই ক্ষেত্রে বীক্ষণ কোণ শুধুমাত্র ফোকাস দূরত্ব এবং ফিল্মের সাইজের অনুপাতের উপর নির্ভর করে। সাধারণত, বীক্ষণ কোন বিম্বের বিকৃতির উপরও নির্ভর করে থাকে।[5]
কোন লেন্সের ফোকাস দূরত্ব, ফিল্ম বা সেন্সরের ধরনের কর্ণের প্রায় সমান হলে, ঐ লেন্সকে সাধারণ লেন্স বলে; এর বীক্ষণ কোণ, স্বাভাবিক দর্শনের দূরত্ব থেকে কোন বড়-আকারের প্রিন্ট দর্শনে প্রিন্টটির কর্ণ থেকে যে বিপ্রতীপ কোণ উৎপন্ন হয়, সেটার মতই; যার ফলে প্রিন্টটি দর্শনের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ পারস্পরিক সামঞ্জস্যতা বজায় থাকে;[6] এই বীক্ষণ কোণের পরিমাপ কোণাকোণি ভাবে ৫৩ ডিগ্রি। ফুল-ফ্রেম ৩৫ মিমি-ধরনের ক্যামেরাতে, কর্ণ হল ৪৩ মিমি এবং একটি আদর্শ "সাধারণ" লেন্সের ফোকাস দূরত্ব হচ্ছে ৫০ মিমি। কোন লেন্সের ফোকাস দূরত্ব "সাধারণ" থেকে ছোট হলে তাকে সাধারণত ওয়াইড-এঙ্গেল লেন্স বলে (সাধারণত ৩৫ মিমি এবং এর থেকে কম, ৩৫ মিমি-ধরনের ক্যামেরার জন্য), অন্য দিকে কোন লেন্স "সাধারণ" থেকে বেশ দীর্ঘাকার হলে তাকে সাধারণত টেলিফটো লেন্স বলে (সাধারণত ৮৫ মিমি এবং এর থেকে বেশি, ৩৫ মিমি-ধরনের ক্যামেরার জন্য)। তত্ত্বগত ভাবে, বেশি ফোকাস দূরত্বের লেন্স তখনই "টেলিফটো" হবে যখন লেন্সটির ফোকাস দূরত্ব সেটির শরীরের দৈর্ঘ্য থেকে বড় হবে, কিন্তু প্রায়ই যেকোন বড় ফোকাস দূরত্বের লেন্সের জন্যই এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
৩৫ মিমি প্রমিতরীতির জনপ্রিয়তার কারণে, ক্যামেরা লেন্স সমূহকে প্রায়ই তাদের ৩৫ মিমি এর সমতুল্য ফোকাস দূরত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়, যেটা হল, কোন ফুল-ফ্রেম ৩৫ মিমি ক্যামেরাতে একই বীক্ষণ কোণ, অথবা দৃষ্টি পথ পাওয়ার জন্য কোন লেন্সের ফোকাস দূরত্ব। ৩৫ মিমি-সমতুল্য ফোকাস দূরত্বের ব্যবহার বিশেষভাবে ডিজিটাল ক্যামেরা সমূহের জন্য পরিচিত, যেসবে প্রায়ই ৩৫ মিমি ফিল্ম থেকে ছোট আকারের সেন্সর ব্যবহার করা হয়, এবং এর জন্য অনুরূপ ছোট আকারের ফোকাস দূরত্ব দরকার হয় একই বীক্ষণ কোণ অর্জনের জন্য; এক্ষেত্রে যে গুণনীয়ক বা ফ্যাক্টর ব্যবহার করা হয় তাকে ক্রপ ফ্যাক্টর বলে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.