Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ফুকুওকা (জাপানি: 福岡市, ফুকুওকা শি; আ-ধ্ব-ব: [ɸɯ̥kɯoka̠ꜜɕi]) পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র জাপানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে কিউশু দ্বীপে অবস্থিত একটি নগরী ও বন্দর। এটি দেশটির ষষ্ঠ বৃহত্তম নগরী, দ্বিতীয় বৃহত্তম বন্দর নগরী (ইয়োকোহামার পরে) ও "ফুকুওকা কেন" তথা ফুকুওকা জেলার প্রশাসনিক কেন্দ্র। শহরটি কিউশু দ্বীপের উত্তরভাগে জাপান সাগরের হাকাতা উপসাগরের দক্ষিণ উপকূল ধরে গড়ে উঠেছে। প্রাক্তন প্রতিবেশী হাকাতা শহরটিকে আধুনিক ফুকুওকার অঙ্গীভূত করে নেওয়া হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই এটি একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র। ফুকুওকা এলাকাটিকে দীর্ঘদিন ধরে জাপানের প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কেননা এটি জাপানের প্রধান চারটি দ্বীপের শহরগুলির মধ্যে এশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সবচেয়ে নিকটবর্তী বড় শহর।
ফুকুওকা 福岡市 | |
---|---|
মনোনীত নগরী | |
ফুকুওকা নগরী | |
ফুকুওকা জেলাতে ফুকুওকা নগরীর অবস্থান | |
জাপানে ফুকুওকা নগরীর অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ৩৩°৩৫′ উত্তর ১৩০°২৪′ পূর্ব | |
দেশ | জাপান |
প্রশাসনিক অঞ্চল | কিউশু |
জেলা | ফুকুওকা জেলা |
দাপ্তরিক নথিপত্রে প্রথম উল্লেখ | ৫৭ খ্রিস্টাব্দ |
নগর হিসেবে মর্যাদা | ১লা এপ্রিল, ১৮৮৯ |
সরকার | |
• নগরপ্রধান | সৌইচিরৌ তাকাশিমা (২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে) |
আয়তন | |
• মনোনীত নগরী | ৩৪৩.৩৯ বর্গকিমি (১৩২.৫৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (১লা জুলাই, ২০২১) | |
• মনোনীত নগরী | ১৬,০৩,৫৪৩ |
• জনঘনত্ব | ৪,৭০০/বর্গকিমি (১২,০০০/বর্গমাইল) |
• মহানগর[1] (2015) | ২৫,৬৫,৫০১ (৫ম) |
সময় অঞ্চল | জাপান মান সময় (ইউটিসি+৯) |
– বৃক্ষ | ক্যামফর লরেল |
– ফুল | ক্যামেলিয়া |
– পাখি | কালোমাথা শঙ্খচিল |
ওয়েবসাইট | www |
ফুকুওকা জাপানের চারটি প্রধান দ্বীপের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ কিউশু-র সবচেয়ে জনবহুল নগরী; ফুকুওকা-র ৬৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত কিতাকিউশু শহরটি দ্বীপটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল নগরী। এটি জাপানের কেইহানশিন এলাকার পশ্চিমে অবস্থিত বৃহত্তম নগরী এবং মহানগর এলাকা। ১৯৭২ সালের ১লা এপ্রিল তারিখে সরকারী অধ্যাদেশ দ্বারা এটিকে একটি মনোনীত নগরীর (৫ লক্ষাধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট ও জেলা সরকারের মর্যাদাবিশিষ্ট নগরী) মর্যাদা প্রদান করা হয়। ২০১৫ সালের জনগণনা অনুযায়ী বৃহত্তর ফুকুওকা মহানগর এলাকাটিতে প্রায় ২৫ লক্ষ অধিবাসীর বাস ছিল, যার ফলে এটি টোকিও (তৌকিঔ), ওসাকা, নাগোইয়া ও কিয়োতো-র (কিয়ৌতৌ) পরে জাপানের ৫ম বৃহত্তম মহানগর এলাকা। শহরটি শিল্পঘন ফুকুওকা-কিতাকিউশু অঞ্চলের পশ্চিম অংশটি গঠন করেছে।
জাপানের ইতিহাসের জৌমন যুগেই (খ্রিস্টপূর্ব ১৪ হাজার থেকে ৩০০ অব্দ পর্যন্ত) এই অঞ্চলটিতে মানব বসতির প্রমাণ মিলেছে; এরপর এশিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে ধান চাষকারী কিছু বসতি স্থাপনকারী উত্তর কিউশু দ্বীপের ফুকুওকা এলাকায় আগমন করলে ইয়াইয়োই যুগ শুরু হয়। ইয়ামাতো আমলে ফুকুওকা শহরটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে শুরু করে। আন্তঃসাংস্কৃতিক সংযোগের কারণে এবং কিয়োতো, ওসাকা এবং পরবর্তীতে এদো (টোকিও) শহরগুলির মতো জাপানের সামাজিক ও রাজনৈতিক কেন্দ্রগুলি থেকে তুলনামূলকভাবে অনেক দূরত্বে অবস্থিত হবার কারণে ফুকুওকাতে একটি স্বতন্ত্র স্থানীয় সংস্কৃতি এবং উপভাষার জন্ম হয়, যা আজ অবধি টিকে আছে।
২০১১ সালের জুলাই মাসে ফুকুওকা-র জনসংখ্যা কোবে শহরের জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায় ও ২০১৫ সালে ১৫ লক্ষ অধিবাসী নিয়ে এটি জাপানের ষষ্ঠ বৃহত্তম শহরে পরিণত হয়[2] এবং এসময় ৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে কিয়োতোর প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো কানসাই অঞ্চলের পশ্চিমপার্শ্বে অবস্থিত একটি নগরীর জনসংখ্যা কিয়োতোর জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায়।
ফুকুওকা বর্তমানে (২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী) জাপানের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল নগরী এবং একটি আঞ্চলিক বাণিজ্যিক, শিল্প, প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখানে একটি সক্রিয় মৎস্য আহরণ বন্দর আছে। শহরটি রেলপথ ও সড়কপথের মাধ্যমে কিতাকিয়ুশু ও কিয়ুশু দ্বীপের পশ্চিমভাগের অন্যান্য শহরের সাথে ব্যাপকভাবে সংযুক্ত। এটি একটি স্বতন্ত্র শিনকানসেনের (দ্রুতগামী রেল পরিবহন ব্যবস্থার) সাথেও সংযুক্ত। হাকাতা রেলস্টেশন, হাকাতা বন্দর ও ফুকুওকা বিমানবন্দর নগরীর তিনটি প্রধান পরিবহন কেন্দ্র। বিমানবন্দর থেকে পাতালরেলে মাত্র ৫ মিনিটে নগরকেন্দ্রের হাকাতা রেলস্টেশনে পৌঁছানো যায়।[3] ফুকুওকাতে ১৯১১ সালে প্রতিষ্ঠিত কিউশু বিশ্ববিদ্যালয়টিসহ বহুসংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় অবস্থিত। তাই ছাত্রছাত্রীবহুল এই নগরীর অধিবাসীরা জাপানের অন্যান্য শহরের তুলনায় বেশ নবীন। হাকাতা নিংইও নামের বিশদ ও বর্ণিল পোশাকপরিচ্ছদ পরিহিত দগ্ধমাটির যে পুতুলগুলি বেশিরভাগ জাপানি গৃহে শোভা পায়, সেগুলি এই ফুকুওকা শহরেই তৈরি করা হয়। এই পুতুলগুলির নির্মাণশিল্পটির ঐতিহ্য ৪০০ বছরের বেশি পুরনো।[3]
যুক্তরাজ্যের মনোকল সাময়িকী ২০২২ সালে ফুকুওকাকে বিশ্বের ২২তম সর্বাধিক বাসযোগ্য নগরীর মর্যাদা দান করে। প্রতিবেদনটিতে এশিয়া মহাদেশের মধ্যে কেবল টোকিও, তাইপেই, কিয়োতো, সিউল ও সিঙ্গাপুর শহরগুলিকে ফুকুওকার চেয়ে বেশি বাসযোগ্য বলে গণ্য করা হয়। ফুকুওকা শহরের কাছেই সমুদ্রসৈকত ও পাহাড় অবস্থিত। নগরকেন্দ্রের বাণিজ্যিক এলাকাটিতে পুরাতন ভবনগুলির পরিবর্তন সাধন করে আধুনিক স্থাপত্যের নতুন নতুন সব বাণিজ্যিক ভবন গড়ে তোলা হয়েছে, যেগুলির নাম তেনজিন বিগ ব্যাং। ২০২০-এর দশকে এসে টোকিও ও নাগোইয়াকে ছাড়িয়ে বর্তমানে ফুকুওকাতেই জাপানের সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি (স্টার্ট-আপ কোম্পানি) শুরু করা হচ্ছে।[3] এটিকে তাই জাপানের "সিলিকন উপত্যকা" বলেও ডাকা হয়।[4]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.