পারমাণবিক শক্তি
নিউক্লীয় ফিউশন বা ফিশন বিক্রিয়ার ফলে উদ্ভুত শক্তির এক প্রকার রূপ / From Wikipedia, the free encyclopedia
পারমাণবিক শক্তি হল শক্তির এক প্রকার রূপ। নিউক্লীয় ফিউশন বা ফিশন বিক্রিয়ার ফলে এই শক্তির উদ্ভব ঘটে। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ভর হতে শক্তির রূপান্তর আইনস্টাইনের ΔE = Δmc2 শক্তির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যেখানে ΔE=উৎপন্ন শক্তি, Δm=শক্তি উৎপন্নকারী পদার্থের ভর এবং c=আলোর গতিবেগ (শূণ্য মাধ্যমে)। ফ্রেঞ্চ পদার্থবিদ হেনরি বেকেরেল সর্বপ্রথম ১৮৯৬ সালে পারমাণবিক শক্তি উদ্ভাবন করেন। তিনি অন্ধকারে ইউরেনিয়ামের পাশে রক্ষিত ফটোগ্রাফিক প্লেটের বর্ণ পরিবর্তন দেখে এই বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হন। অবশ্য ১৮৯৫ সালে এই ঘটনাটির আবিষ্কার হয়।[1] নিম্নোক্তভাবে পারমাণবিক শক্তির উদ্ভব ঘটতে পারেঃ
- তেজস্ক্রিয় ক্ষয়, তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত নিউট্রন বা প্রোটনের ক্ষয়ের ফলে অন্যান্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণা, তড়িচ্চুম্বকীয় বিকিরণ, নিউট্রনের উদ্ভবের মাধ্যমে।
- নিউক্লীয় ফিউশন, দুইটি পারমাণবিক নিউক্লিয়াসের সংযোজনের মাধ্যমে বৃহত্তর নিউক্লিয়াসের গঠনের ফলে।
- নিউক্লীয় ফিশন, বড় নিউক্লিয়াসের ভাঙনে দুই বা ততোধিক হালকা নিউক্লিয়াসে বিয়োজনের মাধ্যমে।
কোন একটি ভারী মৌলের পরমাণুকে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে ভারী মৌলটি ভেংগে দুইটি হাল্কা মৌলের পরমাণুতে পরিণত হয় এবং বিপুল পরিমাণ তাপ শক্তির বিকিরন ঘটে। এই শক্তিকেই বলা হয় পরমাণু শক্তি। এই বিক্রিয়া সংঘটিত হওয়ার সময় সাধারণত ৩টি নিউট্রনও উৎপন্ন হয় যা পুনরায় নতুন ৩টি বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। ফলে আরও ৯টি নিউট্রন পাওয়া যায়, যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। এজন্য এই বিক্রিয়াকে বলা হয় চেইন রিঅ্যাকশন। অনিয়ন্ত্রিত পারমাণবিক বিক্রিয়া বিপুল পরিমাণ তাপ উৎপন্ন করে যা খুবই বিপজ্জনক। পারমাণবিক বোমা মূলত অনিয়ন্ত্রিত পারমাণবিক বিক্রিয়া। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রিত পারমাণবিক বিক্রিয়া প্রয়োজন মত সঠিক পরিমাণে তাপ উৎপাদন করে যা বিভিন্ন গবেষণা ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হয়।