Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
প্যকৌক্কু (বর্মী: ပခုက္ကူမြို့, [pəkʰoʊʔkù]) মিয়ানমার বা বার্মার মগওয়ে অঞ্চলের বৃহত্তম শহর। এটি বাগান এর প্রায় ৩০ কিমি উত্তর-পূর্বে ইরাবতী নদীর তীরে অবস্থিত। এটি প্যকৌক্কু শহর, প্যকৌক্কু জেলা এবং গাঙ্গাও জেলা প্রশাসনের অবস্থানস্থল। প্যকৌক্কু সেতু ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় মহাসড়কের অংশ এবং এটি মিয়ানমারের দীর্ঘতম সেতু। প্যকৌক্কু বিমানবন্দর এখানেই অবস্থিত।
প্যকৌক্কু ပခုက္ကူမြို့ | |
---|---|
শহর | |
মিয়ানমার প্রতিলিপি | |
• বর্মী | pa.hkukku mrui. |
বার্মায় অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২১°২০′ উত্তর ৯৫°৫৪′ পূর্ব | |
রাষ্ট্র | মিয়ানমার |
অঞ্চল | টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত মগওয়ে অঞ্চল |
জেলা | প্যকৌক্কু জেলা |
শহর | প্যকৌক্কু শহর |
জনসংখ্যা (২০১৪) | |
• শহর | ৩,২০,২৮৪ |
• পৌর এলাকা | ২,১৯,০০০ |
• মহানগর | ১,০১,২৮৪ |
সময় অঞ্চল | এমএসটি (ইউটিসি+৬.৩০) |
প্যকৌক্কু শহরে প্যকৌক্কু কম্পিউটার বিশ্ববিদ্যালয়, প্যকৌক্কু শিক্ষা কলেজ, প্যকৌক্কু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্যকৌক্কু বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। প্যকৌক্কুতে অবস্থিত বিখ্যাত প্যাগোডাগুলি হলো থিহো শিন প্যাগোডা (দি লর্ড অব শ্রীলঙ্কা প্যাগোডা), শ্বে কু প্যাগোডা, শ্বে মথ্তাও প্যাগোডা, শ্বে তান্ত তিত, এবং ফাং তাও অও প্যাগোডা। ইরাবতী সেতু (প্যকৌক্কু) মিয়ানমারের দীর্ঘতম সেতু। প্যকৌক্কু ঊর্ধ্ব মিয়ানমারের (বার্মা) বৃহত্তম ধানের বাজার শহরও।
ব্রিটিশদের দখলের আগে প্যকৌক্কু একটি ছোট গ্রাম এবং পাখাঙ্গি জেলা ও বাগান জেলার অংশ ছিল। ১৮৮৫ সালের ২৯ নভেম্বর ব্রিটিশরা ঊর্ধ্ব বার্মা দখল করে। ১৮৮৭ সালের ১ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারত সরকার প্যকৌক্কু পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করে। ১৮৮৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারত সরকার প্যকৌক্কুকে পাখাঙ্গি জেলার একটি শহর হিসাবে ঘোষণা দেয়, তখন এর জনসংখ্যা ছিল ১,৯৮৫ জন। ব্রিটিশ সরকারের ডিগ্রি আদেশ (২০১) এর মাধ্যমে পাখাঙ্গি জেলা বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং ১৮৮৮ সালের ২১ জুলাই প্যকৌক্কু জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯০১ সালে প্যকৌক্কুর জনসংখ্যা ছিল ১৯,৪৫৬। ১৩ বছরে প্যকৌক্কুর জনসংখ্যা ও উন্নয়ন দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল।
১৮৯৬ সালে প্যকৌক্কু প্যকৌক্কু পার্বত্য জেলার রাজধানীতে পরিণত হয় (প্যকৌক্কু জেলা, চিন রাজ্য (পালেতয়া শহর ব্যতীত), গাঙ্গাও জেলা, নাগা স্ব-প্রশাসনিক অঞ্চল, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মণিপুর এবং শিলং ব্যতীত মেঘালয়)।
১৯৩০ সালের শুরুর দিকে ব্রিটিশ ভারত থেকে বার্মার ঔপনিবেশিক পৃথকীকরণের জন্য শ্বেগু প্যাগোডায় রাজনৈতিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ইউ লুইন ১৯৩০ সালের ৭ নভেম্বর প্যকৌক্কুর নতুন মেয়র নিযুক্ত হন। ১৯৩০ সালের ১০ ডিসেম্বর প্যকৌক্কু পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৩১ সালের ২২ শে মার্চ ভোরে প্যকৌক্কুতে প্রচণ্ড অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং ৩,০০০ এরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়। ফলে ১৯৩১ সালের ৭ এপ্রিল প্যকৌক্কু দমকল বাহিনী গঠন করা হয়।
১৯৪৮ সালে মিয়ানমার (বার্মা) স্বাধীনতা লাভ করার সময় প্যকৌক্কু পার্বত্য অঞ্চল জেলা দুই ভাগে বিভক্ত হয়। প্যকৌক্কু জেলা, গাঙ্গাও জেলা, নাগা স্ব-প্রশাসিত অঞ্চল এবং চিন রাজ্য মিয়ানমারের (বার্মা) অংশে পরিণত হয় এবং নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মণিপুর এবং মেঘালয় ভারতের অংশে পরিণত হয়।
১৯৪৭ সালে বার্মার ইউনিয়ন গঠনের পর ১৯৪৮ সালে দুটি জেলা নিয়ে প্যকৌক্কু প্রদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। জেলা দুটি হলো প্যকৌক্কু জেলা এবং ১১ টি শহর নিয়ে কানপেতলেত জেলা। শহরগুলো হলো প্যকৌক্কু, কানপেতলেত, ইয়াসাগিও, পাউক, সিকফিউ, মায়িং, গাঙ্গাও, হিতিলিন, সাও, মিন্দাত এবং মাতুপি। ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্ট বিদ্রোহীরা প্যকৌক্কু দখল করে নেয় এবং ১৯৫৫ সালে সরকারী বাহিনী এটি মুক্ত করার আগ পর্যন্ত কমিউনিস্টদের দখলে ছিল। ১৯৫৮ সালে কানপেতলেত জেলার নাম পরিবর্তন করে মিন্দাত জেলা এবং কানপেতলেত জেলার রাজধানী কানপেতলেত থেকে মিন্দাত এ স্থানান্তর করা হয়। প্রদেশের রাজধানী ছিল প্যকৌক্কু।
১৯৬২ সালের ২ মার্চ জেনারেল নে উইনের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বার্মার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং সেনাবাহিনী সরকারকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ করে। ১৯৭৪ সালে বার্মা ইউনিয়ন সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের একটি নতুন সংবিধান গৃহীত হয়।
১৯৭৪ সালে নতুন বিন্যাস ফলে প্যকৌক্কু প্রদেশ বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং প্যকৌক্কু জেলাকে মগওয়ে বিভাগে এবং মিন্দাত জেলাকে এখন পর্যন্ত চিন রাজ্যে যুক্ত করা হয়। ১৯৯৬ সালের ৪ এপ্রিল প্যকৌক্কু জেলাকে দুটি জেলায় বিভক্ত করা হয়। প্যকৌক্কু, পাউক, ইয়াসাগিও, মায়িং এবং সিকফিউ নিয়ে প্যকৌক্কু জেলা এবং গাঙ্গাও, সাও এবং হিতলিন নিয়ে গাঙ্গাও জেলা গঠন করা হয়।
২০০৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্যকৌক্কু সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০১১ এ শেষ হয়। সেতুটি ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি খোলে দেওয়া হয়। এটি মিয়ানমারের দীর্ঘতম সেতু।
থিহোশিন প্যাগোডা
প্যকৌক্কু (১৯৮১–২০১০)-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ২৯.১ (৮৪.৪) |
৩২.৩ (৯০.১) |
৩৬.৪ (৯৭.৫) |
৩৯.০ (১০২.২) |
৩৭.৫ (৯৯.৫) |
৩৫.৩ (৯৫.৫) |
৩৪.৯ (৯৪.৮) |
৩৩.৯ (৯৩.০) |
৩৩.৫ (৯২.৩) |
৩২.৭ (৯০.৯) |
৩০.৬ (৮৭.১) |
২৮.৭ (৮৩.৭) |
৩৩.৭ (৯২.৭) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ১৩.২ (৫৫.৮) |
১৪.৭ (৫৮.৫) |
১৮.৬ (৬৫.৫) |
২২.১ (৭১.৮) |
২৪.২ (৭৫.৬) |
২৩.৬ (৭৪.৫) |
২৩.৮ (৭৪.৮) |
২৩.৫ (৭৪.৩) |
২৩.০ (৭৩.৪) |
২১.৬ (৭০.৯) |
১৮.১ (৬৪.৬) |
১৫.১ (৫৯.২) |
২০.১ (৬৮.২) |
বৃষ্টিপাতের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ০.৯ (০.০৪) |
০.৩ (০.০১) |
৩.৯ (০.১৫) |
১১.১ (০.৪৪) |
৮৮.২ (৩.৪৭) |
৮৯.৭ (৩.৫৩) |
৩৮.২ (১.৫০) |
৯০.৬ (৩.৫৭) |
১১৭.৮ (৪.৬৪) |
১৩২.০ (৫.২০) |
২৯.৬ (১.১৭) |
৪.০ (০.১৬) |
৬০৬.৩ (২৩.৮৭) |
উৎস: নরওয়েজীয় আবহাওয়া ইনস্টিটিউট[1] |
মধ্য বার্মায় প্যকৌক্কুর কৌশলগত অবস্থান এটিকে পণ্য ও গণপরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলেছে। শহরটি দেশের অন্যান্য অংশের সাথে এবং চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতের সাথে পরিবহণের একাধিক মাধ্যমে সংযুক্ত।
ইরাবতী নদী ধান, মটরশুটি এবং ডাল, ভোজ্য তেল, মৃৎশিল্প, বাঁশ এবং সেগুন সহ কৃষি পণ্য পরিবহনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্যকৌক্কু নদীবন্দর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বন্দর, ইয়াঙ্গুন বন্দর এবং মান্দালয় বন্দরের পরে এটি মিয়ানমারের (বার্মা) তৃতীয় বৃহত্তম বন্দর। প্যকৌক্কু বন্দর মগওয়ে অঞ্চলের একটি প্রধান বন্দর।
প্যকৌক্কু রেলওয়ে স্টেশন ইয়াঙ্গুন থেকে মিয়ানমার রেলপথের প্রধান রেললাইনের শেষ স্টেশন এবং পাইইন ইউ লুইন (মায়মিও), মন্যুয়া, মান্দালয়, কালে, গাঙ্গাও এবং দক্ষিণে বাগান, মিনবু, থায়েত, পাইয়ে এবং কিয়ানগিনের শাখা লাইনের সূচনা স্থান। প্যকৌক্কু রেলওয়ে স্টেশন মগওয়ে বিভাগের প্রধান রেল স্টেশন।
প্যাকাউক্কুতে কোন আন্তঃনগর মেট্রো রেল ব্যবস্থা নেই।
প্যকৌক্কু বার্মার সড়ক বিন্যাসের একটি অংশ। মহাসড়ক বিন্যাসের সাথে রাস্তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:[3]
প্যকৌক্কু—মাইনগিয়ান-মান্দালয়-তাগুং– ভামো–মাইতকিইনা রোড, প্যকৌক্কু-চৌং অও-সাগাইং-মান্দালয় রোড, প্যকৌক্কু-মান্দালয়–লাশিও– মুসে রোড (এশিয়ান হাইওয়ের অংশ)[4]
প্যকৌক্কু-পাউক-সাও-হিতিলিন-গাঙ্গাও-কালে-তামু রোড, প্যকৌক্কু-পাউক-কিউখতু-মিন্দাত-মাতুপি রোড, প্যকৌক্কু—চৌং অও–মন্যয়া – কালেওয়া–তামু রোড (ভারত–মায়ানমার–থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় মহাসড়ক এর অংশ)[4]
প্যকৌক্কু – নায়াউং – অও – চৌক – পায়া - বাগো - ইয়াংগুন রোড, প্যকৌক্কু – মেকতিলা – নায় পাই তাও – থাতন – এইচপা-আন – কাওকারিক – মায়াওয়াদ্দে রোড (ভারত–মায়ানমার–থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় মহাসড়ক এর অংশ)[4]
এই মহাসড়কের বেশিরভাগ অংশ এক-লেনের নিম্নমানের রাস্তা। প্যকৌক্কু সেতু ভারত–মিয়ানমার–থাইল্যান্ড ত্রিপক্ষীয় হাইওয়ের অংশ এবং মিয়ানমারের দীর্ঘতম সেতু।
প্যকৌক্কু শিল্প অঞ্চল
প্যকৌক্কু এই অঞ্চলের ধানের প্রয়োজন এবং চীন রাজ্যের একটি দরজা (যাদের ধানও দরকার) হওয়ার কারণে এটি ঊর্ধ্ব মিয়ানমারের বৃহত্তম ধানের বাজার। প্যকৌক্কুতে আসা ধানের মধ্যে ৭০% আয়য়াওয়াদি অঞ্চল (মায়ুঙ্গম্যা, হিনতাদা এবং মায়ানাউং) থেকে এবং ৩০% সাগাইং অঞ্চলের শ্বেবো এবং ইয়ে-ইউ থেকে আসে। প্যকৌক্কুর বাজারে আসা প্রায় ২০% ধান প্যকৌক্কুর নিজেরই প্রয়োজন হয় এবং বাকী ৮০% অন্যান্য শহরের বাজারে পাঠানো হয়। বেশিরভাগ ক্রেতা মায়িং, ইয়াসাগিও, পাউক, কালাইমায়ো এবং চিন রাজ্যের। প্যকৌক্কু বাজারে উচ্চ শ্রেণীর জন্য ১৫%, মধ্যবিত্তের জন্য ৫০% এবং নিম্ন শ্রেণীর জন্য ৩৫% ধান ব্যবহৃত হয়। এখানে প্রায় ৫ টি বড়ধরণের ধানের পাইকারী বিক্রেতা এবং ১০ টি ছোটধরণের ধানের পাইকারী বিক্রেতা রয়েছে। একটি বড় পাইকারী বিক্রেতা প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১,৫০০ ব্যাগ ধান বিক্রি করে অর্থাৎ বছরে ১,৮০,০০০ থেকে ২,০০,০০০ ব্যাগ (৯,০০০-১০,০০০ টন) ধান বিক্রি করতে পারে। ভাল পরিবহন ব্যবস্থা এবং কার্যকর বাজারের কারণে ধানের দাম খুব বেশি হয়ে থাকে। ফলে প্যকৌক্কুর ধানের বাজার মান্দালয়ের বাজারের তুলনায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
৭,০০০ আসন সম্পন্ন প্যকৌক্কু স্টেডিয়াম একটি বহুমুখী স্টেডিয়াম এবং এখানে বেশিরভাগ ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.