Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পরজীবীবিজ্ঞান হচ্ছে পরজীবী, তাদের বাহক এবং উভয়ের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে আলোচিত বিজ্ঞান। জীববিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে, পরজীবীবিজ্ঞান জীব অথবা জীবের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ দ্বারা নয় বরং জীবের জীবনধারার উপর নির্ভরশীল অর্থাৎ, জীববিজ্ঞানের অন্য শাখা যেমনঃ কোষ জীববিজ্ঞান, জৈব তথ্যবিজ্ঞান, জৈবরসায়ন, আণবিক জীববিজ্ঞান, জিনতত্ত্ব, বিবর্তন এবং বাস্তুতন্ত্র ইত্যাদির সাথে পরজীবীবিজ্ঞানের গভীর সংযোগ রয়েছে।
এই বিদ্যায় বৈচিত্র্যময় জীব নিয়ে আলোচনা করা হয়। ফলে, এই সম্পূর্ণ বিষয়কে সরলীকরণ করতে ছোট ছোট অনেকগুলো অংশে ভাগ করা হয়েছে। এতে ভিন্ন জীব কিংবা রোগ নিয়ে আলোচনা করা হলেও মূল পদ্ধতি যেন একই থাকে। পরজীবীবিজ্ঞান নিয়ে বিস্তর গবেষণার ক্ষেত্রে একাধিক অংশের প্রয়োজন হয়। সাধারণত, প্রাক-কেন্দ্রিক কোষী নিয়ে পরজীবীবিজ্ঞানে আলোচনা করা হয় না। এদের নিয়ে ব্যাক্টেরিয়াবিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়।
পরজীবীবিদ বিশেষজ্ঞ এফ.ই.জি কক্স উল্লেখ করেছেন, "মানব সম্প্রদায় প্রায় ৩০০ প্রজাতির পরজীবির বাহক। এর মাঝে৭০ এর বেশি প্রজাতির প্রোটোজোয়া পূর্বসূরীদের কাছ থেকে পাওয়া। কিছু কিছু গৃহপালিত ও পোষ্য পশু- পাখির সংস্পর্শে এসেছে।".[২]
পরজীবীবিজ্ঞানের একটি বিশাল অংশ মেডিকেল পরজীবীবিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করে। এই শাখায় যেসকল পরজীবি মানুষকে আক্রমণ করে তাদের রোগ-সম্বন্ধীয় চিত্র, এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও প্রতিকার ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরজীবি সনাক্তকরণে বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যবহার এবং পরিশেষে পরজীবি দ্বারা সংক্রামিত রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা এই বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। একটি পরজীবী হল একটি জীব, যে আশ্রয়দাতা বা হোস্ট নামে পরিচিত অন্য প্রাণীর উপর বা তার অভ্যন্তরে বসবাস করে। এই পরজীবীগুলির অন্তর্গত হল যেমন:
কৃষি ও মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি করে এরকম পরজীবি নিয়ে আলোচনা করা হয় এই শাখায়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়,
এই শাখায় পরজীবি থেকে প্রাপ্ত প্রোটিন নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরজীবির প্রোটিন সম্পর্কে বিস্তর জ্ঞান পরজীবির প্রোটিন থেকে মানুষের হোমোলোগাস প্রোটিন কীভাবে ভিন্নতর তা সম্পর্কের জানতে সাহায্য করে। বলা বাহুল্য, প্রোটিনের গঠন ঔষধ আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানে সক্ষম।
পরজীবি তার বাহকে অনেক বেশি সংখ্যায় বশবিস্তারে সক্ষম। দেখা গেছে, বেশিরভাগ পরজীবি অল্প সংখ্যক বাহকে অধিক হারে বসতি স্থাপন করে। পরজীবীবিদদের আধুনিক জীবপরিসংখ্যান সংক্রান্ত নিয়ম ব্যবহারে এই ধারণা গুরুত্বপূর্ণ। [৩]
পরজীবি পরিবেশে তার বাহকের জনসংখ্যার ব্যাপারে তথ্য প্রদানে সক্ষম। বিশেষ করে মৎস্য বিজ্ঞানে, পরজীবি সম্প্রদায় দ্বারা নির্দিষ্ট অঞ্চলের কোন নির্দিষ্ট মৎস্য প্রজাতির সংখ্যা নির্ধারন করার প্রচল আছে।
সংরক্ষণমূলক জীববিজ্ঞান প্রায় অস্তিত্বের হুমকির মুখে পড়া বিভিন্ন প্রজাতির জীব রক্ষায় কাজ করে। বিশাল সংখ্যাক প্রজাতির পরজীবি বিলুপ্তির পথে। বিশেষ করে মানুষ ও মনুষ্যপোষ্য পশু-পাখির উপর নির্ভরশীল পরজীবিদের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে।
এন্থনি ফন লিউয়েনহুক ১৬৮১ সালে সর্বপ্রথম গার্ডিয়া ল্যাম্বলিয়া পর্যবেক্ষণ করেন এবং চিত্রাঙ্কণ করেন। তিনি এই পরজীবিকে "his own loose stools" এর সাথে সম্পর্কিত করেন। মানব ইতিহাসে এটাই সর্বপ্রথম কোন প্রোটোজোয়ান প্যারাসাইটের তথ্য ভুক্তির ঘটনা, যা প্রথম মাইক্রোস্কোপ দ্বারা দেখা সম্ভব হয়েছিল। .[৪]
এর কিছু বছর পর,১৬৮৭ সালে জীববিজ্ঞানী কসিমো বনোমো এবং ডায়াসিন্তো সেস্টনি স্ক্যাবিস রোগের কারণ হিসেবে সারকপ্টিস স্ক্যাবাইকে চিহ্নিত করেন। এর মাধ্যমে প্রথম কোন রোগের কারণ হিসেবে কোন পরজীবিকে দায়ী করা হয়।[৫] একই প্রকাশনায় পরবর্তীকালে মানুষের গোলকৃমি সহ ১০০ প্রজাতির পরজীবির চিত্র প্রকাশিত হয়।[৬] তিনি পরজীবিরা ডিম থেকে জন্মলাভ করে এবং বড় হয় এব্যাপারে লিপিবদ্ধ করেন যা স্বতঃস্ফূর্ত বংশপরম্পরা ধারণার সাথে সাংঘর্ষিক।[৭]
১৯শ শতকে এসে আধুনিক পরজীবীবিজ্ঞানের বিকাশ ঘটে। একাধিক গবেষক ও ক্লিনিসিয়ান এব্যাপারে অবদান রেখেছেন। ১৮২৮ সালে জেমস এয়ারসলি অন্ত্র ও যকৃতের প্রোটোজোয়াল সংক্রামক রোগ এমিবায়োসিসকে চিহ্নিত করেন। পরবর্তীতে ফ্রিডরিখ লুশ ১৮৭৩ সালে এই রোগের জন্য দায়ী এন্টামিবা হিস্টলাইটিকা (Entamoeba histolytica) আবিষ্কার করেন। ম্যালেরিয়া পরজীবি প্লাজমোডিয়ামের জীবনচক্র বর্ণনার জন্য ১৯০২ সালে বিজ্ঞানী রোনাল্ড রস নোবেল পুরস্কার পান।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.