পরকালবিদ্যা
From Wikipedia, the free encyclopedia
পরকালবিদ্যা হল ধর্মতত্ত্বের অংশ যেখানে সবকিছু শেষ হয়ে যাবার পরের গন্তব্যস্থল নিয়ে আলোচনা করা হয়। এটাকে সাধারণত "শেষ দিন" বা "পৃথিবীর সমাপ্তি" বলে অভিহিত করা হয়।
গ্রীক শব্দ ἔσχατος থেকে আগত eschatos এর অর্থ হল শেষ এবং -logy শব্দের অর্থ হল "কোন বিশেষ কিছুর ব্যপারে পড়াশোনা"। Eschatology শব্দটি ইংরেজি ভাষায় প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল ১৮৪৪ সালে।[1] অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধান অনুযায়ী "ধর্মতত্ত্বের সেই শাখা যেটা পাঠ করলে মৃত্যু, শেষ বিচার এবং আত্মার সর্বশেষ গন্তব্যস্থল সমন্ধে জ্ঞান লাভ করা যায়"।[2]
অতীন্দ্রিয়বাদ অনুসারে, এই শব্দটা দ্বারা সাংকেতিকভাবে দৃশ্যমান পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবার সাথে ঐশ্বরিক সত্ত্বার সাথে আত্মার মিলন হওয়াকে বুঝিয়ে থাকে। এবং অধিকাংশ ধর্মেই এটি একটি অবসম্ভাবী ঘটনা যার উল্লেখ আছে ধর্মগ্রন্থে বা প্রাচীন লোককথায়। আরও ভালোভাবে বলতে গেলে- নবী, ঈসার পূনরাগমনের পরবর্তী সময়, পৃথিবীর শেষ সময় এবং শেষ বিচারের দিন এসব নিয়েই জড়িয়ে আছে এই পরকালবিদ্যা।
বিভিন্ন ধর্মের ইতিহাসকে বিভিন্ন যুগ বলে অভিহিত করা হয় (ধর্মীয় টার্ম এওন)। একযুগের অবসান হয় অন্যযুগের আগমনের মাধ্যমে। দুই পর্বের মধ্যবর্তী সময়কে সরাসরি পরকালবিদ্যা না বলে বলা হয় "যুগের অবসান" যার সরল নাম হল "পরিচিত জীবনধারার অবসান"। এভাবে যুগের অবসান হতে হলে ব্যাপক ধ্বংসলীলার মাধ্যমে সবকিছু শেষ হতে হয় না বরং কেবল একটা সময়সীমার পরিসমাপ্তি ঘটে। তবে আরেকটা যুগের শুরু হবার সময়টুকুতে একপ্রকার সংকটের সৃষ্টি হয়, কারণ একরকম জীবনাচার থেকে অন্যরকম ভাবে জীবনযাপন করতে হলে প্রায়শই বেশকিছু বাধার সম্মুখিন হতে হয় না পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পরিবর্তনটা হতে পারে এমন: ইতিহাসে নতুন "শ্বর" এর প্রবেশ, কোন যুদ্ধ, জলবায়ুর পরিবর্তন অথবা নিছকই চিন্তাধারার পরিবর্তন।
প্রায় সকল আধুনিক পরকালবিদরা (ধর্মীয় এবং সেক্যুলার দু'ধরনেরই) বিশ্বাস ব্যপক ধ্বংসপ্রক্রিয়ার (গজব) মধ্যে দিয়ে পৃথিবী শেষ হবে। খৃষ্টীয় এবং ইহুদিবাদরা মনে করে এর ফলে বিশ্বজগৎ সৃষ্টির প্রক্রিয়া পূর্ণ হবে। উদাহরণস্বরূপ: প্রাচীন হিব্রুশাস্ত্র মতে, বাস্তবতা একটি সরলরেখায় চলে যা ঘুরে এসে একই যায়গায় মিলিত হয়। পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল ঈশ্বরের হাত ধরে আবার পৃথিবী ধ্বংসও হবে ঈশ্বরের হাতে। এভাবেই চরম পরিণতির মাধ্যমে সৃষ্টিচক্র সম্পন্ন হবে।
পরকালবিদ্যা ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে: আশাবাদী কিংবা নৈরাশ্যবাদী। কেউ মনে করে কিয়ামতের পরের সময়কাল হল দোজখ, আবার কেউ ধারণা করে মহাপ্রলয়ের পরেই স্বর্গীয় শান্তির শুরু।