নারী ভোটাধিকার আন্দোলন
From Wikipedia, the free encyclopedia
বিগত শতাব্দীর গোড়ার দিকে নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের সক্রিয় সদস্যদের সাফ্রোগেট বলা হতো। "নারীদের জন্য ভোট" এই ব্যানারে নির্বাচনে ভোটাধিকারের জন্য এই দলটি আন্দোলন করেছিলো।
প্রথম নারী ভোটাধিকার আন্দোলনকারী | উইমেন্স সোশ্যাল এন্ড পলিটিকাল ইউনিয়ন (Women's Social and Political Union) |
---|---|
নামকরণ | সাফ্রেজ |
গঠিত | ১০ অক্টোবর ১৯০৩; ১২০ বছর আগে (1903-10-10) |
প্রতিষ্ঠাতা | এমেলিন পানখুর্স্ট (WSPU) |
Later groups |
|
উদ্দেশ্য | নারী ভোটাধিকার |
পদ্ধতিসমূহ | আন্দোলন , আইন অমান্য, প্রত্যক্ষ প্রতিবাদ, অনশন |
মূল ব্যক্তিত্ব | এমেলিন পানখুর্স্ট, এমিলি ডেভিসন, ইভালিন হিল্ডা বুরকিট |
সাফ্রোগেট বা নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত এই নারীরা মূলতঃ ব্রিটিশ নারী সংগঠন ডাব্লিউএসপিইউ (WSPU) এস সদস্য। ১৯০৩ সালে এমেলিন পানখুর্স্ট দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এই নারী আন্দোলনটি একমাত্র নারী আন্দোলন যার সদস্যরা কিনা আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রত্যক্ষভাবে তৎকালীন আইন অমান্য করেছিলো। [1][2] ১৯০৬ সালে ডেইলি মেইলের একজন রিপোর্টার সাফ্রোজিস্ট শব্দটি থেকে সাফ্রোগেট কথাটি প্রথমবারের মতো উল্লেখ করেন। সাফ্রোগেট শব্দটি সেই সময়ে নারী ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলনকারী নারীদের মর্যাদাহানি করতে ব্যবহার করা হলেও, সংঘবদ্ধ নারীসমাজ এই নতুন নামটিকে সাদরে গ্রহণ করে, এমনকি নিজেদের পত্রিকায় শিরোনাম হিসেবেও ব্যবহার করে।
উনিশ শতকের শেষের দিকে বেশ কয়েকটি দেশে নারীরা ভোটের অধিকার অর্জন করে।
১৮৯৩ সালে, নিউজিল্যান্ড প্রথম স্ব-শাসিত দেশ হিসেবে ২১ বছরের বেশি বয়সী সকল নারীদের ভোট প্রদানের অধিকার দেয়।[3] ১৯০৩ সালের মধ্যেও যখন ব্রিটেনে নারীদের ভোটাধিকার দেওয়া হয়নি, পানখুর্স্ট সিদ্ধান্ত নিলেন যে নারীদের "নিজেদেরকেই কাজটি করতে হবে" " [4]। এরই প্রেক্ষিতে তার সংগঠন ডাব্লিউএসপিইউর প্রধান নীতিবাক্য হয়ে দাঁড়ায়, "কথায় নয়, কর্মে"। সংগঠনটির সদস্য - সাফ্রোগেটরা রাজনীতিবিদদের হেনস্থা ও সংসদে ঝামেলা সৃষ্টি করার সময়, পুলিশ দ্বারা আক্রমণ ও যৌন হেনস্থার স্বীকার হয়েছিলো। প্রতিবাদে এই নারীরা ডাকবাক্সে ও পুরনো বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, গীর্জা ও অন্যান্য সম্পত্তিতে বোমা লাগায়। সেই সময়কার প্রচার মাধ্যমে সাফ্রোগেটদের প্রতি উষ্মা প্রকাশ ও তাদের নিয়ে তামাশাও করা হতো। কারাবন্দী হয়ে তারা অনশন কর্মসূচিতে গেলে, সরকার তাদের জোর করে খাওয়ায়। ইভালিন হিল্ডা বুরকিট প্রথম কারাবন্দী সাফ্রোগেট, যাকে সরকার জোর করে খাইয়ে অনশন ভাঙিয়েছিলো। এমিলি ডেভিসন ১৯১৩ সালে এপসম ডার্বিতে রাজার ঘোড়ার সাথে দৌড়ে এসে আত্মাহুতি দেন। তার মৃত্যু বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ডাব্লিউএসপিইউ'র সাফ্রোগেটদের এহেন আন্দোলন সমাজের কিছু স্তর থেকে সমর্থন পেলেও, অনেক সদস্যই এরকম ক্ট্টর আন্দোলন সমর্থন করেনি [5]
১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে সাফ্রোগেটদের আন্দোলন স্থগিত করা হয়। যুদ্ধের পরে, জনপ্রতিনিধি আইন ১৯১৮ অনুসারে ৩০ বছরের অধিক বয়সী নারীরা নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করা পূর্বক ভোটাধিকার পায়। দশ বছর পরে, জনপ্রতিনিধি (সমানাধিকার ফ্র্যাঞ্চাইজ) আইন ১৯২৮ অনুসারে, ২১ বছর বয়স থেকেই পুরুষদের পাশাপাশি সকল নারী ভোটাধিকার অর্জন করে।