Loading AI tools
ভারতের রাজধানী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নয়াদিল্লি (হিন্দি: नई दिल्ली নঈ দিল্লী, গুরুমুখী: ਨਵੀਂ ਦਿੱਲੀ নওয়িঁ দিল্লী) নতুন দিল্লি নামেও পরিচিত, হলো ভারতের রাজধানী ও ভারত সরকারের প্রশাসনিক, আইন ও বিচারবিভাগীয় কেন্দ্র। এটি দিল্লি সরকারেরও কেন্দ্র। নয়াদিল্লি, দিল্লি মহানগরের অংশ।
নয়াদিল্লি नई दिल्ली ਨਵੀਂ ਦਿੱਲੀ نئی دہلی নতুন দিল্লি | |
---|---|
কেন্দ্রীয় রাজধানী | |
নয়াদিল্লির অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৮.৬১৩৮৯৫৪° উত্তর ৭৭.২০৯০০৫৭° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | দিল্লি |
প্রতিষ্ঠা | ১৯১১ |
সরকার | |
• ধরন | পৌর পরিষদ |
• শাসক | নয়াদিল্লি পৌর পরিষদ |
• সভাপতি | অমিত যাদব, আইএএস |
আয়তন[1] | |
• রাজধানী | ৪২.৭ বর্গকিমি (১৬.৫ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ২১৬ মিটার (৭০৯ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১)[2] | |
• রাজধানী | ২,৪৯,৯৯৮ |
• জনঘনত্ব | ৫,৯০০/বর্গকিমি (১৫,০০০/বর্গমাইল) |
• মহানগর[3] | ২,৮৫,১৪,০০০ |
বিশেষণ | দিল্লিবাসী |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন কোড | ১১০xxx |
এলাকা কোড | ৯১-১১ |
যানবাহন নিবন্ধন | DL-1x-x-xxxx to DL-13x-x-xxxx |
সরকারি ভাষা | হিন্দি, পাঞ্জাবি, উর্দু |
ওয়েবসাইট | www |
১৯১১ সালে দিল্লি দরবারে ভারত-সম্রাট পঞ্চম জর্জ নয়াদিল্লি শহরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।[4] ব্রিটিশ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিয়েনস ও স্যার হারবার্ট বেকার এই শহরের নকশা প্রস্তুত করেছিলেন। ১৯৩১ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি নতুন রাজধানী উদ্বোধন[5] করেন তদনীন্তন ভাইসরয় লর্ড আরউইন।
১৯১১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কলকাতা ছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী। যদিও প্রাচীনকালে, দিল্লী সালতানাত ও মুঘল যুগে দিল্লি ছিল ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে ব্রিটিশ ভারতীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি প্রস্তাব ব্রিটিশ প্রশাসনের কাছে রাখা হয়েছিল।[6] কলকাতা ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। দিল্লির অবস্থান ভারতের উত্তরাঞ্চলে। তাই ব্রিটিশ সরকারের মনে হয়েছিল, দিল্লি থেকে ভারত শাসন করা অপেক্ষাকৃত সহজতর হবে।[6]
১৯১১ সালের ১২ই ডিসেম্বর দিল্লি দরবারে তদনীন্তন ভারত সম্রাট পঞ্চম জর্জ ও তার রানী মেরি দিল্লির কিংসওয়ে ক্যাম্পের করোনেশন পার্কে ভাইসরয়ের বাসভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার সময়[7][8] দিল্লি থেকে কলকাতায় রাজধানী পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করেন।[9][10] ১৯১১ সালের ১৫ই ডিসেম্বর, কিংসওয়ে ক্যাম্পে দিল্লি দরবারেই রাজা পঞ্চম জর্জ ও রানী মেরি নয়াদিল্লি শহরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।[11] নয়াদিল্লির একটি বড়ো অংশের নকশা করেছিলেন এডউইন লুটিয়েনস (১৯১৮ সাল থেকে স্যার এডউইন)। তিনি ১৯১২ সালে প্রথম দিল্লিতে আসেন। তার সহকারী ছিলেন হারবার্ট বেকার (১৯২৬ সাল থেকে স্যার হারবার্ট)। দুজনেই ছিলেন বিংশ শতাব্দীর উল্লেখযোগ্য স্থপতি। শোভা সিংকে (পরে স্যার শোভা সিং) নির্মাণকাজের ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। শহর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবং তা শেষ হয় ১৯৩১ সালে। "লুটিয়েনস দিল্লি" নামে চিহ্নিত এই শহরের উদ্বোধন করা হয় ১৯৩১ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি। উদ্বোধক ছিলেন তদানীন্তন ভাইসরয় স্যার আরউইন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী ধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে লুটিয়েনস দিল্লির কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক এলাকাটির নকশা প্রস্তুত করেছিলেন।[12][13]
সাম্রাজ্যের নিউ রাজধানী স্থাপনের জন্য দিল্লি টাউন প্ল্যানিং কমিটি গঠিত হয়। কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন জর্জ সুইনটন এবং সদস্য ছিলেন জন এ. ব্রডি ও লুটিয়েনস। এই কমিটি উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের পরিকল্পনা জমা দেয়। তবে নিউ শহর তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জমির অধিগ্রহণের খরচ অত্যধিক হচ্ছে দেখে ভাইসরয় এই পরিকল্পনা বাতিল করে দেন। নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় রাস্তাটির মুখ পূর্বে ইন্ডিয়া গেটের দিকে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে, এটি পাহাড়গঞ্জ থেকে ভাইসরয়ের বাসভবন পর্যন্ত প্রসারিত উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত হওয়ার কথা ছিল। কাজ শুরুর পর প্রথম কয়েক বছর ইন্ডিয়া গেটকে পর্যটকেরা স্বর্গের দরজা মনে করতেন।[14] উত্তর দিকে স্থান সংকুলান ও বেশ কিছু ঐতিহ্যশালী স্থানের উপস্থিতির জন্য কমিটি দক্ষিণাঞ্চলেই নয়াদিল্লি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।[15] এখন যেটি রাইসিনা হিল নামে পরিচিত, সেটি আগে ছিল রাইসিনা নামে একটি মেও গ্রাম। এই স্থানটি ভাইসরয়ের বাসভবন (অধুনা রাষ্ট্রপতি ভবন, ভারত) নির্মাণের জন্য নির্বাচিত হয়। এই স্থানটি নির্বাচনের কারণ ছিল, এটি "দিনাপানাহ্" দুর্গের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত, যেটিকে আবার প্রাচীন ইন্দ্রপ্রস্থ নগরীর স্থান মনে করা হয়। ১৯১১-১২ সালের দিল্লি দরবারের জায়গায় করোনেশন পিলারটি সচিবালয় ভবনের সামনের উঠানের দেওয়ালে গাঁথা ছিল। এখান থেকে ভিত্তিপ্রস্তরটি সরিয়ে আনা হয়। কর্তব্য পথ বা কিংস ওয়ে ইন্ডিয়া গেট থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত প্রসারিত হয়। রাষ্ট্রপতি ভবনের দুধারে সচিবালয়ের দুটি ব্লকে এখন ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। ভারতীয় সংসদ ভবনও এর কাছে রাজপথের সমান্তরালে প্রসারিত সংসদ মার্গে অবস্থিত অবস্থিত। সবগুলির নকশা করেছিলেন হারবার্ট বেকার।
দক্ষিণে সফদরজঙ্গের সমাধিসৌধ পর্যন্ত অঞ্চল অধিগ্রহণ করে লুটিয়েনস বাংলো অঞ্চল নির্মিত হয়।[16] রাইসিনা হিলের পাথুরে শৈলশিরায় নির্মাণকাজ শুরুর আগে, কাউন্সিল হাউসকে (অধুনা ভারতীয় সংসদ) ঘিরে একটি রেলপথ গড়ে ওঠে। এর নাম ছিল "ইম্পিরিয়াল দিল্লি রেলওয়ে"। এই রেলপথে পরবর্তী ২০ বছর নির্মাণস্থলে মালপথ ও শ্রমিক আদানপ্রদান করা হত। সেই সময় পুরনো দিল্লি রেল স্টেশন সারা শহরের প্রধান রেল স্টেশন ছিল। তাই আগ্রা-দিল্লি রেলপথটি অল-ইন্ডিয়া ওয়ার মেমোরিয়াল (ইন্ডিয়া গেট) ও কিংসওয়ের (কর্তব্য পথ) উপর দিয়ে যাওয়ায় নির্মাণকাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছিল। এই লাইনটি যমুনা নদী বরাবর সরিয়ে দেওয়া হয়। নিউ রেলপথটি চালু হয় ১৯২৪ সালে। ১৯২৬ সালে চালু হয় নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশন। সেই সময় আজমিঢ়ী গেটের কাছে পাহাড়গঞ্জে এই স্টেশনের একটি মাত্র প্ল্যাটফর্ম ছিল। স্টেশনটি সম্পূর্ণ চালু হয় ১৯৩১ সালে নয়াদিল্লি উদ্বোধনের সময়।[17][18] ভাইসরয়ের বাসভবন (বর্তমান রাষ্ট্রপতি ভবন, ভারত), কেন্দ্রীয় সচিবালয়, সংসদ ভবন ও অল-ইন্ডিয়া ওয়ার মেমোরিয়াল (ইন্ডিয়া গেট) নির্মাণের পর শহরের বাণিজ্য এলাকা কনট প্লেসের নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৯২৯ সালে। এই কাজ শেষ হয় ১৯৩৩ সালে। প্রিন্স আর্থার, ফার্স্ট ডিউক অফ কনটের (১৮৫০-১৯৪২) নামানুসারে এই স্থানের নামকরণ করা হয়েছিল। এই স্থানের নকশা করেছিলেন পূর্ত বিভাগের মুখ্য স্থপতি রবার্ট টোর রাসেল।[19]
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সরে আসার পর উত্তর দিল্লিতে ১৯১২ সালে একটি অস্থায়ী সচিবালয় ভবন তৈরি করা হয়েছিল। পুরান দিল্লির "ওল্ড সেক্রেটারিয়েট" (অধুনা দিল্লি বিধানসভা) থেকে সরে আসে শহর উদ্বোধনের এক দশক আগেই। বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ও মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির মতো ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেক কর্মচারীদের নতুন রাজধানীতে নিয়ে আসা হয়েছিল। ১৯২০-এর দশকে গোল মার্কেটের কাছে তাদের জন্য একটি আবাসন এলাকা গড়ে তোলা হয়।[20] ১৯৪০-এর দশকে ঐতিহাসিক লোদি উদ্যানের কাছে লোদি কলোনিতে লোদি এস্টেট এলাকায় সরকারের কর্মচারীদের বাড়ি ও উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের যে বাংলোগুলি তৈরি হয়, তাই দিল্লিতে ব্রিটিশ শাসনে নির্মিত শেষ আবাসিক এলাকা।[21]
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করে। এর পর ভারত সরকার দিল্লিকে সীমিত স্বায়ত্তশাসন দিয়ে একজন চিফ কমিশনার নিয়োগ করে। ১৯৫৬ সালে দিল্লিকে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়। এরপর চিফ কমিশনারের পদের বদলে দিল্লিতে লেফট্যানেন্ট গভর্নর নিয়োগ করা হয়। ১৯৯১ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৬৯তম সংশোধনী বলে দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির সরকারি নামকরণ করা হয় "দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চল"।[22] এই দ্বৈত শাসনব্যবস্থায় দিল্লির নির্বাচিত সরকারকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সহ নানা বিষয়ে প্রভূত ক্ষমতা দেওয়া হয়, যা আগে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ছিল। এই আইন কার্যকর করা হয় ১৯৯৩ সালে।
লুটিয়েনস দিল্লির বাইরে নয়াদিল্লির প্রথম বড়ো সম্প্রসারণ ঘটে ১৯৫০-এর দশকে। এই সময় উক্ত অঞ্চলের দক্ষিণ-পশ্চিমে কেন্দ্রীয় পূর্ত বিভাগ চাণক্যপুরী নামে একটি দূতাবাস-এলাকা গড়ে তোলে। এই এলাকায় বিভিন্ন রাষ্ট্রের দূতাবাস, রাষ্ট্রদূতগণের বাসভবন এবং দিল্লির অন্যতম প্রধান রাস্তা "শান্তিপথ" অবস্থিত।[23]
নয়াদিল্লির আয়তন ৪২.৭ কিমি২ (১৬.৫ মা২) এবং এটি দিল্লি মহানগরের একটি ক্ষুদ্র অংশ মাত্র।[24] এই অঞ্চলটি সিন্ধু-গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে এবং এর আশেপাশের অঞ্চলগুলি একদা আরাবল্লি পর্বতমালার দিল্লি শৈলশিরা অবশিষ্টাংশের অন্তর্গত বলে এখানকার ভূতল সর্বত্র সমান উচ্চতায় অবস্থিত নয়। দিল্লি শৈলশিরা ‘দিল্লির ফুসফুস’ নামে পরিচিত। নয়াদিল্লি যমুনা নদীর প্লাবন সমভূমিতে অবস্থিত। এটি মূলত স্থলবদ্ধ একটি শহর। নদীর পূর্বদিকে শাহদারা অঞ্চল অবস্থিত। নয়াদিল্লি সিসমিক ক্ষেত্র-চারের অন্তর্গত। এটি অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল।[25]
নয়াদিল্লির জলবায়ু মৌসুমি বায়ু প্রভাবিত আর্দ্র উপক্রান্তীয় প্রকৃতির। এখানে শীত ও গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণে বিরাট পার্থক্য থাকে। গ্রীষ্মে ৪৬ °সে (১১৫ °ফা) থেকে শীতে ০ °সে (৩২ °ফা) তাপমাত্রা ওঠানামা করে। দিল্লির বৈশিষ্ট্য দীর্ঘ উষ্ণ গ্রীষ্মকাল এবং শুষ্ক শীতল শীতকাল। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এখানে গ্রীষ্মকাল থাকে। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে বৃষ্টিপাত হয়। নভেম্বরে শীতের শুরু। জানুয়ারি মাসে প্রচণ্ড শীত পড়ে। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২৫ °সে (৭৭ °ফা)। মাসিক দৈনিক গড় তাপমাত্রা ০৯ থেকে ৩৪ °সে (৪৮ থেকে ৯৩ °ফা)-এর মধ্যে ওঠানামা করে। দিল্লির সর্বাধিক তাপমাত্রা নথিবদ্ধ হয়েছিল ৪৯.১ °সে (১২০.৪ °ফা)। নথিবদ্ধ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হল −০.৬ °সে (৩০.৯ °ফা).[26] দিল্লি মহানগর অঞ্চলের নথিবদ্ধ সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হল যথাক্রমে ৪৯.৬ °সে (১২১.৩ °ফা) ও −২.২ °সে (২৮.০ °ফা)। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৮৪ মিলিমিটার (৩০.৯ ইঞ্চি)। জুলাই-অাগস্ট মাসেই সর্বাধিক বৃষ্টি হয়ে থাকে। [27]
নয়াদিল্লি-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ রেকর্ড °সে (°ফা) | ২৭.২ (৮১.০) |
৩১.৮ (৮৯.২) |
৪১.০ (১০৫.৮) |
৪৫.০ (১১৩.০) |
৪৯.১ (১২০.৪) |
৪৭.৭ (১১৭.৯) |
৪৪.৯ (১১২.৮) |
৪৩.০ (১০৯.৪) |
৪২.২ (১০৮.০) |
৪০.১ (১০৪.২) |
৩৩.৬ (৯২.৫) |
২৯.১ (৮৪.৪) |
৪৯.১ (১২০.৪) |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ২১.১ (৭০.০) |
২৪.২ (৭৫.৬) |
৩০.০ (৮৬.০) |
৩৬.২ (৯৭.২) |
৩৯.৬ (১০৩.৩) |
৩৯.৩ (১০২.৭) |
৩৫.১ (৯৫.২) |
৩৩.৩ (৯১.৯) |
৩৩.৯ (৯৩.০) |
৩২.৯ (৯১.২) |
২৮.৩ (৮২.৯) |
২৩.০ (৭৩.৪) |
৩১.৪ (৮৮.৫) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ৫.৩ (৪১.৫) |
১০.১ (৫০.২) |
১৫.৪ (৫৯.৭) |
২১.৫ (৭০.৭) |
২৫.৯ (৭৮.৬) |
২৮.৩ (৮২.৯) |
২৬.৬ (৭৯.৯) |
২৫.৯ (৭৮.৬) |
২৪.৪ (৭৫.৯) |
১৯.৫ (৬৭.১) |
১২.৮ (৫৫.০) |
৭.২ (৪৫.০) |
১৮.৮ (৬৫.৮) |
সর্বনিম্ন রেকর্ড °সে (°ফা) | −০.৬ (৩০.৯) |
১.৮ (৩৫.২) |
৫.৩ (৪১.৫) |
৮.৪ (৪৭.১) |
১৪.১ (৫৭.৪) |
১৯.৯ (৬৭.৮) |
২০.১ (৬৮.২) |
২১.২ (৭০.২) |
১৭.৩ (৬৩.১) |
৭.৫ (৪৫.৫) |
৩.২ (৩৭.৮) |
০.৪ (৩২.৭) |
−০.৬ (৩০.৯) |
বৃষ্টিপাতের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ২০.৩ (০.৮০) |
১৫.০ (০.৫৯) |
১৫.৮ (০.৬২) |
৬.৭ (০.২৬) |
১৭.৫ (০.৬৯) |
৭৭.৯ (৩.০৭) |
২৩১.৫ (৯.১১) |
২৫৮.৭ (১০.১৯) |
১২৭.৮ (৫.০৩) |
৩৬.৩ (১.৪৩) |
১১.০ (০.৪৩) |
৭.৮ (০.৩১) |
৮২৬.৩ (৩২.৫৩) |
বৃষ্টিবহুল দিনগুলির গড় (≥ ১.০mm) | ১.৭ | ১.৩ | ১.২ | ০.৯ | ১.৪ | ৫.৬ | ১৪.০ | ১৫.৩ | ১২.৪ | ৫.৬ | ০.১ | ০.৬ | ৬০.১ |
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) | ৯০ | ৮২ | ৪৭ | ২৬ | ১৮ | ৪৬ | ৭০ | ৭৩ | ৬২ | ৫২ | ৫৫ | ৮৭ | ৫৯ |
মাসিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড় | ২১৩.৯ | ২১৭.৫ | ২৩৮.৭ | ২৬১.০ | ২৬৩.৫ | ১৯৮.০ | ১৬৭.৪ | ১৭৬.৭ | ২১৯.০ | ২৬৯.৭ | ২৪৬.০ | ২১৭.০ | ২,৬৮৮.৪ |
উৎস ১: WMO,[28] NOAA (extremes and humidity, 1971-1990) [29] | |||||||||||||
উৎস ২: HKO (sun only, 1971–1990) [30] |
নয়াদিল্লিতে বায়ুদূষণের পরিমাণ অত্যধিক। বায়ুদূষণের কারণ প্রধানত যানবাহনের ধোঁয়া।[31][32]
নয়াদিল্লি ভারতের জাতীয় রাজধানী। এখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় ভারত সরকার ও স্থানীয় দিল্লি সরকারের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। নয়াদিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চলেরও রাজধানী।
নয়াদিল্লির পৌর প্রশাসন সংস্থাটির নাম নয়াদিল্লি পৌর পরিষদ। ২০০৫ সালের ব্যবস্থা অনুসারে, নয়াদিল্লি পৌর পরিষদ একজন পুরপ্রধান, দিল্লি বিধানসভার তিন জন সদস্য, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী মনোনীত দুই জন সদস্য ও কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত পাঁচ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। দিল্লির বাকি অঞ্চল দিল্লি পৌরসংস্থার দায়িত্বে থাকে।
দিল্লির রাজ্যপ্রধান হলেন উপরাজ্যপাল। কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শক্রমে ভারতের রাষ্ট্রপতি তাঁকে নিয়োগ করেন। উপরাজ্যপালের পদটি আনুষ্ঠানিক। কারণ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীই সরকার প্রধান এবং দিল্লির যাবতীয় প্রশাসনিক ক্ষমতার অধিকারী। ভারতীয় সংবিধান অনুসারে, দিল্লির বিধানসভায় পাস হওয়া কোনো আইনের সঙ্গে সংসদে পাস হওয়া আইনের বিরোধ বাধলে সংসদের আইনটিই বলবৎ থাকবে।[33]
নয়াদিল্লির অধিকাংশ অঞ্চলের পরিকল্পনাই বিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ স্থপতি এডউইন লুটিয়েনস করেছিলেন। এটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী আদর্শে নির্মিত শহরের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক অঞ্চল। কর্তব্য পথ (পূর্বনাম কিংসওয়ে ও রাজপথ) ও জনপথ (পূর্বনাম কুইনসওয়ে) দুটি কেন্দ্রীয় প্রমোদপথকে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লি গড়ে উঠেছে। কর্তব্য পথ রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত প্রসারিত। অন্যদিকে জনপথ কনট প্লেস থেকে শুরু হয়ে কর্তব্য পথকে ছেদ করেছে। শান্তিপথের ধারে ১৯টি রাষ্ট্রের দূতাবাস অবস্থিত। এই অঞ্চলটি ভারতের বৃহত্তম কূটনৈতিক অঞ্চল।[34]
নয়াদিল্লির কেন্দ্রস্থলে রয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন (আগেকার নাম ভাইসরয়েজ হাউস)। এটি রাইসিনা হিলের উপর অবস্থিত। রাষ্ট্রপতি ভবনের দুপাশে কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের দুটি ব্লক অবস্থিত। এই দুই ব্লকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সহ ভারত সরকারের একাধিক মন্ত্রকের প্রধান কার্যালয়ের অবস্থিত। রাজপথের সমান্তরালে অবস্থিত সংসদ মার্গে ভারতীয় সংসদ ভবনটি অবস্থিত। কনট প্লেস নয়াদিল্লির একটি বৃহৎ বৃত্তাকার বাণিজ্য এলাকা। এটি ইংল্যান্ডের রয়্যাল ক্রেসেন্টের অনুকরণে নির্মিত। কনট প্লেসের বাইরের বৃত্তাকার পথটিতে পৌঁছতে মোট বারোটি রাস্তা ব্যবহার করা যায়। তার মধ্যে একটি হল জনপথ।
বাস, অটোরিকশা ও মেট্রো রেল নয়াদিল্লির গণপরিবহনের প্রধান মাধ্যম। বাস এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। পরিবহন সংক্রান্ত ৬০% যাত্রী-চাহিদা বাস পূরণ করে। দিল্লির অধিকাংশ বাস রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থা দিল্লি পরিবহন নিগমের (ডিটিসি) সম্পত্তি। এই সংস্থার কাছে পরিবেশ বান্ধব সিএনজি বাসের বৃহত্তম সম্ভার রয়েছে। দিল্লি বিআরটিএস অম্বেডকর নগর ও দিল্লি গেটের মধ্যে বাস র্যাপিড ট্রানসিড পরিষেবা দেয়।
নয়াদিল্লি একটি পরিকল্পিত নগরী হওয়ায় এখানে অনেকগুলি আর্টেরিয়াল রোড আছে। এর মধ্যে কর্তব্য পথ, জনপথ ও আকবর রোড বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নয়াদিল্লি পৌর পরিষদের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এই শহরে রাস্তা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিযুক্ত।[35] দিল্লি মেট্রো এখানকার পরিবহনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ১৯৭১ সালে দিল্লি পরিবহন নিগমের প্রশাসনিক দায়িত্ব দিল্লি পৌরসংস্থার হাত থেকে ভারত সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর নয়াদিল্লি দিল্লি পরিবহন নিগমের আওতাধীন হয়।[36]
ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হল নয়াদিল্লির প্রধান বিমানবন্দর। সাধারণ উড়ানের জন্য সফদরজং বিমানবন্দরটিও ব্যবহৃত হয়।[37]
দিল্লি মেট্রো ভারতের বৃহত্তম মেট্রো ব্যবস্থা, যা দিল্লি এবং পার্শ্ববর্তী গাজিয়াবাদ, গুরুগ্রাম ও নয়ডার বিভিন্ন অংশকে যুক্ত করেছে।
নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশন নয়াদিল্লির প্রধান রেলওয়ে স্টেশন। এটি এশিয়ার দ্বিতীয় ব্যস্ততম রেলওয়ে স্টেশন, যার মাধ্যমে রাজধানীর সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ রক্ষিত হয়।
নয়াদিল্লির জনসংখ্যা ২৯৪,৯৯৮। এই পৌরসভার জনঘনত্ব ৫,৮৫৪.৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (১৫,১৬৪ জন/বর্গমাইল)।
দিল্লির অধিবাসীদের মধ্যে ৮৩.৮% হিন্দু। এছাড়া আছে মুসলমান (৬.৩%), শিখ (৫.৪%), জৈন (১.১%) ও খ্রিস্টানরা (০.৯%)।[38] অবশিষ্টদের (২.৫%) মধ্যে আছে পার্সি, বৌদ্ধ ও ইহুদি ধর্মাবলম্বী মানুষ।[39]
নয়াদিল্লির আমলাতন্ত্র ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা একে একটি বহুজাতিক শহর হিসেবে গড়ে তুলেছে। রাজধানী হওয়ার জন্য নয়াদিল্লিতে কয়েকটি জাতীয় অনুষ্ঠানের গুরুত্ব খুবই বেশি। প্রজাতন্ত্র দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও গান্ধী জয়ন্তী নয়াদিল্লিতে বিশেষভাবে পালিত হয়। ভারতের স্বাধীনতা দিবস (১৫ অগস্ট) উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।[40] প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের মাধ্যমে ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও সামরিক শক্তিকে তুলে ধরা হয়।[41][42]
দীপাবলি, শিবরাত্রি, তিজ, গুরু নানক জয়ন্তী, বৈশাখী, দুর্গাপূজা, দোলযাত্রা, লোহরি, ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আজহা, বড়দিন ও মহাবীর জয়ন্তী দিল্লির প্রধান ধর্মীয় উৎসব।[42] কুতুব মিনার চত্বরে কুতুব উৎসব নামে নৃত্যগীতের একটি বিশেষ উৎসব খুব বিখ্যাত।[43] অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব, আন্তর্জাতিক আম উৎসব ও বসন্তপঞ্চমী প্রতি বছর আয়োজিত হয়।
নয়াদিল্লি শহর ও তার স্থাপত্যের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ব্রিটিশদের শক্তি ও সার্বভৌমত্ব প্রদর্শনের জন্য।[13][44][45] নগর পরিকল্পনার সব স্তরের সিদ্ধান্তের পিছনে সেই মানসিকতাই কাজ করেছিল। শুধু কিছু কিছু ক্ষেত্রে হিন্দু ও ইসলামি স্থাপত্যের প্রভাব দেখা গিয়েছিল।[44][46]
১৯১১ সালের পর শহর তৈরি করতে ২০ বছর সময় লেগেছিল।[47] নয়াদিল্লির স্থাপত্যে অনেক স্থানীয় প্রভাব আছে। তবে সেগুলিকে ব্রিটিশ ক্ল্যাসিকাল ও প্যালাডিয়ান স্থাপত্যের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া হয়েছিল। স্থাপত্যে স্থানীয় প্রভাবগুলির মূল কারণ ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ও আর্নেস্ট বিনফিল্ড হ্যাভেল প্রমুখ ঐতিহাসিকদের ঐ বিষয়ে আগ্রহ।[46]
নয়াদিল্লিতে একাধিক ঐতিহাসিক স্থান ও জাদুঘর আছে। ১৯৪৭-৪৮ সালে রয়্যাল অ্যাকাডেমিতে রক্ষিত ভারতীয় শিল্পবস্তু ও অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে চালু হয় জাতীয় সংগ্রহালয়।[48] ১৯৪৯ সালে তা রাষ্ট্রপতি ভবনের অন্তর্ভুক্ত হয়। পরে সেই সব শিল্পবস্তু নিয়েই স্থায়ীভাবে জাতীয় সংগ্রহালয় গড়ে ওঠে। ১৯৪৯ সালের ১৫ই অাগস্ট ৫০০০ বছর সময়কালের ২০০,০০০ ভারতীয় ও বিদেশি শিল্পবস্তু নিয়ে এই জাতীয় সংগ্রহালয় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।[49]
১৯৩১ সালে গঠিত হয় ইন্ডিয়া গেট। এই স্মারকটি প্যারিসের আর্ক দ্য ত্রিয়োম্ফের (Arc de Triomphe) আদলে নির্মিত।[46] প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে নিহত ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৯০,০০০জন জওয়ানের স্মৃতিতে নির্মিত এই স্মারক ভারতের জাতীয় স্মৃতিসৌধ।[46]
প্যারিসের শঁজেলিজের (Champs-Élysses) আদলে নির্মিত কর্তব্য পথ নয়াদিল্লির একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এটি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় অনুষ্ঠানগুলির জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ এই রাস্তায় আয়োজিত হয়।
নয়াদিল্লির গান্ধী স্মৃতিতে মহাত্মা গান্ধী জীবনের শেষ ১৪৪ দিন কাটিয়েছিলেন। ১৯৪৮ সালের ৩০শে জানুয়ারি এইখানেই তিনি নিহত হন। ওই বছর ৩১শে জানুয়ারি যে স্থানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল, সেই স্থানটির নাম রাজঘাট। যমুনা নদীর ধারে এই খানেই তার চিতাভস্ম সমাধিস্থ করা হয়েছিল। রাজঘাটে তার সমাধিস্থলে একটি বর্গাকার কালো পাথরের স্মারক রয়েছে। এটির স্থপতি ভানু ভুটিয়া।
কনট প্লেস অঞ্চলের যন্তরমন্তর নির্মাণ করেছিলেন জয়পুরের রাজা দ্বিতীয় জয় সিংহ। এখানে ১৩টি জ্যোতির্বিজ্ঞান যন্ত্র রয়েছে। এই মানমন্দিরটির সাহায্যে জ্যোতির্বিদ্যা-সংক্রান্ত সারণি, সূর্য, চাঁদ ও অন্যান্য গ্রহের সঞ্চারণ-সংক্রান্ত গণনা চলত।
নয়াদিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধী স্মৃতি সংগ্রহালয়, জাতীয় আধুনিক শিল্প গ্যালারি, জাতীয় প্রাকৃতিক ইতিহাস সংগ্রহালয়, জাতীয় রেল সংগ্রহালয়, জাতীয় কুটির ও বস্ত্রশিল্প সংগ্রহালয়, জাতীয় ডাকটিকিট সংগ্রহালয়, নেহেরু তারামণ্ডল, শঙ্করের আন্তর্জাতিক পুতুল সংগ্রহালয় [50] ও ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সংগ্রহালয়[51] নয়াদিল্লির প্রধান প্রধান জাদুঘর।
যন্তরমন্তর, গান্ধীস্মৃতি, বুদ্ধজয়ন্তী পার্ক ও লোদি উদ্যান নয়াদিল্লির কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থান।
জাতীয় যুদ্ধ সংগ্রহালয় ও জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতি সংগ্রহালয় বর্তমানে নয়াদিল্লিতে নির্মাণাধীন।[52][53]
নয়াদিল্লিতে ২০১০ কমনওয়েলথ গেমস অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছর এখানে দিল্লি হাফ ম্যারাথন একটি ফুট-রেস আয়োজিত হয়। নয়াদিল্লিতে ১৯৫১ এশিয়ান গেমস ও ১৯৮২ এশিয়ান গেমস আয়োজিত হয়েছিল।
নয়াদিল্লির প্রধান প্রধান ক্রীড়াঙ্গনগুলি হল জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়াম, আম্বেডকর স্টেডিয়াম, ইন্দিরা গান্ধী ইন্ডোর স্টেডিয়াম, অরুণ জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মেজর ধ্যানচাঁদ জাতীয় স্টেডিয়াম, তালকোটারা স্টেডিয়াম ও সিরি ফোর্ট ক্রীড়া চত্বর।
ক্লাব | খেলা | লিগ | স্টেডিয়াম | সময়কাল |
---|---|---|---|---|
দিল্লি ক্যাপিটালস | ক্রিকেট | ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ | অরুণ জেটলি ক্রিকেট স্টেডিয়াম | ২০০৮–বর্তমান |
দিল্লি উইজার্ডস | ফিল্ড হকি | ওয়ার্ল্ড সিরিজ হকি | মেজর ধ্যানচাঁদ জাতীয় স্টেডিয়াম | ২০১১–বর্তমান |
দিল্লি ওয়েভরাইডার্স | ফিল্ড হকি | হকি ইন্ডিয়া লিগ | মেজর ধ্যানচাঁদ জাতীয় স্টেডিয়াম | ২০১৩–বর্তমান |
দিল্লি জায়েন্টস | ক্রিকেট | ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ | ২০০৭ - ২০০৮ |
নয়াদিল্লির উত্তর অংশে অবস্থিত কনট প্লেস উত্তর ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যকেন্দ্র। এর আশেপাশের বারাখাম্বা রোড, আইটিও ইত্যাদিও গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র। সরকারি ও আধা-সরকারি ক্ষেত্রগুলিই নয়াদিল্লির প্রধান কর্মক্ষেত্র। এখানে অনেক বহুজাতিক সংস্থায় বহুসংখ্যক ইংরেজি-শিক্ষিত কর্মচারী কাজ করে। এখানকার প্রধান শিল্পগুলি হল তথ্যপ্রযুক্তি, টেলিকমিউনিকেশন, হোটেল, ব্যাংকিং, গণমাধ্যম ও পর্যটন।
বিশ্ব সম্পদ রিপোর্ট -২০১১ অনুসারে, অর্থনৈতিক ক্রিয়াকাণ্ডের নিরিখে নয়াদিল্লির স্থান ৩৯তম। তবে সামগ্রিকভাবে রাজধানীর স্থান ৩৭তম। এই স্থান জাকার্তা ও জোহানেসবার্গ শহরের উপরে।[54] এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বাজারগুলির মধ্যে রিটেল গন্তব্য হিসেবে নয়াদিল্লি ও বেইজিং একসঙ্গে শীর্ষস্থান দখল করেছে।[55]
দিল্লি সরকার নয়াদিল্লির জন্য কোনো পৃথক অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশ করে না। তবে সামগ্রিকভাবে দিল্লির একটি সরকারি বার্ষিক অর্থনৈতিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ইকোনমিক সার্ভে অফ দিল্লি-র সমীক্ষা অনুসারে, দিল্লি মহানগর অঞ্চলের নেট স্টেট ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট বা এসডিপি হল ৮৩,০৮৫ কোটি টাকা (২০০৪-০৫ সালের হিসেব অনুসারে)।[56] এই অঞ্চলের মাথাপিছু আয় ৫৩,৯৭৬ টাকা (১,২০০ ডলার)।[56]
২০১১-১২ সালের হিসেব অনুযায়ী, দিল্লির গ্রস স্টেট ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট হল ৩.১৩ লক্ষ কোটি টাকা, যা বিগত আর্থিক বছরের তুলনায় ১৮.৭% বেশি।[57]
নয়াদিল্লিতে অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থার কার্যালয় রয়েছে। ইউএসএএসসিএপি-এর এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক সেন্টার ফর ট্রান্সফার অফ টেকনোলজির এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সদরদপ্তর নয়াদিল্লিতে অবস্থিত।[58] এছাড়া ভারতে রাষ্ট্রসংঘের অধিকাংশ আঞ্চলিক কার্যালয় নয়াদিল্লিতে অবস্থিত।
১৪৫টি দেশের দূতাবাস ও হাই কমিশন নয়াদিল্লিতে অবস্থিত।
নয়াদিল্লির ভগিনী শহর হলো নিম্নরূপ:
১৯৮৩ সালে সপ্তম এনএএম শীর্ষ সম্মেলন ও ২০১২ সালে বিআরআইসিএস শীর্ষ সম্মেলন নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[62]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.