![cover image](https://wikiwandv2-19431.kxcdn.com/_next/image?url=https://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/8/85/Sri_Draupadi_Maju%252C_Nepal.jpg/640px-Sri_Draupadi_Maju%252C_Nepal.jpg&w=640&q=50)
দ্রৌপদী
মহাভারতে বর্ণিত প্রধান নারী চরিত্র / From Wikipedia, the free encyclopedia
দ্রৌপদী (দেবনাগরী: द्रौपदी) হলেন হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্র । তিনি পঞ্চপাণ্ডবের সহধর্মিনী। তিনি দ্রুপদের কন্যা বলে তাঁর নাম দ্রৌপদী। তিনি পাঞ্চালী ও যাজ্ঞসেনী নামেও পরিচিতা। মহাভারতে দ্রৌপদী অনিন্দ্য সুন্দরী ও তাঁর সময়ের শ্রেষ্ঠ নারী রূপে চিত্রিত হয়েছেন। তিনি তার ধর্মশীলতা, সাহসিকতা ও বহুপতিত্বের জন্য পরিচিত।
দ্রৌপদী | |
---|---|
পঞ্চকন্যা গোষ্ঠীর সদস্য | |
![]() দ্রৌপদীর প্রতিমা, নেপাল | |
অন্যান্য নাম |
|
দেবনাগরী | द्रौपदी |
অন্তর্ভুক্তি | |
গ্রন্থসমূহ | |
লিঙ্গ | নারী |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | |
মৃত্যু | |
মাতাপিতা |
|
সহোদর |
|
দম্পত্য সঙ্গী | পাণ্ডবগণ |
সন্তান | পুত্র
|
রাজবংশ | কুরুবংশ বিবাহসূত্রে |
রাজশেখর বসু তার মহাভারতের বাংলা সারানুবাদের ভূমিকাতে দ্রৌপদী সম্পর্কে লিখেছিলেন-
প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে অন্য কোনো নারী তাঁর তুল্য জীবন্ত রূপে চিত্রিত হননি।[1]
রাজশেখর বসু তার সারানুবাদের ভূমিকাংশে আরও লিখেছিলেন-
দ্রৌপদী অবলা নন, জয়দ্রথ ও কীচককে ধাক্কা দিয়ে ভূমিশায়ী করেছিলেন। তিনি অসহিষ্ণু তেজস্বিনী স্পষ্টবাদিনী, তীক্ষ্ণ বাক্যে নিষ্ক্রিয় পুরুষদের উত্তেজিত করতে পারেন। তাঁর বাগ্মিতার পরিচয় অনেক স্থানে পাওয়া যায়।[2]
মহাভারতে দ্রৌপদী এবং তাঁর ভাই ধৃষ্টদ্যুম্ন পাঞ্চালের রাজা দ্রুপদ কর্তৃক আয়োজিত একটি যজ্ঞ থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। অর্জুন স্বয়ংবরসভায় লক্ষ্যভেদ করার প্রতিযোগিতায় তাঁকে জয় করেছিলেন কিন্তু তাঁর শাশুড়ি কুন্তী ভুলবশত পঞ্চপাণ্ডবের সাথে তাঁর বাগদান করে দেন এবং তিনি পঞ্চপাণ্ডবকে বিবাহ করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজচক্রবর্তী সম্রাট যুধিষ্ঠিরের সম্রাজ্ঞী রূপে রাজসূয় যজ্ঞে অংশগ্রহণ করেন। তিনি পঞ্চপাণ্ডবের ঔরসে পাঁচ পুত্র লাভ করেন । পাণ্ডবদের এই পাঁচপুত্রকে একত্রে বলা হয় উপপাণ্ডব।[3] দ্রৌপদীর জীবনের অন্যতম উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল হস্তিনাপুরে পাশা খেলা। দুর্যোধন কর্তৃক আয়োজিত পাশা খেলায় যুধিষ্ঠির তাঁর রাজ্য, সম্পত্তি, এমনকি স্ত্রী দ্রৌপদীকেও হারান। প্রতিহিংসাপরায়ণ কৌরব ভ্রাতৃগণ এবং সঙ্গে কর্ণও কুরুসভায় দ্রৌপদীকে অপমান করেন। দুঃশাসন হস্তিনাপুরের পূর্ণ রাজসভায় দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের চেষ্টা করেন কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপে দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষার্থে শত শত বস্ত্র আবির্ভূত হয়। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের অপচেষ্টা ও তাতে দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষার্থে বস্ত্রের আবির্ভাব মহাভারতে উল্লেখযোগ্য ঘটনা গুলোর একটি। এই ঘটনা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের বীজ বপন করেছিল। পরবর্তীতে পাশা খেলার পণের কারণে দ্রৌপদী এবং পাণ্ডবরা ১২ বছরের বনবাস এবং ১ বছরের অজ্ঞাতবাস সহ মোট ১৩ বছরের জন্য নির্বাসিত হন। নির্বাসন কালীন দ্রৌপদী নানা সংঘর্ষের সম্মুখীন হন। অজ্ঞাতবাস শেষ হওয়ার পর কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ আরম্ভ হয়। পরিশেষে সব সংঘর্ষ অতিক্রম করে সম্রাজ্ঞী রূপে তিনি প্রতিষ্ঠিত হন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পরে, তিনি সম্রাজ্ঞী রূপে ৩৬ বছর দায়িত্ব পালন করেন।[lower-alpha 1] তারপর তিনি তাঁর স্বামী পাণ্ডবদের সাথে মহাপ্রস্থানে যান এবং হিমালয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হন।[4] দ্রৌপদী তাঁর শাশুড়ি কুন্তীর মত প্রাতঃস্মরণীয় পঞ্চকন্যার অন্যতমা।[5] তাছাড়া তিনি তার শাশুড়ি কুন্তীকে শ্রদ্ধাও করতেন। দ্রৌপদীর জীবনগাঁথা বিভিন্ন শিল্পকলা, অভিনয় এবং বিভিন্ন সাহিত্যে একটি অনুপ্রেরণা।[6] হিন্দুধর্মে, তাঁকে পঞ্চকন্যা বা পাঁচ কুমারী নারীর সতীত্বের একজন শ্রেষ্ঠপ্রমাণ রূপে গণ্য করা হয় যাঁদের নাম পাঠ করলে পাপ দূর হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।[7] ভারত উপমহাদেশের কিছু অঞ্চলে, কিছু সম্প্রদায় বিদ্যমান যারা দ্রৌপদীকে দেবী রূপে পূজা করে ।[8]