Loading AI tools
১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'সুতরাং' চলচ্চিত্রের গান উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
'তুমি আসবে বলে, কাছে ডাকবে বলে' বাংলা ভাষায় রচিত একটি বিখ্যাত[1] চলচ্চিত্র সঙ্গীত। প্রণয়ধর্মী এই সঙ্গীত বা গানটি ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা চলচ্চিত্র সুতরাং-এ ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হক এই গানের গীতিকার ছিলেন। তিনি একই সাথে এই চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য, সংলাপ রচনা করেছিলেন এবং সকল গানের গীতিকার ছিলেন।[2] আঞ্জুমান আরা বেগম-এর কন্ঠে গাওয়া এই গানের সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন সত্য সাহা।[3] এই গানের শেষ অংশ গেয়েছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন।[4] গানের দৃশ্যায়নে অভিনেত্রী কবরী সারোয়ার ঠোঁট মিলিয়েছিলেন। এই গানের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে বেশ কয়েকজন প্রখ্যাত শিল্পীর অভিষেক ঘটে। এটা সৈয়দ শামসুল হকের চলচ্চিত্রের গীতিকার হিসেবে প্রথম লেখা গান[4], সুরকার সত্য সাহার প্রথম সুর করা চলচ্চিত্র সংগীত[1] এবং কবরী সারোয়ারের প্রথম ঠোঁট মেলানো প্রথম গান। জনপ্রিয়তার কারণে এই গান এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠান, আপাতবাস্তব টেলিভিশন অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয়ে থাকে।[5]
"তুমি আসবে বলে, কাছে ডাকবে বলে" | |
---|---|
সুতরাং অ্যালবাম থেকে | |
আঞ্জুমান আরা বেগম ও কাজী আনোয়ার হোসেন কর্তৃক সঙ্গীত | |
ভাষা | বাংলা |
মুক্তিপ্রাপ্ত | ১৯৬৪ |
স্টুডিও | পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন |
স্থান | ঢাকা, পূর্ব পাকিস্তান, বর্তমান বাংলাদেশ |
ধারা | চলচ্চিত্র সংগীত |
লেখক | সৈয়দ শামসুল হক |
সুরকার | সত্য সাহা |
প্রযোজক | সত্য সাহা |
'সুতরাং' চলচ্চিত্রের এই গান ছাড়াও মুস্তাফা জামান আব্বাসী ও ফেরদৌসী রহমান-এর প্রথম একত্রে নেপথ্য সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে গাওয়া 'নদী বাঁকা জানি, চাঁদ বাঁকা জানি, তাহার চেয়ে আরও বাঁকা তোমার ছলনা', আব্দুল আলীম ও কাজী আনোয়ার হোসেনের গাওয়া ‘এই যে আকাশ, এই যে বাতাস, বউ কথা কও সুরে যেন ভেসে যায়, বেলা বয়ে যায়, মধুমতি গাঁয় ওরে মন ছুটে চল চেনা ঠিকানায়’ এবং আলেয়া শরাফীর কণ্ঠে ‘এমন মজা হয় না, গায়ে সোনার গয়না, বুবুমণির বিয়ে হবে বাজবে কত বাজনা’-গান গুলি সমাধিক জনপ্রিয় হয়েছিল।[4]
আমি কখনো গান লিখতে চাইনি। প্রথম গান লিখতে হয়েছিল প্রোডাকশনের খরচ বাঁচাতে এবং সুরকার সত্য সাহাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। সত্যিকার অর্থে একজন লিখছেন, একজন সুর করছেন। এটা আমার পছন্দ নয়। এতে সুর ও কথার বিচ্যুতি ঘটে। আমার লেখা প্রথম গান ছিল সুতরাং ছবির ‘তুমি আসবে বলে, কাছে ডাকবে বলে, ভালোবাসবে বলে শুধু মোরে‘
—কবির বকুলের প্রতি সৈয়দ শামসুল হক[4]
সৈয়দ শামসুল হক 'সুতরাং' চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করলেও গীতিকার হওয়ার জন্য মোটেও আগ্রহী ছিলেন না। 'সুতরাং' চলচ্চিত্র নির্মাণের বাজেট কম থাকায় পরিচালক সুভাষ দত্ত ও সুরকার সত্য সাহা'র অনুরোধে সৈয়দ শামসুল হক সাতাশ বছর বয়সে চলচ্চিত্রের গীতিকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।[2] ১৯৬১ সালে ঢাকার ফরাশগঞ্জে সত্য সাহার ভাড়া করা বাড়ীর তিনতলার চিলেকোঠায় বসে সৈয়দ শামসুল হক গানটি লিখেন। প্রথম চার লাইন লেখার পর সত্য সাহা সুর করে দেন। পরবর্তীতে গানের অন্তরার প্রতিটি লাইন রচনা ও সুরারোপ একই সাথে করা হয়েছিল।[2][3][4][6]
পূর্ণ সুরারোপের পর সত্য সাহা গানটি সুভাষ দত্তকে শুনিয়েছিলেন। সুভাষ দত্ত এই গানে কণ্ঠ দেয়ার জন্য আঞ্জুমান আরা বেগম-এর নাম প্রস্তাব করেছিলেন।[2][4] তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন-এর স্টুডিওতে এই গানের কণ্ঠ ও সংগীত ধারণ করা হয়েছিল। গানধারণ করতে পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছিল লিটল অর্কেস্ট্রা।[4]
২০০৬ সালে কবরী সারোয়ারের প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র 'আয়না'[7]-তে এই গানের পুনর্ব্যবহার করা হয়। 'আয়না'-তে সুভাষ দত্ত অভিনয় করেছিলেন। ঐ চলচ্চিত্রে অভিষিক্ত সোহানা সাবা এই গানের চিত্রায়ণে ঠোঁট মিলিয়েছিলেন। এই সংস্করণে সংগীত পরিচালনা করেন সত্য সাহার কনিষ্ঠ পুত্র ইমন সাহা।[8]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.