Loading AI tools
পাখির গণ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
টার্কি (ইংরেজি: Turkey) মেলিয়াগ্রিডিডেই পরিবারের এক ধরনের বৃহদাকৃতির পাখিবিশেষ। এগুলো দেখতে মুরগির বাচ্চার মতো হলেও তুলনামূলকভাবে অনেক বড়। এক প্রজাতির বুনো টার্কি মেলিয়াগ্রিস গ্যালোপাভো উত্তর আমেরিকা ও মধ্য আমেরিকার বনাঞ্চলে বসবাস করে। গৃহপালিত টার্কি এই প্রজাতি থেকে ভিন্নতর। অন্য জীবিত প্রজাতির মধ্যে মেলিয়াগ্রিস ওসেলাটা বা চক্ষু আকৃতির চিহ্নবিশিষ্ট টার্কি আবাসস্থল হচ্ছে ইউকাতান উপ-দ্বীপের বনাঞ্চলে।[1] বিশ্বের সর্বত্র টার্কি গৃহপালিত পাখিরূপে লালন-পালন করা হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অধিবাসীরা সনাতনী ধারায় থ্যাঙ্কসগিভিং ডে'র ছুটির দিনে টার্কি ভোজন করে থাকে। এছাড়াও, ইউরোপীয় দেশগুলোয় বিশেষ খ্রীষ্টিয় পর্বের আহারেও টার্কি খাওয়া হয়। মূলতঃ টার্কি উৎপাদন মৌসুমভিত্তিক হলেও সারা বছরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাবারের উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে আছে। মেলিয়াগ্রিস গ্যালোপাভো জাতের টার্কি উত্তর আমেরিকায় খেলাধূলার বিনোদনে ব্যবহার করা হয়।
মেলিয়াগ্রিডিডেই পরিবারের একটি গণ হচ্ছে মেলিয়াগ্রিস। এ গণটি আবার দু'টি ধারায় বিভাজিত হয়েছে।
পুরুষ টার্কি, স্ত্রী টার্কির তুলনায় অধিকতর বড় এবং অনেক বেশি আকর্ষণীয় রঙের হয়ে থাকে। বাস্টার্ড (অস্ট্রেলিয়ান টার্কি); মেগাপোড (ব্রাশ টার্কি); স্ন্যাকবার্ড (ওয়াটার টার্কি) জাতীয় সমজাতীয় পাখি হলেও টার্কিজাতীয় পাখি নয়।
পূর্ণাঙ্গ পুরুষজাতীয় টার্কির মাথা ন্যাড়া থাকে। সাধারণতঃ এর মাথা উজ্জ্বল লাল রঙের হয়। কখনো কখনো সাদা কিংবা উজ্জ্বল নীলাভ রঙেরও হয়ে থাকে। পুরুষজাতীয় টার্কি গবলার বা টম নামেও পরিচিত। এগুলো গড়ে লম্বায় ১৩০ সে.মি. বা ৫০ ইঞ্চি হয়। গড়পড়তা ওজন ১০ কেজি বা ২২ পাউন্ড হতে পারে। কিন্তু স্ত্রীজাতীয় টার্কি সাধারণতঃ পুরুষের তুলনায় ওজনে অর্ধেক হয়। প্রতিটি স্ত্রীজাতীয় টার্কি ৮ থেকে ১৫টি ছোট ছোট দাগের বাদামী বর্ণাকৃতির ডিম পাড়ে। ২৮ দিন অন্তর ডিম ফুটে বাচ্চা টার্কি জন্মায়।
বন্য টার্কি সাধারণতঃ বনভূমিতে পানির কাছাকাছি এলাকায় থাকতেই পছন্দ করে বেশি। ফসলের বীজ, পোকামাকড় এবং মাঝেমাঝে ব্যাঙ কিংবা টিকটিকি খেয়ে জীবনধারণ করেন। আত্মরক্ষার্থে দ্রুত দৌড়ে গা ঢাকা দেয়। কিন্তু এটি কেবলমাত্র স্বল্প দূরত্বে উড়তে পারে। তখন এটি প্রায় ০.৪ কিলোমিটার বা ০.২৫ মাইল দূরত্ব অতিক্রম করে।
খাদ্য - এরা মুরগীর খাদ্য খায়।ঘাস, লতা, পাতা,পোকা-মাকড়, পুকুরের খুদে ফেনা এসব খেয়ে থাকে।
যখন ইউরোপীয়রা প্রথমবারের মতো টার্কিকে আমেরিকায় দেখতে পেল, তখন তারা ভুলবশতঃ ভাবল যে পাখিটি এক ধরনের গিনিয়া মুরগি (নুমিডা মেলিয়াগ্রিস)। পরবর্তীকালে তারা তুরস্ক দেশ থেকে মধ্য ইউরোপে পাখিটিকে নিয়ে আসে। গিনিয়া মুরগি বা গিনিয়াফাউল-কে টার্কি ফাউল নামেও ডাকা হয়। তাই, তুরস্ক দেশের নামানুসারে উত্তর আমেরিকার পাখিটির নামকরণ করা হয় টার্কি।[2][3][4] ১৫৫০ সালে উইলিয়াম স্ট্রিকল্যাণ্ড নামীয় এক ইংরেজ নাবিক টার্কি পাখিকে ইংল্যান্ডে নিয়ে আসেন।[5]
সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য দলিলপত্র মোতাবেক ক্যালিফোর্নিয়া টার্কি (মেলিয়াগ্রিস ক্যালিফোর্নিকা)[6] মানব বসতির শুরুতে যথেষ্ট সংখ্যায় শিকারে পরিণত হয়েছিল।[7] ধারণা করা হয় যে, তুষার যুগের শেষদিকে জলবায়ুর পরিবর্তন ও ব্যাপক শিকারের ফলে এ প্রজাতির টার্কির বিলুপ্তি ঘটেছিল।[8]
অনেক জীববিজ্ঞানী টার্কিকে তাদের নিজস্ব পরিবার মেলিয়াগ্রিডিডেইর বলে স্বীকার করেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিককালে তাদের বংশ বিশ্লেষণ করে টার্কিকে ফ্যাসিয়ানিডেই পরিবারের বলে মত প্রকাশ করেছেন।[9]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.