ক্যারি গ্র্যান্ট (ইংরেজি: Cary Grant, ১৮ই জানুয়ারি, ১৯০৪-২৯শে নভেম্বর, ১৯৮৬), যার জন্মনাম আর্চিবল্ড অ্যালেক লিচ (Archibald Alec Leach), ছিলেন একজন ইংরেজি-মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেতা। তিনি ধ্রুপদী হলিউড চলচ্চিত্রের আদর্শ নায়কদের একজন হিসেবে বিখ্যাত। তিনি ১৯৩০-এর দশকের শুরুর দিকে হলিউডে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। তিনি তার আটলান্টিকের উভয়-পারস্থ উচ্চারণভঙ্গি, হালকা ধাঁচের অভিনয়, সুন্দর চেহারা, পরিপাটি বেশভুষা ও সঠিক সময়ে কৌতুক করার জন্য পরিচিত হয়ে ওঠেন। প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে দক্ষ অভিনয় করে তিনি হলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও দীর্ঘস্থায়ী তারকায় পরিণত হন।

দ্রুত তথ্য ক্যারি গ্রান্ট, জন্ম ...
ক্যারি গ্রান্ট
Thumb
সাস্পিশন (১৯৪১) চলচ্চিত্রের জন্য একটি বিজ্ঞাপনধর্মী আলোকচিত্রে ক্যারি গ্র্যান্ট
জন্ম
আর্চিবল্ড অ্যালেক লিচ

(১৯০৪-০১-১৮)১৮ জানুয়ারি ১৯০৪
ব্রিস্টল, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৯ নভেম্বর ১৯৮৬(1986-11-29) (বয়স ৮২)
ডেভেনপোর্ট, আইওয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
নাগরিকত্ব
  • যুক্তরাজ্য
  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৯৪২ থেকে)
পেশা
  • অভিনেতা
  • ব্যবসায়ী
কর্মজীবন১৯২২ – ১৯৬৬
দাম্পত্য সঙ্গী
  • ভার্জিনিয়া চেরিল (বি. ১৯৩৪; বিচ্ছেদ. ১৯৩৫)
  • বারবারা হাটন (বি. ১৯৪২; বিচ্ছেদ. ১৯৪৫)
  • বেটসি ড্রেক (বি. ১৯৪৯; বিচ্ছেদ. ১৯৬২)
  • ডায়ান ক্যানন (বি. ১৯৬৫; বিচ্ছেদ. ১৯৬৮)
  • বারবারা হ্যারিস (বি. ১৯৮১)
সন্তানজেনিফার গ্রান্ট
পুরস্কার
বন্ধ

গ্র্যান্ট ১৯০৪ সালে ইংল্যান্ডের গ্লস্টারশার কাউন্টির ব্রিস্টল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪২ সালে তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন। গ্র্যান্ট ১৯৮৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ড্যাভেনপোর্ট শহরে মৃত্যুবরণ করেন।

ক্যারি গ্র্যান্ট অল্প বয়সেই মঞ্চনাটকের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ৬ বছর বয়সে "দ্য পেন্ডার্স" নামের একটি নাট্যদলের সাথে নাটক পরিবেশন করা শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি মঞ্চ অভিনেতা হিসেবে নিউ ইয়র্ক শহরে একটি নাটক পরিবেশনার পরে সেখানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯২০-এর দশকে সারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরে ঘুরে ভডভিল ঘরানার নাটক অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৩০-এর দশকের শুরুর দিকে হলিউডে প্রবেশ করেন। প্রথম দিকে তিনি অপরাধমূলক বা নাটকীয় চলচ্চিত্রে, যেমন ব্লন্ড ভিনাস (১৯৩২), শি ডান হিম রং (১৯৩৩), ইত্যাদিতে কাজ করলেও পরবর্তীতে প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক ও স্ক্রুবল-জাতীয় হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে যেমন দি অফুল ট্রুথ (১৯৩৭), ব্রিঙিং আপ বেইবি (১৯৩৮), হিজ গার্ল ফ্রাইডে (১৯৪০) এবং দ্য ফিলাডেলফিয়া স্টোরি (১৯৪৪) ইত্যাদিতে অভিনয় করে খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। এর পরবর্তীতে আর্সেনিক অ্যান্ড ওল্ড লেইস (১৯৪৪) এবং আই ওয়াজ আ মেইল ওয়ার ব্রাইড (১৯৪৯) চলচ্চিত্রগুলিসহ উপর্যুক্ত সবগুলি ছায়াছবিই সর্বকালের সেরা হাস্যরসাত্মক ছবি হিসেবে প্রায়শই উল্লেখ করা হয়।[1] হলিউডের একজন প্রধান তারকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পর গ্র্যান্ট দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন লাভ করেন। একটি ছিল পেনি সেরেনেড (১৯৪১) এবং অপরটি নান বাট দ্য লোনলি হার্ট (১৯৪৪)-এ অভিনয়ের জন্য।

১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকে গ্র্যান্ট চলচ্চিত্র পরিচালক আলফ্রেড হিচককের সাথে পেশাগত সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তিনি হিচককের বেশ কিছু ছবি যেমন সাস্পিশন (১৯৪১), নটোরিয়াস (১৯৪৬), টু ক্যাচ আ থিফ (১৯৫৫) এবং নর্থ বাই নর্থওয়েস্ট (১৯৫৯) নামক চলচ্চিত্রগুলিতে অভিনয় করেন। কর্মজীবনের শেষ পর্যায়ে গ্র্যান্ট আবারও প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন এবং সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ান। তিনি এসময় ৫ বার গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রের সেরা অভিনেতা শ্রেণীতে মনোনয়ন লাভ করেন। এদের মধ্যে ইনডিসক্রিট (১৯৫৮; ইংরিদ বারিমানের সাথে), দ্যাট টাচ অফ মিংক (১৯৬২; ডরিস ডে-র সাথে) এবং শ্যারেড (১৯৬৩; অড্রি হেপবার্নের সাথে) উল্লেখযোগ্য।

গ্র্যান্ট কখনোই তার অভিনয়কে খুব গম্ভীরভাবে নিতেন না, কিন্তু একই সাথে নিজের সম্মানও বিসর্জন দিতেন না। চলচ্চিত্র সাময়িকী প্রিমিয়ার তাকে "এক কথায়, চলচ্চিত্রের সবচেয়ে হাস্যকর অভিনেতা" আখ্যা দেয়।

১৯৭০ সালে গ্র্যান্ট সম্মানসূচক অস্কার পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৯ সালে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট তাকে হলিউডের স্বর্ণযুগের দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ পুরুষ তারকার মর্যাদা দেয় (হামফ্রি বোগার্টের পরেই)।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.