কাজী নূরুজ্জামান
বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কাজী নূরুজ্জামান (২৪ মার্চ ১৯২৫ - ৬ মে ২০১১)[1][2] বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার। ১৯৭১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ৭নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হক ভারতে সড়ক দুর্ঘটনা মারা যাওয়ার পর কর্ণেল নূরুজ্জামানকে এই সেক্টরের অধিনায়ক করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের জন্য তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়।[3] মুক্তিযুদ্ধের প্রধান কৃতিত্ব গণমানুষের, এই কথা যুক্তিতে তিনি অবশ্য বীর উত্তম উপাধি গ্রহণ করেননি, কখনো তা ব্যবহার করেননি। কাজী নূরুজ্জামানের জন্ম যশোর জেলায়। তার পিতার নাম খান সাহেব কাজী সদরুলওলা এবং মাতা রতুবুন্নেসা।
কাজী নূরুজ্জামান | |
---|---|
জন্ম | ২৪ মার্চ ১৯২৫ |
মৃত্যু | ৬ মে ২০১১ ৮৬) স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পেশা | মুক্তিযোদ্ধা |
পিতা-মাতা | কাজী সদরুলওলা রতুবুন্নেসা |
কাজী নূরুজ্জামান ১৯২৫ সালের ২৪ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম খান সাহেব কাজী সদরুলওলা এবং মাতার নাম রতুবুন্নেসা। কাজী নূরুজ্জামানের পড়াশোনা কলকাতায়। সেখানে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে রসায়নে পড়ার সময় ১৯৪৩ সনে ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনীতে যোগ দেন।[4] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বার্মার উপকূল ও সুমাত্রায় যুদ্ধ করেন। ১৯৪৬ সালে পণ্ডিত জহরলাল নেহেরুর আহবানে অনেকে নৌবাহিনী থেকে ভারতীয় সেনবাহিনীতে চলে আসে। কাজী নূরুজ্জামান তাদের মধ্যে অন্যতম। প্রশিক্ষণের জন্য কাজী নূরুজ্জামান দেরাদুনে রয়্যাল ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে চলে যান। ১৯৪৭ সালে তিনি এই একাডেমি থেকে কমিশন লাভ করেন। ১৯৪৭ এর ১৫ আগস্টের পর কাজী নুরুজ্জামানের পরিবার পাকিস্তানে আসার সিদ্ধান্ত নিলে নুরুজ্জামান পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে নবীন অফিসার হিসাবে যোগ দেন।
কাজী নূরুজ্জামানের পড়াশোনা কলকাতায়। সেখানে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে রসায়নে পড়ার সময় তিনি ১৯৪৩ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় নৌবাহিনী, রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভিতে যোগ দেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি বার্মার উপকূল ও সুমাত্রায় যুদ্ধ করেন। ১৯৪৬ সালে পণ্ডিত জহরলাল নেহেরু'র আহবানে অনেকে নৌবাহিনী থেকে ভারতীয় সেনবাহিনীতে চলে আসে। কাজী নূরুজ্জামান তাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি রয়্যাল ইন্ডিয়ান আর্মিতে চাকরি স্থানান্তরিত করে রয়্যাল ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে যোগ দেন এবং প্রশিক্ষণের জন্য দেরাদুনে রয়্যাল ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে চলে যান। ১৯৪৭ সালে তিনি এই একাডেমি থেকে কমিশন লাভ করেন। ১৯৪৭ এর ১৫ আগস্টের পর কাজী নূরুজ্জামানের পরিবার পাকিস্তানে আসার সিদ্ধান্ত নিলে নূরুজ্জামান পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে নবীন অফিসার হিসাবে যোগ দেন।১৯৪৯ সালে ইংল্যান্ডে আর্টিলারি কোর্স সমাপ্ত করে আসার পর তিনি পাকিস্তানের নওশেরায় আর্টিলারি সেন্টার এন্ড স্কুলে প্রশিক্ষক নিয়োজিত হন। পরের বছর হোন অফিসার ট্রেনিং স্কুলের ইনস্ট্রাক্টর। ১৯৫৬ সালে মেজর পদে পদোন্নতি পান এবং ১৯৫৮ সালে স্টাফ কলেজ সম্পন্ন করেন। ১৯৫৮ সালে সেনাপ্রধান আইয়ুব খান দেশে সামরিক আইন জারি করলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাদানুবাদে লিপ্ত হয়ে পড়েন। তখন (১৯৬২ সালে) তাকে প্রেষণে ইস্ট পাকিস্তান ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে (ইপিআইডিসি) পাঠানো হয়। এরই মধ্যে তিনি লেফটেনেন্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পান। ইপিআইডিসি থেকে তিনি স্বল্প সময় পরে তিনি সেনাবাহিনীতে ফিরে আসেন এবং স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তিনি আবার সেনাবাহিনীতে ফিরে যান এবং যুদ্ধকালীন সময়ের পরপরই পুনরায় সিভিল পেশায ফেরত আসেন।
১৯৬২ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশের প্রগতিশীল লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তিনি ড. আহমদ শরীফ প্রতিষ্ঠিত স্বদেশ চিন্তা সঙ্ঘের সঙ্গে ওতপ্রতোভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন লেখক শিবির ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ফ্রন্টের সদস্য।
নব্বইয়ের দশকে কর্ণেল নূরুজ্জামান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনে অংশ নেন। তিনি গণআদালতের অন্যতম বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালির উপর গণহত্যা শুরু করলে কাজী নূরুজ্জামান ঢাকা ত্যাগ করে স্বপরিবারে ময়মনসিংহ চলে যান। ২৮ মার্চ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইল হয়ে ময়মনসিংহে পৌঁছে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক কাজী মুহাম্মদ শফিউল্লাহর সঙ্গে দেখা করেন। ৪ এপ্রিল, ১৯৭১ হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়া চা-বাগানের ম্যানেজারের বাংলোয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর ও তদূর্ধ্ব পদবির কর্মকর্তাদের প্রথম এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। একাত্তরের মে মাসে তাকে সভাপতি করে একটি পর্ষদ গঠন করা হয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম ব্যাচ ক্যাডেট নির্বাচনের জন্য। এই ক্যাডেটরা কমিশন লাভ করেন সে বছরের ৯ অক্টোবর। সাত নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হক ২৬ সেপ্টেম্বর ভারতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে কাজী নূরুজ্জামান তার স্থলাভিষিক্ত হন। কাজী নূরুজ্জামানের স্ত্রী ডা. সুলতানা জামান, দুই মেয়ে - নায়লা জামান ও লুবনা মরিয়ম[5] এবং এক ছেলে নাদিম ওমর-সহ ভারতে আশ্রয় নেন। ডা. সুলতানা জামান সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় ৭ নম্বর সেক্টরের মাহদিপুর সাব-সেক্টরে একটি হাসপাতাল গড়ে তোলেন। তাকে সাহায্য করেন ডা. মোয়াজ্জেম। ১৫ বছরের কিশোর নাদিম ওমর লালগোলা সাব-সেক্টরের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেন।[6]
মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনার জন্যে তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়; কিন্তু গণযোদ্ধাদের সঠিক মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি দেয়া হয়নি বলে কাজী নূরুজ্জামান তা নিজের নামের শেষে ব্যবহার করতেন না।[7]
একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা কে কোথায় গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক ছিলেন কাজী নূরুজ্জামান। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছেঃ [8]
২০১১ সালের ৬ মে সকাল ১০:১৫ ঘটিকায় ঢাকা'র স্কয়ার হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে কাজী নূরুজ্জামান মৃত্যুবরণ করেন।[9]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.