Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সন্ত আলেক্সান্দ্র ইয়ারোস্লাভিচ নেভ্স্কি (রুশ: Алекса́ндр Яросла́вич Не́вский; উচ্চারিত [ɐlʲɪˈksandr jɪrɐˈsɫavʲɪtɕ ˈnʲɛfskʲɪj] (; ১২ মে ১২২১ )[1] – ১৪ নভেম্বর ১২৬৩) ছিলেন নভগোরদের যুবরাজ (১২৩৬-৫২), কিয়েভের মহা যুবরাজ (১২৩৬-৫২) এবং ভ্লাদিমিরের মহা যুবরাজ (১২৫২-৬৩)। তিনি কিয়েভান রুস ইতিহাসের সবচেয়ে বিপর্যস্ত সময়ের শাসক ছিলেন।
সন্ত আলেক্সান্দ্র নেভ্স্কি | |
---|---|
জন্ম | আলেক্সান্দ্র ইয়ারোস্লাভিচ নেভ্স্কি ১৩ মে ১২২১[1] প্রেরস্লাভ্ল-জালেস্স্কি, ভ্লাদিমির-সুজদাল (বর্তমান রাশিয়া) |
মৃত্যু | ১৪ নভেম্বর ১২৬৩ ৪২) গরোদেৎস, ভ্লাদিমির-সুজদাল (বর্তমান রাশিয়া) | (বয়স
সমাধি | আলেক্সান্দ্র নেভ্স্কি লাভরা |
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন | প্রাচ্য গোঁরাবাদী গির্জা |
সিদ্ধ ঘোষণা | ১৫৪৭ , মেত্রোপলিত মাকারিয়াস কর্তৃক |
প্রধান স্মৃতিযুক্ত স্থান | ভ্লাদিমির; পেরেস্লাভ্ল-জালেস্স্কি, সেন্ট পিটার্সবার্গ |
উৎসব | ২৩ নভেম্বর (Repose) ২ মে (Synaxis of the Saints of Rosand Yaroslavl ৩০ আগস্ট (Translation of relics) |
বৈশিষ্ট্যাবলী | রুশ মহা যুবরাজ হিসেবে রাজবেশ পরিধান করতেন, মাঝে মাঝে যুদ্ধাস্ত্রও পরিধান করতেন |
এর রক্ষাকর্তা | সেন্ট পিটার্সবার্গ, সৈন্যদল, রাশিয়ার সীমান্ত |
বিতর্ক |
|
সন্ত আলেক্সান্দ্র ছিলেন ভসেভলদের পৌত্র এবং মধ্যযুগীয় রুস ধর্মের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব। জার্মান ও সুইডিশ আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে তার সেনাবাহিনীর বিজয়ের ফলে তিনি কিংবদন্তি পর্যায়ে চলে যান। তিনি ১৫৪৭ সালে মেত্রোপলিত মাকারিয়াস কর্তৃক রুশ গোঁড়বাদী গির্জার সন্ত হিসেবে সিদ্ধপ্রাপ্ত হন।[2]
নেভ্স্কি ১২২১ সালের ১২ মে রাশিয়ার পেরেস্লাভ্ল-জালেস্স্কিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি যুবরাজ ইয়ারোস্লাভ ভসেভলদভিচ ও রস্তিস্লাভা মস্তিস্লাভ্নার দ্বিতীয় পুত্র। তার মাতা মস্তিস্লাভ্না যুবরাজ মস্তিস্লাভ মস্তিস্লাভিচের কন্যা। আলেক্সান্দ্রের ভ্লাদিমিরের সিংহাসন দাবী করার কোন সুযোগ ছিল না। ১২৩৬ সালে নভগরদের বাসিন্দারা তাকে নভগরদের যুবরাজ হওয়ার জন্য ডেকে পাঠায়, এবং সুইডিশ ও জার্মান আক্রমণকারীদের থেকে উত্তরপশ্চিম অঞ্চলকে রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর প্রধান হওয়ার আমন্ত্রণ জানায়।
লিভোনিয়ার আক্রমণের পর নেভ্স্কি রাশিয়ার উত্তরপশ্চিম অঞ্চলকে শক্তিশালী করতে শুরু করেন। তিনি নরওয়েতে তার দূত প্রেরন করেন এবং ১২৫১ সালে রাশিয়া ও নরওয়ের মধ্যে প্রথম শান্তি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। নেভ্স্কি তার সৈন্য নিয়ে ফিনল্যান্ডে যান এবং সুইডিশদের তাড়াতে সফল হন। সুইডিশরা পরে ১২৫৬ সালে বাল্টিক সাগরে আরেকটি প্রতিরোধের প্রচেষ্টা করেছিল।[3] নেভ্স্কি সতর্ক ও দূরদর্শী রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেন। তিনি রাশিয়া ও গোল্ডেন হোর্ডের মধ্যে যুদ্ধের লক্ষ্যে রোমান কুরিয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন কারণ তিনি বুঝতে পারেন তারা যেহেতু তখন শক্তিশালী, তাতারদের সাথে এই যুদ্ধ কোন ফল বয়ে আনবে না। ইতিহাসবেত্তাগণ মঙ্গোলদের সাথে নেভ্স্কির আচরণের ব্যাপারে নিশ্চিত নয়। তিনি হয়ত ভেবেছিলেন ক্যাথলিকবাদ খানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর চেয়েও বড় হুমকি, যেখানে স্লাভ ধর্ম ও সংস্কৃতিতে খানদের কম আগ্রহ রয়েছে। বিতর্ক রয়েছে যে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই উত্তর স্লাভ পৌরসভা ও শহর রাজ্যসমূহ মঙ্গোলদের অধীনে মিত্ররাজ্য করে রেখেছিলেন যাতে তিনি তার আত্মমর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে পারেন এবং হোর্ডদের বন্ধু ভেবে তাকে কেউ আক্রমণ করবে না। নেভ্স্কি তার কর্তৃত্ব জোরদার করার চেষ্টা করেন এবং একই সাথে দেশে মঙ্গোল বিরোধী বিপ্লব দমন করেন।
সারতাক খানের সাথে তার বন্ধুত্বের ফলে ১২৫২ সালে নেভ্স্কিকে ভ্লাদিমিরের মহা যুবরাজ করা হয়। এক দশক পরে নেভ্স্কি গোল্ডেন হোর্ডের রাজধানী সারাই থেকে ফিরার পথে ভোলগা নদীর তীরবর্তী গরোদেৎস শহরে মারা যান। মৃত্যুর পূর্বে তিনি সন্ন্যাস ব্রত গ্রহণ করেন এবং তার ধর্মীয় নাম রাখা হয় আলেক্সেই।[4]
নভগোরদ প্রথম কালক্রম অনুসারে, আলেক্সান্দ্র ১২৩৯ সালে পোলাৎস্ক ও ভিতেব্স্কের যুবরাজ ব্রিয়াচেস্লাভ ভাসিকোভিচের কন্যাকে বিয়ে করেন। এই বইতে তার নাম উল্লেখ করা হয় নি। বংশ সংক্রান্ত নামের তালিকা থেকে জানা যায় তার নাম পারস্কেভিয়া বা আলেক্সান্দ্রা (সম্ভবত প্রথমটি জন্মনাম ও দ্বিতীয়টি বিবাহোত্তর নাম)। তাদের পাঁচ সন্তান ছিল।
নেভ্স্কি তার মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে ভাসিলিসা বা ভাসাকে বিয়ে করেন।[5] তাদের কোন সন্তান ছিল না।
পশ্চিম সীমান্তের জন্য আলেক্সান্দ্রের কয়েকটি নীতি তার নাত-জামাই পস্কোভের দোমান্তাসও গ্রহণ করেছিলেন।
ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষের দিকে ঝিতিয়ে আলেক্সান্দ্রা নেভ্স্কগা (আলেক্সান্দ্র নেভ্স্কির জীবনী) নামে একটি ইতিবৃত্তের সংকলন করা হয়, যেখানে তাকে একজন আদর্শ যুবরাজ-সেনা এবং রাশিয়ার রক্ষাকর্তা হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।
আলেক্সান্দ্রের তেউতোনিক নাইটদের বিপক্ষে বিজয়ের কাহিনী নিয়ে ১৯৩৮ সালে বিখ্যাত সোভিয়েত পরিচালক সের্গেই আইজেনস্টাইন তার জীবনের অন্যতম সমাদৃত চলচ্চিত্র আলেক্সান্দ্র নেভ্স্কি নির্মাণ করেন। এই চলচ্চিত্রের সঙ্গীতের সুর করেন সের্গেই প্রকফিয়েভ। বরফ আচ্ছ্বাদিত স্থানে যুদ্ধের দৃশ্যটির জন্য চলচ্চিত্রটি এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে। এই দৃশ্যটি পরবর্তীতে আরও অনেক চলচ্চিত্রকে অনুপ্রাণিত করেছে। এই চলচ্চিত্রে নেভ্স্কি বেশ কিছু রুশ প্রবাদ ব্যবহার করেন, যার মাধ্যমে বুঝানো হয়েছে নেভ্স্কির পুরোপুরি রুশ ঐতিহ্যের সাথে যোগসূত্র রয়েছে।[6]
সন্ত আলেক্সান্দ্র নেভ্স্কির নাম রাশিয়ার সীমান্তের বাইরেও ছড়িয়ে পরে এবং তাকে উৎসর্গ করে বেশ কিছু ক্যাথিড্রাল ও চার্চ নির্মিত হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বুলগেরিয়ার সোফিয়ার পাত্রিয়ার্চাল ক্যাথিড্রাল, আজারবাইজানের বাকুর আলেক্সান্দ্র নেভ্স্কি ক্যাথিড্রাল ও এস্তোনিয়ার তাল্লিনের আলেক্সান্দ্র নেভ্স্কি ক্যাথিড্রাল।
২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে কমেরসান্ত সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় যে দর্শকদের ভোটে সন্ত আলেক্সান্দ্র নেভ্স্কি রাশিয়ার ইতিহাসের প্রধান বীরের স্বীকৃতি লাভ করেছেন। ২০০৮ সালে ডিসেম্বরে নেম অব রাশিয়া টেলিভিশনের জরিপে তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ রুশ ব্যক্তি বলে অভিহিত করা হয়েছে।[7]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.