Loading AI tools
ভারতীয় সাঁতারু উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
আরতি সাহা (২৪শে সেপ্টেম্বর ১৯৪০ - ২৩ আগস্ট ১৯৯৪) একজন ভারতীয় সাঁতারু। তিনি মাত্র চার বছর বয়স থেকেই সাঁতার শেখা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে খ্যাতনামা সাঁতারু মিহির সেন তাকে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করতে অণুপ্রাণিত করেছিলেন এবং ১৯৫৯ সালে প্রথম এশীয় মহিলা সাঁতারু হিসাবে তিনি ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেন।[1] শুধু তাই নয় ১৯৬০ সালে প্রথম ভারতীয় মহিলা ক্রীড়াবিদ হিসাবে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।
আরতি দেবী মধ্যবিত্ত বাঙালী হিন্দু পরিবারে ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার কলকাতায় ১৯৪০ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। পিতা পাঁচুগোপাল সাহার তিন সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় ও দুই মেয়ের মধ্যে জ্যেষ্ঠা ছিলেন। পাঁচুগোপাল সাহা ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীর এক সাধারণ চাকরিজীবী ছিলেন।[2] দুর্ভাগ্যবশত মাত্র আড়াই বছর বয়সে তিনি মাতৃহারা হন। যার ফলে তার বড় ভাই ও ছোটো বোন ভারতী মামার বাড়িতে এবং তিনি নিজে উত্তর কলকাতায় ঠাকুমার কাছে মানুষ হতে থাকেন। চার বছর বয়সে তার কাকার সাথে চাঁপাতলা ঘাটে স্নান করতে গিয়ে সাঁতার শেখা শুরু করেন। সাঁতারের প্রতি তার আগ্রহ দেখে পাঁচুগোপাল সাহা তার কন্যাকে শোভাবাজারের হাটখোলা সুইমিং ক্লাবে ভর্তি করে দেন। ১৯৪৬ সালে পাঁচ বছর বয়সে শৈলেন্দ্র স্মৃতি সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১১০ গজ দূরত্বের ফ্রি স্টাইলে সোনা জেতেন।
১৯৪৬ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে আরতি দেবী বহু সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।[2] ১৯৪৫ থেকে ১৯৫১ সালের মধ্যে ২২টি রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছিলেন।[2] ১৯৪৮ সালে তিনি মুম্বাইতে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় রূপো ও ব্রোঞ্জ যেতেন। ১৯৫১ সালে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় ১ মিনিট ৩৭.৬ সেকেন্ডে ১০০মিটার অতিক্রম করে ডলি নাজিরের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে হেলসিঙ্কি অলিম্পিকে তিনি সাঁতারু ডলি নাজিরের সঙ্গে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।[2] ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি এশিয়া মহাদেশের প্রথম মহিলা হিসেবে ইংলিশ চ্যানেলের ৬৭.৫ কিমি দূরত্বের পথ অতিক্রম করেন ১৬ ঘণ্টা ২০ মিনিটে। তিনি ফ্রান্সের কেপ গ্রিস নে থেকে সাঁতার শুরু করে ইংল্যান্ডের স্যান্ডগেটে শেষ করেন এবং সেখানে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।[3]
১৯৬৯ সালে বিধানচন্দ্র রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক অরুণ গুপ্তের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের অর্চনা নামে একটি কন্যা সন্তান ছিল। তিনি বিএনআরে চাকরি করতেন। ১৯৯৪ সালের ২৩শে আগস্ট কলকাতার একটি নার্সিং হোমে দীর্ঘ ১৯ দিন ধরে জণ্ডিস ও এনসেফালাইটিস রোগে ভোগার পর মৃত্যু বরণ করেন।[4]
আরতি সাহা দেশের প্রথম মহিলা হিসাবে ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের "পদ্মশ্রী" সম্মানে ভূষিত হন। ভারত সরকারের ডাক বিভাগ ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে তিন টাকা মূল্যের ডাক টিকিট প্রকাশ করে। ২০২০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে সেপ্টেম্বর তার ৮০ তম জন্মদিনে গুগুল এক ডুডল প্রকাশ করে শ্রদ্ধা জানায়। ডুডলের ছবিটি আঁকেন কলকাতার এক শিল্পী লাবণ্য নাইডু। [5]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.