Loading AI tools
চদা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে আবর্জনা সংগ্রহ, পরিবহন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, পূণর্ব্যবহার (Recycling) এবং নিষ্কাশনের(Disposal) সমন্বিত প্রক্রিয়াকে বোঝায়।[1] এই শব্দটি দিয়ে সাধারণত মানুষের কার্যকলাপে সৃষ্ট অপ্রয়োজনীয় বস্তুসমূহ সংক্রান্ত কাজগুলোকে বুঝানো হয়ে থাকে; ঐ বস্তুগুলোর থেকে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ক্ষতিকারক প্রভাব প্রশমিত করার জন্য, কিংবা পরিবেশের সৌন্দর্য্য রক্ষার কাজগুলোই এই প্রক্রিয়াতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এছাড়াআবর্জনা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আবর্জনা থেকে পরিবেশের ক্ষতি রোধ করার কাজ এবং আবর্জনা থেকে পূণর্ব্যবহারযোগ্য বস্তু আহরণ সংক্রান্ত কাজও করা হয়ে থাকে। এতে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি এবং দক্ষতার দ্বারা কঠিন, তরল কিংবা বায়বীয় বর্জ্য সংক্রান্ত কাজ করা হয়।[2]
উন্নত বা উন্নয়নশীল দেশভেদে, শহর বা গ্রাম্য এলাকাভেদে, আবাসিক বা শিল্প এলাকাভেদে আবর্জনা ব্যবস্থাপনার ধরন আলাদা হয়। সাধারণত স্থানীয় বা পৌরকর্তৃপক্ষ আবাসিক বা প্রাতিষ্ঠানিক এলাকা থেকে উৎপন্ন অবিষাক্ত ময়লাসমূহের জন্য ব্যবস্থাপনা করে থাকেন। অপরপক্ষে বাণিজ্যিক বা শিল্প এলাকার অবিষাক্ত ময়লাগুলো ঐ ময়লা উৎপন্নকারীদেরকেই ব্যবস্থাপনা করতে হয়।[3][4][5]
আবর্জনার পরম শ্রেণীভেদ বলতে কিছু নেই। নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও প্রয়োজন অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে আবর্জনাকে শ্রেণীভেদ করা হয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ময়লা সংগ্রহের সুবিধার্থে ময়লাকে এভাবে শ্রেণিবিভাগ করা হয়:
যেখানে শেষ গন্তব্যস্থল হিসেবে ময়লাকে মূলত মাটিচাপা দেয়া হয় সেখানে শ্রেণিবিভাগটা এরকম:
যে শহরে ময়লা পুড়ানো হয় সেখানে শ্রেণিবিভাগটা এমন হতে পারে:
আবর্জনা ব্যবস্থাপনার জন্য এর গাঠনিক ও রাসায়নিক বৈশিষ্টগুলো জানা থাকা জরুরী।
আবর্জনার গঠন সম্পর্কে জানার জন্য নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো জানতে হয়: আংশিক অণুপাত বিশ্লেষণ। বর্জ্য-কণার আকার বিশ্লেষণ (Particle size)। বর্জ্যের জলীয় অংশ (Moisture content)। বর্জ্যের ঘনত্ব (Density)।[6]
এই বিশ্লেষণে যে সকল আলাদা রকমের উপাদান একত্রে মিশে আবর্জনা তৈরি হয়েছে সেগুলো চিহ্নিতকরণ এবং এগুলোর (শতকরা) অণুপাত নির্ণয়। এ ধরনের বিশ্লেষণ করার জন্য ডাস্টবিন/আবর্জনা ফেলার স্থান থেকে সদ্য ফেলা আবর্জনার নমুনা সংগ্রহ করে সেগুলোকে উপাদান অনুযায়ী ভাগ করা হয়, এবং প্রতিটা ভাগের ওজন ও আয়তন পরিমাপ করা হয়। নিচে এ ধরনের বিশ্লেষণের কিছু উপাত্ত দেয়া হল:
বর্জ্যের শতকরা ওজনের তালিকা (তথ্যসূত্র: আহমেদ এবং রহমান, ২০০০, Water Supply and Sanitation, ITN-Bangladesh)
আবর্জনার উপাদান | বাংলাদেশ
(ঢাকা, ১৯৯৮) |
ভারত
(১৯৯৮) |
ইউরোপ |
---|---|---|---|
খাবার ও তরকারী | ৭০ | ৭৫ | ৩০ |
কাগজ ও কাগজজাত সামগ্রী | ৪ | ২ | ২৭ |
প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থ | ৫ | ১ | ৩ |
পুরনো ছেঁড়া কাপড় | - | ৩ | ৩ |
ধাতব পদার্থ | ০.১৩ | ০.১ | ৭ |
কাচ ও সিরামিক | ০.২৫ | ০.২ | ১১ |
কাঠ | ০.১৬ | - | - |
বাগানের ময়লা | ১১ | - | ৪ - ৬ |
অন্যান্য | ৫ | ৭ | ৩ |
জলীয় অংশ | ৬৫ | ২২ - ৩২ | ১৫ - ৩৫ |
এই বিশ্লেষণ থেকে লক্ষ্যনীয় যে, বাংলাদেশ বা ভারতের তুলনায় ইউরোপের বর্জ্যে খাবারের আনুপাতিক পরিমাণ কম। এর অর্থ এই নয় যে ইউরোপে খাবার-বর্জ্য কম ফেলা হয়, বরং, অন্যান্য বর্জ্য যেমন: কাগজ ও কাগজজাত সামগ্রী, কাচ ও সিরামিক, ধাতব পদার্থ – এগুলো এই অঞ্চলের চেয়ে অনেক বেশি ফেলা হয় বলে অণুপাতের হিসাবে খাদ্য-জাত পদার্থের পরিমাণ কমে যায়। বাংলাদেশ বা ভারতের মত উন্নয়নশীল দেশসমূহে অর্থনৈতিক কারণেই এই জাতীয় পদার্থগুলোর ব্যবহার কম, তাছাড়া বর্জ্য হিসেবে ফেলার বদলে পুনরায় ব্যবহারের জন্য ভাঙ্গারির দোকানে দিয়ে দেয়া হয় বলেও ময়লা হিসেবে এগুলোকে ডাস্টবিনে তেমন দেখা যায় না। সুতরাং এলাকাভেদে ময়লার আংশিক অণুপাত ভিন্ন হয়, এবং স্বাভাবিকভাবেই এই বৈশিষ্ট্যের কারণে ময়লা ফেলা ও ব্যবস্থাপনার লাগসই প্রযুক্তি/উপায় ভিন্ন হবে।
যদি আবর্জনা থেকে যান্ত্রিক উপায়ে বা ছাঁকনির/চালুনির সাহায্যে কিংবা বৈদ্যুতিক চুম্বকের সাহায্যে পূণর্ব্যবহারযোগ্য ময়লা আলাদা করা হয় তাহলে তার জন্য বর্জ্য-কণার আকার সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। সাধারণভাবে, প্রতি একক ওজনের ময়লাতে বড় আকারের তুলনায় ছোট আকারের কণার সংখ্যা বেশি থাকে।
জলীয় অংশ বের করার জন্য আংশিক বিশ্লেষণে আলাদা করা আবর্জনার ভাগগুলিকে ওভেনে শুকিয়ে আবার ওজন নেয়া হয়। তারপর, হারানো ওজনকে প্রথমের ওজনের শতকরা অংশ হিসেবে প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ
% জলীয় অংশ = ১০০ × (প্রাথমিক ওজন – শুকানোর পরের ওজন)/প্রাথমিক ওজন
এটা গেল নির্দিষ্ট অংশের/উপাদানের জলীয় অংশ নির্ণয়ের কৌশল। ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় ময়লার উপাদানগুলোর অণুপাত ভিন্ন হলেও আগের হিসাব করা প্রতি ধরনের/উপাদানের উপাত্ত থেকে পরীক্ষা ছাড়াই সামগ্রিক জলীয় অংশ বের করার যায়। এজন্য প্রতিটি উপাদানের জলীয় অংশ থেকে সেটা শুকালে কত ওজন হবে সেটা বের করা হয়। তারপর সম্পূর্ণ ময়লার শুকানো-ওজনকে মোট ওজন দিয়ে ভাগ করা হয়। একটা উদাহরণ দেখুন -
১০০০ কেজি আবর্জনা কে আংশিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে:
আবর্জনার উপাদান | আংশিক বিশ্লেষণে প্রাপ্ত ওজন | জলীয় অংশ | হিসাব করা শুকনা ওজন |
---|---|---|---|
খাবার বর্জ্য | ১৫০ কেজি | ৭০% | ৪৫ কেজি |
কাগজ | ৪৫০ কেজি | ৬% | ৪২৩ কেজি |
কার্ডবোর্ড | ১০০ কেজি | ৫% | ৯৫ কেজি |
প্লাস্টিক | ১০০ কেজি | ২% | ৯৮ কেজি |
বাগানের ময়লা | ১০০ কেজি | ৬০% | ৪০ কেজি |
কাঠ | ৫০ কেজি | ২০% | ৪০ কেজি |
টিনের ক্যান | ৫০ কেজি | ২% | ৪৯ কেজি |
মোট শুকনা-ওজন = | ৭৯০কেজি। |
সুতরাং, সামগ্রিক আবর্জনার % জলীয় অংশ = ১০০ × (১০০০ – ৭৯০)/১০০০ = ২১%
আবর্জনা নিষ্কাশনের কার্যদক্ষতা বৃদ্ধি করার জন্য জলীয় অংশের হিসাব থাকাটা জরুরী। যদি ময়লা পুড়ানো হয়, তাহলে সেই ময়লাতে আগুন ধরানোর আগে শুকাতে কতটুকু সময় লাগবে সেটা হিসাব করা যায় এবং সেই হিসেবে চুল্লীতে ময়লা দেয়ার সর্বোৎকৃষ্ট হার বের করা যায়। এছাড়া ঐ ময়লার তাপ-মূল্য কত সেটাও আনুমানিক হিসাব করা যায়। ময়লার কিছু অংশ দিয়ে যদি কম্পোস্ট-সার বানানো হয় তাহলেও কম্পোস্ট তৈরির জন্য সর্বোৎকৃষ্ট জলীয় অণুপাত রক্ষার জন্য কতটুকু শুকনা বস্তু মিশাতে হবে কিংবা কতটুকু পানি মিশাতে হবে তা হিসেব করে বের করা যায়। এছাড়াও বর্জ্যভূমিতে ময়লা ফেলা হলে সেখান থেকে কতটুকু নির্যাস বের হবে সেটাও অণুমান করা সহজ হয় এবং সেই অণুপাতে বর্জভূমির নিচ থেকে নির্যাস বের করার জন্য পাম্প চালানোর হার নির্ণয় করা যায়।
বর্জ্যের ঘনত্ব নির্ণয়ের জন্য আংশিক বিশ্লেষণ করা উপাদানগুলোর ওজন নেয়ার পাশাপাশি এগুলোর আয়তনও মাপা হয়। তারপর ওজনকে আয়তন দিয়ে ভাগ করলেই ঘনত্ব পাওয়া যায়। প্রতিটি উপাদানের ঘনত্ব থেকে পূর্বের উদাহরণের মত করেই যে কোন অণুপাতে মিশানো ময়লার ঘনত্ব বের করা সম্ভব।
মূলত বর্জ্য পরিবহন এবং নিষ্কাশনের জন্য ময়লার ঘনত্ব জানা খুব দরকার। ময়লা নেয়ার প্রতিটি গাড়ির নির্দিষ্ট ভারবহন ক্ষমতা থাকে। এছাড়া গাড়িগুলোর আকারের সীমাবদ্ধতাও থাকে। কোন এলাকায় প্রতিদিন কী পরিমাণ (ওজন হিসেবে) ময়লা উৎপন্ন হয় সেটা জানা থাকলে এবং ময়লার আংশিক বিশ্লেষণ থেকে এর ঘনত্ব জানা থাকলে ঐ ময়লা সংগ্রহ করতে নির্দিষ্ট আকারের ও ক্ষমতার কতগুলো ট্রাক লাগবে সেটা ময়লা ব্যবস্থাপনাকারী সংস্থা নির্ধারণ করতে পারে।
কোন কোন জায়গায় ময়লা সংগ্রাহক গাড়ির মধ্যে ময়লাকে চেপে আয়তন কমিয়ে ফেলার যন্ত্র থাকে। সেসকল ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট আকারের প্রতিটি গাড়িতে কতটুকু ময়লা আনা হচ্ছে সেটা ঘনত্বের উপাত্ত থেকেই হিসাব করা হয়। কত টন ময়লা আনা বা নিষ্কাশিত হল সেই অনুযায়ী ময়লা ব্যবস্থাপনাকারী সংস্থাকে মূল্য পরিশোধ করা হয়ে থাকে। এছাড়া ঐ ময়লা ফেলতে বর্জ্যভূমির আয়তন কত বড় হওয়া উচিত বা নির্দিষ্ট আকারের বর্জভূমিতে কতদিন যাবৎ ময়লা ফেলা যাবে সেটা নির্ধারণ করতেও ঘনত্বের উপাত্ত থাকা খুব জরুরী।
পরিবেশের অবনমন রোদ মানব শরীরে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে মুক্তি জীব বৈচিত্র রক্ষা ইত্যাদির উদ্দেশ্য বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ, উপযুক্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থের পুনর্ব্যবহার, নতুন সম্পদ সৃষ্টি, বর্জ্যের যথাযথ সদ ব্যবহার ইত্যাদি সম্মিলিত প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বলে।
আবর্জনা থেকে বিকল্প উপায়ে শক্তি আহরণ করতে হলে এটার রাসায়নিক বৈশিষ্ট খুব ভালভাবে জেনে রাখা জরুরী। এই উদ্দেশ্যে যেই রাসায়নিক বিশ্লেষণগুলো করা হয় তা সংক্ষেপে নিম্নরূপ:
বিভিন্ন কারণে সময়ের সাথে সাথে কোন এলাকা থেকে উৎপন্ন ময়লার বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হতে পারে। পরিবর্তনের কারণগুলোকে সংক্ষেপে নিম্নলিখিত ভাবে লেখা যায়:
. আবর্জনার উৎস সম্বন্ধে আমরা বলতে পারি আবর্জনা কল-কারখানা পুরনো জলাশয় এবং শহরের নর্দমার ড্রেন ইত্যাদি জায়গা আবর্জনা উৎস হিসেবে আমরা ধরতে পারি, বর্তমানে আমরা নিজেদের অসচেতন এর ফলে নানা রকম সামাজিক অনুষ্ঠানে নানা রকম সামগ্রী নিজেরা সঠিক জায়গায় না ফেলার কারণে সেখান থেকেও কিন্তু অনেক আবর্জনা সৃষ্টি হয়ে চলেছে যেমন বেঁচে যাওয়া খাবার এবং প্লাস্টিকের পাতা আমরা সঠিক জায়গায় ফেলছি না এর কারণ ই আবর্জনা সৃষ্টি আর দিনকে দিন বেড়ে চলেছে ফলে বর্তমানে এই আবর্জনা এবং দুর্গন্ধ এ কারণে সমাজে অনেক রোগ ছড়িয়ে পড়ছে
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.