Loading AI tools
স্পেনীয় অভিনেতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হোসে আন্তোনিও ডোমিনগেজ বান্দেরাস (ইংরেজি: José Antonio Domínguez Banderas) (জন্ম: ১০ আগস্ট, ১৯৬০), যিনি মূলত পরিচিত আন্তোনিও বান্দেরাস নামে, একজন স্পেনীয় অভিনেতা এবং গায়ক। ১৯ বছর বয়সে তিনি তার অভিনয় জীবন শুরু করেন স্পেনীয় পরিচালক পেদ্রো আলমোদোবারে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এরপর তিনি বেশ কিছু দর্শকনন্দিত হলিউড চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হল এভিটা, ফিলাডেলফিয়া (১৯৯৩), ইন্টারভিউ উইথ দ্য ভ্যাম্পায়ার (১৯৯৪), দেসপারেদো (১৯৯৫), অ্যাসাসিনস (১৯৯৫), দ্য মাস্ক অব জরো (১৯৯৮), স্পাই কিডস (২০০১), ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মেক্সিকো (২০০৩) টেক দ্য লিড (২০০৬), এবং দি এক্সপান্ডেবলস থ্রি (২০১৪)। এছাড়াও বান্দেরাস শ্রেক চলচ্চিত্র ধারাবাহিকে "পুশ ইন বুটস" এবং নাসনেক্স টিভি বিজ্ঞাপনে "বি" চরিত্রের জন্য কণ্ঠ দিয়েছেন।
আন্তোনিও বান্দেরাস | |
---|---|
জন্ম | হোসে আন্তোনিও ডোমিনগেজ বান্দেরাস আগস্ট ১০, ১৯৬০ |
পেশা | অভিনেতা, পরিচালক, কণ্ঠশিল্পী |
দাম্পত্য সঙ্গী | আনা লেজা (১৯৮৭-১৯৯৫) মেলানি গ্রিফিথ (১৯৯৬-২০১৫) |
২০০৩ সালে নাইন নাটকে গিদো কন্তিনি চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তার মঞ্চে অভিষেক ঘটে। এই কাজের জন্য তিনি একটি টনি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং একটি ড্রামা ডেস্ক পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি অ্যান্ড স্টারিং পাঞ্চো ভিলা অ্যাজ হিমসেল্ফ (২০০৪) টেলিভিশন চলচ্চিত্রে এবং জিনিয়াস (২০১৮) মিনি ধারাবাহিকের দ্বিতীয় মৌসুমে অভিনয় করে দুটি প্রাইমটাইম এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
২০১৯ সালে তিনি দোলোর ই গ্লোরিয়া চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার অর্জন করেন এবং প্রথমবারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার ও সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
হোসে আন্তোনিও ডোমিনগেজ বান্দেরাস[1] ১৯৬০ সালের ১০ আগস্ট স্পেনের মালাগা শহরের আন্দালুসিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হোসে ডোমিনগেজ ছিলেন সিভিল গার্ডের একজন পুলিশ অফিসার এবং মাতা আনা বান্দেরা গালেগো ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক।[2][3] ফ্রান্সিস্কো হাভিয়ের নামে তার এক ভাই রয়েছে।[3] তার পারিবারিক নাম ডোমিনগেজ হলেও মঞ্চ নাটকের জন্য তিনি তার মায়ের শেষ নাম বান্দেরাস গ্রহণ করেন।[4] শৈশবে তিনি একজন পেশাদার ফুটবলার হতে চেয়েছিলেন কিন্তু ১৪ বছর বয়সে পা ভেঙ্গে গেলে তার এই স্বপ্নে ভাটা পরে। পরে তিনি প্রদর্শন কলায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং এআরএ থিয়েটার স্কুলে এবং পরে কলেজ অব ড্রামাটিক আর্টে ভর্তি হন। মঞ্চে তার কাজ এবং পথ নাট্যে তার কাজ তাকে স্প্যানিশ ন্যাশনাল থিয়েটারে জায়গা করে নিতে সাহায্য করে।[5]
লা মভিদা মাদ্রিলেনা নামে স্পেনের স্বৈরাচার পরবর্তী সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সময় বান্দেরাস ছোটখাট দোকানে কাজ করতে শুরু করেন।[6] মঞ্চে কাজ করার সময়, বান্দেরাস স্প্যানিশ পরিচালক পেদ্রো আলমোদোভারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে তাকে ল্যাবরিন্থ অব প্যাশন ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। পাঁচ বছর পরে তিনি একই পরিচালকের ল অব ডিজায়ার ছবিতে কাজ করেন। এতে তিনি একজন সমকামী চরিত্রে অভিনয় করেন এবং এই চরিত্রের জন্য তাকে প্রথম অন্য কোন পুরুষের সাথে চুম্বন দৃশ্যে দেখা যায়। বান্দেরাস পরে আলমোদোভারের ১৯৮৬ সালের ম্যাটাডোর ছবিতে কাজ করেন। পরে একই পরিচালকের আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত উইমেন অন দ্য ভার্জ অব আ নার্ভাস ব্রেকডাউন (১৯৮৮) ছবিতে অভিনয় করেন। দুই বছর পর বান্দেরাস আলমোদোভারের বিতর্কিত টাই মি আপ! টাই মি ডাউন ছবিতে মানসিক রোগী চরিত্রে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন।[5] এই ছবির সাফল্য তাকে হলিউডে প্রবেশ করতে সাহায্য করেছিল। ১৯৮০-এর দশকে আলমোদোভারের চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করার জন্য আলমোদোভারকে বান্দেরাসের আন্তর্জাতিক কর্মজীবন শুরুর কৃতিত্ব দেওয়া হয়।[7]
১৯৯১ সালে ম্যাডোনা বান্দেরাসকে হলিউডে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরের বছর, তখনও ইংরেজি ভাষা খুব বেশি বলতে না পারলেও, তিনি মার্কিন চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। বান্দেরাসের প্রথম মার্কিন নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র দ্য মাম্বো কিং (১৯৯২) এ একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। তার সমস্ত লাইনগুলো ধীরে ধীরে শেখা সত্ত্বেও সমালোচকগণ এই ছবিতে তার অভিনয়ের প্রশংসা করেন।[8]
বান্দেরাস মূলধারার মার্কিন দর্শকের কাছে পৌঁছান ১৯৯৩ সালে ফিলাডেলফিয়া চলচ্চিত্রে এইডস-আক্রান্ত আইনজীবী অ্যান্ড্রু বেকেট (টম হ্যাঙ্কস) এর সমকামী প্রেমিক চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এই ছবির সাফল্যের সাথে সাথে বান্দেরাস আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেন। পরের বছর তিনি নীল জর্ডানের ইন্টারভিউ উইথ দ্য ভ্যাম্পায়ার ছবিতে ব্র্যাড পিটের সাথে অভিনয় করেন।[5]
১৯৯৫ সালে তিনি কয়েকটি প্রধান হলিউডের ছবিতে অভিনয় করেন, যার মধ্যে রবার্ট রদ্রিগেজ পরিচালিত চলচ্চিত্র দেসপারেদো এবং অ্যাকশন চলচ্চিত্র অ্যাসাসিন্স এ খল অভিনেতা হিসেবে সিলভেস্টার স্ট্যালোনের সাথে অভিনয় করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি অ্যান্ড্রু লয়েড ওয়েবার এবং টিম রাইসের সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্র ইভিটাতে ম্যাডোনার সাথে অভিনয় করেন। ১৯৭৮ সালের ওয়েস্ট এন্ড প্রোডাকশনের ছবির পুনঃনির্মিত এই ছবিতে তিনি ডেভিড এ্যাসেক্স অভিনীত চরিত্রের ভূমিকায় অভিনয় করেন করেন। ১৯৯৮ সালের চলচ্চিত্র দ্য মাস্ক অব জরোতে তিনি কিংবদন্তি মুখোশধারী তরবারিচালক জরোর ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯৯৯ সালে তিনি নর্থম্যানদের সাথে মানুষখেকো দানবদের যুদ্ধে এক মুসলমানের বন্দী হওয়ার ঘটনা নিয়ে নির্মিত থার্টিনথ ওয়ারিয়র ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৯৯ তিনি পরিচালক আত্মপ্রকাশ করেন ক্রেজি ইন অ্যালাবামা ছবির মধ্য দিয়ে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন তার প্রাক্তন স্ত্রী মেলানি গ্রিফিথ।
২০০১ সালে তিনি রবার্ট রদ্রিগেজের সাথে জুটি গড়েন। রবার্ট তাকে স্পাই কিডস চলচ্চিত্র ত্রয়ীতে অভিনয় করার সুযোগ দিয়েছিলেন। একই বছর তিনি অ্যাঞ্জেলিনা জোলির বিপরীতে মাইকেল ক্রিসফারের অরিজিনাল সিন ছবিতে অভিনয় করেন। ২০০২ সালে তিনি রেবেকা রমিজন-স্ট্যামোসের বিপরীতে ব্রায়ান দে পালমা পরিচালিত ফেমমে ফাতলে ছবিতে এবং সালমা হায়েকের বিপরীতে জুলি টেইমরের ফ্রিদা ছবিতে অভিনয় করেন।
২০০৩ সালে তিনি জনি ডেপ এবং সালমা হায়াকের সাথে ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মেক্সিকোর সর্বশেষ কিস্তিতে অভিনয় করেন। পরের বছর তিনি শ্রেক ধারাবাহিকের দ্বিতীয় কিস্তি শ্রেক ২ ছবিতে পুস ইন বুটস চরিত্রের জন্য কণ্ঠ দেন। ২০০৫ সালে বান্দেরাস পুনরায় জরো চরিত্রে দ্য লিজেন্ড অব জরো ছবিতে অভিনয় করেন। তবে ছবিটি দ্য মাস্ক অব জরোর মত সাফল্য পায় নি। একই বছর তিনি হলিউড ওয়াক অব ফেমে ভূষিত হন।
২০০৬ সালে তিনি টেক দ্য লিড ছবিতে একজন বল নৃত্য শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করেন। একই বছরে তিনি তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র এল কামিনো দে লস ইংলেস পরিচালনা করেন। এটি আন্তোনিও সোলেরের একটি উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। ২০০৬ সালের ১৪ অক্টোবর তিনি এলএ লাতিনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব "গাবি" থেকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন।[9] ২০০৭ সালে তিনি শ্রেক ধারাবাহিকের তৃতীয় কিস্তি শ্রেক দ্য থার্ড ছবিতে পুনরায় পুস ইন বুটস চরিত্রের জন্য কণ্ঠ দেন।[10] একই চরিত্রের জন্য তিনি ২০১০ সালের শ্রেক ফরেভার আফটার এবং ২০১১ সালের পুস ইন বুটস চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেন।[11]
২০১১ সালে পেদ্রো আলমোদোবারের পরিচালনায় বান্দেরাসের প্রত্যাবর্তন ঘটে রহস্য-থ্রিলার দ্য স্কিন আই লিভ ইন ছবিতে। আলমোদোভারের ছবিতে অভিনয় করেই বান্দেরাস আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করেন। ১৯৯০ সালে টাই মি আপ! টাইম মি ডাউন! ছবির পর তার দুজন একসাথে কাজ করে নি। স্কিন আই লিভ ইন তিনি তার হলিউডের ছবিতে অভিনয় করা "ল্যাটিন প্রেমিক" চরিত্রে অভিনয়ের ধাঁচ থেকে বেড়িয়ে আসেন এবং একজন প্লাস্টিক সার্জন হিসাবে অভিনয় করেন, যে তার মেয়ের ধর্ষণের পর প্রতিশোধ-পরায়ণ হয়ে ওঠে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস অনুসারে এটি বান্দেরাসের সাম্প্রতিক সময়ে করার তার সবচেয়ে শক্তিশালী চরিত্র।[7]
২০১৮ সালে তিনি আলমোদোবার পরিচালিত স্পেনীয় চলচ্চিত্র দোলোর ই গ্লোরিয়া-এ পেনেলোপে ক্রুজের সাথে অভিনয় করেন। বান্দেরাস তার এই কাজের জন্য ২০১৯ সালের ২৫শে মে কান চলচ্চিত্র উৎসব হতে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার অর্জন করেন।[12][13] এছাড়া তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কার ও সেরা নাট্য চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারে মনোনীত হন।[14][15]
বান্দেরাস ১৯৮৬ সালে (আরেক সূত্র মতে ১৯৮৮ সালে) আনা লেজাকে বিয়ে করেন এবং ১৯৯৬ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়।[2] ১৯৯৫ সালে টু মাচ ছবির শুটিংকালে বান্দেরাসের তার সহ-অভিনেত্রী মেলানি গ্রিফিথের সাথে পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।[6][16] তার ১৯৯৬ সালের ১৪ মে লন্ডনে বিয়ে করেন।[17] তাদের এক কন্যা স্টেলা দেল কারমেন বান্দেরাস। স্টেলা ১৯৯৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।[18] স্টেলাকে বান্দেরাস পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ক্রেজি ইন অ্যালাবামা (১৯৯৯) গ্রিফিথের সাথে দেখা যায়।[19] ২০০২ সালে বান্দেরাস-গ্রিফিথ দম্পতি তাদের মানবহিতৌষী কাজের জন্য স্টেলা অ্যাডলার অ্যাঞ্জেল পুরস্কার লাভ করেন।[20]
২০০০ সালে বান্দেরাস ডিকিনসন কলেজ থেকে সম্মাননা ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১০ সালে তিনি মালাগা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট সম্মাননা লাভ করেন।[21]
বছর | শিরোনাম | ভূমিকা | টীকা |
---|---|---|---|
২০০৩ | নাইন | গুইদু কন্তিনি | শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য থিয়েটার ওয়ার্ল্ড পুরস্কার[22] সঙ্গীতধর্মী মঞ্চনাটকে অসাধারণ অভিনেতার জন্য ড্রামা ডেস্ক পুরস্কার[23] মনোনীত – সঙ্গীতধর্মী মঞ্চনাটকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার অভিনয়ের জন্য টনি পুরস্কার[24] |
২০১২ | জোরবা | আলেক্সি জোরবা |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.