আইনের শাসন
From Wikipedia, the free encyclopedia
আইনের শাসন একটি রাজনৈতিক আদর্শ যা অনুযায়ী কোনও দেশ, রাষ্ট্র বা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত সব নাগরিক বা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলি একই আইনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে, এবং এর মধ্যে আইনপ্রণেতা ও নেতারাও অন্তর্ভুক্ত।[2][3] সরল ভাষায় বলা যায় যে "কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়"।[4] আইনের শাসন পরিভাষাটি সংবিধানবাদ ও রেখটসষ্টাট মতবাদগুলির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। এটি এক ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নির্দেশ করে, কোনও নির্দিষ্ট আইনি শাসনকে নয়।[5][6][7] আইনের শাসন হল সেই কার্যপদ্ধতি, প্রক্রিয়া, প্রতিষ্ঠান, চর্চা ও সামাজিক আদর্শ যেখানে সকল নাগরিক আইনের চোখে সমান এবং যেখানে ক্ষমতার যথেচ্ছ প্রয়োগের স্থান নেই।[8]
যুক্তরাজ্যে ১৬শ শতক থেকে আইনের শাসন ধারণাটির ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। ১৭শ শতকে স্কটীয় ধর্মতাত্বিক স্যামুয়েল রাদারফোর্ড রাজাদের দৈব অধিকারের বিরুদ্ধে যুক্তিপ্রদান করতে গিয়ে এই পরিভাষাটি ব্যবহার করেন।[9] জন লক লেখেন যে সমাজে মুক্তি বলতে বোঝায় যে কেবলমাত্র আইনসভার রচিত আইনসমূহ সবার উপর প্রযোজ্য হবে এবং অন্য সকল ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি সরকারি ও বেসরকারি বিধিনিষেধ থেকে মুক্ত থাকবে। ১৯শ শতকে ব্রিটিশ আইনবেত্তা এ ভি ডাইসি ধারণাটিকে আরও জনপ্রিয় করতে সাহায্য করেন। তবে আইনের শাসনের মূলনীতিটি প্রাচীনকাল থেকেই স্বীকৃত ছিল। গ্রিক দার্শনিক আরিস্তোতলেস (অ্যারিস্টটল) লেখেন যে "একজন নাগরিকের চেয়ে আইন শাসন করলেই সঠিক হবে; এই মূলনীতি অনুযায়ী যদি কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে পরম ক্ষমতা দেওয়া সুবিধাজনক হয়, তাহলে তাদেরকে শুধুমাত্র আইনের অভিভাবক ও সেবক হিসেবেই নিযুক্ত করা উচিত।"[10]
আইনের শাসন অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের অধীন, যার মধ্যে আইনপ্রণেতা, আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা ও বিচারকেরাও অন্তর্ভুক্ত।[11] এর বিপরীত ধারণাটি হল ব্যক্তির শাসন, যেখানে একজন ব্যক্তি বা একটি ব্যক্তিদল ইচ্ছামত শাসন করে।[12]