অস্ট্রেলিয়া (মহাদেশ)
একটি মহাদেশ / From Wikipedia, the free encyclopedia
'অস্ট্রেলিয়ার মহাদেশীয় পাতের উপর অবস্থিত ভূখণ্ডগুলিকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ গঠিত। অস্ট্রেলিয়া নামক দেশ ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের পার্থক্য নির্দেশ করার জন্য কখনও কখনও পারিভাষিক সাহুল, অস্ট্রেলিনিয়া অথবা মেগানেশিয়া নামগুলিও ব্যবহৃত হয়। অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ড, তাসমানিয়া এবং পাপুয়া নিউ গিনি ও দু’টি ইন্দোনেশীয় প্রদেশ নিয়ে গঠিত নিউ গিনি দ্বীপ এই মহাদেশীয় ভূখণ্ডের অন্তর্গত।[1] ওশেনিয়ার ভৌগোলিক অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত এই মহাদেশটি ইংরেজি ধারণা অনুযায়ী সাতটি প্রথাগত মহাদেশের অন্যতম।
আয়তন | ৮৬,০০,০০০ কিমি২ (৩৩,০০,০০০ মা২) (৭ম) |
---|---|
জনসংখ্যা | ৩৮,০০০,০০০ (২০১৯-এ অস্ট্রেলিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি, পাপুয়া ও পশ্চিম পাপুয়ার আনুমানিক জনসংখ্যা, ৬ষ্ঠ) |
জনঘনত্ব | ৪.২/কিমি২ (১১/বর্গমাইল) |
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ | অস্ট্রেলীয় |
দেশসমূহ | ৩ (অস্ট্রেলিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি ও ইন্দোনেশিয়ার অংশবিশেষ) |
ভাষাসমূহ | ইংরেজি, ইন্দোনেশীয়, টোক পিসিন, হিরি মোটু, ২৬৯টি আদিবাসী পাপুয়ান ও অস্ট্রোনেশীয় ভাষা এবং প্রায় ৭০টি আদিবাসী অস্ট্রেলীয় ভাষা |
সময় অঞ্চলসমূহ | জিএমটি+১০, জিএমটি+৯.৩০, জিএমটি+৮ |
ইন্টারনেট টিএলডি | .au, .pg and .id |
বৃহত্তম শহরসমূহ | জনসংখ্যা অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ার শহরগুলির তালিকা জনসংখ্যা অনুযায়ী পাপুয়া নিউ গিনির শহরগুলির তালিকা |
এই মহাদেশটি একটি মহাদেশীয় সোপান নিয়ে গঠিত। এই সোপানটি একাধিক অগভীর সমুদ্র দ্বারা নিমজ্জিত। এই সমুদ্রগুলি সোপানটিকে একাধিক ভূখণ্ডে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ, আরাফুরা সাগর ও টরেস প্রণালী কর্তৃক নিউ গিনি এবং বাস প্রণালী কর্তৃক তাসমানিয়া অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ১৮,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ প্লেইস্টোসিন হিমযুগে (শেষ হিমবাহ ম্যাক্সিমাম সহ) যখন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা কম ছিল, তখন এই অঞ্চলগুলি শুষ্ক ভূখণ্ড দ্বারা সংযুক্ত ছিল। বিগত ১০,০০০ বছরের সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নিম্নভূমিগুলি প্লাবিত হয় এবং কম উচ্চতায় অবস্থিত শুষ্ক থেকে প্রায়-শুষ্ক মূল ভূখণ্ড এবং নিউ গিনি ও তাসমানিয়ার দু’টি প্রকাণ্ড দ্বীপের সৃষ্টি হয়।[2]
ইন্দো-অস্ট্রেলীয় পাতের (অধিকতর নির্দিষ্টভাবে বললে অস্ট্রেলীয় পাতের) অংশ অস্ট্রেলিয়া মহাদেশটি হল পৃথিবীর নিম্নতম, মসৃণতম ও প্রাচীনতম ভূখণ্ড। [3] এই ভূখণ্ডের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসও তুলনামূলকভাবে সুস্থিত। নিউজিল্যান্ড অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের অংশ নয়। এটি জিল্যান্ডিয়া নামে একটি পৃথক নিমজ্জিত মহাদেশের অংশ।[4] তবে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া উভয়েই অস্ট্রালেশিয়া নামে পরিচিত ওশেনিয়ান উপ-অঞ্চলের অংশ। অন্যদিকে নিউ গিনি মেলানেশিয়ার অংশ।
গোড়ায় ওশেনিয়া শব্দটি বিশ্বের একটি "বৃহৎ বিভাগ" হিসাবে প্রযোজ্য হত। ১৯৫০-এর দশকে এটির পরিবর্তে অস্ট্রেলিয়ার ধারণাটি গৃহীত হয়।[5] বর্তমানে ওশেনিয়া শব্দটি প্রায়শই অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ, জিল্যান্ডিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত ও সপ্ত-মহাদেশ মডেলের অন্তর্গত নয় এমন দ্বীপগুলি নিয়ে গঠিত একটি অঞ্চলকে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।[6][7]
এই মহাদেশের অন্তর্গত অন্যতম দেশ পাপুয়া নিউ গিনি সাংস্কৃতিক ও ভাষাগতভাবে সারা বিশ্বে সর্বাধিক বৈচিত্র্যসম্পন্ন দেশগুলির অন্যতম।[8] এই দেশের জনসংখ্যার মাত্র ১৮ শতাংশ শহরাঞ্চলের অধিবাসী।[9] ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম পাপুয়া প্রদেশে আনুমানিক ৪৪টি বিচ্ছিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বাস।[10] এই মহাদেশের বৃহত্তম ভূখণ্ড অস্ট্রেলিয়া উচ্চ হারে নগরায়িত দেশ।[11] এই দেশটি বিশ্বের ১৪শ বৃহত্তম অর্থনীতি। মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী এই দেশটির স্থান বিশ্বে ২য়।[12][13] এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসী জনসংখ্যা বিশ্বের মধ্যে ৯ম স্থান অধিকার করে।[14][15] ৫০,০০০ থেকে ৩০,০০০ বছর আগে অস্ট্রেলিয়া, নিউ গিনি এবং তার পূর্বদিকের বড়ো দ্বীপগুলিতে প্রথম মানুষের জনবসতি স্থাপিত হয়েছিল।[16]