Loading AI tools
জার্মান ঔপন্যাসিক, কবি এবং প্রাবন্ধিক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
হের্টা মুলার[টীকা 1](জার্মান: Herta Müller) (জন্ম: ১৭ই আগস্ট, ১৯৫৩) রোমানিয়ায় বংশোদ্ভূত জার্মান ঔপন্যাসিক। তিনি ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। মুলার একাধারে কথাসাহিত্যিক, প্রবন্ধকার এবং কবি হিসেবে পরিচিত। তার জন্ম রোমানিয়ায়। রোমানিয়ায় তার ওপর সরকারি পীড়নের কারণে ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রোমানিয়া থেকে জার্মানি চলে আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি তিমিসোয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ে জর্মণ ও রোমানীয় সাহিত্য অধ্যয়ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই তিনি রোমানীয় একনায়ক চসেস্কুর বিরোধিতা করেন এবং মানুষের চিন্তা ও মত-প্রকাশের স্বাধীনতার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। ২০০৯-এ প্রকাশিত হয়েছে তার সর্বশেষ উপন্যাস ডি আটেমশাউকেল।
হের্টা মুলার | |
---|---|
জন্ম | নিৎসকিডর্ফ, তিমিশ কাউন্টি, রোমানিয়া | ১৭ আগস্ট ১৯৫৩
পেশা | লেখক |
জাতীয়তা | জার্মান, রোমানীয় |
সময়কাল | ২০ শতকের শেষ থেকে–২১ শতকের শুরু পর্যন্ত |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | নোবেল সাহিত্য পুরস্কার ২০০৯ |
দাম্পত্যসঙ্গী | রিশার্ড ভাগনার |
রোমানিয়ার একটি জার্মান-প্রধান ছোট্ট গ্রামে তার জন্ম ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ আগস্ট।[1] জীবিকার অর্জন শুরু হয় একটি ট্র্যাক্টর নির্মাতা কারখানার ম্যানুয়াল বা নির্দেশিকা অনুবাদের কাজের মধ্য দিয়ে। এরই মধ্যে সিক্রেট পুলিশ তাকে গুপ্তচরবৃত্তির প্রস্তাব দেয়। তিনি এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে শুরু হয় নিপীড়নমূলক আচরণ। সিক্রেট পুলিশের নির্দেশে তাকে অফিসে কাজ করতে দেয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত তাকে ছাঁটাই করা হয়। গুজব ছড়ানো হয় তিনি সিক্রেট পুলিশের গুপ্তচর। তার বাসা তল্লাশী করা হয়। নানাভাবে হেনস্থার শিকার হয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। এ সময় লেখালেখির মধ্যে একটি যাপনযোগ্য জীবনের ঠিকানার সন্ধান লাভ করেন। এভাবেই তিনি একজন লেখিকায় পরিণত হন।[2] ১৯৮২ সাল প্রকাশ করেন প্রখম গ্রন্থ।[1]
১৯৮৭-তে মুলার রোমানিয়া থেকে জামার্নিতে অভিবাসী হন। তা স্বত্ত্বেও রোমানিয়ার জীবন এখনও তার সাহিত্যিক চিন্তা-চেতনার প্রধান উপজীব্য। মুলারের শৈশব-যৌবনের ৩০টি বছর কেটেছিল একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেই তিনি চিন্তা ও প্রকাশের স্বাধীনতার আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, "আমি গল্প খুঁজি না, গল্প আমাকে খুজেঁ নেয়"। অন্যত্র বলেছেন, "আমি মুলত নিজের জন্য লিখি"। লেখার মধ্য দিয়েই বাস্তবতার প্রকৃত রূপটি সঠিকভাবে উপলব্ধ হয়। ফলে তার অধিকাংশ কাহিনীতে আত্মজীবনীমূলক বৈশিষ্ট্য পরিস্ফুট। অন্যদিকে তার ভাষাভঙ্গী ও কাহিনী বিন্যাস জটিল। তার মাতৃভাষা জার্মান হলেও ভাষাশৈলীতে রোমানীয় ভাষা-সংস্কৃতির প্রভাব প্রত্যক্ষ হয়। লেখালেখির মধ্যেই জীবনধারণ করে আছেন মুলার। ইউরোপের রাজনীতি ও যুদ্ধগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা তাকে ভাবায়। মিলোসেভিচকে নিয়ে তার মন্তব্য, "এ এমন এক লোক, যেখানেই সে যায়, নতুন নতুন সমাধিক্ষেত্র বানায়।"[3]
মুলারের প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা ২০ (২০০৯)। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম গ্রন্থ প্রকাশিত হয়; এটি ছিল ১৫টি ছোট গল্পের সঙ্কলন যার শিরোনাম নিডারুঙেন (Niederungen)।[4] ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে এটি ইংরেজিতে অনূদিত ও প্রকাশিত হয় Nadirs প্রচ্ছদনামে। তার বিভিন্ন গ্রন্থ ইংরেজি, ফরাসি, স্পেনীয় এবং সুয়েডীয় ভাষায় অনূদিত এবং প্রকাশিত হয়েছে।[5]
৮ অক্টোবর ২০০৯ সুইডিশ কমিটি ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের সাহিত্যের নোবেল পুরস্কারের জন্য হের্টা মুলারের নাম ঘোষণা করে। ঘোষণায় বলা হয়, কবিতার একাগ্রতা এবং গদ্যের নিরাবরণতা দিয়ে তিনি উদ্বাস্তু ঊণ্মূল মানুষের জীবনমণ্ডপের চিত্র অঙ্কন করেছেন। আরো বলা হয়, তার ভাষা তুলনারহিত, এবং একনায়কতন্ত্রী রাষ্ট্রব্যবস্থায় মানব জীবনের বাস্তব কাহিনী পাওয়া যায় তার রচনাবলীতে। বিশ্বের সাহিত্য মহলে প্রায় অপরিচিত এবং স্বল্প পঠিত হের্টা মুলারকে নোবলের জন্য মনোনয়ন দেয়ায় বিশ্বব্যাপী প্রশ্ন ওঠে। ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার মূল্যমানের এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচন স্বয়ং হের্টা মুলারকেও বিস্মিত করে।[6] নোবেল কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে এ বৎসর একটি ভোটগ্রহণ প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ১২ অক্টোবর ২০০৯ পর্যন্ত ১১ হাজার ২৯২ জন ভোটদাতার মধ্যে ৯৩ শতাংশ তার কোন লেখাই পড়েননি।[7] ১৯৯৯-এ গুণ্টার গ্রাসের পর তিনিই প্রথম জার্মান যাকে সাহিত্যের জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া হলো।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.