Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বীরাঙ্গনা (রণাঙ্গনের বীর নারী) হল বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা নারীদের জন্য একটি খেতাব।[১][২] ২৪ মে ২০২২ পর্যন্ত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা মাত্র ৪৪৮ জন ।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের প্রায় ২-৪ লক্ষ নিরীহ নারী পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের সহযোগীদের দ্বারা ধর্ষিত হয়।[৩][৪] ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধকালীন ধর্ষিত নারীদের বীরঙ্গনা খেতাব প্রদান করে।[৫] রাষ্ট্রপতি মুজিবুর রহমান "পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত নারীদের যথাযোগ্য সম্মান এবং মর্যাদা" দেবার জন্য বাংলাদেশকে আহ্বান জানান এবং বীরাঙ্গনাদেরকে নিজের মেয়ে হিসেবে আখ্যায়িত করেন।[৬][৭] কিন্ত তা সত্ত্বেও এদের অনেকে আত্মহত্যা করে, অনেকে দেশ ছেড়ে বাইরে গৃহস্থালী কাজের জন্য গমন করেন এবং প্রচুর পরিমাণ বীরাঙ্গনা অপ্রিশিক্ষিত ধাত্রীদের মাধ্যমে গর্ভপাত করানোর সময় মৃত্যুবরণ করেন। এর ফলে সরকার "সেবা সদন" প্রতিষ্ঠা করে তাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ১৯৭২ সালের জানুয়ারী কেন্দ্রীয় মহিলা পূণর্বাসন সংঘ প্রতিষ্ঠা করা হয় যাতে করে এই নিপীড়িত নারীদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যানড প্যারেন্টহুড, দি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাবরশন রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেইনিং সেন্টার এবং ক্যাথলিক চার্চের সহায়তায় কারিগরি এবং মানবিক সমর্থন প্রদান করা যায়।[৮] পরবর্তীতে সরকার তাদের জন্য ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের আয়োজন করে এবং তাদেরকে বিয়ে দেওয়ার জন্য একটি ক্যাম্পেইন চালু করে। এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ বীরাঙ্গনাদের আড়াল করতে চাইছে বলে অভিযোগ ওঠে।[৯] বীরাঙ্গনাদেরকে পরিবার এবং সমাজ থেকে বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে।[১০]
নারী অধিকার কর্মীরা বীরাঙ্গনাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানান।[১১][১২] বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী অ্যাসোসিয়েশন এবং মিতালী হোসেন উচ্চ আদালতে বীরাঙ্গনাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করার জন্য একটি পিটিশন পেশ করেন। ২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারী উচ্চ আদালত বীরাঙ্গনাদের মর্যাদাকে কেন বর্ধিত করা হবে না এ ব্যাপারে সরকারের কাছে জানতে চায়।[১৩] ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ বীরাঙ্গনাদেরকে মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব পাশ করে। ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো ৪৩ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক বলেন যে এখন থেকে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের মতই সমান সুযোগ সুবিধা লাভ করবেন।[১৪]
একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসরদের হাতে নির্যাতিত আরও ১৬ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৭৩তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৬ জুন ২০২১, গেজেট প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর ফলে ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৪১৬ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন। বর্তমানে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪৪৮জন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.