উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জাঞ্জিরা রাজ্য ছিল ভারতের ব্রিটিশ রাজত্বকালীন একটি দেশীয় রাজ্য।[১] এর শাসকরা হাবাশি বংশোদ্ভূত সিদি রাজবংশের ছিল এবং রাজ্যটি বম্বে প্রেসিডেন্সির আধিপত্যের অধীনে ছিল।
জাঞ্জিরা রাজ্য जंजिरा रियासत | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ব্রিটিশ ভারতের দেশীয় রাজ্য জাফরাবাদ এর সাথে যুক্ত (১৭৫৯ - ১৯৪৮) | |||||||
১৪৮৯–১৯৪৮ | |||||||
পতাকা | |||||||
![]() জাঞ্জিরা ১৮৯৬ | |||||||
আয়তন | |||||||
• ১৯৩১ | ৮৩৯ বর্গকিলোমিটার (৩২৪ বর্গমাইল) | ||||||
জনসংখ্যা | |||||||
• ১৯৩১ | ১১০,৩৮৯ | ||||||
ইতিহাস | |||||||
• প্রতিষ্ঠিত | ১৪৮৯ | ||||||
১৯৪৮ | |||||||
| |||||||
বর্তমানে যার অংশ | মহারাষ্ট্র, ভারত |
জঞ্জিরা রাজ্যটি বর্তমান মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার কোঙ্কন উপকূলে অবস্থিত। এই রাজ্যে মুড়ুদ ও শ্রীবর্ধন শহর পাশাপাশি মুড়ুদ-জঞ্জিরা উপকূলীয় গ্রামের ঠিক দূরে মুরুদ-জঞ্জিরা শহর অন্তর্ভুক্ত ছিল যা রাজধানী এবং শাসকদের আবাস ছিল। রাজ্যের আয়তন ছিল ৮৩৯ কিমি 2,( জাফরাবাদ বাদে), এবং ১৯৩১ সালে জনসংখ্যা ছিল ১১০,৩৮৯। জাফরাবাদ, বা জাফরাবাদ রাজ্যটি ৩২০ কিমিঃ উত্তর-উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ছিলবএবং জাঞ্জিরা রাজ্যের নবাবের উপর নির্ভর করতো।
১৪৮৯ সালে আহমদনগর সালতানাতের অধীনে একজন ইথিওপিয়ান জাঞ্জিরা দ্বীপ দখল করে তাঁর শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। এটি সিদ্ধিরা প্রতারণার মাধ্যমে করেছিল। স্থানীয় উপকূলীয় জনপদের কোলি প্রধান রাম পাতিলকে ভোজ উৎসবে খাবারে বিষ প্রয়োগে হত্যা করে। [২][৩][৪][৫][৬][৭] তারা সেই দ্বীপটি দখল করেছিল যেখানে জাঞ্জিরা দুর্গ দাঁড়িয়ে আছে। পরবর্তী শতাব্দীতে শাসকরা বিজাপুর সালতানাতের আধিপত্যের অধীনে থাকেন। সপ্তদশ এবং আঠারো শতকে জাঞ্জিরারা মারাঠা সাম্রাজ্যের বারবার আক্রমণকে সফলভাবে প্রতিহত করেছে।
অটোমান রেকর্ড অনুসারে, অটোমান এবং জাঞ্জিরা থেকে সম্মিলিত একটি বাহিনী ১৫৮৭ সালে ইয়েমেনে একটি পর্তুগিজ বহরের দিকে যাত্রা করেছিল। এই মুহুর্ত থেকে জাঞ্জিরা এই অঞ্চলে পর্তুগিজ প্রভাব প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। [৮]
অটোমান সাম্রাজ্যের সাথে সহযোগিতার আরও রেকর্ড রয়েছে যখন অটোমান নৌবহর আচেহতে অটোমান অভিযানের আগে আচেহ পৌঁছেছিল তখন বাটাক এবং মেরিটাইম দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সাহায্য করার জন্য জঞ্জিরা রাজ্য থেকে ১৫৩৯ সালে ২০০ মালবার নাবিককে অন্তর্ভুক্ত করেছে। [৯]
একই সময়কার রেকর্ড অনুসারে সুলতান আওরঙ্গজেবর দু'টি ফ্রিগেট এবং দুটি বড় যুদ্ধের জন্য জাঞ্জিরা রাজ্যের সিদ্দিকীরা ২০০০ লোক এবং গোলাবারুদ সরবরাহ করেছিলেন। জাহাজটি ১৬৭৭ সালে সিদ্দী কাসিম এবং সিদ্দী সম্বলের কমান্ডে বোম্বে বন্দরে পৌঁছেছিল। [১০] গঞ্জ-ই-সাওয়াই নামে বৃহত্তম মুঘল জাহাজটি ৮০০ বন্দুক এবং ৪০০ জন মুসকির ধরনের সৈন্যবাহিনীও সুরাত বন্দরে অবস্থান নিয়েছিল। [১১]
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি থেকে আরেকটি রেকর্ড যা ১৬৭৩ লিখিত তাতে বলাা হয় যে, সিদ্দী বহর যা বোম্বে শীতকালীন সময় অবস্থান করতো তাতে পাঁচটি ফ্রিগেট এবং দুটি ম্যান অব ওয়ার এর পাশে পনেরটি দখলকারী নৌকা ছিল। কারণ জাঞ্জিরায় সিদ্দীদের শক্তিশালী নৌযুদ্ধের দক্ষতা এবং তাদের বহরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আওরঙ্গজেব বার্ষিক ৪০০,০০০ রুপি প্রদান করতেন।
সিদ্দী প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন অ্যাংরিয়াস নামে মারাঠা কোলি পরিবার [১২] যাদের দক্ষিণ কোঙ্কায় সমুদ্রে দুর্গ এবং জাহাজ ছিল। [১৩]
১৭৩৩ সালে মারাঠা সাম্রাজ্যের পেশোয়া বাজিরাও জঞ্জির সিদ্দীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযান শুরু করেন। বাজিরাওর বাহিনী জাঞ্জিরা দুর্গটি দখল করে নি, যদিও তারা আশেপাশের বেশিরভাগ অঞ্চল দখল করেছিল; একটি অনুকূল চুক্তি মারাঠাদের কার্যত সিদ্দীদের সমস্ত জায়গার উপর পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণ প্রদান করেছিল। [১৩]
ব্রিটিশরা যখন কোঙ্কন অঞ্চলে এসেছিল, জাঞ্জিরার বিরুদ্ধে মারাঠাদের বারবার আক্রমণ বন্ধ হয়েছিল। ১৭৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বোম্বাই প্রেসিডেন্সির ডেকান স্টেটস এজেন্সির অংশ হিসাবে জাঞ্জিরা রাজ্য পরিচালিত হয়েছিল। উনিশ শতকে শাসকরা ১২৩ জনের একটি সামরিক বাহিনী বজায় রেখেছিলেন। [১৪]
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পরে, রাজ্যটি ভারতের সাথে একীভূত হয়।
জাঞ্জিরার রাজ পরিবার ছিল সিদ্দী, যাকে 'হাবশী' নামেও অভিহিত করা হয়, যারা আবিসিনিয়া থেকে এসেছিলেন। প্রথমদিকে রাজ্যের শাসকরা 'উজির' উপাধি ধারণ করলেও ১৮০৩ এর পরে ব্রিটিশ রাজ কর্তৃক ' নবাব ' উপাধিটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত হয়। তারা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের ১১-তোপ সেলামি দেশীয় রাজ্য ছিল। [১৫]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.