শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

চিন্দুইন নদী

মায়ানমারের নদী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

চিন্দুইন নদী
Remove ads

চিন্দুইন নদী (বর্মী: ချင်းတွင်းမြစ်, আইপিএ: [tɕɪ́ɴdwɪ́ɴ mjɪʔ]) মায়ানমার এর একটি নদীর নাম। এটি মায়ানমারের প্রধান নদী আয়েয়ারওয়াদি এর সবচেয়ে বড় শাখানদী। নদীটির সম্পূর্ণ অংশ মায়ানমারের অভ্যন্তরে প্রবাহিত হয়। মণিপুরী (জাতি)র কাছে নদীটি নিং-থি নামে পরিচিত।[]

দ্রুত তথ্য চিন্দুইন ချင်းတွင်းမြစ်, প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ...
Remove ads

উৎস

চিন্দুইন এর উৎপত্তিস্থল মায়ানমারের কাচিন প্রদেশের হুকাওং উপত্যকা ২৬°২৬′১৮″ উত্তর ৯৬°৩৩′৩২″ পূর্ব , যেখানে তানাই, তাবাই, তাওয়ান ও তারোন (তুরং বা তোয়াং নামেও পরিচিত) নদী মিলিত হয়েছে। তানাই এর শীর্ষপ্রবাহ মোগং এর ১২ মাইল উত্তরে কুমোন অঞ্চলে শ্বেডাউঙ্গি তে ২৫°৩০′ উত্তর ৯৭°০′ পূর্ব প্রবাহিত। এটি হুকাওং পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত প্রথমদিকে উত্তরে প্রবাহিত হয়। ২০০৪ সালে সরকার বাঘ সংরক্ষণের জন্য প্রায় আড়াই হাজার বর্গমাইল এলাকা নিয়ে “হুকাওং উপত্যকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য”স্থাপন করে। পরে এটিকে সম্প্রসারিত করে ২১৮০০ বর্গকিলোমিটার করা হয় যা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ সংরক্ষিত অঞ্চল। নদীটি তখন পশ্চিমে প্রবাহিত হয়ে সমতলের মধ্যভাগে তাবাই এর সাথে যুক্ত হয় এবং তাওয়ান ও তারোন এর দক্ষিণ ডান তীরে মিলিত হয়।[] এই নদীগুলো হুকাওং উপত্যকার পর্বতমালার উত্তর ও উত্তরপূর্ব দিকে প্রবাহিত।

Remove ads

গতিপথ

তানাই নদীটি তারোন বা তুরং উপত্যকা দিয়ে হুকাওং উপত্যকাকে একটি স্পষ্ট গিরিসংকট দিয়ে অতিক্রম করে। এরপর চিন্দুইন নাম গ্রহণ করে দক্ষিণমুখে প্রবাহিত হয়।[] এটি সিংকালিং কামতি ও থোমালিন টাউনদ্বয়ে বামপাশে রেখে অতিক্রম করে। মিনগিন শহরের পূর্বপর্যন্ত নদীটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। এরপর দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে কেন্দ্রীয় সমতটে প্রবেশ করে এবং মনওয়া শহরকে বামতীরে রেখে অতিক্রম করে। এর গতিপথ এখানে সাগাইং অঞ্চলের সাগাইং জেলা ও ম্যাগওয়ে অঞ্চলের পাকোক্কু জেলার মাঝে সীমানা নির্দেশ করে। এটি ২১°৩০′ উত্তর ৯৫°১৫′ পূর্ব তে আয়েয়ারওয়াদি নদীতে প্রবেশ করে। এর সর্বোচ্চ নির্গমনপথটি আয়েয়ারওয়াদি থেকে ২২ মাইল দূরে যার ব্যাপ্তিটি একটি দীর্ঘ নিম্ন ও আংশিক বসতিওয়ালা একটি দ্বীপ গঠন করেছে। ঐতিহ্যগতভাবে এর সর্বনিম্ন বদ্বীপটি একটি কৃত্রিম খাল যা বগন শহরের একজন রাজা খনন করেছিলেন। এটি প্রায় ১০০ বছর ধরে শুকিয়ে আসছিল তবে ১৮২৪ সালের এক আকস্মিক বন্যায় এটি পুনরায় প্রবাহ পায়।[] উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি দেখে বোঝা যায় যে সবচেয়ে নিচু খাদটিই একসময় সবচেয়ে প্রশস্ত ছিল। []

Remove ads

শাখাসমূহ

  1. উয়ু নদী: এটি বামপাশে হোমালিনের ঠিক নিচে চিন্দুইনের সবচেয়ে বড় শাখানদী। হপাকান্টের বিখ্যাত জেড (য়শম বা সবুজ পাথরবিশেষ) এর খনি উয়ুর শাখার তীরে অবস্থিত।[][]
  2. মু নদী: এটি কাবাউ উপত্যকার পাশে প্রবাহিত হয় এবং চিন্দুইনের ডানদিকে প্রবেশ করে।
  3. ম্যিত্থা নদী:কালে উপত্যকা থেকে নির্গত হয়ে ডানে নিম্নভাগে মিলিত হয়েছে। এদের সঙ্গমস্থলের বামে কালেওয়া শহর অবস্থিত।

শহর

Thumb
চিন্দুইন নদী
Thumb
১৯৮০: মনিওয়ার ৩০ কি.মি. দূরে চিন্দুইন নদী
  1. হকামতি
  2. হতমান্থি
  3. হোমালিন
  4. মাওলাইক
  5. কালেওয়া
  6. মিনগিন
  7. মনিওয়া[]

পরিবেশ

চিন্দুইনের গতিপথের অধিকাংশই পর্বতমালা ও বনাঞ্চলে প্রবাহিত। গহীন অঞ্চলে থাকায় এর পানি অনেকটাই দূষণমুক্ত। বার্মা সরকার হুকাওং উপত্যকায় সংকটাপন্ন বাঘের জন্য একটি বিশাল (২৫০০ বর্গমাইল) অভয়ারণ্য তৈরি করেছে।[]

ইতিহাস

চিন্দুইন এর পর্বতমালা সংলগ্ন অংশটি এতটাই দুর্গম যেসেনাবাহিনীও এর পুরো অংশ ভেদ করতে পারে না। পশ্চিমে মণিপুর রাজ্যের কাবাও উপত্যকায় বহু আক্রমণ হয়েছে; বিশেষত রাজা গরিবানিয়াজ (১৭০৯-১৭৪৮) এর সময় যখন তার সেনাবাহিনী চিন্দুইন ও মু নদী অতিক্রম করে এবং রাজধানী আভা(প্রচিীন বার্মিজ রাজধানী) এর বিপরীতে পৌঁছায়। ঘটনার মোড় ঘুরে যায় যখন রাজা আলাউংপায়া বার্মিজ সিংহাসনে আরোহণ করেন।[] বার্মিজ সৈন্যদল পশ্চিমীয় পার্বত্য অঞ্চল আক্রমণ করে মণিপুরআসাম দখলে নেয়, এমনকি ব্রিটিশ সামাজ্যভুক্ত ভারতেও অনুপ্রবেশ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এর সময় যখন জাপান সমুদ্রপ্রবেশ রুদ্ধ করে দেয়, তখন ব্রিটিশ সেনা ও মিত্রবাহিনী জেনারেল জোসেফ স্টিলওয়েল এর অধীনে ভারতে পশ্চাদপসরণ করে। বিভিন্ন রোগব্যাধি ও ক্ষুধায় পড়ে তখন মহামারি অবস্থার সৃষ্টি হয়। হুকাওং উপত্যকার মধ্য দিয়ে চিন পর্যন্ত লেডো রাস্তা নির্মাণ করা হয়।[] চিন্দুইন নদীটি ভারত আক্রমণ করতে আসা জাপান এবং বার্মা পুনরুদ্ধার করতে আসা মিত্রপক্ষ, উভয়ের জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধক ছিল। [১০]

Remove ads

অর্থনীতি

চিন্দুইন নদী দিয়ে বিভিন্ন নৌযান হোমালিন শহরে চলাচল করে। নদীতীরবর্তী টিক বনাঞ্চল প্রাচীনকাল থেকেই বিবিধ মূল্যবান সম্পদে সমৃদ্ধ। হুকাওং উপত্যকা বার্মিজ অ্যাম্বার এর জন্য সুপরিচিত। নদীতে জেড (য়শম বা সবুজ পাথরবিশেষ) এর স্তর রয়েছে। উয়ু নদীর তীরে হপাকান্ট শহর পৃথিবীর একমাত্র স্থান যেখানে সবচেয়ে মসৃণ জেড ‘জেডেটাইট’ পাওয়া যায়। এখানে প্রচুর মৎস্যসম্পদও রয়েছে।[][]

তথ্যসূত্র

সহায়ক গ্রন্থ

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads