জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা
বাংলাদেশের ময়মনসিংহে অবস্থিত একটি জাদুঘর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাংলাদেশের ময়মনসিংহে অবস্থিত একটি জাদুঘর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পরিচালিত একটি সংগ্রহশালা যেখানে বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্মসমূহ সংরক্ষিত আছে। শহরের উত্তর প্রান্তে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এটি অবস্থিত।
স্থাপিত | ১৫ এপ্রিল ১৯৭৫ |
---|---|
অবস্থান | ময়মনসিংহ |
স্থানাঙ্ক | ২৪°৪৬′১৩″ উত্তর ৯০°২৩′৪২″ পূর্ব |
সংগ্রহ | জয়নুল আবেদীন এর ব্যবহার করা বিভিন্ন তৈজসপত্র এবং তার আকাঁ বিভিন্ন মূল্যবান ছবি রয়েছে |
ময়মনসিংহ শহরের উত্তর পাশ দিয়ে প্রবহমান পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে একটি দোতলা দালান আশ্রয় করে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে এই সংগ্রহশালাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ এপ্রিল বাংলা ১৩৮২ সালের ১লা বৈশাখ তারিখে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এই সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন। সে সময় দেশব্যাপী জয়নুল আবেদিনের বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংরক্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। আর তাই প্রথম দিকেই শিল্পীর নিজের এলাকা তথা ময়মনসিংহে এই সংগহশালাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনের পর ৭ জুলাই[1] তারিখে সংগ্রহশালার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে সংগ্রহশালাটি নতুন করে সাজানো হয়। নীচতলায় ব্যবস্থাপনা কক্ষসমূহ এবং দোতলায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ছবির গ্যালারী স্থাপন করা হয়। মূল ভবনের পেছনভাগে ব্যবস্থাপকদের বাসস্থানের সঙ্গে সঙ্গে ৩টি কুটির স্থাপন করা হয়েছে যা শিল্পরসিকদের সাময়িক আবাসনের জন্য ব্যবহার করা হয়।
একটি দোতলা ভবনবিশিষ্ট যে জমিতে এটি অবস্থিত তার মোট আয়তন হচ্ছে ৩.৬৯ একর।[2] পুরো চত্বরটি গাছগাছালি পরিবেষ্টিত। যে ভবনটিতে সংগ্রহশালা অবস্থিত ইংরেজ আমলে তা ছিল জনৈক ইংরেজ বার্ডেন সাহেবের বাড়ি। তার কাছ থেকে বড়লাটের (ভাইসরয়) কাউন্সিল সদস্য জনৈক নলিনীরঞ্জন সরকার' বাড়িটি কিনে নেন।[1] নলিনীরঞ্জন ১৯৪৭-এ দেশবিভাগের পর ভারতে চলে যান। এরপর সরকার বাড়িটি অধিগ্রহণ করে। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এটি ছিল ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সরকারি বাসভবন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরও কয়েক বছর এটি একইভাবে পড়ে থাকে। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে সরকারী সিদ্ধান্তক্রমে এটিকে সংগ্রহশালায় রূপান্তরিত করা হয়। জয়নুল আবেদিনের মনেও একটি সংগ্রহশালার ধারণা অনেক আগে থেকে বিদ্যমান ছিল। ১৯৫০-এর[1] দশকে তিনি বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেক দুর্লভ ছবির সংগ্রহের কাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেদিক দিয়ে বলতে গেলে এই সংগ্রহশালাটির প্রতিষ্ঠা ছিল শিল্পাচার্যের স্বপ্নেরই বাস্তবায়ন।
প্রথমাবস্থায় ভবনটি একতলা ছিল।
এই সংগ্রহশালায় প্রথমে ৭০ টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল যার বেশিরভাগই ছিল তৈলচিত্র। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে আছে - বিভিন্ন দেশ ভ্রমনকালে শিল্পাচার্যের অঙ্কিত ছবি, গুণটানা, নদী পারাপারের অপেক্ষায় পিতা-পুত্র এবং দুর্ভিক্ষ। এখান ১৭ টি অতি আকর্ষণীয় ছবি ১৯৮২ সালে চুরি হয়ে যায়। এর মধ্যে ১০ টি ছবি ১৯৯৪ সালে আবার উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তাই এখানে মোট ৬৩ টি চিত্রকর্ম রয়েছে।[1] এছাড়াও রয়েছে শিল্পাচার্যের ব্যবহৃত জিনিস এবং তার কিছু স্থিরচিত্র। স্থিরচিত্রগুলো ভবনের দোতলার বারান্দায় শোভা পায়। এখানে সংগ্রহশালার সংগ্রহের একটি তালিকা দেয়া হল। গ্যালারি অনুসারে ভাগ করে উল্লেখ করা আছে। চিত্রকর্মগুলোর নাম কমা দ্বারা আলাদা করা হয়েছে।
শম্ভুগঞ্জ ঘাট, শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ, স্কেচ, স্কেচ, স্কেচ, স্কেচ, স্কেচ, স্কেচ (বংশীবাদক), বাস্তুহারা, প্রতিকৃতি, প্রতিকৃতি, স্কেচ, মহিষের বাচ্চা, কাজী নজরুল ইসলাম, কংকালসার, দুর্ভিক্ষ, দুর্ভিক্ষ, দুর্ভিক্ষ, রমনী-১, ১৯৫১, কাগজে টেম্পোরা, মা ও ছেলে- ১৯৫১, কাগজে টেম্পোরা, কলসী কাঁখে- ১৯৫১, কাগজে টেম্পোরা, স্নান শেষে- ১৯৫১, কাগজে টেম্পোরা, মা ও শিশু- ১৯৫৩, কাগজে টেম্পোরা, তিন রক্ষী- ১৯৫৩, কাগজে টেম্পোরা, চিন্তা- ১৯৫৩, কাগজে টেম্পোরা, চিন্তা- ১৯৫৩[2]
১৯৭৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সংগ্রহশালাটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকতেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক। ১৯৯৯ সালে একে বাংলাদেশের জাতীয় জাদুঘরের একটি শাখা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে জাতীয় জাদুঘরের অধীনেই এটি পরিচালিত হচ্ছে।[3] এখানের প্রধান কর্মকর্তা হচ্ছেন একজন উপ-কীপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা। এখানে সর্বমোট ১৮ জন কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক কর্মরত থাকেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.