Loading AI tools
ভারতীয় বলিউড অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সঞ্জয় বলরাজ দত্ত (জন্ম: ২৯ জুলাই ১৯৫৯) হলেন ভারতের একজন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা। তিনি অভিনয়শিল্পী দম্পতি সুনীল দত্ত ও নার্গিস দত্তের সন্তান। ১৯৮১ সালে রকি চলচ্চিত্রে অভিষেকের পর তিনি ১৮০-এর অধিক হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। যদিও দত্ত প্রণয়ধর্মী থেকে শুরু করে হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠাংশে অভিনয় করে সফলতা অর্জন করেছেন, নাট্যধর্মী ও মারপিঠধর্মী চলচ্চিত্রে গ্যাংস্টার, গুন্ডা ও পুলিশ অফিসার চরিত্রে অভিনয় করে তিনি বেশি সমাদৃত হয়েছেন। এইসব চরিত্রে তার কাজের জন্য ভারতীয় গণমাধ্যম ও দর্শক তাকে "ডেডলি দত্ত" বলে অভিহিত করে। তার অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহের মধ্যে খলনায়ক (১৯৯৩), বাস্তভ - দি রিয়েলিটি (১৯৯৯), মুন্না ভাই এম.বি.বি.এস. (২০০৩), কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু (২০২২) অন্যতম। তিনি আমির খানের সাথে মিলে ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পিকে ছবিতে অসাধারণ এক পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন।[2] ৩৭ বছরের অধিক চলচ্চিত্র জীবনে তিনি দুটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, দুটি আইফা পুরস্কার, দুটি বলিউড মুভি পুরস্কার, দুটি স্ক্রিন পুরস্কার, তিনটি স্টারডাস্ট পুরস্কার ও একটি করে গ্লোবাল ইন্ডিয়ান ফিল্ম পুরস্কার ও বঙ্গ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার অর্জন করেছেন।
সঞ্জয় দত্ত | |
---|---|
संजय दत्त | |
জন্ম | সঞ্জয় বলরাজ দত্ত ২৯ জুলাই ১৯৫৯ মুম্বই, মহারাষ্ট্র, ভারত |
পেশা | অভিনেতা, প্রযোজক, রম্য-অভিনেতা, রাজনীতিবিদ, টিভি উপস্থাপক |
কর্মজীবন | ১৯৭২-বর্তমান |
উচ্চতা | ৬'-০" |
দাম্পত্য সঙ্গী | রিচা শর্মা (১৯৮৭-১৯৯৬) (মৃত্যু), রিয়া পিল্লাই (১৯৯৮-২০০৫) (বিচ্ছেদ প্রাপ্ত)[1], মান্যতা দত্ত (২০০৮-বর্তমান) |
সন্তান | ৩ |
পিতা-মাতা | সুনীল দত্ত নার্গিস দত্ত |
১৯৯৩ সালের এপ্রিলে দত্তকে সন্ত্রাসী ও সংহতি নাশমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেফতার করা হয়। তার উপর আনা চার্জ মওকুফ হলেও তাকে বেআইনি অস্ত্র রাখার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সাজা ভোগকালীন ভাল ব্যবহার ও আচরণের জন্য ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তাকে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
সঞ্জয় এর পিতামাতা হচ্ছেন প্রয়াত হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতা-অভিনেত্রী সুনীল দত্ত এবং নার্গিস, যারা দুজনেই বলিউড চিত্র জগতে সুপরিচিত ছিলেন। সঞ্জয় একজন ধার্মিক মানুষ, হিন্দু ধর্মের প্রতি তার প্রগাঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে।[3] তার মা নার্গিস ১৯৮১ সালে মারা যান, এই ১৯৮১ সালে সঞ্জয় অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র রকি মুক্তি পায়, চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবার আগেই নার্গিস মারা যান, অনেকে মনে করেন মা নার্গিসের মৃত্যুর শোকেই সঞ্জয় মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন।[4] শিশুশিল্পী হিসেবে সঞ্জয় ১৯৭২ সালের চলচ্চিত্র 'রেশমা অউর শেরা'তে অভিনয় করেছিলেন, চলচ্চিত্রটিতে তার বাবা সুনীল দত্ত ছিলেন, সঞ্জয়কে চলচ্চিত্রটিতে কিছুক্ষণের জন্য বাচ্চা কাওয়ালি গায়ক হিসেবে দেখানো হয়।[5]
১৯৮১ সালে রকি দিয়ে সঞ্জয় দত্তের বলিউড চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন টিনা মুনিম। তার পিতা সুনীল দত্ত পরিচালিত চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে হিট তকমা লাভ করেন। ১৯৮২ সালে তিনি সে বছরের সবচেয়ে ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র বিধাতা ও ১৯৮৩ সালে সুপারহিট ম্যাঁ আওয়ারা হুঁ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৮৫ সালে প্রায় তিন বছর পর তিনি জান কি বাজি (১৯৮৫) ছবিতে কাজ করেন। এটি তার মাদক গ্রহণকালীন পর্যায় পরবর্তী প্রথম চলচ্চিত্র। ব্যক্তিগত সমস্যা ও মাদকাসক্তি নিরাময়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পূর্বে তার অভিনীত ও মুক্তিপ্রাপ্ত কয়েকটি চলচ্চিত্র বক্স অফিসে ফ্লপ হয় এবং তিনি পুনরায় চলচ্চিত্রে ফিরে আসতে নারাজ ছিলেন।
জান কি বাজি ছবিটি সফল হলে ১৯৮০-এর দশকে তিনি ঈমানদার, ইনাম দাস হাজার, জিতে হ্যাঁ শান সে (১৯৮৮), মার্দোঁ ওয়ালি বাত (১৯৮৮), ইলাকা (১৯৮৯), হাম ভি ইনসান হ্যাঁ (১৯৮৯), কানুন আপনা আপনা (১৯৮৯), ও তাকাতওয়ার-এর মত সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে।
১৯৮০-এর দশকের শুরুতে তিনি তার প্রথম চলচ্চিত্রের সহশিল্পী টিনা মুনিমের সাথে সম্পর্ক গড়েন।[6] তাদের সম্পর্কের সমাপ্তির পর তিনি ১৯৮৭ সালে অভিনেত্রী ঋচা শর্মাকে বিয়ে করেন।[7] ঋচা ১৯৯৬ সালে মস্তিকের টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ১৯৮৮ সালে তাদের কন্যা ত্রিশলা জন্মগ্রহণ করে। ঋচা মারা যাবার পর সঞ্জয় ত্রিশলাকে নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনি ঋচার মা-বাবার কাছে আইনি লড়াইয়ে হেরে যান। ত্রিশলা এখন তার নানা-নানীর সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছে।[8] সঞ্জয় ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিমানবালা থেকে মডেল হওয়া রিয়া পিল্লাইকে বিয়ে করেন।[9] ২০০৫ সালে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায় এবং ২০০৮ সালে তা বিবাহবিচ্ছেদে রূপ নেয়। এরপর সঞ্জয় ২০০৮ সালে গোয়াতে গোপন এক অনুষ্ঠানে মান্যতা দত্তের (দিলনেওয়াজ শেখ) সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[10] বিয়ের আগে তারা দুই বছর প্রেম করেছিলেন।[11] ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর তারিখে সঞ্জয় আর মান্যতা জমজ ছেলেমেয়ের পিতামাতা হন।[12]
১৯৯৩ সালে মুম্বই শহরে ধারাবাহিক বোমা হামলা হয়। গুজব উঠেছিল বলিউডের যারা এই হামলার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন সঞ্জয় দত্ত তাদের একজন। প্রমাণ মিলে যে দত্ত মুম্বই বোমা হামলার সাথে জড়িত আবু সালেম ও রিয়াজ সিদ্দিকীর কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র এনে তার বাড়িতে রাখেন। অভিযোগ ওঠে এই অস্ত্রগুলো সন্ত্রাসীদের বড় অস্ত্র হস্তান্তরের সাথে জড়িত ছিল। দত্ত তার স্বীকারোক্তিতে বলেন তিনি তার সনম চলচ্চিত্রের প্রযোজকের নিকট থেকে তার নিজের পরিবারের নিরাপত্তার জন্য একটি একে-৫৬ রেখেছিলেন।[13]
১৯৯৩ সালের এপ্রিলে সন্ত্রাসী ও সংহতি নাশমূলক কর্মকাণ্ড (সংরক্ষণ) আইনের অধীনে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৯৩ সালের ৫ই মে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তার জামিন মঞ্জুর করে, কিন্তু ১৯৯৪ সালের ৪ঠা জুলাই তার জামিন বাতিল করা হয় এবং তাকে পুনরায় গ্রেফতার করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১৬ই অক্টোবর তিনি জামিনে ছাড়া পান।[14]
২০২০ সালের আগস্টে সঞ্জয়ের ফুসফুসে তৃতীয় ধাপের ক্যান্সার ধরা পড়ে।[15] তিনি মুম্বইতে তার চিকিৎসা করান এবং এখন তিনি ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে সেরে উঠেছেন।[16]
এই তালিকাটি অসম্পূর্ণ; এটি সম্প্রসারণ করে আপনি সাহায্য করতে পারেন। |
চিহ্নিত চলচ্চিত্রগুলির নির্মাণ চলছে |
বছর | চলচ্চিত্র | চরিত্র | পরিচালক |
---|---|---|---|
১৯৮১ | রকি | রাকেশ / রকি ডি সুজা | সুনীল দত্ত |
১৯৯১ | সাজন | অমন বার্মা / সাগর | লরেন্স ডি'সুজা |
১৯৯৩ | খলনায়ক | বলরাম রাকেশ প্রসাদ / বাল্লু | সুভাষ ঘাই |
১৯৯৯ | বাস্তভ : দি রিয়েলিটি | রঘুনাথ শিবলখর | মহেশ মাঞ্জরেকার |
২০০০ | মিশন কাশ্মীর | এনায়েত খান | বিধু বিনোদ চোপড়া |
২০০২ | হাতিয়ার : ফেস টু ফেস উইথ রিয়েলিটি | রোহিত রঘুনাথ | মহেশ মাঞ্জরেকার |
২০০৩ | মুন্না ভাই এম.বি.বি.এস. | মুরলি প্রসাদ শর্মা / মুন্না ভাই | রাজকুমার হিরানী |
২০০৬ | লাগে রাহো মুন্না ভাই | মুরলি প্রসাদ শর্মা / মুন্না ভাই | রাজকুমার হিরানী |
২০০৯ | অল দি বেস্ট : ফান বিগিন্স | ধরম কাপুর | রোহিত শেঠী |
২০১১ | রাস্কেলস | চেতন চৌহান | ডেভিড ধাওয়ান |
২০১২ | সন অব সরদার | বিল্লু | আশ্বীন ধির |
২০১৩ | জাঞ্জির | শের খান | অপূর্ব লাখিয়া |
২০১৪ | পিকে | ভৈরন সিংহ (ব্যান্ড বাদক বড় ভাই) | রাজকুমার হিরানী |
২০১৮ | সঞ্জু | সঞ্জয় দত্ত | রাজকুমার হিরানী |
২০১৯ | প্রস্থানাম | বলরাজ কুন্ডু | দেবা কত্তা |
পানিপথ | আহমদ শাহ আবদলি | আশুতোষ গোয়ারিকর | |
২০২০ | সড়ক ২ | রবি | মহেশ ভাট |
শামশেরা | আশুবীর সাক্সেনা | করণ মালহোত্রা | |
কেজিএফ: চ্যাপ্টার টু | আধীরা | প্রশান্ত নীল |
সঞ্জয় দত্তের মাদকাসক্ত পর্যায় ও বিতর্কিত সন্ত্রাসী জীবন নিয়ে রাজকুমার হিরানী নির্মাণ করেন সঞ্জু। ছবিটিতে রণবীর কাপুর তার ভূমিকায় অভিনয় করেন।[17][18] ছবিটি বিশ্বব্যাপী ২০১৮ সালের ২৯শে জুন মুক্তি পায়।[19][20]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.