Loading AI tools
শক্তির প্রকার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় শক্তি বলতে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকে বুঝায়। প্রধানত শক্তি হচ্ছে পদার্থের এমন একটি বৈশিষ্ট্য যার সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই , এক রূপ থেকে অন্য রূপ নিতে পারে এবং এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে যেতে পারে। বিখ্যাত E=mc² অনুযায়ী শক্তি পদার্থে নিহিত থাকতে পারে । যেমন ফিশন বিক্রিয়া । কাজ বা কার্য হচ্ছে বল ও বলের দিকে সরণের গুণফল। কৃতকাজের পরিমাণ দিয়েই শক্তি পরিমাপ করা হয়। অর্থাৎ বস্তুর শক্তি হচ্ছে ঐ বস্তু মোট যতখানি কাজ করতে পারে। সুতরাং কাজের একক ও শক্তির একক অভিন্ন - জুল। ১ জুল = ১ নিউটনХ ১ মিটার। শক্তি একটি অদিক রাশি।
শক্তির বিভিন্ন রূপ আছে। মোটামুটিভাবে শক্তির নয়টি রূপ দিয়ে প্রাকৃতিক সব ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া হয়। শক্তির রূপগুলি হল:
শক্তির যে কোন রূপকে অন্য যে কোন রূপে রূপান্তরিত করা যায়, কিন্তু মোট শক্তির পরিমাণ একই থাকে। একে শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি বা শক্তির নিত্যতা সূত্র বলা হয়। শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতিকে এভাবে বিবৃত করা যায়ঃ
শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই, শক্তি কেবল একরূপ থেকে অপর এক বা একাধিকরূপে পরিবর্তিত হতে পারে। মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট ও অপরিবর্তনীয়।
শক্তি একরূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তিত হলে শক্তির কোন ক্ষয় হয় না। একটি বা একাধিক বস্তু যে পরিমাণ শক্তি হারায়, অন্য এক বা একাধিক বস্তু ঠিক একই পরিমাণ শক্তি পায়। নতুন করে কোন শক্তি সৃষ্টি হয় না বা কোন শক্তি ধ্বংসও হয়না। সুতরাং এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির মুহূর্তে যে পরিমাণ শক্তি ছিল, এখনও ঠিক সেই পরিমাণ শক্তিই আছে।
কোন বস্তুর উপর কৃত কাজ তার গতিশক্তির পরিবর্তনের সমান। অর্থাৎ যেহেতু কোন বস্তুর উপর কাজ করলে তা বস্তুকে গতি দেয়, আবার যেহেতু ঐ গতিকে কাজে রূপান্তর করা সম্ভব (তাকে থামিয়ে দিতে গিয়ে), সেহেতু আমরা বলি ঐ বস্তুতে (গতি)শক্তি এসেছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের ‘অর্থনৈতিক সমীক্ষা’ অনুযায়ী, শক্তি ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। শক্তি ক্ষেত্রের এই পরিবর্তনগুলির মধ্যে রয়েছে –
১)উৎপাদন ক্ষমতায় রেকর্ড পরিমান। ২০১৪-১৫-য় সর্বোচ্চ পরিমাণ উৎপাদন ক্ষমতা পরিলক্ষিত হয় ২৬.৫ গিগাওয়াট যা বিগত ৫ বছরে বার্ষিক প্রায় ১৯ গিগাওয়াট হারে বৃদ্ধির চেয়ে অনেকটা বেশি।
২)শক্তি ক্ষেত্রে ক্ষমতা বৃদ্ধি তুলনাহীন। এইসব ব্যবস্থা ভারতের বিদ্যুৎ চাহিদার সর্বোচ্চ ঘাটতির পরিমাণ ২.৪ শতাংশে কমিয়ে এনেছে, যা সর্বকালের মধ্যে সর্বনিম্ন।
৩)শক্তি বন্টনকারী সংস্থাগুলি কার্যকলাপ উন্নয়নে একটি ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্যোগগুলি হল- উদয় বা উজ্জ্বল ডিসকম্ অ্যাস্যুরেন্স যোজনা।
৪)ভারতীয় রেল শক্তি সম্পদ ক্রয়ের জন্য একটি ‘ওপেন এক্সেস’ বা ‘উন্মুক্ত পন্থা’য় যাবার জন্য প্রয়াস নিচ্ছে।
৫)পুনর্নবীকরণ একটি বড় ধরনের নীতিগত জোর পেয়েছে। ২০২২-এর মধ্যে উৎপাদন ৩২ গিগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ১৭৫ গিগাওয়াট করার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে।
৬)ন্যাশনাল সোলার মিশন-এর আওতায় সর্বশেষ দফায় নিলামে বিদ্যুৎ মাসুল বা ট্যারিফের পরিমাণ সর্বকালের মধ্যে কমে গিয়ে প্রতি ঘন্টা কিলোওয়াটে ৪.৩৪ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
৭)‘শক্তি ক্ষেত্রে এক বাজার’-এর দিকে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্মনগুলি স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
এই সব বড় ধরনের সাফল্যগুলি সত্ত্বেও অর্থনৈতিক সমীক্ষা এটা লক্ষ্য করেছে যে শক্তি ক্ষেত্রের জটিলতা এতটাই যাতে হতাশাব্যঞ্জক সমস্যা বহাল রয়েছে।বিশেষ করে:
বাজারে মূল্য সংকেতকে যথেষ্টভাবে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে ট্যারিফ ব্যবস্থার জটিলতার জন্য অর্থনৈতিক উপাদানগুলি বাধাপ্রাপ্ত হয়।
বিদ্যুৎ সরবরাহের গড় ব্যয়ের তুলনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে গড় ট্যারিফের পরিমাণ অনেকটাই কম রাখা হয়।
শিল্পক্ষেত্রে উচ্চ হারে বিদ্যুৎ মাশুল এবং বিদ্যুতের গুণমানে তারতম্য “মেক ইন ইন্ডিয়া”-র উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। উন্মুক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে দেশ জুড়ে একই বিদ্যুৎ মূল্য নির্ধারণের পথে মূল্য ও মূল্য-বহির্ভুত বিষয়গুলি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। গৃহস্থ ভোক্তাদের জন্য ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যারিফ সিডিউল’ নির্ধারণ করা।
এই সমীক্ষায় শক্তিক্ষেত্রের জন্য কয়েকটি দীর্ঘমেয়াদী নীতি বিষয়ে আলোচনা করেছে যা নিচে উল্লেখ করা হল: ক) বিদ্যুৎ শুল্ক বা মাশুল ব্যবস্থা বর্তমানে খুবই জটিল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কয়েকটি রাজ্যে পোল্ট্রি ফার্ম, মৎস চাষ, জলাভূমিতে চাষ (নির্দিষ্ট আয়তনের উর্দ্ধে ও নিচে), মাশরুম ও খরগোশ ফার্ম ইত্যাদি জন্য পৃথক পৃথক শুল্ক ব্যবস্থা রয়েছে। পক্ষান্তরে, অন্যান্য শক্তি-নির্ভর উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভোক্তার জন্য একটি নির্দিষ্ট মূল্য রয়েছে। খ)শিল্পক্ষেত্রের উপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের ফলে ফার্মগুলি বিদ্যুৎ ক্রয়ের পথ ছেড়ে নিজেদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার দিকে সরে যেতে পারে। গ) ৪৭ শতাংশ ফার্ম ডিজেল চালিত জেনারেট ব্যবহার করে। ঘ) ২০০৬-০৭ এবং ২০১৪-১৫-র অন্তর্বতী সময়ে বিভিন্ন ব্যবহারকারী দ্বারা বিদ্যুৎ সংগ্রহের হার বার্ষিক ৪.৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ব্যবহারির নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৯.৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধির চেয়ে অনেকটাই শ্লথ। ঙ) ‘ডিসকম’-এর ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনতে ক্রস-সাবসিডি সারচার্জ এবং মূল্য-বর্হিভূত নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ সমূহ মুখ্য পদক্ষেপ। কিন্তু এরাও দেশ জুড়ে একটি বৈদ্যুতিক বাজার সৃষ্টির পথে বাধা দিতে পারে। চ) অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায়, ভারতের অভ্যন্তরীণ শক্তি ক্ষেত্রের শুল্ক ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রভূত সুযোগ রয়েছে। ধনী পরিবারগুলির জন্য বিদ্যুৎ শুল্ক বাড়ানো যেতে পারে, সেক্ষেত্রে গরীবদের জন্য শুল্কের পরিমান কমানো যায়।
২০১৫-১৬-র অর্থনৈতিক সমীক্ষায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ দেশের শক্তিক্ষেত্রে সংস্কার চালু রাখার মঞ্চ তৈরি করে দেবে যাতে ভারত শক্তি ক্ষেত্রে ‘এক বাজার’ হয়ে উঠতে পারে, শিল্পক্ষেত্র থেকে চাপের বোঝা কমানো যাবে; ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ দৃষ্টিভঙ্গী অনুযায়ী এটাকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামুখী করে তোলা; শুল্ককে সরল ও স্বচ্ছ করে তোলা যেতে পারে; প্রান্তিক অংশের ক্ষেত্রে মূল্য বৃদ্ধি এড়ানো, এবং আরো অধিক পরিমাণে রাজস্ব বৃদ্ধি সহ দরিদ্রের জন্য মূল্যের পরিমাণ কমানোর জন্য যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে সেই লক্ষ্যে সুযোগ গ্রহণ করা।
এই সমস্ত কিছুতে, কেন্দ্রের কাছ থেকে সাহায্যকারী সহায়তা সহ, রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, সহযোগিতামূলক-প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়, যা এখনকার ভারত. পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে কার্যকর করতে শক্তি ক্ষেত্র একটি যথাযথ কঠিন পরীক্ষাস্থল।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.