পূর্ব আফ্রিকা, পূর্বাঞ্চলীয় আফ্রিকা বা আফ্রিকার পূর্বভাগ বলতে আফ্রিকা মহাদেশের পূর্বভাগের উপ-অঞ্চলটিকে বোঝানো হয়।
এই অঞ্চলের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন ও এটিকে সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করা দুরূহ। এই অঞ্চল প্রাকৃ্তিক ও নৃ্তাত্ত্বিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধ। ইংরেজ,পর্তুগিজ,জার্মান ও ইতালীয় সাম্রাজ্যবাদীরা এই অঞ্চলে উপনিবেশ গড়েছে। উপনিবেশোত্তর যুগেও এই অঞ্চল অশান্ত থেকেছে।
ঐতিহাসিক ওমানি সাম্রাজ্য ও ব্রিটিশ কর্তৃত্বাধীন পূর্ব আফ্রিকা অঞ্চল ও জার্মান পূর্ব আফ্রিকা অঞ্চলগুলির কারণে পূর্ব আফ্রিকা বলতে (বিশেষ করে ইংরেজি ভাষায়) বর্তমান কেনিয়া, তানজানিয়া ও উগান্ডা রাষ্ট্র তিনটিকে নিয়ে গঠিত অঞ্চলটিকে বোঝাতে পারে।[১][২][৩][৪] তবে নামটি আরও ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে ও এখনও হয়ে থাকে, এবং এটিতে জিবুতি, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়াও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।[৫][৬][৭][৮][৯][১০][১১]
দেশসমূহ
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বিভাগের ভৌগোলিক অঞ্চল বিষয়ক সংকল্পনা অনুযায়ী পূর্ব আফ্রিকা ১০, ১১ কিংবা ১৬টি দেশ ও অঞ্চল নিয়ে গঠিত।[১২] এগুলি নিচে উল্লেখ করা হল।
- তানজানিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ও দক্ষিণ সুদান দেশগুলি পূর্ব আফ্রিকান সম্প্রদায়ের সদস্য। এদের মধ্যে প্রথম পাঁচটি আফ্রিকান মহাহ্রদ অঞ্চলের মধ্যে পড়েছে। বুরুন্ডি ও রুয়ান্ডাকে কদাচিৎ মধ্য আফ্রিকার অন্তর্ভুক্ত বলা হতে পারে।
- জিবুতি, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়াকে একত্রে আফ্রিকার শৃঙ্গ বলা হয়। সুদানকেও কদাচিৎ এর অংশ ধরা হয়।[১৩][১৪][১৫][১৬][১৭] এটি আফ্রিকা মহাদেশের সর্বপূর্ব অভিক্ষেপ।[১৮]
- মোজাম্বিক ও মাদাগাস্কার – প্রায়শই দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার অংশ মনে করা হয়, যদিও তারা আফ্রিকার পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত। মাদাগাস্কারের সাথে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভারত মহাসাগরের দ্বীপসমূহ ও পূর্ব আফ্রিকার সাংস্কৃতিক ঘনিষ্ঠতা আছে।
- মালাউই, জাম্বিয়া, ও জিম্বাবুয়ে – প্রায়শই দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার অংশ মনে করা হয়, তবে এরা পুরাতন কেন্দ্রীয় আফ্রিকান সংঘের সদস্য ছিল।
- কোমোরো দ্বীপপুঞ্জ, মরিশাস ও সেশিলিস দ্বীপপুঞ্জ – পূর্ব আফ্রিকার উপকূলের কাছে ভারত মহাসাগরের পশ্চিমভাগে অবস্থিত কিছু ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র।
- রেউ্যনিওঁ ও মায়োত (ভৌগোলিকভাবে কোমোরো দ্বীপপুঞ্জের অংশ) এবং আরও কিছু বিক্ষিপ্ত ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপসমূহ – ভারত মহাসাগরে ফরাসি উপনিবেশের অংশ।
- দক্ষিণ সুদান ও সুদান - সম্মিলিতভাবে নীল নদের উপত্যকা অঞ্চলে অবস্থিত। এগুলি আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্বভাগে অবস্থিত।[১৯] তবে একই সাথে এগুলি পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার সাধারণ বাজার নামক মুক্ত বাণিজ্য এলাকাটির সদস্য।
- মিশর আফ্রিকার উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত,[২০] কিন্তু এটিকে উত্তর আফ্রিকার দেশ ধরা হয়।[২১]
ইতিহাস
প্রাগৈতিহাসিক পর্ব
আরব ও পর্তুগিজ পর্ব
সাম্রাজ্যবাদী যুগ
সাম্রাজ্যবাদ-উত্তর যুগ
এসময় এই অঞ্চল স্নায়ুযুদ্ধ দ্বারা প্রভাবিত ছিল। ইদি আমিনের মত একাধিক স্বৈরাচারীর উত্থান হয়েছে এখানে।
ভূগোল
ভূমিরূপ
এই অঞ্চলের ভূমিরূপ বন্ধুর। এই অঞ্চলের মূল পর্বতগুলি হল রাস দাশেন (৪৬২০ মিটার), এল্গোন (৪৩২১ মিটার), রুয়্যেঞ্জেরি (৫১২০ মিটার), কেনিয়া পর্বত (৫২০০ মিটার), কিলিমাঞ্জারো পর্বত (৫৮৯৬ মি), মাসিফ ডে (২৮৯৬ মিটার) ও আঙ্কারাটা (২৬৩৮ মিটার)। এই অঞ্চলে ডেনাকিল খাদের মত ১১৬ মিটার গভীর খাডও আছে। এছাড়া বিভিন্ন নদী গ্রস্ত উপ্ত্যকা তৈরি করেছে। নুবীয় মরুভূমি ও ওগাদেন মরুভূমি এ অঞ্চলের প্রধান দুইটি মরুভুমি।
নদনদী
এখানকার নদনদীর মধ্যে নীল নদ, নোগাল নদী, শেবেল নদী, জুব্বা নদী, রুফিজি নদী, রোডুমা নদী, জাম্বেসি নদী ও লিম্পোপো নদী প্রধান। নীল নদের উৎস এখানেই।
হ্রদ
এখানকার প্রধান হ্রদ হল তুরকানা হ্রদ, ভিক্টোরিয়া হ্রদ, টাঙ্গানিকা হ্রদ, কিভু হ্রদ,আ্যলবার্ট হ্রদ, এডওয়ার্ড হ্রদ, রুকোয়া তানা হ্রদ ও আসাল হ্রদ।
জলবায়ু
এখানকার জলবায়ু উষ্ণ ও ক্রান্তীয় উষ্ণ প্রকৃ্তির।
স্বাভাবিক উদ্ভিদ
বন্যজীবন
এই অঞ্চলে বন্যজীবন সমৃদ্ধ। জলহস্তী, জিরাফ, সিংহ, ইত্যাদি স্তন্যপায়ী ও নানা ধরনের পাখি এখানে পাওয়া যায়।
নৃগোষ্ঠী
ভাষা
এখানে ইংরেজি, পর্তুগিজ ও সোয়াহিলি ভাষাসহ অন্যান্য আফ্রিকান ভাষা প্রচলিত।
প্রধান শহর
এখানকার প্রধান শহরগুলির মধ্যে দোদোমা, দারুস সালাম, মাপুটো, আন্তানানারিভো, ভিক্টোরিয়া, নাইরোবি, মোগাদিশু, আদ্দিস আবাবা, লিলোঙ্গোয়ে, কাম্পালা, জিবুতি, আস্মেরা, কিগালি, বুজুম্বুরা, মোরোনি ও পোর্ট লুইস প্রধান।
তথ্যসূত্র
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.