কুরুশের চোঙ
দুই হাজার ৬০০ বছরের পুরোনো মাটির তৈরি কিউনিফর্ম লিপিতে লেখা সিলিন্ডার আকৃতির সনদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কুরুশের চোঙ (ফার্সি: استوانه کوروش; ওস্তোভ'নে কুরুশ) মাটির তৈরি চোঙ যা কিউনিফর্ম হরফে লেখা সনদ[২] পারস্যের সম্রাট কুরুশের নামে নামাঙ্কিত।[৩] চোঙটি দুই হাজার ৬০০ বছরের পুরোনো।[২] যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত ব্রিটিশ মিউজিয়ামের অধিকারে আছে চোঙটি। খ্রিষ্টপূর্ব ৫৩৯ সালে ব্যাবিলন দখল করার পর কুরুশের নির্দেশে চোঙটি তৈরি করা হয়েছিল। এতে খোদাই করে লেখা আছে পারস্য সাম্রাজ্যজুড়ে ধর্মীয় স্বাধীনতা, সহিষ্ণুতা ও মানবাধিকার বাস্তবায়নের কথা।
কুরুশের চোঙ | |
---|---|
![]() ![]() কুরুশের চোঙ, সামনের দিক ও পিছনের দিক | |
উপাদান | পোড়া মাটি |
আকার | ২২.৫ সেন্টিমিটার (৮.৯ ইঞ্চি) x ১০ সেন্টিমিটার (৩.৯ ইঞ্চি) (maximum) |
লিখন | Akkadian cuneiform script |
আবিষ্কৃত | Babylon, Mesopotamia by Hormuzd Rassam in March 1879 |
নির্মিত | About 539–530 BC |
সময়কাল / সংস্কৃতি | Achaemenid Empire |
আবিষ্কৃত | Babylon, Mesopotamia by Hormuzd Rassam in March 1879 |
বর্তমান অবস্থান | ৫২ নং রুম[১] (previously 55), ব্রিটিশ মিউজিয়াম, লন্ডন |
সনাক্তকরণ | BM 90920 |
নিবন্ধন | টেমপ্লেট:British-Museum-db |
কুরুশের চোঙটিতে বর্ণিত রয়েছে সম্রাট কুরুশের ব্যাবিলন আক্রমণের ইতিহাস। তিনি ব্যাবিলনের দেবতা মারদুকের আমন্ত্রণে প্রথম সেখানে গিয়েছিলেন। আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর তিনি মুক্তি দিয়েছিলেন ব্যাবিলনীয়দের হাতে নির্যাতিত দাস জাতিগোষ্ঠীকে। এ ছাড়া তাদের প্রার্থনালয়ে বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল কুরুশের নির্দেশেই। মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ইহুদিরাও ছিল। তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন কুরুশ। এসব অসাধারণ পদক্ষেপ বা অবদানের জন্য একজন ‘উদার ও আলোকিত সম্রাটের’ সুনাম অর্জন করেন কুরুশ।[৩]
মানবাধিকার সনদ
কুরুশের চোঙ দেখতে অনেকটা পিপার মতো। পিপা আকৃতির চোঙটি ব্যাবিলনের ভিত্তিস্তম্ভে ব্যবহার করা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটিই বিশ্বের ‘প্রথম মানবাধিকার সনদ’।[৪]
আবিষ্কার

ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক ও কূটনীতিক হরমুজদ র্যাসামের নেতৃত্বে মেসোপটেমিয়া (বর্তমান ইরাক) থেকে চোঙটি ১৮৭৯ সালে উদ্ধার করা হয়।[৪]
কুরুশকোষ (সাইরোপিডিয়া)
কুরুশের জীবনীর ওপর ভিত্তি করে গ্রিক চিন্তাবিদ জেনোফন লিখেছেন সাইরোপিডিয়া। জোনোফন লিখেছেন কুরুশ কীভাবে সহিষ্ণুতার ওপর ভিত্তি করে একটি বৈচিত্র্যময় সমাজ শাসন করতেন। বইটি (গ্রিক ও লাতিন ভাষায়) ইউরোপে ১৭৬৭ সালে প্রকাশিত হয়। একটি কপি স্থান পেয়েছে ওয়াশিংটন ডিসির বিশেষ প্রত্নপ্রদর্শনীতে। আরেকটি কপি ছিল সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট টমাস জেফারসনের সংগ্রহে, যা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেসে সংরক্ষিত রয়েছে।[৪]
গ্যালারি
- ১৮২৯ সালে ব্যাবিলনের প্রত্নস্থানের মানচিত্র। হরমুজ রাসামের খননকারীরা টেল আমরান-ইবনে আলীর (মানচিত্রের কেন্দ্রে "ই" চিহ্নযুক্ত) ঢিবিতে কুরুশের চোঙটি পেয়েছিলেন যার নিচে ছিল ধ্বংসপ্রাপ্ত ইসাগিলা মন্দির।
- কিউনিফর্ম লিপিতে লিখিত কুরুশের চোঙের নিকট চিত্র।
- নাবোনিডাস চোঙ।
- এই ফলক চিত্রে নবোনিডাসকে চাঁদ, সূর্য এবং শুক্র গ্রহকে প্রার্থনা করার চিত্র চিত্রিত হয়েছে। কুরুশের চোঙ শিলালিপিতে ব্যাবিলনীয় রাজার ধর্মীয় রীতিগুলির কঠোর নিন্দা করা হয়েছে।
- কুরুশের চোঙে উল্লেখিত মেসোপটেমিয়ার বিভিন্ন স্থান। মন্দিরগুলির পুনরুদ্ধারের সাথে উল্লেখ করা বেশিরভাগ এলাকা পূর্ব ও উত্তর মেসোপটেমিয়ায় ছিল, নির্বাসনপ্রাপ্ত ব্যাবিলনীয় রাজা নবোনিডাস (সুসাকে বাদ দিয়ে) শাসন করে এমন অঞ্চলগুলিতে।
- ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো, বলবোয়া পার্কে কুরুশের চোঙের স্মৃতিসৌধ। এটি ইরানীয় অভিবাসী সংস্থা দ্বারা নির্মিত হয়েছিল, যেখানে কুরুশকে মানবাধিকারের চ্যাম্পিয়ন হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে। তবে এই পাঠ্যে বিস্তৃত প্রচারিত মিথ্যা অনুবাদ উপস্থাপন করা হয়েছে।
- লন্ডনের ব্রিটিশ যাদুঘরের ৫৫ নম্বর কক্ষে কুরুশের চোঙ।
তথ্যসূত্র
গ্রন্থপঞ্জি
মিডিয়া আর্টিকেল
অন্যান্য উৎস
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.