Loading AI tools
রাসায়নিক যৌগ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বিজাতীয়, তৈলাক্ত স্টেরয়েড যা কোষের ঝিল্লি বা (সেল মেমব্রেনে)-এ পাওয়া যায় এবং যা সব প্রাণীর রক্তে পরিবাহিত হয়। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সেল মেমব্রেনের এটি একটি অত্যাবশ্যক উপাদান । এই উপাদান মেমেব্রেনের মধ্য দিয়ে তরল পদার্থের ভেদ্যতা সচল রাখে এবং তার তারল্য বজায় রাখে ; এছাড়াও কলেস্টেরল একটি জরুরি প্রিকার্সার মলিকিউল যা বাইল আসিড, স্টেরয়েড হরমোন এবং স্নেহজাতীয় পদার্থে দ্রাব্য ভিটামিনের জৈব সংশ্লেষ ঘটায় । কলেস্টেরল সবচেয়ে জরুরি স্টেরল যা প্রাণীদেহে সংশ্লেষিত হয় । কিন্তু অন্যান্য ইউকারইওট যেমন গাছপালা এবং ছত্রাকের দেহে এটি অল্প পরিমাণে সংশ্লেষিত হয় । প্রোক্যারিওট যেমন ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে এটি একবারেই দেখা যায় না ।
এই নিবন্ধটিকে উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্পন্ন অবস্থায় আনতে এর বিষয়বস্তু পুনর্বিন্যস্ত করা প্রয়োজন। (জুলাই ২০১৫) |
উইকিপিডিয়ার ভূমিকাংশ নীতিমালা অনুসারে, এই নিবন্ধের ভূমিকাংশটি পুনরায় পরিষ্কার করে লেখা প্রয়োজন। (জুলাই ২০১৫) |
নামসমূহ | |
---|---|
ইউপ্যাক নাম
(3β)-cholest-5-en-3-ol | |
অন্যান্য নাম
(10R,13R)-10,13-dimethyl-17-(6-methylheptan-2-yl)-2,3,4,7,8,9,11,12,14,15,16,17-dodecahydro-1H-cyclopenta[a]phenanthren-3-ol | |
শনাক্তকারী | |
ত্রিমাত্রিক মডেল (জেমল) |
|
কেমস্পাইডার | |
ইসিএইচএ ইনফোকার্ড | ১০০.০০০.৩২১ |
ইসি-নম্বর | |
পাবকেম CID |
|
কম্পটক্স ড্যাশবোর্ড (EPA) |
|
এসএমআইএলইএস
| |
বৈশিষ্ট্য | |
C27H46O | |
আণবিক ভর | 386.65 g/mol |
বর্ণ | white crystalline powder[1] |
গলনাঙ্ক | 148–150 °C[1] |
স্ফুটনাঙ্ক | 360 °C (decomposes) |
পানিতে দ্রাব্যতা |
0.095 mg/L (30 °C) |
সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা ছাড়া, পদার্থসমূহের সকল তথ্য-উপাত্তসমূহ তাদের প্রমাণ অবস্থা (২৫ °সে (৭৭ °ফা), ১০০ kPa) অনুসারে দেওয়া হয়েছে। | |
তথ্যছক তথ্যসূত্র | |
এই নাম কলেস্টেরলের উৎস গ্রিক শব্দদ্বয় কলে - (পিত্ত)এবং স্টেরস (ঘন পদার্থ). শব্দের শেষের রাসায়নিক বিভক্তি -অল অর্থাত এলকোহল কারণ ফ্রাসোয়া পুলেতিয়ার দে লা সল 1769-এ প্রথমে কলেস্টেরলকে পিত্তাসয়ের পাথর হিসেবে চিহ্নিত করেন.যাই হোক 1815-এ রসায়নবিদ ইউজিন শেভ্রিউল এই যৌগিকের নাম দেন "কলেসটেরাইন" ।
যেহেতু কলেস্টেরল মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যক, সেইজন্য মানুষের শরীরে এটি নতুনভাবে অর্থাত ডি নোভো উপায়ে সংশ্লেষিত হয়.তবে রক্তচলাচল যতই উচু মাত্রায় হোক না কেন তা নির্ভর করে লিপোপ্রোটিনের ভিতরে যোগাযোগের উপর. আথেরোসক্লেরোসিসের উদ্বর্তনের সঙ্গে এটি ভীষণভাবে সম্পৃক্ত.সাধারণত ৬৮ কেজি ওজনের মানুষের শরীরের মোট কলেস্টেরল সংশ্লেষ ১ গ্রাম (১০০০ মিলিগ্রাম)-এর কাছাকাছি (স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোট খাবারের পরিমাণ সমন্বয় করে)এবং যার মোট বডি কন্টেন্ট দাঁড়ায় 35গ্রা.মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ যাদের খাদ্যাভ্যাস একইরকম তারা সাধারণত দিনে বাড়তি ২০০-৩০০ মিলিগ্রাম খান.কলেস্টেরল পুনর্ব্যবহৃত হয়.যকৃত দ্বারা পিত্তর মাধ্যমে পৌষ্টিক অন্ত্রে এটি নিষ্কাশিত হয়.সাধারণত ৫০ শতাংশ নিষ্কাশিত কলেস্টেরলের নাড়ির দ্বারা পুনশোষিত হয়ে রক্তধারায় ফিরে আসে.অন্ত্রে কলেস্টেরল শোষনের পদ্ধতি খুব বাছাই করে হয়. বনজ স্টয়ানলস এবং স্টেরল (যা কলেস্টেরলের থেকেও বেশি আথেরোস্ক্লেরসিসের উদ্বর্তন ঘটায়)নিষ্কাশিত হয় এবং তা শরীর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য অন্ত্রের নালিকাগহ্বর-এ চলে আসে.
কোষের ঝিল্লি বা সেল মেমব্রেন তৈরি করা এবং তা প্রতিপালন করার জন্য কলেস্টেরল প্রয়োজন হয়. এটি বিভিন্ন শারীরিক তাপমাত্রা অনুযায়ী ঝিল্লি বা মেমব্রেনের তারল্য নিয়ন্ত্রণ করে.কলেস্টেরলের হাইড্রক্সিল গ্রুপ মেমব্রেনের ফসফোলিপিড এবং স্ফিঙ্গলিপিডের পোলার হেডের উপর কাজ করে যখন স্থুল স্টেরয়েড এবং হাইড্রকার্বন চেন অন্যান্য লিপিডের ননপোলার ফ্যাটি আসিড চেনের সঙ্গে মেমব্রেনে গ্রথিত থাকে. এই গঠনমূলক ভূমিকায় কলেস্টেরল রক্তরসের ঝিল্লির ভেদ্যতা কমিয়ে প্রোটন (ধনাত্বক হাইড্রজেন আয়ন) এবং সোডিয়াম আয়নে নিয়ে আসে.[9]
কোষ ঝিল্লির ভিতরে কলেস্টেরল দুই কোষের মধ্যে পরিবহন, বার্তা নির্দেশ এবং স্নায়ুর যোগাযোগকারীর ভূমিকা পালন করে.ইনভ্যাজিনেটেড ক্যাভিঅলি এবং ক্ল্যাথ্রিন ঢাকা ছিদ্র এবং ক্যাভিঅলা-নির্ভর এবং ক্ল্যাথ্রিন-নির্ভর এনডোসাইটিসের গঠন এবং কার্যকারিতার জন্য কলেস্টেরল আবশ্যক.এই ধরনের এনডোসাইটিসের ক্ষেত্রে কলেস্টেরলের ভূমিকা খুঁজে বের করার জন্য মিথাইল বিটা সাইক্লোডেক্সট্রিনের (MBCD)সাহায্যে রক্তরসের ঝিল্লি থেকে কলেস্টেরল সরিয়ে ফেলতে হবে.সম্প্রতি এও বলা হচ্ছে যে রক্তরসের ঝিল্লি বা প্লাজমা মেমব্রেনে লিপিড রাফ্ট তৈরিতে সাহায্যের মাধ্যমে কলেস্টেরল কোষের বার্তা নির্দেশ পদ্ধতিতে অংশ নেয়.কলেস্টেরলে সমৃদ্ধ মাইলিন সিথ (যা নিউরনে থাকে)যা সোয়ান কোষের ঝিল্লির সুসংহত স্তরে পাওয়া যায় অন্তরণ এবং ঘাতের সুস্থ পরিবহন কার্যকর করে.[2]
কোষের মধ্যে কলেস্টেরল একটি প্রিকারসার মলিকিউল যা বেশ কিছু জৈবরাসায়নিক যোগাযোগের কাজ করে.যকৃতে কলেস্টেরল পিত্তে পরিবর্তিত হয় যা পিত্তাসয়ে জমা হয়ে থাকে.পিত্তে বাইল সল্ট থাকে যা পৌষ্টিক অন্ত্রের স্নেহজাতীয় পদার্থ দ্রব্য করে তোলে. এছাড়াও স্নেহজাতীয় পদার্থের অণু এবং স্নেহজাতীয় পদার্থে দ্রাব্য ভিটামিন যেমন ভিটামিন A, ভিটামিন D, ভিটামিন K এবং ভিটামিন E যাতে অন্ত্রে শোষিত হয়ে যায় সে ব্যাপারে সাহায্য করে. ভিটামিন D এবং স্টেরয়েড হরমোন যেমন আড্রইনাল গ্রন্থির হরমোন করটিসল এবং আলডেসটেরঅন, যৌন হরমোন যেমন প্রোজেসটেরঅন, ইস্ট্রজেন, টেসটোসটেরঅন এবং অন্যান্যর সংশ্লেষে কলেস্টেরল প্রিকার্সার মলিকিউল হিসেবে কাজ করে.
কিছু গবেষণায় এমনও দেখা গেছে যে কলেস্টেরল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে.[3]
পশুদেহ থেকে উৎপন্ন স্নেহজাতীয় পদার্থ বা এনিমাল ফ্যাট ট্রাইগ্লিসেরাইডস, কম পরিমাণে ফসফোলিপিডস এবং কলেস্টেরলের এক জটিল মিশ্রণ.তার ফলস্বরূপ যে সব খাবারে পশুদেহ থেকে উৎপন্ন স্নেহজাতীয় পদার্থ রয়েছে তার সবকটিতেই বিভিন্ন মাত্রায় কলেস্টেরল উপস্থিত.[4] যে সব খাদ্যে কলেস্টেরল রয়েছে তা হলো চিজ, ডিমের কুসুম, গরুর মাংস, শুওরের মাংস,মুরগির মাংস এবং চিংড়ি মাছ.[5]মাতৃদুগ্ধেও কলেস্টেরল যথেষ্ট পরিমাণে থাকে.[6] শাকসবজি বা ফলে কলেস্টেরল থাকে না যদি না তা খাবার তৈরি করার সময় কোনভাবে যোগ করা হয়ে থাকে.[5] কিন্তু গাছপালা থেকে উৎপন্ন তিসি বা চিনেবাদাম এ স্বাস্থ্যকর কলেস্টেরলের মতো যৌগিক থাকে যার নাম ফাইটোস্টেরলস. বলা হয় এরা সিরাম কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে.[7]
খাবারে উপস্থিত মোট স্নেহজাতীয় পদার্থের উপস্থিতি বিশেষত স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কলেস্টেরলসমৃদ্ধ খাবারের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়.[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]পরিপূর্ণ স্নেহ সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত খাবার,পশুদেহ থেকে উৎপন্ন স্নেহজাতীয় পদার্থ,বিভিন্ন ধরনের তেল এবং চকলেটে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে.আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটের আংশিক হাইড্রজেনেশনের ফলে ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হয়. অন্যান্য ফ্যাটের মতো এটি জীবনের জন্য অত্যাবশ্যক নয়.ট্রান্স ফ্যাট খুব কম বা একেবারেই না খেতে সুপারিশ করা হয়[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] কারণ প্রাকৃতিক উৎস থেকে তৈরি করা তেল বা ন্যাচারাল অয়েলের থেকে এটি অনেক বেশি ক্ষতিকারক.বাজারে যে সব চটজলদি খাবার বা ফাস্ট ফুড, মুখরোচক, ভাজা এবং সেঁকা খাবার পাওয়া যায় তাতে ট্রান্স ফ্যাট থাকে.
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার সঙ্গে সঙ্গে খ্যাদ্যাভ্যাস বদল করলে রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা কমানো সম্ভব.পশুদেহ থেকে উৎপন্ন খাবার এড়িয়ে চললে শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা কমবে কিন্তু শুধু কলেস্টেরলসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া কমিয়ে নয় খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে.যারা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে কলেস্টেরল কমাতে চান তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত দৈনন্দিন খাবারে উপস্থিত স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট থেকে উৎপন্ন ক্যালরির 7% কমিয়ে দেওয়া এবং এমন খাবার খাওয়া যাতে 200 mg-র কম কলেস্টেরল আছে.[8]
খাদ্যাভ্যাসে বদল আনলে (বিশেষত খাবারে স্নেহজাতীয় পদার্থ এবং কলেস্টেরলের মাত্রা কমানো) রক্তে কলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় এবং এই ফলস্বরূপ করনারী আর্টারি ডিজিজের সম্ভাবনা কমে এই মতটিকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে.একটি বিকল্প মতানুযায়ী খাবারে কলেস্টেরলের মাত্রা কমে গেলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন যকৃত তার প্রতিকার করার চেষ্টা করে কম বা বেশি মাত্রায় কলেস্টেরল উৎপন্ন করে. এই ভাবেই শরীরে কলেস্টেরলের মাত্রা অপরিবর্তিত থাকে.[9]
এমন প্রমাণও আছে যে সিম্পল শুগার (যা পরিশুদ্ধ চিনি থেকে নেওয়া) এবং পরিশুদ্ধ দানাশস্যসমৃদ্ধ খাবার রক্তে LDL কলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে.[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]ইনসুলিন নামক এক হরমন যকৃতে উত্তেজক প্রক্রিয়া দ্বারা কলেস্টেরলের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে.অগ্নাশয় থেকে ইনসুলিন রক্তধারায় নিসৃত হয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়.[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যে সব খাবারে প্রাকৃতিক স্নেহজাতীয় পদার্থ এবং প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে তারা ইনসুলিনের নির্গমন হতে দেয় না ফলে কলেস্টেরলও উৎপন্ন হয় না.(কিছু স্নেহজাতীয় পদার্থ যেমন মোনোস্যাচুরেটেড ভেজিটেবেল ফ্যাট রক্তের কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে আনে.)সেই জন্য খাবার থেকে পরিশুদ্ধ চিনি এবং দানাশস্য কমিয়ে দিলে (বা একেবারে বাদ দিলে)রক্তের LDL কলেস্টেরল কমে যায়.[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
মোটামুটি দৈনিক 20-25% কলেস্টেরল উৎপাদন হয় যকৃতে অন্ত্র, আড্রইনাল গ্রন্থী এবং জননাঙ্গ-এও সংশ্লেষের মাত্রা বেশি থাকে. শরীরে সংশ্লেষ শুরু হয়ে যায় যখন এসিটায়েল CoA-র একটি অণু এসিটওএসিটায়েল-CoA-এর একটি অণু জলশূন্য অবস্থায় 3-হাইড্রক্সি-3-মিথাইলগ্লুটারইল CoA (HMG-CoA) তৈরি করে.এই অণুটি পুনস্থাপিত হয় উৎসেচক HMG-CoA রিডাকটেস দ্বারা মেভ্যালোনেট হিসেবে.কলেস্টেরল সংশ্লেষের ক্ষেত্রে এই ধাপটি অপরিবর্তনীয় এবং এটাই স্টয়াটিন-দের কার্যক্ষেত্র (`HMG-CoA রিডাকটেস ইনহিবিটারস).
এরপর মেভ্যালোনেট তিনটি প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে 3-আইসোপেনটেনআইল পাইরোফসফেটে পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে যার জন্য ATP প্রয়োজন. এই অণুটি ডি কারবক্সিলেট করে আইসোপেনটেনআইল পাইরোফসফেট হয় যা জৈব প্রতিক্রিয়ার জন্য একটি জরুরি মেটাবলাইট. আইসোপেনটেনআইল পাইরোফসফেটের তিনটি অণু হিমায়িত হয়ে ফার্নেসাইল পাইরোফসফেট তৈরি হয় জেরানইল ট্রান্সফেরাসের ক্রিয়ার মাধ্যমে.তারপর ফার্নেসাইল পাইরোফসফেটের দুটি অণু হিমায়িত হয়ে স্কোয়ালিনস্কোয়ালিন সিন্থেস ক্রিয়ার মাধ্যমে এনডোপ্লাজমিক রেটিকুলামে স্কোয়ালিন তৈরি হয়. তারপর অক্সিডোস্কোয়ালেন সায়ক্লেজ স্কোয়ালিনকে একটি চক্রে আবর্তিত করে লানোস্টেরল তৈরি করে.শেষে লানোস্টেরল কলেস্টেরলে পরিবর্তিত হয়.[10]
1964-এ কনরাড ব্লচ এবং ফিওদর লাইনেন শরীরবিদ্যা এবং চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল প্রাইজ ভাগ করে নেন কলেস্টেরলের গঠন এবং নিয়ন্ত্রণ এবং ফ্যাটি আসিডের বিপাক সম্বন্ধীয় আবিষ্কার করে.
কলেস্টেরলের জৈবসংশ্লেষ সরাসরি নিয়ন্ত্রিত হয় উপস্থিত কলেস্টেরলের মাত্রার দ্বারা. যদিও এর সঙ্গে জড়িত হোমিওস্টয়াটিক কার্যকারণ আংশিকভাবেই বোঝা গেছে.খাবারে এর মাত্রা বেশি থাকলে অন্তর্জাত উৎপাদনে হ্রাস দেখা দেয়. খাবারে এর পরিমাণ কম থাকলে ঠিক উল্টো প্রভাব দেখা যায়.প্রধান নিয়ন্ত্রণকারি সাধন হচ্ছে প্রোটিন SREBP(স্টেরল নিয়ন্ত্রণকারি মৌল যা প্রোটিন 1 এবং 2-কে বেঁধে রাখে )আন্দাজ করার এবং বুঝে নেওয়ার ক্ষমতা এনডোপ্লাজমিক রেটিকুলামে কোথায় কোষ-অভ্যন্তরীণ কলেস্টেরল রয়েছে.[11] কলেস্টেরলের উপস্থিতিতে SREBP দুটি অন্য প্রোটিনের সঙ্গে যুক্ত থাকে:SCAP (SREBP-ক্লিভেজ আকটিভেটিং প্রোটিন) এবং ইন্সিগ 1.যখন কলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় তখন ইন্সিগ-1 নিজেকে যৌগ থেকে ছাড়িয়ে নেয় এবং যৌগটিকে গলগি এপারেটাসের দিকে চলে যেতে অনুমতি দেয়. সেখানে S1P এবং S2P-কে (সাইট-1 এবং সাইট-2)দুভাগে খন্ডিত করে SREBP. এই সময় যখন কলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে দুটি উপসেচকে কাজ করায় SCAP. এই SREBP খন্ডিত নিউক্লিয়াসের দিকে সরে যায় এবং সঙ্গে নিজেকে ট্রান্সক্রিপশন ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করায় যাতে নিজে সঙ্গে তা SRE-র (স্টেরল রেগুলেটরি ফ্যাক্টর,যা অনেক জিনের ট্রান্সক্রিপশন করতে সাহায্য করে )সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে.এর মধ্যে রয়েছে LDL রিসেপটর এবং HMG -CoA রিডাকটেস. এর মধ্যে প্রথমটি রক্তধারায় বয়ে চলা LDL-এর পুরনো বর্জ্যর মধ্যে প্রয়োজনীয় উপাদান খোঁজে এবং HMG-CoA রিডাকটেস কলেস্টেরলের অন্তর্জাত উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে.[12] এই বার্তা নির্দেশক পথের অধিকাংশই পরিষ্কার করে বুঝিয়েছিলেন ডা.মাইকেল এস ব্রাউন এবং ডা. জোসেফ এল. গোল্ডস্টাইন 1970-র দশকে.1985-তে তারা তাদের কাজের জন্য শরীরবিদ্যা এবং চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পান.তাদের পরের কাজে তারা দেখিয়েছিলেন কী করে SREBP যোগাযোগ পথ যে সব জিন যা মেদ তৈরী,বিপাক এবং শরীরের জ্বালানির স্থাননির্দেশ নিয়ন্ত্রণ করে তাদের প্রকাশ সংহত করে.
কলেস্টেরলের মাত্রা যখন বেড়ে যায় তখন কলেস্টেরল সংশ্লেষ বন্ধ করে দেওয়া যায়. `HMG-CoA-র মধ্যে রয়েছে একটি সিস ট লিক অধিকৃত এলাকা (যা অনুঘটকের কাজের দায়িত্ব নেয়)এবং একটি মেমব্রেন অধিকৃত এলাকা. এই মেমব্রেন অধিকৃত এলাকার কাজ অবনমনের বার্তা অনুমান করে বুঝে নেওয়া.কলেস্টেরলের কেন্দ্রিভুতিকরণ (এবং অন্যান্য স্টেরলেরও)ওই এলাকার অলিগোমেরাইজেশন পরিস্থিতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসে.এর কারণে প্রোটিওজম দ্বারা এর ধ্বংশ আরো সহজ হয়ে যায়. এই উপশেচকের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে ফসফোরাইলেশন, AMP দ্বারা কার্যকর প্রোটিন কাইনেসের সাহায্যে. এই কাইনেসকে কার্যকর করে AMP যা উৎপাদিত হয় যখন ATP হাইড্রলাইজ করা হয়.যখন ATP-র মাত্রা কম থাকে তখন প্রোটিন সংশ্লেষ বন্ধ হয়ে যায়.[13]
কোলেস্টেরল জলে খুব সামান্য দ্রাব্য হয়. এটি জলে খুব অল্প মিশে গিয়ে জলীয় রক্তধারায় অল্প মাত্রায় কেন্দ্রীভূত অবস্থায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবাহিত হতে পারে.যেহেতু কলেস্টেরল পুরোপুরি জলে মিশে যায় না, সেইজন্য শরীরের সংবহন ব্যবস্থায় লিপোপ্রোটিন,জটিল গোলাকার কণিকা (যার বহিরঙ্গ এম্ফিলিক প্রোটিন দিয়ে তৈরী)এবং লিপিডএর (যার বাইরের দিকটা জলে মিশে যায় এবং অভ্যন্তর চর্বিতে গুলে যায়)সঙ্গে পরিবাহিত হয়. ট্রাইগ্লিসেরাইড এবং কলেস্টেরল এস্টার ভিতর দিয়ে পরিবাহিত হয়. ফসফোলিপিড এবং কলেস্টেরল দুই এমপিপ্যা থিক তাই তারা লিপোপ্রোটিন কণিকার উপরের একক স্তরে পরিবাহিত হয়.
শুধু কলেস্টেরল পরিবহনের মাধ্যম নয়, লিপোপ্রোটিনে থাকে কোষ-লক্ষকারী নির্দেশ যা লিপিডের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কলা বা টিসুর কাছে বার্তানির্দেশ পৌছে দেয়.এই কারণেই রক্তে বিভিন্ন ধরনের লিপো প্রোটিন থাকে. তাদের ক্রমে হ্রস্যমান ঘনত্ব হিসেবে নাম দেওয়া হয়: কাইলমাইক্রন, খুব কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (VLDL), মাঝামাঝি ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (IDL), কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন(LDL), খুব বেশি ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন (HDL).এই বিভিন্ন ধরনের লিপোপ্রোটিনে থাকা কলেস্টেরল একবারেই এক রকম. যদিও কলেস্টেরল পরিবাহিত হয় "মুক্ত" এলকাহল হিসেবে এর মধ্যে কিছু ফ্যাটি আসিড এস্টার হিসেবে পরিবাহিত হয় যাকে কলেস্টেরল এস্টারও বলা হয়.যাই হোক বিভিন্ন লিপোপ্রোটিনে অপলিপোপ্রোটিন থাকে যা লাইজ্ঞানড হিসেবে কাজ করে কোষ ঝিল্লির নির্দিষ্ট গ্রহীতা হিসেবে.এই ভাবেই লিপোপ্রোটিন কণিকা অণু-ঠিকানা হিসেবে কাজ করে ঠিক রাখে কোথায় কলেস্টেরলের যাত্রা শুরু এবং শেষ হবে.
কাইলমাইক্রন যা সবচেয়ে কম ঘনত্বের কলেস্টেরল পরিবাহী অণু,তার মধ্যে থাকে অপোলিপোপ্রোটিন B-48, অপোলিপোপ্রোটিন C, অপোলিপোপ্রোটিন E তাদের খোলের মধ্যে.কাইলমাইক্রনরা হলো সেই পরিবাহক যারা অন্ত্র থেকে পেশি এবং অন্যান্য কলা যাদের কর্মক্ষমতা বাড়ানো বা ফ্যাট উৎপাদনের জন্য ফ্যাটি তাদের কাছে ফ্যাট নিয়ে যায়.যে কলেস্টেরল পেশি দ্বারা ব্যবহৃত হয় না, তারা কলেস্টেরলসমৃদ্ধ কাইলমাইক্রন হিসেবে রয়ে যায় যা যকৃত শুষে নেয়.
যকৃত VLDL অণু উৎপাদন করে যার মধ্যে বেশি মাত্রায় ট্রাইয়াগ্লিসেরল এবং কলেস্টেরল থাকে যা বাইল আসিডের সংশ্লেষের জন্য যকৃতের প্রয়োজন হয় না. এই অণুর খোলের মধ্যে অপোলিপোপ্রোটিন B100 এবং অপোলিপোপ্রোটিন E থাকে. রক্তধারায় পরিবাহিত হওয়ার সময় রক্তবাহ এদের ভেঙ্গে ট্রাইয়াগ্লিসেরল শোষণ করে নেয়. IDL nঅণু পড়ে থাকে যার মধ্যে কলেস্টেরল আরো বেশি পরিমাণে থাকে.IDL অণু দুভাবে কাজ করে. প্রথম,এর অর্ধেক যকৃত ব্যবহার করে অন্য জৈব অণুর সঙ্গে বিপাকের জন্য.বাকি অর্ধেক রক্তধারায় ট্রাইগ্লিসেরল ফেলে আসতে থাকে যতক্ষণ না তারা LDL অণু না হয়ে যায়, যার মধ্যে সব চেয়ে বেশি শতাংশ কলেস্টেরল থাকে.
সেইজন্য বলা চলে LDL অণুই রক্তে নিজের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি কলেস্টেরল নিয়ে চলে. প্রত্যেক অণুতেই প্রায় 1500 কলেস্টেরল এস্টার-এর অণু রয়েছে. LDL অণুর খোলে শুধু অপোলিপোপ্রোটিন B100-র একটি অণু থাকে যার উপস্থিতি LDL রিসেপ্টর তার পেরিফেরাল টিসুর সাহায্যে বুঝতে পারে.অপোলিপোপ্রোটিন B 100-র বন্ধনের উপর নির্ভর করে অনেক LDL রিসেপ্টরক্ল্যাথ্রিন মাখানো ছিদ্রে নিজেদের স্থান খুঁজে নেয়.LDL ও তার রিসেপ্টার কে এন্ডসাইটসিস দ্বারা অন্তরিকরণ করা হয় কোষের মধ্যে একটি গুটিকা বা ভেসিকেল তৈরির জন্য.সেই কোষথলি তারপর লাইসোসোমের সঙ্গে মিশে যায় যার মধ্যে লাইসোসোমাল আসিড লাইপেস নামের একটি উপসেচক থাকে যা কলেস্টেরল এস্টারকে হাইড্রলাইজ করে.কোষের মধ্যে কলেস্টেরল ঝিল্লির জৈবসংশ্লেষের কাজে লাগতে পারে বা এসট্রিফাইড কষে জমা হয়ে থাকতে পারে যাতে ঝিল্লির কোনো কাজে বাধা না সৃষ্টি হয়.
LDL রিসেপ্টরের সংশ্লেষ নিয়ন্ত্রণ করে SREBP. এই একই নিয়ন্ত্রণকারী প্রোটিন যা নতুন ভাবে কলেস্টেরলের সংশ্লেষ নিয়ন্ত্রণ করে যখন কোষে কলেস্টেরলের উপস্থিতি থাকে.যখন কোষে প্রচুর পরিমাণে কলেস্টেরল উপস্থিত তখন LDL রিসেপ্টরের সংশ্লেষ বন্ধ থাকে যাতে LDL অণু রূপে নতুন কলেস্টেরল আর নেওয়া না হয়. ঠিক উল্টো দিক থেকে দেখলে যখন কোষে কলেস্টেরলের ঘাটতি দেখা দেয় তখন বেশি LDL রিসেপ্টর তৈরি হয়.যখন এই পদ্ধতি অনিয়ন্ত্রিত থাকে তখন রক্তে LDL অণু দেখা যায় যার পেরিফেরাল টিসুতে রিসেপ্টর নেই.এই LDL অণুগুলি জারিত হয় এবং ম্যাক্রোফেজ এগুলিকে নিয়ে নেয়.এই অণুগুলি গ্রথিত হয়ে ফোম কোষ তৈরি হয়.এই কোষগুলি শিরা-উপশিরাতে বন্দী হয়ে গিয়ে আরথেরোস্ক্লেরোটিক প্লাক-এ পরিবর্তিত হয়. হার্ট এটাক, স্ট্রোক এবং অন্যান্য গুরুতর শারীরিক সমস্যার জন্য এই প্লাকি দায়ী.এর জন্যই LDL কলেস্টেরলকে সব সময় "খারাপ" কলেস্টেরল বলা হয়ে থাকে.[13]
উল্টো দিক থেকে দেখলে মনে করা হয় যে HDL কণিকা কলেস্টেরলকে যকৃতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে হয় নিষ্কাশনের জন্য না হয় হরমোন সংশ্লেষের কারণে যে পদ্ধতিটির নাম রিভার্স কলেস্টেরল ট্রান্সপোর্ট.[14] বেশি সংখ্যায় বড় `HDL কণিকা ভালো স্বাস্থ্যের আশ্বাস যোগায়.[15] কিন্তু বড় HDL কণিকা স্বাধীনভাবে থাকলে ধমনীতে আথেরোমাটাস ডিজিজ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে.
যকৃতে জারিত হয়ে কলেস্টেরল বিভিন্ন ধরেনের বাইল আসিডে পরিবর্তিত হয়.[47]এগুলি সংযুক্ত হয় গ্লিসাইন, টরাইন, গ্লুকিউরোনিক আসিড বা সালফেটের সঙ্গে. সংযুক্ত এবং অসংযুক্ত বাইল আসিডের একটি মিশ্রণ কলেস্টেরলের সঙ্গে যকৃত থেকে পিত্তে নিষ্কাশিত হয়.মোটামুটি 95% বাইল আসিড অন্ত্র থেকে পুনশোষিত হয় এবং বাকিটুকু শরীর থেকে বেরিয়ে যায়.[16] বাইল আসিডের এই নিসারণ এবং পুনশোষণ এনটেরওহেপ্যাটিক সর্কুলেশনের গোড়ার কথা যা খাদ্যে থাকা স্নেহজাতীয় পদার্থর হজম এবং শোষনের জন্য অত্যাবশ্যক.কিছু পরিস্থিতিতে যখন কলেস্টেরল বেশি ঘন হয়ে পিত্তাসয়ে দানা বাঁধে এবং পিত্তাসয়ের পাথরের মূল উপাদান হয়ে দাঁড়ায়. যদিও লিকিথিন এবং বিলিরুবিন দিয়ে তৈরি পিত্তাসয়ের পাথর খুব একটা দেখা যায় না.[51]
লিপিড হাইপোথিসিস অনুযায়ী অস্বাভাবিকরকম বেশি কলেস্টেরলের মাত্রা (হাইপারকলেস্টেরোলেমিয়া)বা সঠিকভাবে বলতে গেলে রক্তে বেশি মাত্রায় LDL কেন্দ্রীভূত হওয়া এবং কম মাত্রায় কার্যকর HDL-এর উপস্থিতি, এই পরিস্থিতির সঙ্গে কার্ডিওভাসকুলার অসুখ বা হার্টের অসুখের যোগাযোগ খুব দৃঢ় কারণ ধমনীতে অথেরোমা তৈরি করায় এদের ভূমিকা আছে (অথেরোস্ক্লেরোসিস). এই অসুখ ধীরে ধীরে শরীরকে মাইওকারডিয়াল ইন্ফার্কশন (হার্ট এটাক), স্ট্রোক এনং পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজের দিকে টেনে নিয়ে যায়. রক্তে LDL-এর মাত্রা বিশেষ করে বেশি পরিমাণে কেন্দ্রীভূত LDL কণিকাএবং ছোট আকারের LDL কণিকার উপস্থিতি শরীরের LDLকণিকায় কলেস্টেরলের পরিমাণের চেয়েও বেশি ক্ষতি করে. সেইজন্যই কনিকাদের প্রায়ই বলা হয় "খারাপ" কলেস্টেরল কারণ তাদের জন্য শরীরে অথেরোমা দেখা দেয়.[17] অন্য দিকে কার্যকর বেশি পরিমাণে কেন্দ্রীভূত হলে তা কোষ এবং অথে রোমা কলেস্টেরলমুক্ত করতে পারে এবং তা সুরক্ষিত রাখতে পারে.কথ্য ভাষায় তাই জন্য একে "ভালো কলেস্টেরল" বলা হয়ে থাকে.এই ভারসাম্য সাধারণভাবেই জানা যায় কিন্তু শরীরের আয়তন, ওষুধ, পছন্দের খাবার এবং অন্যান্য ব্যাপারের উপরেও এটি নির্ভরশীল.[18]
শরীরে যখন অক্সি ডাইজড কণিকা LDL খুব বেশি মাত্রায় কেন্দ্রীভূত হয়, বিশেষ করে "ছোট ঘন LDL "(sdLDL)তখন ধমনীর অভ্যন্তরের দেওয়ালে অথেরোমা তৈরি হয়.এই ধরনের শারীরিক অবস্থার নাম অথেরোস্ক্লেরোসিস যা করনারি হার্ট ডিজিজ বা কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের প্রধান কারণ.অন্যদিকে HDL কণিকার (বিশেষকরে বড় HDL কণিকা)সাহায্যে অথেরোমা থেকে কলেস্টেরল এবং অন্যান্য প্রদাহী মাধ্যমগুলি সরিয়ে দেওয়া যায়. বেশি পরিমাণে HDl কেন্দ্রীভূত হওয়ার সঙ্গে অথেরোমা বাড়ার গতি হ্রাস পায় এবং তা কমতেও থাকে.2007 সালে 61 দলে বিভক্ত 900,000 সাবজেক্ট -এর ওপর একটা গবেষণায় দেখায় যে রক্তে কলেস্টেরল-এর সর্বমোট মাত্রার প্রভাব কার্ডিওভাসকুলার ও সমস্ত মৃত্যু হারের ওপর পড়ে, এবং যুবক/যুবতীদের মধ্যে এই সংযোগটি বেশি দেথা যায়.অল্পবয়সীদের মধ্যে হৃদরোগ খুব কম দেখা যায়.কলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তার প্রভাব বয়স্কদের উপরই বেশি পড়ে.[19]
লিপোপ্রোটিনের ভগ্নাংশ কলেস্টেরলের LDL,IDL এবং VLDL- কে আরথেরোজেনিক মনে করা হয় (যা থেকে আরথেরোস্ক্লেরোসিস হয়).[20] মোট কলেস্টেরলের মাত্রার থেকেও বেশি এই ভগ্নাংশের মাত্রা আরথেরোস্ক্লেরোসিসের মাত্রা এবং বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত. অন্যদিকে মোট কলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভিবিকের মধ্যে থাকাসত্ত্বেও যদি তার বেশিরভাগটাই ছোট LDL এবং ছোট HDL কণিকা দিয়ে তৈরি হয়,এই পরিস্থিতিতে আথেরোমা বৃদ্ধির হার বেশিই থেকে যাবে.তবে যদি LDL কণিকার সংখ্যায় কম থাকে (বেশিরভাগই বড় কণিকা) এবং বেশি শতাংশ HDL বড় কণিকাও থাকে তাহলে মোট কলেস্টেরলের তুলনায় আথেরোমার বৃদ্ধি কম হয় এমনকী নাও হতে পারে.[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]সাম্প্রতিক কালে একটি গবেষণা পরবর্তী ফলফল থেকে জানা গেছে যে তার IDEAL এবং EPIC প্রসপেক্টিভ স্টাডি বলে যে কলেস্টেরলের উচ্চ মাত্রা এবং (যা অপলিপোপ্রোটিন A এবং অপলিপোপ্রোটিন B-র জন্য সমন্বিত হয়েছে ) হৃদরোগের ঝুঁকির মধ্যে একটি সরাসরি সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছে."ভালো" কলেস্টেরলের ভূমিকা নিয়েও এ ক্ষেত্রে সন্দেহ রয়েছে.[21]
অনেকবার মানুষের শরীরে পরীক্ষা করার পর দেখা গেছে যে HMG-CoA রিডাকটেস ইনহিবিটরস যা স্টয়াটিন নামে পরিচিত বারে বারে প্রমাণ করে যে লিপোপ্রোটিন পরিবাহিত করার অস্বাস্থ্যকর প্রতিমান যদি স্বাস্থ্যকর প্রতিমনে পরিবর্তিত করা যায় তা হলে হৃদরোগ হার সম্ভাবনে অনেকটাই হ্রাস পাবে.যে সব প্রাপ্তবয়স্কদের কলেস্টেরলের মান কম তাদের ক্ষেত্রেও এটা সত্য.[64]ফলে যাদের হৃদরোগের ইতিহাস রয়েছে তারা স্টয়াটিন থেকে সুবিধা পেতে পারেন তাদের কলেস্টেরলের মাত্রা যাই হোক না কেন.[22] যে সব পুরুষের হৃদরোগ নেই তাদের অত্যধিক কলেস্টেরলের মাত্রা কমে ("প্রাথমিক সাবধানতা") যাওয়ার ফলে বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন.[23] মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক সাবধানতা হিসেবে সেইগুলিই ধরা হয় যা গবেষণায় দেখা গেছে সাধারণত পুরুষদের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়.[24] স্টয়াটিন ট্রায়ালে দেখা গেছে মহিলারা সাধারণত বেশিদিন বাঁচেন এবং কম সংখায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন.[25]
1987-এ ন্যাশানাল কলেস্টেরল এডুকেশন প্রোগ্রামের রিপোর্টে এডালট ট্রিটমেন্ট প্যানেল সুপারিশ করেন রক্তে মোট কলেস্টেরলের মাত্রা হওয়া উচিত:200 mg/dL যা স্বাভাবিক ব্লাড কলেস্টেরল হিসেবে গণ্য হবে, 200–239 mg/dL প্রায় ঝুঁকিসম্পন্ন এবং >240 mg/dL হাই কলেস্টেরল হিসেবে গণ্য হবে.[26] দা আমেরিকান হার্ট আসোসিয়েশনও একইরকম সাহায্য সূত্র দেন রক্তের মোট (উপোশ করার পর)কলেস্টেরলের মাত্রা এবং হৃদরোগের ব্যাপারে.[27]
মাত্রা mg/dL | মাত্রা mmol/L | ব্যাখ্যা |
< ২০০ | < ৫.০ | ইতিবাচক পরিস্থিতি যা থেকে হার্টের অসুখের সম্ভাবনা খুব কম. |
২০০–২৪০ | ৫.২–৬.২ | প্রায় ঝুঁকি সম্পন্ন |
> ২৪০ | > ৬.২ | বেশি ঝুঁকিসম্পন্ন |
যাইহোক সাম্প্রতিক পরীক্ষণ পদ্ধতি LDL("খারাপ") এবং HDL ("ভালো")কলেস্টেরলের মাত্রা আলাদা করে নির্ধারণ করেন. আগের সহজ পদ্ধতিটি এখন একটু পুরনো ঠেকে.স্বাস্থ্যসম্মত LDL-এর মাত্রা হওয়া উচিত 100 mg/dL-এর কম (2.6 mmol/L)[77], যদিও বেশি ঝুঁকিসম্পন্ন মানুষদের জন্য নতুন লক্ষ্য হিসেবে ধরা হয় <70 mg/dL-এর kom,যা কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ঠিক করা হয়েছে. মোট কলেস্টেরল এবং HDL-এর অনুপাত (আরেকটি কার্যকর পরিমাপ)5:1 -এর বেশ খানিকটা কম হওয়াই স্বাস্থ্যসম্মত.এও জেনে রাখা ভালো বাচ্চাদের মোটা হয়ে যাওয়ার ধাত শুরু হয়ে যাওয়ার আগে তাদের LDL-এর পরিমাপ সাধারণত হয় 35 mg/dL.
LDL পরীক্ষা করার যে সব পদ্ধতি রয়েছে সেগুলি আসলে রক্তে LDL-এর পরিমাণ এবং কণিকার আয়তন মাপে না.খরচের কারণে LDL-এর মাত্রা ফ্রিডেওয়াল্ড ফর্মুলা (বা কোনো বৈকল্পিক) অনুসারে হিসেব করা হয়:[মোট কলেস্টেরল ]-[মোট HDL]- মোট ট্রাইগ্লিসেরাইডের মানের 20% = সম্ভাব্য LDL. মোট কলেস্টেরল হিসেব করা হয় HDL,LDL এবং ভ্ল্দ্ল-এর যোগফল একসঙ্গে নিয়ে.সাধারণভাবে শুধু সামগ্রিক মান,HDLএবং ট্রাইগ্লিসেরাইড মাপা হয়ে থাকে. সাধারণত ট্রাইগ্লিসেরাইডের এক পঞ্চমাংশ VLDL হিসেবে ধরা হয়.রক্ত পরীক্ষার আগে অন্তত আট ঘণ্টা উপোশ করে থাকা উচিত কারণ খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাইগ্লিসেরাইডের মাত্রার পরিবর্তন হয়
যদিও আমরা সবাই জানি হৃদরোগের ক্ষেত্রে কলেস্টেরলের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে,কিছু গবেষণা কলেস্টেরল এবং মানুষের নশ্বরতার উল্টো সম্পর্কও দেখিয়েছেন. 50 বছরের বেশি বয়সের ক্ষেত্রে হৃদরোগে মৃত্যু 11% বাড়ে কিন্তু কলেস্টেরলের মাত্রা 1 mg/dL কমে গেলে প্রতি বছরে হৃদরোগে মৃত্যু 14% বেড়ে যায়.ফার্মিংহ্যাম হার্ট স্টাডিতে গবেষকরা বলেছিলেন যে যারা ক্যান্সারের মতো কোনো গুরুতর অসুখে ভুগছেন তাদের অস্বাভাবিকরকম কম কলেস্টেরলের মাত্রা থাকে.[28] ভোরারল বার্গ হেলথ এন্ড মনিটরিং প্রোমোশন প্রোগ্রাম এই ব্যাখ্যাকে সমর্থন করেননি.তারা মনে করেন না,যে কোনো বয়সী পুরুষ এবং 50-এর বেশি বয়েসী মহিলা যাদের কলেস্টেরলের মাত্রা খুব কম তারা ক্যান্সার,যকৃতের অসুখ বা মানসিক ব্যাধিতে মারা যেতে পারেন. এই ফলাফল থেকে বোঝা যায় যে কমমাত্রায় থাকা কলেস্টেরলের প্রভাব অল্পবয়েসী রোগীদের উপরও পড়ে.সেইজন্য আগের সমীক্ষাটি ভুল কারণ তা শুধু বয়স্ক মানুষদের তালিকা ধরে করা হয়েছিল এবং এটিকে বেশি বয়েসের দুর্বলতা হিসেবে নির্ধারণ করে নেওয়া হয়েছিল.[29]
বিজ্ঞানীদের একটি ছোট গোষ্ঠী যারা একসঙ্গে দা ইউনাইটেড নেটওয়ার্ক অফ কলেস্টেরল স্কেপটিক্স নামে একটি সংস্থা তৈরি করেছেন,তারা এখনো ক[30] লেস্টেরল এবং আরথেরোস্ক্লেরসিস-এর সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন.যাই হোক চিকিৎসক এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানী দের এক বৃহৎ অংশ এই সম্পর্ককে প্রশ্নাতীত মনে করেন.[31]
অস্বাভিকরকম কম কলেস্টেরলের মাত্রা থাকাকে বলে হাইপোকলেস্টেরলেমিয়া .শরীরের এই পরিস্থিতি নিয়ে গবেষণার তুলনামূলকভাবে সীমাবদ্ধ কিন্তু কিছু গবেষণাপত্র ডিপ্রেশন, ক্যান্সার এবং সেরিব্রাল হেমারেজের সঙ্গে এর যোগাযোগ খুঁজে পেয়েছে.সাধারণত কলেস্টেরলের মাত্রা কম কোনো ধরা না পরা পড়া অসুখের ফল. কোনো অসুখের কারণ নয়.[19]
আমেরিকান হার্ট আসোসিয়েশন 20 বছর এবং তার চেয়ে বেশি বয়েসী সবার জন্য 5 বছরে অন্তর একবার কলেস্টেরল পরীক্ষা করা সুপারিশ করেন.[32]
12 ঘণ্টা উপোশ করে থাকার পর চিকিৎসক রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন বা বাড়িতেই কলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখার যন্ত্রের সাহায্যে লিপোপ্রোটিন প্রোফাইল নির্ধারণ করা যায়. এর দ্বারা মোট কলেস্টেরল,LDL(খারাপ)কলেস্টেরল, HDLভালো )কলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসেরাইডস মাপা যায়.যাদের মোট কলেস্টেরল 200 mg/dL বা তার বেশি,যে সব পুরুষের এবং মহিলার বয়েস যথাক্রমে 45 এবং 50-এর বেশি আর যাদের HDL (ভালো)কলেস্টেরল 40 mg/দল-এর কম বা যাদের অন্যান্য ঝুঁকি যেমন হার্টের অসুখ অথবা স্ট্রোকের সম্ভাবনা রয়েছে তাদের সুপারিশ করা হয় 5 বছরে একাধিকবার কলেস্টেরল পরীক্ষা করে দেখতে.
কলেস্টেরল থেকে পাওয়া কিছু উপাদান (কলেস্টেরল জাত চর্বির সঙ্গে) দানাবদ্ধ তরল তৈরি করতে সক্ষম যার নাম কলেস্টেরিক ফেজ .এই কলস্টেরিক ফেজ আসলে এক ধরনের কিরালনেমেটিক ফেজ যা তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে রং বদল করে.সেইজন্যই কলেস্টেরলের থেকে পাওয়া এই উপাদানগুলি লিকুইড ক্রিস্টাল থার্মোমিটার এবং তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল রঙে ব্যবহার করা হয়.
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.