১৯৮৬-৮৭ অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের ভারত সফর
ক্রিকেট সফর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমকে ঘিরে তিন-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজ ও পাঁচটি-ওডিআই নিয়ে গড়া সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে ভারত গমন করে।
১৯৮৬-৮৭ অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের ভারত সফর | |||
---|---|---|---|
![]() |
![]() | ||
ভারত | অস্ট্রেলিয়া | ||
তারিখ | ৩০ আগস্ট – ১৯ অক্টোবর, ১৯৮৬ | ||
অধিনায়ক | কপিল দেব | অ্যালান বর্ডার | |
টেস্ট সিরিজ | |||
ফলাফল | ৩ ম্যাচের সিরিজ ০–০ ব্যবধানে ড্র | ||
সর্বাধিক রান | রবি শাস্ত্রী (২৩১) | ডিন জোন্স (৩৭১) | |
সর্বাধিক উইকেট | শিবলাল যাদব (৮) | গ্রেগ ম্যাথিউস (১৪) | |
একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজ | |||
ফলাফল | ৬ ম্যাচের সিরিজে ভারত ৩–২ ব্যবধানে জয়ী | ||
সর্বাধিক রান | রমন লাম্বা (২৭৮) | অ্যালান বর্ডার (২৩৯) | |
সর্বাধিক উইকেট | রবি শাস্ত্রী (৮) | ব্রুস রিড (৮) | |
সিরিজ সেরা খেলোয়াড় | রমন লাম্বা (ভারত) |
ঐ টেস্ট সিরিজটি ০-০ ব্যবধানে ড্রয়ে পরিণত হয়। তন্মধ্যে, একটি টেস্ট টাই হয়েছিল। ভারত দল একদিনের সিরিজের ৩-২ ব্যবধানে জয় পায়। টেস্ট সিরিজের প্রথমটি টাইয়ের কারণে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় টাই হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে।[১] স্মর্তব্য যে, প্রথম টাই টেস্ট ১৯৬০-৬১ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে হয়েছিল।
সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দল
সারাংশ
প্রসঙ্গ
সিরিজের পূর্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া দল দুই-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজে পরাজিত হয় ও ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমের গ্রীষ্মকালে ভারতের বিপক্ষে কোনক্রমে ০-০ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে। এরপর নবনিযুক্ত কোচ বব সিম্পসনের তত্ত্বাবধানে দলটি নব আঙ্গিকে গড়ে উঠে। তবে, অস্ট্রেলিয়া দল সাম্প্রতিককালের ১৯৮৪ সালের সফরে ভারতের পরিবেশের সাথে অপরিচিত ছিল না।
লরি সল, গ্রেগ চ্যাপেল, জিম হিগস ও ববি সিম্পসন মূল দলটি নির্বাচিত করেন। ৩০ এপ্রিল, ১৯৮৬ তারিখে দলের সদস্যদের নামের তালিকা ঘোষণা করা হয়:[২]
- ব্যাটসম্যান – অ্যালান বর্ডার (অধিনায়ক), ডেভিড বুন (সহ-অধিনায়ক), জিওফ মার্শ, ডিন জোন্স, গ্রেগ রিচি, মাইক ভেলেটা
- ফাস্ট বোলার – ক্রেগ ম্যাকডারমট, ব্রুস রিড, ডেভ গিলবার্ট, সাইমন ডেভিস
- স্পিনার – রে ব্রাইট
- অল-রাউন্ডার – গ্রেগ ম্যাথিউস, স্টিভ ওয়াহ
- উইকেট-রক্ষক – টিম জোরার, গ্রেগ ডায়ার
- দলীয় কর্মকর্তা – বব সিম্পসন (কোচ), অ্যালেন ক্রম্পটন (সফর ব্যবস্থাপক), এরল অ্যালকট (ফিজিও), চার্লি পিন্টো (পরিবহন), গোবিন্দ বাউজি (মালামালরক্ষক)
শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারকে দলের বাইরে রাখা হয়। তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের যাবার জন্যে চুক্তিবদ্ধ হন ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের জন্যে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন।
সফরে দল নির্বাচকমণ্ডলী: অ্যালান বর্ডার, ডেভিড বুন, বব সিম্পসন।
১৯৮৫-৮৬ মৌসুমের পুরো গ্রীষ্মকালে ওয়েন ফিলিপস অস্ট্রেলিয়ার উইকেট-রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর, টিম জোরারকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয় ও তিনি ব্যাটিংয়ে দক্ষতা আনয়ণে চেষ্টা চালিয়েছিলেন। তাসত্ত্বেও দল নির্বাচকমণ্ডলী কর্তৃক তিনি উপেক্ষিত হন। নিউজিল্যান্ডে সফরকারী দলের একমাত্র সদস্য হিসেবে তাকে ভারত গমনার্থে দলে রাখা হয়নি। ঐ রাতে তার অন্তর্ভূক্তি না হবার প্রশ্নে গণমাধ্যমে ওয়েন ফিলিপস মন্তব্য করেন যে, ‘আমার ইচ্ছে ছিল যে আম দলের সাথে যাব। কিন্তু, তারা তা করেনি। দল গঠনকারী ঐ সকল বাজে লোকদেরকে দেখে নেব।’ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বোর্ড থেকে তার উপর $২০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা ধার্য্য করা হয় ও তিনি আর অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলেননি।[৩]
১৯ আগস্ট তারিখে সফরের প্রস্তুতি গ্রহণকল্পে অ্যালান বর্ডার কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স দল থেকে বেশ আগেভাগে দেশে চলে আসেন। বব সিম্পসন, গ্রেগ চ্যাপেল ও অ্যাশলে মলেটের তত্ত্বাবধানে অস্ট্রেলিয়া দলের ছয়দিনের বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।[৪]
টেস্ট সিরিজ
১ম টেস্ট[৫][৬][৭]
ব |
||
- অস্ট্রেলিয়া টসে জয়লাভ করে ও ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
২য় টেস্ট
ব |
||
- অস্ট্রেলিয়া টসে জয়লাভ করে ও ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
- প্রথম তিনদিন কোন খেলা হয়নি।
৩য় টেস্ট[৮][৯]
ব |
||
- অস্ট্রেলিয়া টসে জয়লাভ করে ও ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
- ভারতের পক্ষে আরআর কুলকার্নী’র টেস্ট অভিষেক ঘটে।
ওডিআই সিরিজ
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ভারত দল চারমিনার চ্যালেঞ্জ কাপ ৩-২ ব্যবধানে জিতে নেয়।
প্রথম ওডিআই
৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ Scorecard |
ব |
||
- ভারত টসে জয়লাভ করে ও ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
- উভয় দলের ওভার সংখ্যা ৪৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়।
- ভারতের পক্ষে আর লাম্বা’র ওডিআই অভিষেক ঘটে।
দ্বিতীয় ওডিআই
৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ স্কোরকার্ড |
ব |
||
- অস্ট্রেলিয়া টসে জয়লাভ করে ও ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
- উভয় দলের ওভার সংখ্যা ৪৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়।
তৃতীয় ওডিআই
২৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ স্কোরকার্ড |
ব |
||
- ভারত টসে জয়লাভ করে ও ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
- উভয় দলের ওভার সংখ্যা ৪৭ ওভারে নিয়ে আসা হয়।
- অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে জিসি ডায়ার এবং ভারতের পক্ষে আরপি সিংয়ের ওডিআই অভিষেক ঘটে।
চতুর্থ ওডিআই
২ অক্টোবর, ১৯৮৬ স্কোরকার্ড |
ব |
||
- ভারত টসে জয়লাভ করে ও ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
- উভয় দলের ওভার সংখ্যা ৪৫ ওভারে নিয়ে আসা হয়।
পঞ্চম ওডিআই
ষষ্ঠ ওডিআই
৭ অক্টোবর, ১৯৮৬ স্কোরকার্ড |
ব |
||
- অস্ট্রেলিয়া টসে জয়লাভ করে ও ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়।
- উভয় দলের ওভার সংখ্যা ৪৮ ওভারে নিয়ে আসা হয়।
প্রস্তুতিমূলক খেলা
- বোর্ড সভাপতি একাদশ ব অস্ট্রেলিয়া একাদশ, ব্যাঙ্গালোর, ৩০ আগস্ট - ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ – খেলা ড্র। খেলায় জিওফ মার্শ শতরান করেন ও ম্যাথিউস পাঁচ উইকেট পান।[১০]
- বোম্বে ব অস্ট্রেলিয়া একাদশ, গোয়ালিয়র, ৩ - ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ – খেলা ড্র। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে গ্রেগ রিচি শতরান করেন ও ম্যাথিউস ৯৯ রান তুলেন।[১১][১২]
- ভারত অনূর্ধ্ব-২৫ একাদশ ব অস্ট্রেলিয়া একাদশ, চণ্ডীগড়, ১২ - ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬ – খেলা ড্র।[১৩]
- দিল্লি ব অস্ট্রেলিয়া একাদশ, বরোদরা, ১০ ১২ অক্টোবর, ১৯৮৬ – খেলা ড্র। ডেভ গিলবার্ট শতরান করেন।
সার-সংক্ষেপ
এ সফরে ডেভিড বুন ও জিওফ মার্শ অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি হিসেবে এবং ডিন জোন্স টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেন। গ্রেগ ম্যাথিউস শীর্ষসারির স্পিনার হিসেবে আবির্ভূত হন। ডিন জোন্স পরবর্তীতে মন্তব্য করেন যে, টাই টেস্টের মাধ্যমেই অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ঘুরে দাঁড়ানোর মাইলফলক হিসেবে চিত্রিত হয়। তবে, ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২-১ ব্যবধানে পরাভূত হয়েছিল।[১৪] ঐ সিরিজ শেষে বুন, রিচি, ম্যাথুজ, ম্যাকডারমট, ডেভিডস, গিলবার্ট ও ব্রাইটকে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল।
খেলোয়াড়দের মূল্যবান অভিজ্ঞতা লাভের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া দল সফলতার সাথে ১৯৮৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.