Remove ads
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল এপ্রিল, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে ২০০৫-০৬ মৌসুম শেষ করে। সিরিজটিকে নিস্তরঙ্গতার সাথে মৌসুম শেষ হবার আভাসরূপে দেখা হয়েছিল। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের দ্বিতীয় স্থান অধিকারী দলের সাথে তাদের বিশ পয়েন্টের সুষ্পষ্ট ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়া দল এগিয়ে ছিল। তারা ক্রিকেটের ইতিহাসে একমাত্র টেস্ট জয় ও র্যাঙ্কিংয়ের তলানীতে অবস্থানকারী শতাধিক পয়েন্টের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাথে খেলতে নামে। সফরকারী দলের অধিনায়ক রিকি পন্টিং কর্তৃক ফেব্রুয়ারিতে লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফে ‘বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কম গুরুত্বপূর্ণ দেশকে দেখতে চাই না এবং আমি মনে করি যে বর্তমানে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের টেস্ট খেলার মর্যাদা নেই’ প্রদত্ত বক্তব্য খণ্ডন করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ দল।
২০০৫-০৬ অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর | |||
---|---|---|---|
বাংলাদেশ | অস্ট্রেলিয়া | ||
তারিখ | ৯ এপ্রিল – ২৮ এপ্রিল, ২০০৬ | ||
অধিনায়ক | হাবিবুল বাশার | রিকি পন্টিং | |
টেস্ট সিরিজ | |||
ফলাফল | ২ ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ২–০ ব্যবধানে জয়ী | ||
সর্বাধিক রান | শাহরিয়ার নাফিস (২৫০) | মাইকেল হাসি (২৪২) | |
সর্বাধিক উইকেট | মোহাম্মদ রফিক (১১) | স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল (১৬) | |
সিরিজ সেরা খেলোয়াড় | জেসন গিলেস্পি | ||
একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজ | |||
ফলাফল | ৩ ম্যাচের সিরিজে অস্ট্রেলিয়া ৩–০ ব্যবধানে জয়ী | ||
সর্বাধিক রান | হাবিবুল বাশার (১৫৫) | অ্যাডাম গিলক্রিস্ট (১০৮) | |
সর্বাধিক উইকেট | আব্দুর রাজ্জাক (৫) | ব্র্যাড হগ (৯) | |
সিরিজ সেরা খেলোয়াড় | ব্র্যাড হগ |
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে পন্টিংয়ের উল্লেখিত বক্তব্য, স্বাগতিক দলের সমর্থনে তিনি বলেন যে, সম্ভবতঃ বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে খেলাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এরপূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিন টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলেও ৩-২ ব্যবধানে ওডিআই খেলাগুলোয় হারে। তন্মধ্যে, খ্যাতনামা পঞ্চম ওডিআই ছিল যাতে অস্ট্রেলিয়া ৪৩৪/৪ দলীয় রানের বিশ্বরেকর্ড গড়ে। পরবর্তীতে দক্ষিণ আফ্রিকা জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় নেমে ৪৩৮/৯ সংগ্রহের বিশ্বরেকর্ডের সৃষ্টি করে। হারার পর কোন প্রস্তুতিমূলক খেলা বাদেই অস্ট্রেলিয়া দুই টেস্ট ও তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিকের খেলায় অংশ নিতে বাংলাদেশে আসে।
অস্ট্রেলিয়া দুই টেস্টে গড়া সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয় করে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম টেস্টে শ্বাসরূদ্ধকর তিন উইকেটে জয় পায় ও বাংলাদেশের প্রায় দূর্দান্ত ঘটনা থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করে। তারপর, অস্ট্রেলিয়া অনায়াসে দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংসের ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। ঐ টেস্টে সচরাচর দশ নম্বরে নামা ব্যাটসম্যান ও অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলার জেসন গিলেস্পিকে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামিয়ে দ্বি-শতক রানের বিষয়টি অবিস্মরণীয় করে রাখে। অস্ট্রেলিয়া ওডিআই সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জয় পায়।
অস্ট্রেলিয়া[1] | বাংলাদেশ[2] |
---|---|
|
|
বাংলাদেশ | ৪২৭ (১২৩.৩ ওভার) | ও | ১৪৮ (৫০ ওভার) | অস্ট্রেলিয়া ৩ উইকেটে বিজয়ী[3] |
শাহরিয়ার নাফিস ১৩৮ (১৮৯) |
শাহরিয়ার নাফিস ৩৩ (৩৮) |
নারায়ণগঞ্জ ওসমানী স্টেডিয়াম, ফতুল্লা, বাংলাদেশ | ||
অস্ট্রেলিয়া | ২৬৯ (৯৫.২ ওভার) | ও | ৩০৭/৭ (১০৭ ওভার) | |
এসি গিলক্রিস্ট ১৪৪ (২১০) |
আরটি পন্টিং ১১৮* (২৫৩) |
টস জয়ের পর হাবিবুল বাশার ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন এবং প্রাথমিকভাবে বাশারের প্রতিশ্রুত ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় উভয় টেস্টে ইনিংস পরাজয় এড়ানোর গুরুত্বতা মূল্যায়ণে সচেষ্ট হয়। তার দল দৃঢ়প্রত্যয়ের সাথে খেলায় অগ্রসর হয়। সকালের অধিবেশনে রান রেট প্রায় ওভারপ্রতি ছয়ে চলে যায়। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জাভেদ ওমর প্রথিতযশা অসি বোলার জেসন গিলেস্পির বলে ২৭ রানে এলবিডব্লিউ হন। তবে শাহরিয়ার নাফিস ও বাশার শেন ওয়ার্নের বল মোকাবেলা করে শক্ত জুটি গড়ার চেষ্টা চালান। আঘাতের কারণে মাঠ থেকে চলে যাওয়া শেন ওয়ার্নের বোলিং পরিসংখ্যান ছিল বিনা উইকেটে ১১২। তার একমাত্র সুযোগ আসে স্ট্যাম্পের পিছনে বাশারের ৩৬ রান থাকাকালে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ব্যর্থতা। এ জুটি বিকালের অধিবেশনের অধিকাংশ সময় রাজত্ব কায়েম করেন। ওয়ার্নের বলে উপর্যুপরি দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নাফিস তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। কিন্তু চা-বিরতির এক বল পূর্বে স্টুয়ার্ট ম্যাকগিলের বলে ব্রেট লি কট নিয়ে অধিনায়ককে বিদায় করেন। সান্ধ্য অধিবেশনে অল্প কিছু রান উঠলেও বেশ কয়েকটি উইকেটের পতন ঘটে ও দলীয় সংগ্রহ দিন শেষে ৩৫৫/৫ দাঁড়ায়।
দ্বিতীয় দিনও একইভাবে শুরু হয়। সকালের অধিবেশনে অর্ধ-শতকধারী রাজিন সালেহের একমাত্র উইকেটটি হারায়। কিন্তু মধ্যাহ্নভোজনের পর দলটি ৪২৭ রানে অল-আউট হয়। তাদের এ সংগ্রহটি টেস্ট ক্রিকেটে তৎকালীন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ ছিল। ম্যাকগিল তার খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান করেন ৮/১০৮। তন্মধ্যে, শেষ চার উইকেট পান মাত্র ২৯ রান দিয়ে। অস্ট্রেলিয়া এ উইকেটে হতাশাব্যঞ্জকভাবে অগ্রসর হয়। ম্যাথু হেইডেন খেলার তৃতীয় ওভারে ছয় রানে এলবিডব্লিউ এবং রিকি পন্টিংও একইভাবে ২১ রানে আউট হন।
দল গভীর সঙ্কটে নিপতিত হয়। কেবলমাত্র অ্যাডাম গিলক্রিস্টের সংঘাতমুখর অপরাজিত ৫১ রানের কল্যাণে দিন শেষে ১৪৫/৬ হলে অস্ট্রেলিয়া ফলো-অন এড়াতে সচেষ্ট হয়। তৃতীয় দিন গিলক্রিস্ট ও ব্রেট লি (১২) খেলা শুরু করেন। কিন্তু সকালের অধিবেশনে কেবল পরের জনের উইকেটের পতন হয়। অষ্টম উইকেটে গিলেস্পি ফলো-অন এড়াতে সহায়তা করেন। এ জুটি ৭৩ রান করে ও এক বছর পর গিলক্রিস্ট তার প্রথম সেঞ্চুরির সন্ধান পান। স্টুয়ার্ট ক্লার্ক মাঠে নামেন ও শূন্য রানে এবং গিলক্রিস্ট কট আউটে বিদায় নেন। এরফলে অস্ট্রেলিয়া ২৬৯ রানে অল-আউট হয় ও বাংলাদেশের স্পিন বোলার মোহাম্মদ রফিক ৫/৬২ পান।
দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ সংগ্রহ খারাপের দিকে যায়। পূর্বেকার ইনিংসে সেঞ্চুরি করা নাফিস ৩৩ রান তুলে নিজেকে জাগিয়ে তুলতে ব্যর্থ হন। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ওমরের ব্যাটের প্রান্ত স্পর্শ করে ১৮ রান তুলে উইকেট-রক্ষক গিলক্রিস্টের হাতে ধরা পড়েন। খুব শীঘ্রই অধিনায়ক সাত রানে রান-আউটের শিকার হন ও আফতাব আহমেদ শেষ ওভারে তার উইকেট হারালে দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২৪/৫।
চতুর্থ দিনেও একই ধারা বজায় থাকে। দিনের দ্বিতীয় ওভারে খালেদ মাসুদ শূন্য রানে বোল্ড হন। শেন ওয়ার্ন ও জেসন গিলেস্পি - উভয়েই বোলিংয়ের মাধ্যমে তাদের প্রথম ইনিংসকে উজ্জ্বীবিত করার চেষ্টা চালান এবং বাংলাদেশের শেষ পাঁচ উইকেট ৮৮ রানে ফেলে দেন। তন্মধ্যে শেষের জনের পূর্বেকার ০/১১২ কে এ ইনিংসে মোহাম্মদ রফিকের তিন চারের মার স্বত্ত্বেও ৩/২৮-এ পরিণত করেন।
অস্ট্রেলিয়া গত পঞ্চাশ বছরে দুইবার প্রথম ইনিংসের তুলনায় অধিক রান সংগ্রহের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান নিয়ে খেলা শুরু করে। জয়ের জন্য তাদের ৩০৭ রানের দরকার ছিল। কোন ঝুঁকি না নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয় ধীরলয়ে ৬৭ রান তুলে চা বিরতির পূর্বে বিদায় নেয়। এরপর অধিনায়ক রিকি পন্টিং নিজের খোলশ থেকে বেরিয়ে আসেন। তিনি সাত বাউন্ডারি সহযোগে অপরাজিত ৭২ রান তুলে দিন শেষ করেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১০৬ রান তোলার পর বামহাতি স্লো বোলার মোহাম্মদ রফিক দুই উইকেট তুলে নিলে অস্ট্রেলিয়ার টালমাটাল অবস্থায় উপনীত হয় ২১২/৪। কেবলমাত্র তাদের অধিনায়ক সর্বোচ্চ রান তোলেন ও অ্যাডাম গিলক্রিস্ট (৬*) নিচের সারির পাঁচ বোলারকে সাথে নিয়ে রুখে দাঁড়ানোর পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান।
চূড়ান্ত দিন সকালে অস্ট্রেলিয়া বাজেভাবে শুরু করে। মোহাম্মদ রফিক গিলক্রিস্ট (১২) ও ওয়ার্নের (৫) উইকেট সহজেই তুলে নিলে অস্ট্রেলিয়া ২৩১/৬ তুলে সঙ্কটে পড়ে। তখনও জয়ের জন্য তাদের ৭৬ রানের প্রয়োজন ছিল। তবে, পন্টিং তার খেলাকে স্বাভাবিকতার বিপরীতে রক্ষণাত্মক খেলে দৃঢ়তাপূর্ণ বাঁধার প্রাচীর গড়ে তুলে সেঞ্চুরির দিকে ধাবিত হন। তিনি লি’র সাথে যোগ দেন ও ৭ম উইকেট জুটিতে ৪৬ রান তুলেন। কিন্তু নতুন বল নিয়ে বাংলাদেশের ভাগ্য ঘুরতে থাকে ও মধ্যাহ্নবিরতীর পূর্বে লি’র উইকেট পেলে কিছুটা আশার আলো দেখা দেয়। তাদের সেরা সুযোগ আসে পন্টিংয়ের ৯৮ রান থাকাবস্থায়। কিন্ত ঐ পুল শট মাশরাফি মর্তুজা ফাইন লেগ অঞ্চল থেকে ফেলে দেন। সীমানা গড়িয়ে কভার ড্রাইভে মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বেকার শেষ ওভারে তিনি তার ৩১তম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। গিলেস্পির সাথে যোগ দিলে দলের বিজয় শুধুমাত্র মধ্যাহ্নবিরতীর জন্য বিলম্বিত হয়েছিল। তখনো পন্টিং ১১৮* রানে অপরাজিত ছিলেন। মোহাম্মদ রফিক খেলায় ৯/১৬০ নিয়ে শেষ করেন। অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।
বাংলাদেশ | ১৯৭ (৬১.২ ওভার) | ও | ৩০৪ (৮০.২ ওভার) | অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ও ৮০ রানে বিজয়ী[4] |
রাজিন সালেহ ৭১ (১২৬) |
শাহরিয়ার নাফিস ৭৯ (১৮০) |
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ | ||
অস্ট্রেলিয়া | ৫৮১/৪ডি. (১৫২.৩ ওভার) | |||
জেএন গিলেস্পি ২০১* (৪২৫) |
বাংলাদেশ টসে জয়ী হয় ও ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রথম দিন শুরু করে। জেসন গিলেস্পি শুরুতেই তিন উইকেট শিকার করলে বাংলাদেশের সংগ্রহ আট ওভারেই ১৭/৩-এ পরিণত হয়। এক পর্যায়ে তিনি ৫ ওভারে ৩/১১ পেয়েছিলেন। ইনিংসের বাকী সময়টুকোয় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে, ফলে বাংলাদেশ চা বিরতির পরক্ষণেই ১৯৭ রানে অল-আউট হয়। বাংলাদেশের পক্ষে রাজিন সালেহ সর্বোচ্চ ৭১ তোলেন এবং টেস্টে অভিষিক্ত ড্যান কালেন মাশরাফি মর্তুজাকে শিকার করলে প্রথম উইকেট লাভে সক্ষম হন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে সম্মান না জানানো ও তৃতীয় আম্পায়ার মাহবুবুর রহমানের কাছ থেকে আউটের আবেদন নাকচ হলে অসন্তোষ প্রকাশ করায় রিকি পন্টিংয়ের ম্যাচ ফি’র ২৫% জরিমানা করা হয়।
দিন শেষ হবার পূর্বে প্রায় ২০ ওভার অস্ট্রেলীয়রা ক্রিজে অবস্থান করে। স্ট্যাম্পের কাছে ম্যাথু হেইডেন ডিসমিস হন ও জেসন গিলেস্পি নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামেন। বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় দিনে মাত্র ১৮.৪ ওভারের খেলা সম্পন্ন হয়। এতে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফিল জ্যাকুয়েস তার প্রথম অর্ধ-শতক লাভ করেন ও ৬৬ রানে ডিসমিস হন। ১৫১/২ নিয়ে খেলা শেষ হবার পূর্বে গিলেস্পি ও রিকি পন্টিং ক্রিজে ছিলেন।
তৃতীয় দিনে রিকি পন্টিং ও জেসন গিলেস্পি ক্রিজে নেমে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। রান-আউটের পূর্বে পন্টিং ধীরলয়ে তার ৩৪তম টেস্ট অর্ধ-শতক করেন। দিনের বাকী সময় মাইকেল হাসি জেসন গিলেস্পির সাথে যোগ দিয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন। বৈকালিক অধিবেশনে গিলেস্পি শতকে পৌঁছেন। এ শতকটি তার টেস্টসহ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম শতক ছিল। এছাড়াও তৃতীয় নাইটওয়াচম্যান হিসেবে তিনি এ শতক হাঁকান ও নাইটওয়াচম্যানদের মধ্যে তার এ ইনিংসটি দীর্ঘস্থায়ী ছিল। ২৯৬ বলে তার এ শতক আসে। চা-বিরতির সময় গিলেস্পি অপরাজিত ১০২ ও হাসি অপরাজিত ৯৩ তুলেন। কিন্তু ক্রমাগত বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই খেলা শেষ করতে হয়।
চতুর্থ দিন আবহাওয়া খেলায় প্রভাববিস্তার করতে পারেনি ও ১০০ ওভার খেলা হয়। মাইকেল হাসি খেলা শুরুর পঞ্চম ওভারেই তার ৪র্থ টেস্ট শতক করেন। গিলেস্পি ও হাসি ব্যাট হাতে সারাদিন রাজত্ব করেন। হাসি পেসারদেরকে ও গিলেস্পি স্পিনারদের উপর ছড়ি ঘুরাতে থাকেন। তারা বেশ কিছু চমকপ্রদ ড্রাইভ ও কয়েকটি দর্শনীয় ছক্কা হাঁকান। হাসি ও গিলেস্পি উভয়েই ১৫০ রানে পৌঁছলে চতুর্থ উইকেটে ৩২০ রানের জুটি হয়। মধ্যাহ্নবিরতীর পূর্বে মাত্র ২০৩ বল মোকাবেলায় হাসি ১৮২ রান তুলে আউট হন। তারপর মধ্যাহ্নবিরতীর অল্পসময় পর গিলেস্পি দ্বি-শতকে পৌঁছেন। তার অপরাজিত ২০১* রানের ইনিংসটি ৪২৫ বল মোকাবেলা ও ৫৭৪ মিনিটে সম্পন্ন হয় যার প্রভাব চারদিনের ব্যাটিংয়ে পড়ে। প্রথমটির তুলনায় তার দ্বিতীয় শতরানে পৌঁছতে বেশ কম সময় লাগে ও কেবলমাত্র ১২৯ বলে সম্পন্ন হয়। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ক্রিকেটের ইতিহাসে তার স্কোরটি সর্বোচ্চ ও বাংলাদেশের বিপক্ষে যে-কোন অস্ট্রেলীয়র ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহ। গিলেস্পি’র দ্বি-শতকের পর ৫৮১/৪ হলে রিকি পন্টিং ইনিংস ডিক্লেয়ার করেন। এ সময় তারা ৩৮৪ রানে এগিয়ে থাকে।
পঞ্চম ওভারে জাভেদ ওমর ডিসমিস হলে শাহরিয়ার নাফিস ও হাবিবুল বাশার একত্রে ১০২ রানের জুটি গড়েন। সান্ধ্য অধিবেশনের চাবিরতির অল্প পূর্বে শেন ওয়ার্নের বলে বাশার আউট হন। পরবর্তীতে ওয়ার্ন আরও দুই উইকেট নিলে দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯৫/৪। পঞ্চম দিন সকালের অধিবেশনেই বাদ-বাকী ছয় উইকেট তুলে নেন ওয়ান ও স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল। ওয়ার্ন ৫/১১৩ ও ম্যাকগিল ৪/৯৫ নেন। অন্যদিকে নাফিস বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৯ রান তুলেন।
গিলেস্পি তার দ্বি-শতক এবং ৩/১১ ও ০/১৪ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান। খেলায় গিলেস্পি কেবলমাত্র নয় ওভার বোলিং করেছিলেন যা তার খেলোয়াড়ী জীবনে শেষ হওয়া যে-কোন খেলায় সবচেয়ে কম।গ ১ উল্লেখ্য যে, এটিই গিলেস্পি’র খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বশেষ টেস্ট খেলা ছিল।[5]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.