Loading AI tools
সুফি সাধক ও ইসলামি চিন্তাবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক একজন সুফি সাধক, মুফতি, ইসলামি চিন্তাবিদ সুন্নি ইমাম। তিনি ইমাম শেরে বাংলা নামেও পরিচিত।
এই নিবন্ধটি এমনভাবে লেখা হয়েছে যে মনে হচ্ছে এটি একটি ব্যক্তিগত ভাবনা বা মতামত সম্বলিত রচনা এবং হয়তো নিবন্ধটির পরিচ্ছন্নকরণ প্রয়োজন। (মে ২০২২) |
শেরে বাংলা সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক | |
---|---|
জন্ম | ১৯০৬ |
মৃত্যু | ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৬৯ |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান |
সন্তান | সৈয়দ মোহাম্মদ আমিনুল হক আল কাদেরী (মঃ) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক আল কাদেরী (রহঃ) সৈয়দ মোহাম্মদ বদরুল হক আল কাদেরী (মঃ) সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল হক আল কাদেরী (রহঃ) সৈয়দ মোহাম্মদ নূরুল হক আল কাদেরী (রহঃ) সৈয়দ মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক আল কাদেরী (রহঃ) |
যুগ | আধুনিক যুগ |
অঞ্চল | দক্ষিণ এশিয়া |
ধারা | সুন্নী |
প্রধান আগ্রহ | তাফসীর, হাদিস, আকীদা, ফিকহ, সুফিবাদ, রাজনীতি, সংস্কৃতি |
ভাবগুরু
| |
ভাবশিষ্য
|
সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার অন্তর্গত মেখল নামক গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত সৈয়দ পরিবারে ১৯০৬ সালে (১৩২৩ হিজরী) জম্মগ্রহণ করেন।[1] তার পিতার নাম সৈয়দ মুহাম্মদ আব্দুল হামিদ এবং মাতার নাম সৈয়দা মায়মুনা খাতুন। তার দাদার নাম সৈয়দ মুহাম্মদ হাশমত উল্লাহ। তিনি পিতা-মাতা উভয় বংশধারায় সৈয়দ বংশীয় ছিলেন। বংশ পরিক্রমায় তিনি রাউজান উপজেলার সুলতানপুর হাজীপাড়া এলাকার কাজী এজাবত উল্লাহ শাহ, হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ এলাকার সৈয়দ আমিনুল হক ফরহাদাবাদী এবং লালিয়ারহাট এলাকার সৈয়দ হোসাইনুজ্জামান এর নিকটাত্মীয়।
শৈশবকালে সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক প্রাথমিক শিক্ষা আপন পিতার নিকট লাভ করেন। তারপর তিনি হাটহাজারী আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামে ভর্তি হন। পরবর্তীতে টাইটেল পাশ করার পর তিনি উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য ভারতে গমন করেন এবং দিল্লীর বিখ্যাত ফতেহ্পুর আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে আরবী, উর্দু, ফার্সি ভাষার লিখিত বিভিন্ন শাস্ত্রের উপর পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। একই মাদ্রাসা থেকে তিনি দাওরায়ে হাদিস ও ফিকহ শাস্ত্রে প্রথম শ্রেণীর সনদ লাভ করেন।[1]
ভারত থেকে প্রত্যাবর্তনের পর সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক সুন্নিয়ত ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। সেই লক্ষ্যে তিনি সর্বপ্রথম ১৯৩২ সালে নিজ গ্রাম মেখল ফকিরহাটে প্রতিষ্ঠা করেন এমদাদুল উলুম আজিজিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা। তিনি নিজের ক্রয়কৃত জমিতে নিজ অর্থ ব্যয়ে এ মাদ্রাসা স্থাপন করেন। এছাড়া কুতুবুল আউলিয়া সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটী (রহ.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এশিয়ার অন্যতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও ছিল তার সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান। তারই একান্ত পরামর্শক্রমে হযরত সিরিকোটি (রহ.) এ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এমনকি এ মাদ্রাসার জমিও তিনি পছন্দ করেন এবং ক্রয় করার ব্যবস্থা করে দেন। পরবর্তীতে তিনি শিক্ষানুরাগী দানবীর ব্যক্তিদের আর্থিক আনুকূল্যে বিভিন্ন দ্বীনি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাটহাজারী আজিজিয়া অদুদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা, রাউজান ফতেহ নগর অদুদিয়া মাদ্রাসা, রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনাস্থ মাদ্রাসা-এ-তৈয়্যবিয়া অদুদিয়া সুন্নিয়া এবং লালিয়ারহাট হামিদিয়া হোছাইনিয়া মাদ্রাসা।[1][2]
সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক শেরে বাংলা তদানীন্তন ব্রিটিশ আমল থেকে পাক-ভারত বিভক্তির পর প্রথম পাক-ভারত মহাযুদ্ধের সময় পর্যন্ত একাধারে সুদীর্ঘ সতের বছর নিজ এলাকা মেখল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং ফুড কমিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি অত্যন্ত ন্যায়বিচারক এবং দেশপ্রেমিক ছিলেন। তিনি মেখল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচনে একাধারে জয়লাভ করেছিলেন। এমনকি তার সাথে আক্বিদার মতবিরোধ থাকা স্বত্ত্বেও মুফতি ফয়জুল্লাহ তার অনুসারীদের বলেন, তোমরা শেরে বাংলাকে ভোট দিবে। তারা বিরুদ্ধাচরণের পরেও ভোট দিতে বলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুফতি ফয়জুল্লাহ জবাবে বলেন, সেটা অন্য ব্যাপারের মামলা। কিন্তু এই মুহুর্তে তার মতো সুবিচারক ও ন্যায়বণ্টনকারী বিশ্বস্ত কোন লোক তোমরা পাবে না।
বলা হয়, চল্লিশ দশকের প্রারম্ভে চট্টগ্রামের আলেম আল্লামা আব্দুল হামিদ ফখরে বাংলা (রহ.) অনেক আলেমসহ কাদিয়ানীদের সাথে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে মোনাজেরায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে প্রশ্ন-উত্তরে কাদিয়ানীদের পরাজিত করায় তাকে শেরে বাংলা উপাধি দেয়া হয়।[2] এছাড়া ১৯৫৭ সালে তিনি পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে গেলে ঘটনাক্রমে সৌদি সরকারের গ্র্যান্ড মুফতি সৈয়দ আলবীর সঙ্গে তাঁর বাহাছ বা তর্ক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত তর্ক সভায় তার জ্ঞান ও যুক্তি দেখে সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি মুগ্ধ হন এবং তাকে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে অসীম জ্ঞানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘শেরে ইসলাম’ ওরফে ‘শেরে বাংলা’ উপাধিতে ভূষিত করে লিখিত সনদপত্র প্রদান করেন। সৌদি বাদশাহ্ ইবনে সউদ স্বয়ং তাকে রাজকীয় বিশেষ মেহমান হিসেবে সংবর্ধনা সভার মাধ্যমে সৌদি বাদশাহ্ তার অসাধারণ জ্ঞানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপঢৌকন স্বরূপ মূল্যবান পাগড়ী ও ছড়ি প্রদান করে তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানে অভিষিক্ত করেন।[1][2]
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের প্রাক্তন খতীব ও সংস্কারক আল্লামা গাজী সৈয়দ আব্দুল হামিদ বাগদাদী (রহঃ)’র কাছে সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক বায়াত গ্রহণ করেন। তিনি শাহ্সূফী সৈয়দ আব্দুল হামিদ বাগদাদী (রহঃ)’র কাছ থেকে বেলায়তের সর্বোচ্চ খেলাফত লাভ করেন এবং খলিফায়ে আজম বা প্রধান খলিফা হিসেবে অভিষিক্ত হন।[2]
সৈয়দ মুহাম্মদ আজিজুল হক লিখিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর (১৩৮৯ হিজরীর ১২ই রজব) ৬৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[1] হাটহাজারী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জানাযায় সর্বসম্মতিক্রমে ইমামতি করেন আল্লামা কাজী মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম হাশেমী (১৯২৮ -২০২০ )। জানাযা শেষে হাটহাজারীর প্রাণকেন্দ্রে তাকে সমাহিত করা হয়। প্রতি বছর ১২ই রজব হাটহাজারী দরবার শরীফে তার পবিত্র বার্ষিক ওরশ অনুষ্ঠিত হয়।[2] দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তার স্মরণে বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যেগুলো ধর্মীয়, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিয়ে থাকে।[3][4][5]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.